ভাষা আন্দোলন ও বাঙালি জাতীয়তাবাদী চেতনার উন্মেষ

বাংলাদেশের স্বাধিকার ও স্বাধীনতা আন্দোলন
ভূমিকা:
১৯৪৭ সালে ব্রিটিশ সরকার ভারত স্বাধীনতা আইনের ভিত্তিতে অবিভক্ত ভারতকে ভারত ও পাকিস্তান নামক দুটি স্বাধীন
রাষ্ট্রে বিভক্ত করেছিল। এই বিভাজনের মূলে ছিল মুহাম্মাদ আলী জিন্নাহর ‘দ্বি-জাতি তত্ত¡’। কিন্তু ১৯৪০ সালে শেরে বাংলা
একে ফজলুল হক কর্তৃক সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলমানদের জন্যে একাধিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার যে প্রস্তাব লাহোরে গৃহীত হয়েছিল নানা
কারণে তা আলোর মুখ দেখেনি। লাহোর প্রস্তাব বাস্তবায়িত হলে বাংলাদেশে স্বাধীকার ও স্বাধীনতা আন্দোলনের প্রয়োজন
হতো না। ১৯৪৭ সালের আগস্ট মাসে পাকিস্তান রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার কয়েক মাসের মধ্যেই বাংলা ভাষাকে কেন্দ্র করে ১৯৪৮
সালের প্রথমদিকে ভাষা আন্দোলনের সূত্রপাত হয়, যা চূড়ান্তরূপ লাভ করে ১৯৫২ সালে। ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন,
৫৪‘র যুক্তফ্রন্ট নির্বাচন, ৬৬‘র ছয়দফা আন্দোলন, ৬৯‘র গণ-অভ্যুত্থান,৭০‘র নির্বাচন এবং ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধ
বাংলাদেশের স্বাধিকার ও স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসে এক উজ্জ্বলতম অধ্যায়।
মূখ্য শব্দ দ্বি-জাতি তত্ত¡, ১৪৪ ধারা, একুশে ফেব্রæয়ারি, ও আম তলা
বাংলাদেশ ও বাঙালি জাতির ইতিহাসে ভাষা আন্দোলন একটি গুরুত্বপূর্ণ ও তাৎপর্যমÐিত ঘটনা। ভাষা
আন্দোলন বাংলার মানুষকে মুসলিম লীগের তৎকালীন কর্মকাÐ বিশেষ করে ধর্মের ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠিত ও
দ্বিজাতি তাত্তি¡ক জাতীয়তাবাদ সম্পর্কে প্রশ্ন তোলার সুযোগ করে দেয়। বাঙালিরা ভালোভাবেই বুঝতে সক্ষম হয় যে,
পশ্চিম পাকিস্তানের নেতৃবৃন্দ তাদেরকে শোষণের গোলকধাঁধা থেকে বের হতে দেবে না। তারা একে একে বাংলার মানুষকে
রাজনৈতিক, সামাজিক, অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিক প্রভৃতি ক্ষেত্রে শোষণের শৃঙ্খলে আবদ্ধ করবে। যার প্রথম পর্যায় ছিল
বাংলাকে বাদ দিয়ে উর্দুকে রাষ্ট্র ভাষা করার প্রস্তাব। ফলে বাঙালিদের আন্দোলন করা ব্যতীত আর কোন উপায় ছিল না।
বাংলা ভাষার প্রশ্নে সকল পেশাজীবী মানুষ একই পতাকার ছায়ায় আশ্রয় নেয় এবং আন্দোলন করেই তাদের দাবি প্রতিষ্ঠা
করে। এই আত্মজাগরণ ও জাতীয়তাবোধই স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় সর্বাত্মক প্রেরণা যুগিয়েছিল।
ভাষা আন্দোলনের ঐতিহাসিক প্রেক্ষপট
১৯০৬ সালে নিখিল ভারত মুসলিম লীগ প্রতিষ্ঠার সময় সংগঠনটির দাপ্তরিক ভাষা কি হবে তা নিয়ে বিতর্কের সূত্রপাত হয়।
পরবর্তী পর্যায় দেশ বিভাগের আগে আবার বাংলা বা উর্দু বিতর্ক শুরু হয়। পশ্চিম পাকিস্তানিরা যেমন উর্দুকে রাষ্ট্রভাষা
করার পক্ষে প্রচারনা চালায় তেমনি বাংলার জনগণও বিশেষ করে লেখক, বুদ্ধিজীবী এটির বিরোধিতা করে এবং বাংলার
পক্ষে প্রচারনা চালায়। গণ আজাদী লীগ, তমুদ্দন মজলিশ, রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ প্রভৃতি সংগঠন সভা সেমিনারসহ সর্বত্র
