পুকুরে খাদ্য সরবরাহ : পুকুরে প্রাকৃতিক খাদ্য পর্যাপ্ত পরিমাণ না থাকলে অধিক পরিমাণে সম্পূরক খাদ্য
সরবরাহ করতে হয় এবং প্রাকৃতিক খাদ্য বেশি পরিমাণ থাকলে কম পরিমাণ খাদ্য সরবরাহ করতে হয়।
পুকুরের পানির গুণাগুণের সাথে সাথে খাবারের পরিমাণের সম্পর্ক রয়েছে। পুকুরে যেসব খাদ্য সরবরাহ করা হয় তার
সবটুকু মাছ সরাসরি খাদ্য হিসেব গ্রহণ করতে পারে না। খাদ্যের কিছু অংশ পানিতে মিশে পানির গুণাগুণকে প্রভাবিত
করে। এতে করে অনেক সময় পানির গুণাগুণ খারাপ হতে পারে, ফলে মাছের মৃত্যুও হতে পারে। পুকুরের পানির গুণাগুণ
ঠিক রাখার কোন সুব্যবস্থা না থাকলে প্রতি একরে ১৫ কেজির বেশি খাবার দেয়া ঠিক না। সেক্কি ডিস্কের পাট ১০ সে.মি.
এর কম হলে পুকুরে খাবার সরবরাহ বন্ধ রাখতে হবে। সেক্কি ডিস্কের পাট পুনরায় ২০ সে. মি.বা তার অধিক হলে আবার
খাদ্য সরবরাহ করতে হবে।
ঘেরে সম্পূরক খাদ্য প্রয়োগ পদ্ধতি
খাদ্য প্রয়োগ পদ্ধতি : পুকুরে গলদা চিংড়ির পোনাকে তাদের ওজনের শতকরা ৩-৫ ভাগ দৈনিক ২ বার সূর্যোদয় ও
সূর্যাস্তের সময় খাবার দেয়া ভাল। খাদ্য পিলেটগুলোকে পুকুরের পাড়ের চারপাশে ছিটিয়ে দিলে ভালো হয়। সন্ধ্যায় সমস্ত
চিংড়ি পুকুর পাড়ের নিকট দিয়ে খাদ্যের সন্ধানে ঘোরাফেরা করে। ছোট ছোট ভাসমান খাঁচা বা নাইলন জাল পাতলা
পুরাতন কাপড় দিয়ে তৈরি করা যায়। ৩ ২ ১ বাঁশের খাঁচা তৈরি করে নিচে সূ² ফাঁসের জাল বা কাপড় দিতে হয়। এ
প্রক্রিয়ায় চিংড়ি খাদ্য খেয়েছে কি না জানা যায়। সরবরাহকৃত খাদ্য যদি চিংড়ি গ্রহণ না করে তাহলে পানির গুণাগুণ নষ্ট
হয়। চিংড়ির খাদ্য তৈরির পর এদের গ্রহণযোগ্যতা যাচাই করে দেখার প্রয়োজন। সাধারণত খাবার ও চিংড়ির দেহের
বৃদ্ধির অনুপাত ২ ঃ ১ হলেই চিংড়ির ভাল ও উপযোগী খাবার বলে গণ্য করা হয়।
খাদ্য প্রয়োগ পদ্ধতি
১. চিংড়ি সাধারনত: রাতে খাবার গ্রহন করে। তাই চিংড়ির খাবারকে সন্ধ্যা বা রাত্রিতে প্রয়োগ করতে হবে।
২. চিংড়ির দেহ ওজনের অনুপাতে নির্দিষ্ট পরিমাণে খাবার দিতে হবে।
৩. পিলেট জাতীয় খাবার পুকুরের চারিদিকে পাড়ের কাছাকাছি ছিটিয়ে দিতে হবে।
৪. বাঁশের খাঁচায় খাদ্য সরবরাহ করা হলে ৩২১ মিটার আকৃতির বাঁশের খাঁচা তৈরী করে তাতে সম্পূরক খাবার
প্রয়োগ করতে হবে।
৫. মাঝে মাঝে ঘের/পুকুরে জাল টেনে চিংড়ির স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে খাবার প্রয়োগের অনুপাত কম-বেশী করতে হবে।
