ঈমানদার, মুহাব্বাত, সাহাবায়ে কিরাম, রাসূলের আদর্শ, ওলাদ, ওয়ালিদ।
অনুবাদ
৩. হযরত আনাস (রা) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (স) বলেছেন : তোমাদের কেউ ঈমানদার হতে পারবে না,
যতক্ষণ পর্যন্ত না আমি [মুহাম্মদ (স)] তার-নিকট তার পিতা, সন্তানাদি এবং সমস্ত মানুষ অপেক্ষা অধিকতর প্রিয় না হব।
(বুখারি ও মুসলিম)
শব্দার্থ
لايومن-ঈমানদার হবে না, ঈমান আনবে না, বিশ্বাস করবে না। احدكمে -তামাদের কেউ। كون ا-আমি হই। احب -
বেশি প্রিয়, অধিক প্রিয়। والده - তার পিতা-মাতা। ولد-সন্তান। اجمعين والناس - এবং সকল মানুষ।
ব্যাখ্যা
একজন মানুষকে প্রকৃত মুমিন-মুসলিম হতে হলে রাসূলুল্লাহ (স)-এর প্রতি কী পরিমাণ ভালোবাসা, শ্রদ্ধা, ভক্তি, আনুগত্য
ও ত্যাগের মনোভাব পোষণ করতে হবে তা এ হাদিসে বর্ণনা করা হয়েছে। রাসূলুল্লাহ (স)-কে নিজের ও অন্যান্য
আপনজনের জীবনের চেয়েও বেশি ভালোবাসতে হবে। মনে দৃঢ় বিশ্বাস রাখতে হবে যে, তিনি এই আনুগত্য ও ভালোবাসা
পাওয়ার একমাত্র হকদার। আল্লাহ তা‘আলা কুরআনে এ মর্মে ঘোষণা করেছেন:
“ নবী মুমিনদের নিকট নিজেদের অপেক্ষা ঘনিষ্ঠতর” (সূরা আহযাব- ৩৩ : ৬)
রাসূলুল্লাহ (স)-এর প্রতি ভালোবাসা ও আনুগত্যের প্রকৃত উদাহরণ সাহাবায়ে কিরাম তাঁদের জীবন উৎসর্গ করে রেখে
গেছেন। রাসূলুল্লাহ (স)-এর আহŸানে তাঁরা নিজেদের সমস্ত ধন-সম্পদ ব্যয় করেছেন, তাঁকে রক্ষা করার জন্য লড়াইয়ের
ময়দানে জীবন দিয়েছেন। আনুগত্য করতে গিয়ে জীবনের আরাম-আয়েশ বিসর্জন দিয়েছেন। স্ত্রী-পুত্র-পরিজন ত্যাগ করে
রাসূলের (স) সঙ্গী হয়েছেন। নিজেদের জন্মভ‚মির মায়া ত্যাগ করে হিজরত করেছেন। রাসূলুল্লাহ (স)-কে তাঁর চাচা আবু
তালিবও ভালোবাসতেন। কিন্তু তাঁর এ ভালোবাসা ভাতিজা হিসেবে ছিল, রাসূলুল্লাহ হিসেবে ছিল না।
রাসূলুল্লাহ (স)-কে অধিক ভালোবাসার অর্থ পিতা-মাতা, ছেলে-মেয়ে ও আত্মীয়-স্বজনকে ঘৃনা করা কিংবা উপেক্ষা করা নয়
; বরং এর অর্থ হল প্রয়োজনের সময় এদের আকর্ষণ পরিত্যাগ করে রাসূলুল্লাহ (স)-এর আহŸানে সাড়া দেওয়া।
দৃষ্টান্তস্বরূপ বলা যায় যে, যখন কোন লোক অসুস্থ ছেলেমেয়েকে বাসায় রেখে চাকরি ক্ষেত্রে, ব্যবসায় ক্ষেত্রে ও অন্যান্য
জরুরি কাজ সম্পাদনের জন্য চলে যায়; তখন এ কথা বলা হয় না যে, ছেলেমেয়ের জন্য তার অন্তরে দরদ নেই। এর দ্বারা