নানাবিধ প্রচারণা চালাতে থাকে।
প্রিন্সিপাল আবুল কাশেম, ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ প্রমুখের লেখা প্রবন্ধ নিয়ে একটি ‘পুস্তিকা’ প্রকাশ করা হয় এবং তা
সর্বস্তরের জনগণের কাছে পৌঁছানোর ব্যবস্থা করা হয়। প্রচার পত্র বা এই পুস্তিকায় বাংলাকে কেন পাকিস্তানের অন্যতম
রাষ্ট্রভাষা করা হবে সে বিষয়ে বিস্তারিত যুক্তি তুলে ধরা হয়। এছাড়াও বিশিষ্টজনেরা যুক্তি দেখান যে, শুধুমাত্র শুধু উর্দুকে
রাষ্ট্রভাষা ঘোষণা করে আইন পাশ হলে তা পূর্ব পাকিস্তানের জন্য বিভিন্ন দিক দিয়ে ক্ষতিকর প্রভাব ফেলবে। যেমন :
রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক প্রভৃতিতে বিরূপ ফল পড়বে বলে বুদ্ধিজীবী মহল খুভই উদ্বিগ্ন ছিল।
বিশেষজ্ঞ মহলের চিন্তার বড় কারণ ছিল এই যে, যদি তারা অর্থাৎ পশ্চিম পাকিস্তানি শাসক গোষ্ঠী উর্দুকে রাষ্ট্রভাষা ঘোষনা
করতে সক্ষম হয় তাহলে বাংলাকে শাসন ও শোষণ করা খুবই কঠিন হবে না। কেননা বাংলাভাষী শিক্ষিত যুবকদের উর্দু না
শেখার কারণে উচ্চ পদে নিয়োগ দেওয়া না হলে তাদের সারা জীবন গোলামিই করে যেতে হবে। আবার রাজনৈতিক দিক
থেকে উর্দু ভাষী নেতারাই আইন পরিষদসহ নানা ক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা পালন করলে বাঙালি নেতৃবৃন্দের কপালে অবহেলা
ছাড়া সম্মান পাবার সম্ভাবচনা কমে যাবে। অন্যদিকে দেশের একমাত্র রাষ্ট্র ভাষা উর্দু হলে সকলকে জাতীয় ভাষায় সংস্কৃতি
চর্চার একটি বাধ্যবাধকতা থাকবে। ফলে এদিক দিয়েও বাঙালিরা পিছিয়ে থাকবে। এছাড়াও সামাজিক ও ধর্মীয় জীবনে
উর্দু ভাষীরা উচ্চশ্রেণীতে গন্য হবে আর অন্যরা দারুণভাবে অবহেলার শিকার হবে। উপর্যুক্ত যুক্তিতর্ক বাংলার সর্বত্র
ছড়িয়ে দেওয়া হয়। সকলেই বুঝতে সক্ষম হয় যে, বাংলা ভাষাকে অন্তত: অন্যতম রাষ্ট্রভাষা না করা হলে বাঙালিরা পদে
পদে লাঞ্ছিত হবে। ফলে সংগ্রাম বা আন্দোলনের পথ প্রশস্ত থেকে প্রশস্ততর হতে থাকে।
ঘটনাপ্রবাহ: ১৯৪৮ সালের ফেব্রæয়ারি মাসে পাকিস্তাান গণপরিষদের অধিবেশনে কংগ্রেস দলীয় সদস্য ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত উর্দুর
পাশাপাশি বাংলাকে অন্যতম রাষ্ট্রভাষা করার প্রস্তাব দেন। এটির ঘোরতর বিরোধিতা করেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী লিয়াকত
আলী খান। প্রস্তাবটি পাশ না হওয়ায় বাংলার ছাত্রসমাজ বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে এবং ১১ মার্চ সারা দেশে ধর্মঘট পালন করে।
১৯৪৮ সালের ৪ জানুয়ারি প্রতিষ্ঠিত পূর্ব পাকিস্তান মুসলিম ছাত্রলীগ ভাষার দাবীতে ১১ মার্চ ধর্মঘটে ভ‚মিকা রাখে। এদিন
পিকেটিং করা অবস্থায় শেখ মুজিবুর রহমান প্রেফতার হন। এর মাধ্যমেই আন্দোলন সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ে। ১৯৪৮
সালের ২১ মার্চ ঢাকার রেসকোর্স ময়দানে এক বিশাল জনসভায় পাকিস্তানের গভর্নর জেনারেল মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ
ঘোষণা করেন, উর্দুই হবে পাকিস্তানের একমাত্র রাষ্ট্রভাষা। সঙ্গে সঙ্গে উপস্থিত জনতা তার কথার প্রতিবাদ জানায়। জিন্নাহ
কার্জন হলের একটি বিশেষ সভাতেও একই দাবি করলে ছাত্ররা না, না বলে প্রতিবাদ জানায় এবং সভাস্থল ত্যাগ করে।
