মতন, রাবী, রিওয়াত, সহাবি, তাবিঈ, তাবি-তাবিঈ, হুজ্জাত।
সনদ
হাদিস বর্ণনাকারীদের বর্ণনা সূত্রকে ‘সনদ' বলে।
মতন
হাদিসে বর্ণিত মূল বক্তব্যকে ‘মতন' বলে।
রাবী
হাদিস বর্ণনাকারীকে ‘রাবী' বলা হয়।
রিওয়ায়াত
হাদিস বা ‘আছার' বর্ণনা করাকে রিওয়ায়াত বলে। কোন কোন সময় ‘হাদিস' বা আছারকেও ‘রিওয়ায়াত' বলে। যেমন বলা
হয়, এ সম্পর্কে একটি রিওয়ায়াত আছে।
সাহাবি
‘সাহাবি' আরবি শব্দ। বহুবচনে আসহাব, সাহাবা- যিনি ঈমান ও প্রত্যয়ের সাথে রাসূলে করীম (স)-এর সাহচর্য লাভে ধন্য
হয়েছেন, রাসূলে করীম (স)-কে দেখেছেন এবং তাঁর একটি হাদিস বর্ণনা করেছেন অথবা রাসূল (স)-কে একবার
দেখেছেন এবং মৃত্যুর পূর্ব মুহ‚র্ত পর্যন্ত ঈমানের ওপর টিকে ছিলেন তাকে ‘সাহাবি' বলে।
সাহাবিদের সম্পর্কে সমালোচনা করা বা বিরূপ ধারণা করা জায়িয নয়। আহলে সুন্নাত ওয়াল জামায়াতের মতে, সমস্ত
সাহাবায়ে কিরামের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করা এবং তাঁদের ব্যাপারে কটুক্তি থেকে বিরত থাকা ওয়াজিব।
তাবি'ঈ
যিনি কোন সাহাবির নিকট হাদিস অধ্যয়ন করেছেন অথবা অন্ততপক্ষে একবার তাঁকে দেখেছেন তাকে ‘তাবিঈ' এবং
বহুবচনে তাবিয়ীন বলে। তাবিয়ীনদের সংখ্যা অগণিত। তাঁরা সাহাবিদের কাছ থেকে হাদিসের জ্ঞান লাভ করেছেন।
তাবি-তাবি'য়ীন
যিনি কোন তাবি'ঈর নিকট হাদিস অধ্যয়ন করেছেন, তাকে তাবি-তাবি'য়ী এবং বহুবচনে তাবি' তাব'য়ীন বলে। তাদের
সংখ্যা অসংখ্য এবং সমগ্র মুসলিম বিশ্বে তাঁরা ছড়িয়েছিলেন। তাঁরা তাবি'য়ীগণের নিকট থেকে হাদিসের ইল্ম সংগ্রহ করে
সমগ্র উম্মাতের মধ্যে ছড়িয়েছেন। হিজরি তৃতীয় শতকের মধ্যভাগ পর্যন্ত তাঁরা জীবিত ছিলেন।
(স) সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
রাসূল (স)-এর নাম উচ্চারণ করলে যা পড়তে হয়। এর অর্থ- আল্লাহ রাব্বুল আলামীন তাঁর প্রতি দয়া ও শান্তি বর্ষণ
করুন। রাদিআল্লাহ্ আন্হু
আল্লাহ তাঁর প্রতি সন্তুষ্ট থাকুন। সাহাবায়ে কিরামের নামের সাথে এটা পড়তে ও লিখতে হয়।
হাদিস ও সুন্নাহ
সুন্নাত শব্দের অর্থ হল কর্মপন্থা, কর্মপদ্ধতি, কর্মনীতি ও চলার পথ। পরিভাষায় রাসূল (স)-এর অনুসৃত কর্মপন্থা ও
কর্মনীতিকে সুন্নাহ বলা হয়। হাদিস এবং সুন্নাহর মধ্যে তেমন কোন পার্থক্য নয়। তবে উভয়ের মধ্যে সামান্য পার্থক্য
পরিলক্ষিত হয়হাদিস হল মহানবীর (স) কথা, কাজ, মৌন সম্মতি ও আচার-আচরণের বিবরণ। পক্ষান্তরে সুন্নাহ হল মহানবী হযরত
মুহাম্মদ (স)-এর নীতি ও কর্মপন্থা।
আস্হাবে সুফ্ফা
‘আস্হাবে সুফ্ফা' বলা হয় সাহাবাদের একটি নির্দিষ্ট অংশকে, যাঁরা সরাসরি রাসূলে করীম (স)-এর তত্ত¡াবধানে ছিলেন।
তাঁরা সার্বক্ষণিক রাসূল (স)-এর সাথে থাকতেন, তাঁর কথা শুনতেন এবং তা মুখস্ত করে নিতেন।
মুহাদ্দিস