খাদ্য প্রয়োগ পদ্ধতি
মাছ চাষের ক্ষেত্রে খাদ্য প্রয়োগ পদ্ধতি খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। খাদ্য প্রয়োগের মূল উদ্দেশ্য হলো মাছের অধিক উৎপাদন
নিশ্চিত করা। মাছের খাদ্যভাস ও মাছ চাষ পদ্ধতির ওপর খাদ্য প্রয়োগ পদ্ধতি নির্ভরশীল। মাছ চাষ নিবিড় না আধা নিবিড়
তার ওপর নির্ভর করে খাদ্যের প্রয়োগ মাত্রা। প্রয়োগকৃত খাবারের সবটুকু মাছ গ্রহণ করলেই কেবল অধিক লাভ নিশ্চিত
হওয়া সম্ভব। মাছের খাদ্য গ্রহণ মাছের আকারের ওপর নির্ভরশীল। মাছের আকার বৃদ্ধির সাথে সাথে খাবার গ্রহণের
পরিমান ও মাত্রা কমতে থাকে। পানির তাপমাত্রা ও দ্রবীভ‚ত অক্সিজেনের ওপরও মাছের খাদ্য গ্রহণের মাত্রা নির্ভরশীল।
পানির তাপমাত্রা বাড়লে খাদ্য গ্রহণের মাত্রা বাড়ে। তবে মাত্রাতিরিক্ত তাপমাত্রায় খাবার প্রয়োগের মাত্রা কমিয়ে দিতে
হবে।
নমুনায়নের মাধ্যমে মাছের গড় ওজন ঠিক করে মাছের খাদ্য প্রয়োগের মাত্রা নির্ণয় করতে হয়। সাধারণত মাছের দেহের
ওজনের ৩-৫% খাবার প্রয়োগ করা হয়। ছোট আকারের মাছের জন্য খাদ্য প্রয়োগের মাত্রা বড় মাছের তুলনায় ঘন ঘন
হতে হবে।
মাছকে প্রধানত: তিন ভাবে খাদ্য প্রয়োগ করা যায় যথা- ১। হাত দিয়ে খাওয়ানো, ২। চাহিদা অনুযায়ী খাওয়ানো এবং ৩।
স্বয়ংক্রিয়ভাবে। আমাদের দেশে এখনো হাত দিয়ে খাওয়ানো পদ্ধতিই বহুল প্রচলিত। অন্য ২টি পদ্ধতি বানিজ্যিক ভিত্তিতে
মাছ চাষের ক্ষেত্রে অনেক দেশে ব্যবহৃত হয়। হাত দিয়ে খাবার প্রয়োগ শ্রম সাধ্য ও সময় সাপেক্ষ। তথাপি এ পদ্ধতির
কতগুলো সুবিধা রয়েছে। এ পদ্ধতিতে খাবারের প্রতি মাছ কিরূপ সাড়া দেয় তা খাদ্য প্রয়োগকারী স্বচক্ষে দেখতে পারে যা
মাছ চাষে বেশ গুরুত্বপূর্ণ। ভিজা খাবার প্রয়োগের ক্ষেত্রে হাত ছাড়া অন্য পদ্ধতি কষ্টসাধ্য। একই ব্যক্তি হাত দিয়ে প্রতিদিন
খাবার প্রয়োগ করলে মাছগুলো ঐ ব্যক্তির উপস্থিতিতে পরিচিত ও অভ্যস্ত হয়ে উঠে।
সাধারণত পুকুরের কোন নির্দিষ্ট স্থানে মাছকে খাবার দিতে হয়। এর ফলে মাছ অল্প দিনের মধ্যে জেনে যায় পুকুরের কোন
জায়গায় গেলে সহজে খাবার পাওয়া যাবে। কিছু দিন একস্থানে খাবার প্রয়োগের পর আবার অন্য স্থানে কিছুদিন খাবার
দেয়া ভালো। একই স্থানে সবসময় খাবার দিলে অব্যবহৃত খাবার জমে পঁচে বিষাক্ত গ্যাস সৃষ্টি হতে পারে। তাই কিছুদিন
পর পর পরীক্ষা করে দেখতে হবে মাছ সব খাবার খেয়েছে কিনা। উপরের অংশ খোলা এরূপ বাক্সে বা পাত্রেও খাবার