১৯৪৮ সালের ১৮ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী লিয়াকত আলী খান ঢাকায় এসে আবারও উর্দুকে রাষ্ট্রভাষা করার মনোভাব ব্যক্ত
করলে ছাত্র সমাজ বিক্ষোভ প্রদর্শণ করে। ১৯৪৯ সালে বাংলাকে আরবী হরফে লেখার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে সরকার। ঢাকা
বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের প্রবল বাধার মুখে তাও বানচাল হয়ে যায়। এরপর আন্দোলনের গতি কমতে থাকে।
১৯৫২ সালে ভাষা আন্দোলনের শেষ ও চুড়ান্ত পর্ব সংগঠিত হয়। ঐ
বছরের ২৬ জানুয়ারি পল্টন ময়দানের জনসভায় নবনিযুক্ত প্রধানমন্ত্রী
খাজা নাজিমউদ্দিন উর্দুকে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা করা হবে, এমন
ঘোষণা দিলে ভাষার প্রশ্নে জনরোষ নতুন করে জেগে ওঠে। ছাত্র
জনতা আবার বিক্ষোভ প্রদর্শন করে। সংগ্রামের অংশ হিসেবে ৪
ফেব্রæয়ারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ধর্মঘট পালিত হয়। এমনকি সর্বদলীয়
রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ আবার পুর্নোদ্যমে কার্যক্রম শুরু করে।
অপরদিকে পূর্ব বাংলার নুরুল আমীণ সরকার কড়াকড়ি ব্যবস্থা গ্রহণ
করে। যার অংশ হিসেবে ২০ ফেব্রæয়ারি মধ্যরাত থেকে ঢাকায় ১৪৪
ধারা জারি করা হয়। তবে সরকার ১৪৪ ধারা জারি করলেও রাষ্ট্রভাষা
সংগ্রাম পরিষদ তাদের পূর্বনির্ধারিত কর্মসূচি পালন অব্যাহত রাখার
ঘোষণা দেয়। নানা সংগঠন এই ঘোষণার সঙ্গে একমত পোষণ করে। ২১ ফেব্রæয়ারি বৃহস্পতিবার ছাত্র জনতা সুকৌশলে
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় প্রবেশ করে এবং নানা তর্ক বিতর্ক শেষে ১৪৪ ভঙ্গের পক্ষে সর্বশেষ সিদ্ধান্ত নেয়া হয় এবং
সিদ্ধান্ত হয় ১০ জনের একটি করে দল ক্রমান্বয়ে ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করবে। ঐ মিছিল রাজপথে বের হলে পুলিশ বাহিনী
সরকারের ঘোষণা অনুযায়ী কিছু ছাত্র ও জনগণকে গ্রেপ্তার করে। জনতার প্রবল, বাধা ও আন্দোলনী মনোভাব দমন করতে
পুলিশ লাঠিচার্জ ও কাঁদানে গ্যাস ছুড়ে। অবস্থা বেগতিক দেখে তারা নির্বিচারে গুলি চালাতে থাকে। বুলেটের আঘাতে
সালাম, রফিক, শফিক, বরকতসহ অনেকে শহীদ হয়। তাদের রক্ত বাঙালিদেরকে আরো দুর্দমনীয় করে তোলে এবং
সংগ্রাম আন্দোলন ব্যাপকতর রূপলাভ করলে বাঙালির দাবি উপেক্ষা করতে পারেনি। এমনকি ১৯৫৬ সালে
সাংবিধানিকভাবে উর্দুর পাশাপাশি বাংলাকেও রাষ্ট্রভাষার মর্যাদা দেয়া হয়।
ফলাফল :
১. ভাষা আন্দোলন পূর্ব পাকিস্তানের জনগনের মধ্যে নব জাতীয় চেতনা তথা বাঙালিদের মধ্যে ভাষাভিত্তিক
জাতীয়তাবোধের উন্মেষ ঘটায়। প্রথমবারের মতো তারা স্বতন্ত্র রাজনৈতিক অধিকার বা স্বাধিকার প্রতিষ্ঠায় সচেতন
হয়। এমনকি তারা যে পশ্চিম পাকিস্তানিদের চেয়ে স্বতন্ত্র মনমানসিকতার অধিকারী তা উপলব্ধি করতে সক্ষম হয়।
২. বাঙালিরা রক্তের বিনিময়ে অধিকার আদায়ের কৌশল রপ্ত করে। এমনকি তারা তাদের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক,
সামাজিক অধিকার প্রতিষ্ঠায় সংগ্রামের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করে।
৩. ভাষা আন্দোলনে দেশের বুদ্ধিজীবী সমাজ জনগণের সাথে একাত্ম হয়েছিল বলে সমগ্র জাতিই সংগ্রাম মনোভাবে উদ্বুদ্ধ