ক্ষুদ্রতম স্বার্থকে বৃহত্তম স্বার্থের জন্য ত্যাগ করা বুঝায়।
শিক্ষা
আমাদেরকে এ হাদিস থেকে এ শিক্ষা গ্রহণ করতে হবে যে১. আল্লাহর রাসূলুল্লাহ (স)-কে সকলের চেয়ে বেশি ভালোবাসতে হবে।
২. রাসূলুল্লাহ (স)-এর আদর্শকে মুক্তির একমাত্র পথ বলে গ্রহণ করতে হবে।
৩. রাসূলুল্লাহ (স)-কেই একমাত্র আদর্শ নেতা হিসেবে জীবনের সকল ক্ষেত্রে তাঁকে অনুসরণ করতে হবে।
৪. রাসূলুল্লাহ (স)-এর আদর্শ নিজ জীবন ও সমাজে চালু করার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা-সংগ্রাম চালাতে হবে।
৫. তাঁকে পিতা-মাতা, সন্তান-সন্ততি, স্ত্রী-পরিজন এক কথায় সবার চেয়ে রাসূলুল্লাহ (স)-কে সবার ওপরে স্থান দিতে
হবে।
৬. রাসূলুল্লাহ (স)-এর ভালোবাসাকে সমুন্নত রাখার নিমিত্তে সবকিছু বিলিয়ে দেওয়ার জন্য সর্বদা ও প্রস্তুত থাকতে হবে।
এসবই এ হাদিসের মূল শিক্ষা।
সারসংক্ষেপ
রাসূলুল্লাহ (স)-কে ভালোবাসার অর্থ হচ্ছে- ১. তাঁর আদর্শ গ্রহণ, ২. পালন, ৩. রক্ষা করা, ৪. এর জন্য জীবন উৎসর্গ
করা, ৫. তাঁর আনীত শরীআতকে ধ্বংসের কবল হতে রক্ষা করা, নবি (স) এর সন্তুষ্টির উদ্দেশে নিজের ধন-সম্পদ এবং
জীবন উৎসর্গ করা। পিতামাতা, সন্তানাদি ও অপরাপর মানুষের ওপর রাসূলুল্লাহ (স)-এর মর্যাদা অনুভব করতে না
পারলে ইমানের পূর্ণতা ও পরিপক্কতা অর্জিত হয় না।
বহু নির্বাচনী প্রশ্ন
১। ‘ওয়ালাদুন’ শব্দের অর্থ কী ?
(ক) পিতা (খ) সন্তান
(গ) মাতা (ঘ) ভাই
২। ‘বিশ্বাসীদের নিকট তাদের জীবনের চেয়েও কে বেশি প্রিয় ?
(ক) সাহাবায়ে কিরাম (রা) (খ) হযরত আবূ বকর (রা)
(গ) রাসূলুল্লাহ (স) (ঘ) হযরত ফাতেমা (রা)
৩। ঈমানদারের একমাত্র আদর্শিক নেতা কে ?
(ক) রাসূলুল্লাহ (স) (খ) হযরত আবূ বকর
(গ) সাহাবায়ে কিরাম (ঘ) হযরত ফাতেমা (রা)
৪। রাসূলুল্লাহ (স) এর প্রতি ভালোবাসার অর্থ হলো -
র. তাঁর আদর্শ গ্রহণ করা রর. তাঁর জন্য জীবন উৎসর্গ করা
ররর. তাঁর শরীআতকে ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা করা
নিচের কোন্টি সঠিক ?
(ক) র (খ) র ও রর
(গ) রর ও ররর (ঘ) র, রর ও ররর
নিচের উদ্দীপকটি পড়–ন ৫ ও ৬নং প্রশ্নের উত্তর দিনবিশ্ববাসীদের নিকট তাদের জীবনের চেয়েও মহানবী (স) অধিক প্রিয়।
৫। মহানবীকে ভালোবাসা কিসের অংশ ?