প্রয়োগ করা যায় । এতে মাঝে মাঝে দেখা যায় মাছ সমস্ত খাবার খেয়েছে কি না। একদিনের খাবার একবারে না দিয়ে
সকালে ও বিকালে অথবা সকালে, দুপুরে ও বিকালে (৩ বারে) দেওয়া উত্তম। নার্সারি পুকুরে পোনা মাছের ক্ষেত্রে পাউডার
বা দানাদার খাদ্য মাছের দেহের ওজনের ১০-১৫% হারে প্রতিদিন ৩-৪ বার পুকুরের চার পাশে ৩-৪টি নির্দিষ্ট স্থানে
ছড়িয়ে দিতে হবে। মিশ্র চাষের ক্ষেত্রে দানাদার খাদ্য মাছের দেহের ওজনের ৩-৫% হারে প্রতিদিন ২-৩ বার পুকুরের চার
পাশে ৩-৪টি স্থানে ছিটিয়ে দিতে হবে।
সম্পূরক খাদ্য প্রয়োগ পদ্ধতি
পুকুর বা জলাশয়ে মজুদকৃত মাছের দৈহিক ওজন অনুযায়ী খাবার দিতে হয়। মাছ কী পরিমান খাবার গ্রহণ করেছে তার
পরিমাণ নির্ধারণ করে সঠিক মাত্রায় খাদ্য প্রয়োগ করতে হয়। কার্প জাতীয় মাছের ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় খাদ্য গোলাকার পিন্ড
আকারে এবং মাংসাশী ও রাক্ষুসে মাছের ক্ষেত্রে পিলেট আকারে দিলে ভালো ফল পাওয়া যায়। একই সাথে পুকুরের
বিভিন্ন স্থানে খাদ্য দিতে হবে। খাদ্য দ্রব্য সরাসরি ছিটিয়ে না দিয়ে ডুবন্ত খাবার ট্রে বা পাটাতনে দিতে হবে। প্রতিদিন
নির্দিষ্ট স্থানে, নির্দিষ্ট সময়ে খাদ্য দিতে হবে। প্রতিদিনের প্রয়োজনীয় খাদ্য একবারে না প্রয়োগ করে কয়েকবারে ভাগ করে
প্রয়োগ করলে ভালো ফল পাওয়া যায়। প্রতি দিনের জন্য প্রয়োজনীয় খাদ্য সম্ভব হলে ভাগ করে তিন বারে দিলে ভালো।
অল্প পরিমানে ও বেশিবার খাবার প্রয়োগ করলে খাবারের অপচয় হয় না। খাদ্য দিনের আলোতে দিতে হবে। সূর্যোদয়ের
আগে বা সূর্যাস্তের পরে খাদ্য দেওয়া ঠিক নয়।
মাছের খাদ্য স্বভাব
বিভিন্ন প্রজাতির মাছের খাদ্য স্বভাব বিভিন্ন ধরনের। বাংলাদেশে চাষযোগ্য প্রজাতির মাছগুলো পুকুরে বা জলাশয়ের
প্রধানত: তিনটি স্তরের খাবার গ্রহণ করে থাকে। উপরের স্তর, মধ্যের স্তর এবং নিচের স্তর। উপরের স্তরে যেসব মাছ খাদ্য
গ্রহণ করে থাকে সেগুলো হলো কাতলা, সিলভার কার্প। রুই মাছ মাঝের স্তরের খাবার গ্রহণ করে থাকে। মৃগেল, মিরর
কার্প ও কমন কার্প (কার্পিও) নিচের স্তরের খাবার গ্রহণ করে থাকে। গ্রাস কার্প ও সরপুঁটি বিভিন্ন স্তুরের খাবার গ্রহণ করে
থাকে।
কাতলা মাছ কিশোর ও পূর্ণ বয়স্ক উভয় ক্ষেত্রেই প্রাণিজ প্ল্যাঙ্কটন খায়। তবে কিছু কিছু শৈবালও খেয়ে থাকে। রুই মাছ