হয়। সকল পেশার লোকেরা মিলিত হলে একটি জাতীয় ঐক্য প্রতিষ্ঠা পায়। ফলে জাতীয়তাবাদী বৈপ্লবিক চেতনা ও
সংহতিবাধের উন্মেষ ঘটে। যার প্রতিফলন ঘটে ১৯৫৪ সালের যুক্তফ্রন্টের বিপুল বিজয়ের মাধ্যমে। ঐ নির্বাচনে
বাংলার মানুষেরা মুসলিম লীগকে চরমভাবে শিক্ষা দেয়।
৪. ভাষা আন্দোলনের পুরোভাগে থেকে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছিল ছাত্র সমাজ। ফলে আন্দোলনে বাঙালিদের বিজয়ী
হওয়ায় ঐ ছাত্র সমাজ একটি প্রভাবশালী রাজনৈতিক শক্তিতে পরিণত হয়। এমনকি ছাত্র, বুদ্ধিজীবী নানা শ্রেণী
পেশার লোকদের নিয়ে ঐক্যজোট গঠন করার রীতি গড়ে ওঠে। এরূপ ঐক্যজোট পরবর্তী সময়ের সকল আন্দোলনে অগ্রণী ভূমিকা পারন করেছিল।
কেন্দ্রিয় শহীদ মিনার
ওপেন স্কুল ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি ২য় পত্র
৫. রাজনৈতিক দিক দিয়ে বাংলা ভাষা আন্দোলন বাঙালিকে ঐক্যবদ্ধ করতে সক্ষম হয়। পরবর্তীতে এ আন্দোলন থেকে
সুদূর প্রসারী প্রভাব পরিলক্ষিত হয় এবং যে কোন জাতীয় স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে বাংলার জনগণ কাঁধে কাঁধ মিলিয়
সংগ্রাম করার মনোবল সাহস ও অনুপ্রেরণা লাভ করে। এমনকি স্বাধীন সার্বভৌম দেশ প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রেও বাংলার
জনগণ বুকের তাজা রক্ত উৎসর্গ করতে কুণ্ঠিত বোধ করেনি। কারন তারা ঐ ১৯৫২ সালেই বুঝেছিল সাহাসী ও প্রাণ
উৎসর্গকারি মনোভাবই তাদেরকে সকল অবিচার অন্যায় ও পরাধীনতার শৃঙ্খল থেকে মুক্তি দিতে পারে।
পরিশেষে বলা যায় যে, ভাষা আন্দোলন বাঙালিদের মনন ও মগজে এবং শিরায় উপশিরায় অসীম সাহস ও অনুপ্রেরণার
উৎস হিসেবে ভূমিকা পালন করেছিল। এরই ধারাবাহিকতায় ১৯৭১ সালে দীর্ঘ ৯ মাস যুদ্ধের পর পৃথিবীর মানচিত্রে যোগ
হয় আরেকটি স্বাধীন সার্বভৌম দেশ, বাংলাদেশ। ১৯৯৯ সালের ২৬ নভেম্বর ইউনেস্কোর অধিবেশনে ২১ ফেব্রæয়ারি
আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করায় আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ভাষা আন্দোলনের গুরুত্ব বহুগুনে বৃদ্ধি পেয়েছে।
সারসংক্ষেপ :
ভাষা আন্দোলন বাঙালি জাতির রাজনৈতিক ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ জাতীয়তাবাদী আন্দোলন। ভাষাকে কেন্দ্র করে
১৯৪৮ সালের প্রথমদিকে ভাষা আন্দোলনের সূত্রপাত হয়। ১৯৫১ সালে পাকিস্তানের প্রথম আদমশুমারীতে দেখা যায়
যে, মোট জনসংখ্যার ৫৪.৬০% লোকের মাতৃভাষা বাংলা। সুতরাং বাংলাই যেখানে সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের ভাষা সেখানে
বাংলাকে বাদ দিয়ে ৭.২% মানুষের উর্দু ভাষাকে বাঙালিদের উপর চাপিয়ে দেয়ার সিদ্ধন্ত বাঙালি মেনে নিতে পারেনি।
ফলে শুরু হয় আন্দোলন যা চূড়ান্তরূপ লাভ করে ১৯৫২ সালের ২১ শে ফেব্রæয়ারিতে। এই দিন ভাষা সংগ্রামীরা ১৪৪
ধারা ভঙ্গ করলে পুলিশ গুলি চালায়। পুলিশের গুলিতে আবদুস সালাম, আবুল বরকত, রফিক উদ্দিন, আবদুল জব্বার
ঘটনাস্থলেই নিহত হন। পশ্চিম পাকিস্তানি শাসকচক্রের বিরুদ্ধে এটি ছিল বাঙালিদের প্রথম বিদ্রোহ।
পাঠোত্তর মূল্যায়ন-৯.১
১. ভাষা আন্দোলনের প্রথম সূত্রপাত হয় কত সালে?