(ক) ইমানের অংশ (খ) অমানতদারীতার অংশ
(গ) আদলের অংশ (ঘ) অঙ্গীকারের অংশ
৬। রাসূলুল্লাহ (সা এর ভালোবাসা পেতে হলে অমাদের করনীয়র. রাসূলকে সকল মানুষের চেয়ে বেশি ভালোবাসা রর. রাসূলের আদর্শকে গ্রহণ করা
ররর. রাসূলুল্লাহ (স) যা নিষেধ করেছেন তা থেকে বিরত থাকা।
নিচের কোনটি সঠিক ?
(ক) র ও রর (খ) রর ও রর
(গ) র ও ররর (ঘ) র, রর ও ররর
সৃজনশীল প্রশ্ন
উদ্দীপক,
মুহাদ্দিস মাওলানা আসমত হাদিসের দরস দিতে গিয়ে ছাত্রদের উদ্দেশে বলেন, তোমরা তোমাদের স্ত্রী, সন্তানসন্ততি, পিতা-মাতা, ভাই-বোন, দাদা-দাদী, নানা-নানী, আত্মীয়-স্বজন, শিক্ষক এমনকি প্রতিবেশীকেও
ভালোবাসবে। তবে এ ভালোবাসার গভীরতা আমাদের প্রিয় নবী (স)-এর চেয়ে বেশি হতে পারবে না। তাই
মহানবী (স)-এর প্রতি পূর্ণ আনুগত্য প্রকাশ করবে। প্রাপ্য অধিকার অনুযায়ী অন্যান্য মানুষের প্রতিও যথাযথ
সম্মান প্রদর্শন করবে।
ক. মুহাব্বত কী ? ১
খ. রাসূলুল্লাহ (স)-এর প্রতি ভালোবাসার পাঁচটি পদ্ধতি উল্লেখ করুন। ২
গ. রাসূলুল্লাহ (স) এর প্রতি সাহাবায়ে কিরাম কীভাবে ভালোবাসা প্রদর্শন করেছিলেন ? ৩
ঘ. উদ্দীপকে মুহাদ্দিস সাহেবের বক্তব্য হাদিসের আলোকে বিশ্লেষণ করুন। ৪
উত্তরমালা: ১। ক ২। গ ৩। ক ৪। ঘ ৫। ক ৬। ঘ পাঠ-৪: হাদিস-৪ : মুনাফিকের পরিচয়
FOR MORE CLICK HERE
এইচএসসি বাংলা নোট ১ম পত্র ও ২য় পত্র
ENGLISH 1ST & SECOND PAPER
এইচএসসি আইসিটি নোট
এইচএসসি অর্থনীতি নোট ১ম পত্র ও ২য় পত্র
এইচএসসি পৌরনীতি ও সুশাসন ১ম পত্র
এইচএসসি পৌরনীতি নোট ২য় পত্র
এইচএসসি সমাজকর্ম নোট ১ম পত্র
এইচএসসি সমাজকর্ম নোট ২য় পত্র
এইচএসসি সমাজবিজ্ঞান নোট ১ম পত্র ও ২য় পত্র
এইচএসসি ইতিহাস নোট ১ম পত্র
এইচএসসি ইতিহাস নোট ২য় পত্র
এইচএসসি ইসলামের ইতি. ও সংস্কৃতি নোট ১ম পত্র
এইচএসসি ইসলামের ইতি. ও সংস্কৃতি নোট ২য় পত্র
এইচএসসি যুক্তিবিদ্যা ১ম পত্র ও ২য় পত্র
এইচএসসি ভূগোল ও পরিবেশ নোট ১ম পত্র ও ২য় পত্র
এইচএসসি ইসলামিক স্টাডিজ ১ম ও ২য় পত্র