পানির মধ্যভাগের খাবার গ্রহণ করে বিধায় একে কলাম ফিডার বলা হয়। রুই মাছ উদ্ভিদভ‚ক্ত মাছ। এরা ছোট অবস্থায় শুধু
প্রাণিজ প্ল্যাঙ্কটন এবং বড় অবস্থায় প্ল্যাঙ্কটন ও পঁচনশীল জৈব পদার্থ খেয়ে থাকে। মৃগেল মাছ বয়স্ক অবস্থায় সাধারণত
তলদেশের জৈব পদার্থ খেয়ে থাকে। তবে এরা প্লাঙ্কটনও খেয়ে থাকে। সিলভার কার্প ছোট অবস্থায় রোটিফার নামক
জুওপ্লাঙ্কটন এবং বড় অবস্থায় ফাইটোপ্লাঙ্কটন খেয়ে থাকে। গ্রাস কার্প ছোট অবস্থায় প্রাণিজ প্লাঙ্কটন এবং বড় অবস্থায়
জলজ আগাছা খেয়ে থাকে।
কমন কার্প বা কার্পিও মাছ সর্বভ‚ক। এরা পুকুরের তলদেশের খাবার খেয়ে থাকে। এরা ১০ সে.মি. লম্বা হলেই এক বিশেষ
খাদ্যভ্যাস গ্রহণ করে। এরা গব গব করে কাদা মুখে নেয় এবং উহার জৈব অংশ ছেকে নিয়ে বাকীটুকু ফেলে দেয়। ফলে
কার্পিও মাছ যে পুকুরে চাষ করা হয় সে পুকুরের পানি সব সময় খোলা থাকে। তেলাপিয়া মাছ কিশোর অবস্থায় সর্বভ‚ক্ত।
এরা ফাইটোপ্লাঙ্কটন ও জুপ্লাঙ্কটনকে প্রধান খাদ্য হিসেবে ব্যবহার করে থাকে। শোল, গজার, বোয়াল, আফ্রিকান মাগুর
এগুলো রাক্ষুসে মাছ বিধায় এদের খাদ্য স্বভাব ভিন্ন হয়। এরা ছোট অবস্থায় জুপ্লাঙ্কটন খেয়ে থাকে বড় অবস্থায় শামুক,
কীটপতঙ্গ ও ছোট ছোট মাছ খেয়ে থাকে। তাছাড়াও ফিশ মিল, সরিষার খৈল, চালের কুড়া, গমের ভ‚ষি প্রভৃতি সম্পূরক
খাদ্যও এরা গ্রহণ করে থাকে।
সারসংক্ষেপ
অধিক উৎপাদনের লক্ষ্যে প্রাকৃতিক খাদ্য যোগানের পাশাপাশি পুকুর বা জলাশয়ের বাইরে থেকে মাছকে যে
খাদ্য দেওয়া হয় তাকেই সম্পূরক খাদ্য বলে। পুকুরে প্রাকৃতিক খাদ্য পর্যাপ্ত পরিমাণে না থাকলে অধিক
পরিমাণে সম্পূরক খাদ্য প্রয়োগ করতে হয়। পুকুর বা জলাশয়ে মজুতকৃত মাছের দৈহিক ওজন অনুযায়ী খাবার
দিতে হয়। প্রতিদিন নির্দিষ্ট স্থানে নির্দিষ্ট সময়ে খাদ্য দিতে হবে। বিভিন্ন প্রজাতির মাছের খাদ্য স্বভাব বিভিন্ন
ধরনের। বাংলাদেশে চাষযোগ্য প্রজাতির মাছগুলো পুকুর বা জলাশয়ের প্রধানত: তিনটি স্তর থেকে খাবার গ্রহণ
করে থাকে। যেমন- উপরের স্তর, মধ্যের স্তর এবং নীচের স্তর।
পাঠোত্তর মূল্যায়ন-৩.৪
বহুনির্বাচনি প্রশ্ন
সঠিক উত্তরের পাশে টিক (√) চিহ্ন দিন।
১। রুই জাতীয় মাছের ক্ষেত্রে মজুতকৃত মাছের মোট ওজনের শতকরা কতভাগ হারে প্রতিদিন সম্পূরক খাদ্য প্রয়োগ
করতে হয়?
ক) ১-২% খ) ৩-৫%
গ) ৫-৬% ঘ) ৬-৭%
২। নিচের কোন মাছ পানির মধ্য স্তর থেকে খাবার গ্রহণ করে থাকে?