মুহাদ্দিস মানে হাদিস বিশেষজ্ঞ, হাদিসবিশারদ। যিনি হাদিসের চর্চা করেন এবং বহু সংখ্যক হাদিসের সনদ ও মতন
সম্পর্কে বিশেষ জ্ঞানের অধিকারী তাঁকে মুহাদ্দিস বলে। মুহাদ্দিসগণ হাদিস বিশ্লেষণ ও হাদিসের সত্য-মিথ্যা নিরূপণে এবং
হাদিসের ব্যাপক পঠন পাঠনে নিয়োজিত থাকেন।
শাইখ
হাদিস শিক্ষাদাতা রাবীকে শাইখ বলা হয়ে থাকে।
হাফিয
‘হিফ্য' থেকে হাফিয। ‘হিফ্য' অর্থ মুখস্থ করা, যিনি সনদ ও মতনের সমস্ত বৃত্তান্তসহ এক লাখ হাদিস আয়ত্ত করেছেন
তাকে হাফিযে হাদিস বলে।
হুজ্জাত
যিনি সনদ ও মতনের সমস্ত বৃত্তান্তসহ তিন লাখ হাদিস আয়ত্ত করেছেন, তাকে হুজ্জাত বলে।
হাকিম
যিনি সনদ ও মতনের সমস্ত বৃত্তান্তসহ সমস্ত হাদিস আয়ত্ত করেছেন তাকে হাকিম বলে।
আদালত
যে সুদৃঢ় শক্তি মানুষকে তাক্ওয়া ও মরুওত অবলম্বন করতে (এবং মিথ্যা আচরণ হতে বিরত থাকতে) উদ্বুদ্ধ করে তাকে
আদালত বলে। তাক্ওয়া অর্থে এখানে শিরক, বিদাআত ও ফিস্ক প্রভৃতি কবীরাহ গোনাহ এবং পুনঃ পুনঃছগীরা গোনাহ্
করা হতে বেঁচে থাকাকে বুঝায়। ‘মরুওত' অর্থে অশোভন বা অভদ্রোচিত কার্য হতে দূরে থাকাকে বুঝায়। যেমন হাটবাজারে প্রকাশ্যে পানাহার করা বা রাস্তা-ঘাটে প্রস্রাব করা ইত্যাদি। যিনি এরূপ কার্য করেন এমন ব্যক্তির বর্ণিত হাদিস
সহীহ নয়।
আদ্ল বা আদিল
যে ব্যক্তি ‘আদালত' গুণসম্পন্ন তাকে ‘আদল' বা ‘আদিল' বলে। [অর্থাৎ যিনি (১) রসূলুল্লাহ (স)-এর হাদিস সম্পর্কে
কখনো মিথ্যা কথা বলেননি, (২) বা সাধারণ কাজ কারবারে কখনো মিথ্যাবাদী সাব্যস্ত হননি, (৩) অজ্ঞাতনামা অপরিচিত
অর্থাৎ, দোষগুণ বিচারের জন্য যার জীবনী জানা যায় নি, এরূপ লোকও নন, (৪) বে-আমল ফাসিকও নন, (৫) অথবা বদ্-
ইতিকাদ বিদআতীও নন তাকে ‘আদ্ল' বা আদিল বলে।] যাব্ত
যে শক্তি দ্বারা মানুষ শ্রæত বা লিখিত বিষয়কে বিস্মৃতি বা বিনাশ হতে রক্ষা করতে পারে এবং যখন ইচ্ছা তখন তাকে
সঠিকভাবে স্মরণ করতে পারে তাকে ‘যাব্ত' বা (স্মরণশক্তি) বলে। আর এ গুণ সম্পন্ন ব্যক্তিকে যাবিত বলে।
ছিকাহ
যে ব্যক্তির মধ্যে ‘আদালত' ও ‘যাব্ত' উভয় গুণ পরিপূর্ণভাবে বিদ্যমান তাকে ‘ছিকাহ' বলে।
সহীহাইন
হাদিস গ্রন্থসমূহের মধ্যে বুখারী ও মুসলিমকে স্থান সর্বোচ্চে। তাই বুখারী ও মুসলিমকে একসঙ্গে সহীহাইন বলে।
সুনানে আরবা'আ
‘সিহাহ সিত্তা'র অপর চারখানা গ্রন্থ যথাক্রমে আবু দাউদ, তিরমিযি, নাসায়ি ও ইবনে মাজাহকে এক সঙ্গে সুনানে র্আবা'আ
বলে।
জামি
যে হাদিস গ্রন্থে আকাইদ, সিয়ার, তাফসীর, ফিতান, আহকাম, আদাব, রিকাক ও মানাকিব এ আটটি প্রধান অধ্যায়ে
সন্নিবেশিত হয়েছে তাকে জামি বলে। যেমন, জামি সহীহ বুখারী, জামি তিরমিযি।
সুনান
যে হাদিস গ্রন্থে হাদিসকে ফিকাহ শাস্ত্রের ন্যায় সাজানো হয়েছে; কিন্তু সেখানে কেবল তাহারাত, নামায, রোযা প্রভৃতি