ক) ১৯৪৫ খ) ১৯৫০ গ) ১৯৪৮ ঘ) ১৯৫২
২. ভাষা আন্দোলনের সময় পূর্বপাকিস্তানের শতকরা কত ভাগ মানুষের ভাষা ছিল বাংলা?
ক) ৫৬% খ) ৫২.৫৪% গ) ৫৪.৬০% ঘ) ৪৯%
৩. কত সালে ২১ ফেব্রæয়ারি আর্šÍজাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করে?
ক) ১৯৯৯ খ) ১৯৯৬ গ) ২০০১ ঘ) ১৯৯৭
ঢ একটি সদ্য স্বাধীনতা প্রাপ্ত একটি দেশ যার সংখ্যাগরিষ্ঠ লোকের মাতৃভাষা বাংলা। কিন্তু শাসকশ্রেণীর মাতৃভাষা উর্দু
হওয়ায় তারা উর্দকেই ঢ এর রাষ্ট্রভাষা করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। ফলে উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘাত দেখা দেয়। শাসকশ্রেণী রাষ্ট্রীয়
ক্ষমতার অপব্যাবহার করে আন্দোলনকারীদের উপর গুলি চালালে আন্দোলনকারীদের মধ্যে চারজন ঘটনাস্থলেই নিহত হন।
ক. ভাষা আন্দোলনের কী? ১
খ. ভাষা আন্দোলনে নিহত চারজন ভাষা শহীদেও নাম লিখুন ২
গ. উদ্দীপকে উল্লিখিত ভাষা আন্দোলনেরপটভূমি ও ঘটনা সম্পর্কে লিখুন। ৩
ঘ. উদ্দীপকের আলোকে ভাষা আন্দোলনের গুরুত্ব ও তাৎপর্য তুলে ধরুণ? ৪

FOR MORE CLICK HERE
এইচএসসি বাংলা নোট ১ম পত্র ও ২য় পত্র
ENGLISH 1ST & SECOND PAPER
এইচএসসি আইসিটি নোট
এইচএসসি অর্থনীতি নোট ১ম পত্র ও ২য় পত্র
এইচএসসি পৌরনীতি ও সুশাসন ১ম পত্র
এইচএসসি পৌরনীতি নোট ২য় পত্র
এইচএসসি সমাজকর্ম নোট ১ম পত্র
এইচএসসি সমাজকর্ম নোট ২য় পত্র
এইচএসসি সমাজবিজ্ঞান নোট ১ম পত্র ও ২য় পত্র
এইচএসসি ইতিহাস নোট ১ম পত্র
এইচএসসি ইতিহাস নোট ২য় পত্র
এইচএসসি ইসলামের ইতি. ও সংস্কৃতি নোট ১ম পত্র
এইচএসসি ইসলামের ইতি. ও সংস্কৃতি নোট ২য় পত্র
এইচএসসি যুক্তিবিদ্যা ১ম পত্র ও ২য় পত্র
এইচএসসি ভূগোল ও পরিবেশ নোট ১ম পত্র ও ২য় পত্র
এইচএসসি ইসলামিক স্টাডিজ ১ম ও ২য় পত্র

Copyright © Quality Can Do Soft.
Designed and developed by Sohel Rana, Assistant Professor, Kumudini Government College, Tangail. Email: [email protected]