আহ্কামের হাদিসসমূহ সংগ্রহের দিকেই বেশি নজর দেওয়া হয়েছে তাকে সুনান বলে। যেমন- সুনানে আবূ দাউদ, সুনানে
ইবনে মাজাহ, সুনানে দারিমী।
মুস্নাদ
যে হাদিস গ্রন্থে সাহাবিদের থেকে বর্ণিত হাদিসমূহ তাঁদের নামের ....... অনুযায়া বিন্যস্ত করা হয়েছে তাকে ‘মুস্নাদ'
বলে। যেমন, মুস্নাদে ইমাম আহমাদ ইবনে হাম্বল, মুসনাদে তাআলিছী ইত্যাদি।
মু‘জাম
যে হাদিস গ্রন্থে হাদিসমূহকে শাইখ বা উস্তাদদের নামানুসারে সন্নিবেশিত করা হয়েছে, তাকে মু‘জাম বলে। যেমন, মুজামে
তাবারানী।
রিসালাহ
যে ক্ষুদ্র হাদিস গ্রন্থে মাত্র একটি বিষয়ের সমস্ত হাদিসকে সন্নিবেশিত করা হয়েছে, তাকে ‘রিসালাহ' বা ‘জুয' বলে। যেমনকিতাবুত তাওহিদ (ইবনে খুযাইমা)। এ হাদিস গ্রন্থে তাওহিদ সম্পর্কিত হাদিসসমূহ একত্র করা হয়েছে।
রিজাল
হাদিসের বর্ণনাকারী সমষ্টিকে ‘রিজাল' বলে।
ইলমে আসমাউর রিজাল
যে শাস্ত্রে রাবীদের জীবনী বর্ণনা করা হয়েছে তাকে ‘ইলমে আস্মাউর রিজাল' চরিত বিজ্ঞান বলে। এ শাস্ত্রে হাদিসের
বর্ণনাকারীদের ব্যক্তিগত ও সামাজিক জীবন, তাঁদের লেখাপড়া ও পাÐিত্য, তাঁদের শিক্ষকদের ইল্মী অবস্থা, তাঁদের
ছাত্রদের অবস্থা, জ্ঞানার্জনের জন্য তাঁদের পরিশ্রম ও সফর, তাঁদের নৈতিক চরিত্র, তাঁদের সত্যবাদী বা মিথ্যাবাদী হবার
ব্যাপারে ‘ইলমে হাদিস' বিশেষজ্ঞদের মতামত ইত্যাদি অবস্থার বিষয় আলোচিত ও পর্যালোচিত হয়।
মুত্তাফাকুন আলাইহি
মুত্তাফাকুন শব্দের অর্থ একমত, ঐকমত্য। আর আলাইহি শব্দের অর্থ ওপর। সুতরাং, মুত্তাফাকুন আলাইহি- এর অর্থ হচ্ছে
‘তার ওপর একমত বা ঐকমত্য’। যে সকল হাদিস একই সাহাবি থেকে এক ও অভিন্ন সূত্রে ইমাম বুখারী (র) ও ইমাম
মুসলিম (র) বর্ণনা করেছেন তাকে মুত্তাফাক আলাইহি বা ঐকমত্যে বর্ণিত হাদিস বলা হয়। এ জাতীয় হাদিসের গুরুত্ব বা
গুণগত বৈশিষ্ট্য উচ্চ মর্যাদাসম্পন্ন এবং প্রমাণ ও দলিলের দিক থেকে অগ্রগণ্য। সিহাহ সিত্তাহ
সিহাহ (صحاح (শব্দটি (صحيح (সহীহ শব্দের বহুবচন। অর্থ বিশুদ্ধ, নির্ভুল, সহীহ। আর সিত্তাহ মানে ছয়। সুতরাং
‘সিহাহ সিত্তাহ' বলা হয় হাদিস শাস্ত্রের সেই ছয়খানা নির্ভুল ও প্রামাণ্য সংকলনকে, যার বিশুদ্ধতা সর্বজনস্বীকৃত। হিজরি
তৃতীয় শতাব্দী ছিল হাদিস চর্চা, লিখন, পরীক্ষণ-নিরীক্ষণ ও সংকলনের সোনালী যুগ। এ শতাব্দীতে যে ছয়খানি
নির্ভরযোগ্য, প্রামাণ্য এবং সর্বজনস্বীকৃত হাদিস গ্রন্থ সংকলিত হয়েছে, সেগুলোকেই একত্রে ‘সিহাহ সিত্তাহ' বলা হয়।
এগুলো হলোসহীহ বুখারী, সহীহ মুসলিম, জামে তিরমিযী, সুনানে আবু দাউদ, সুনানে নাসায়ি ও সুনানে ইবনে মাজাহ।
সারসংক্ষেপ
হাদিসের পবিভাষাসমূহ জানা থাকলে হাদিসের জ্ঞান সহজে বুঝা যায়। অতএব হাদিসের পরিভাষাগুলো জানা হাদিস
পাঠকদের জন্য আবশ্যক।
বহু নির্বাচনী প্রশ্ন
১। সনদ শব্দের অর্থ কী ?
(ক) হাদিস বর্ণনাকারীদের বর্ণনার সূত্র (খ) হাদিস বর্ণনাকারী
(গ) হাদিস বর্ণনাকারীর সংখ্যা (ঘ) হাদিসের ভাষা
২। মতন শব্দের অর্থ কী ?
(ক) হাদিস বর্ণনাকারীদের বর্ণনার সূত্র (খ) হাদিসের মূল বক্তব্য
(গ) হাদিস বর্ণনাকারীর সংখ্যা (ঘ) হাদিসের ভাষা
৩। রাদিআল্লাহু আনহু শব্দের অর্থ কী ?
(ক) আল্লাহর প্রতি সšুÍষ্ট (খ) আল্লাহর প্রতি বান্দার সন্তুষ্ট
(গ) আল্লাহ তার প্রতি সšুÍষ্ট (ঘ) আল্লাহ সবার প্রতি সন্তষ্ট
৪। মুহাদ্দিস শব্দের অর্থ কী ?
(ক) হাদিস বর্ণনাকারী (খ) হাদিস সংরক্ষণকারী
(গ) হাদিস সংকলনকারী (ঘ) হাদিস বিশেষজ্ঞ
৫। সুনানে আরবা‘আ অর্থ কী ?
(ক) চারখানা সুনান গ্রন্থ (খ) পাঁচখানা সুনান গ্রন্থ
(গ) ছয়খানা সুনান গ্রন্থ (ঘ) সাতখানা সুনান গ্রন্থ
৬। সিহাহ সিত্তাহ হলোর. ছয়টি বিশুদ্ধ গ্রন্থ রর. বুখারী, মুসলিম ররর.আবু দাউদ, নাসাঈ
নিচের কোনটি সঠিক ?
(ক) র (খ) র ও রর
(গ) রর ও ররর (ঘ) র, রর ও রররপাঠ-৯: ইমাম বুখারী (র)
FOR MORE CLICK HERE
এইচএসসি বাংলা নোট ১ম পত্র ও ২য় পত্র
ENGLISH 1ST & SECOND PAPER
এইচএসসি আইসিটি নোট
এইচএসসি অর্থনীতি নোট ১ম পত্র ও ২য় পত্র
এইচএসসি পৌরনীতি ও সুশাসন ১ম পত্র
এইচএসসি পৌরনীতি নোট ২য় পত্র
এইচএসসি সমাজকর্ম নোট ১ম পত্র
এইচএসসি সমাজকর্ম নোট ২য় পত্র
এইচএসসি সমাজবিজ্ঞান নোট ১ম পত্র ও ২য় পত্র
এইচএসসি ইতিহাস নোট ১ম পত্র
এইচএসসি ইতিহাস নোট ২য় পত্র
এইচএসসি ইসলামের ইতি. ও সংস্কৃতি নোট ১ম পত্র
এইচএসসি ইসলামের ইতি. ও সংস্কৃতি নোট ২য় পত্র
এইচএসসি যুক্তিবিদ্যা ১ম পত্র ও ২য় পত্র
এইচএসসি ভূগোল ও পরিবেশ নোট ১ম পত্র ও ২য় পত্র
এইচএসসি ইসলামিক স্টাডিজ ১ম ও ২য় পত্র