ক) কাতলা খ) সিলভার কার্প
গ) রুই ঘ) মৃগেল
ব্যবহারিক : মাছের সুষম সম্পূরক খাদ্য তৈরি ও প্রয়োগ পদ্ধতি
মাছের সুষম সম্পূরক খাদ্য তৈরিকরণ :
মূলতত্ত¡ : মাছের দ্রæত বৃদ্ধি ও অধিক উৎপাদন নিশ্চিত করার জন্য প্রাকৃতিক খাদ্য যথেষ্ট নয়। এই ঘাটতি পূরণে
সম্পূরক খাদ্যের প্রয়োজন হয়। মাছের জন্য বাইরে থেকে যে খাদ্য পুকুরে দেওয়া হয় তাকে সম্পূরক খাদ্য বলে। এই
খাদ্যে মাছের প্রয়োজনীয় শ্বেতসার, আমিষ, খনিজ লবণ, ¯েœহ ইত্যাদি সঠিক পরিমাণ থাকে।
প্রয়োজনীয় উপকরণ :
(ক) ফিশমিল, (খ) মাছের গুঁড়া, (গ) চালের কুঁড়া, (ঘ) সরিষার খৈল, (ঙ) গম, (চ) বালতি, (ছ) ভিটামিন ও খনিজ
মিশ্রণ, (জ) চিটাগুড়, (ঝ) পানি ইত্যাদি।
খাদ্যের উপকরণের তালিকা
খাদ্য উপকরণের পরিমাণ
১. চালের কুড়াঁ ৩.৩০ কেজি
২. গম ২.০০ কেজি
৩. সরিষার খৈল ৩.০৫ কেজি
৪. মাছের গুড়া ১.০০ কেজি
৫. চিটাগুড় ৬০০ গ্রাম
৬. ভিটামিন ও খনিজ মিশ্রণ ৫০ গ্রাম
মোট ১০ কেজি
কার্যপদ্ধতি :
১. প্রথমে প্রয়োজনমত সরিষার খৈল একটি পাত্রের পানিতে ১০ থেকে ১২ ঘণ্টা ভিজিয়ে রাখতে হবে।
২. ভিজা খৈল, পরিমাণ মতো চালের কুঁড়া ও চিটা গুড় একত্রে মিশিয়ে ছোট ছোট বল তৈরি করতে হবে।
৩. পাত্রটি পুকুরে একটি নির্দিষ্ট জায়গায় পানির ৩০ থেকে ৪৫ সে.মি. নিচে বাঁশের সাথে বেঁধে ডুবিয়ে রাখতে হবে।
৪. প্রতিদিন প্রয়োজনীয় পরিমাণ খাদ্য দু’ভাগ করে সকালে ও বিকালে পানির নিচে পাত্রে দিতে হবে।
৫. খাদ্য প্রদানের স্থানকে মাঝে মাঝে পরিষ্কার করে দিতে হবে।
৬. পোনার ক্ষেত্রে ১০ - ১৫% ভেজা খাদ্য মোল্ড আকারে পুকুরের চারদিকে ছড়িয়ে দিতে হবে।
সাবধানতা :
১. সকল উপকরণ সঠিক ও নির্ভুলভাবে মেপে দিতে হবে।
২. খাদ্য তৈরির স্থান পরিষ্কার হতে হবে।
৩. খাদ্য উপকরণ যেন নষ্ট না হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।
সৃজনশীল প্রশ্ন
১। মাছের বংশ বৃদ্ধিতে খাদ্য গুরুত্বপূর্ণ ভ‚মিকা পালন করে থাকে। খামারে মাছের খাদ্য সরবরাহ সুষম ও নিয়মিত না
হলে মাছ বন্ধ্যাত্বের শিকার হতে পারে। তাই মৎস্যখামারীকে অবশ্যই খাদ্য তৈরি ও প্রয়োগে দক্ষ হতে হবে।
ক) মাছের সুষম খাবার বলতে কী বুঝায়?
খ) খামারে মৎস্যচাষীকে কীভাবে সুষম সম্পূরক খাবার প্রয়োগ করতে হয় লিখুন।
গ) মাছের সুষম সম্পূরক খাদ্য তৈরিতে কী কী সতর্কতা অবলম্বন করতে হয়?
ঘ) একজন সফল মৎস্য খামারীকে কীভাবে মাছের সুষম সম্পূরক খাদ্য তৈরি করতে হয় তা বিস্তারিত লিখুন।
২। ওসমান সাহেব দীর্ঘদিন যাবৎ বেকার ছিলেন। মৎস্য চাষে খামারীদের আগ্রহ দেখে তিনি মাছের খাবারের ব্যবসা শুরু
করলেন। বর্তমানে তিনি একজন সফল মৎস্য খাবার ব্যবসায়ী।
ক) মাছের খাদ্য বলতে কী বুঝায়?
খ) মাছের খাদ্য কত প্রকার ও কী কী?
গ) ওসমান সাহেব মৎস্য খামারে কী কী মাছের খাদ্য উপকরণ সরবরাহ করেন তা বিস্তারিত লিখুন।
ঘ) ওসমান সাহেব মৎস্যচাষীদের নিকট যে সকল সম্পূরক খাবার সরবরাহ করে লাভবান হয়েছে তা বর্ণনা করুন।
৩। আমিন সাহেব সাতক্ষিরায় একটি চিংড়ির ঘের পরিদর্শন করলেন। সেখানে তিনি দেখলেন যে, চিংড়িকে প্রাকৃতিক
খাবারের পাশাপাশি সম্পূরক খাবার প্রয়োগ করা হচ্ছে। পরবর্তীতে ঘেরের চাষীর কাছ থেকে জানতে পারলেন যে,
সফল চিংড়ি চাষে এ দুই ধরনের খাবার প্রয়োগ আবশ্যক।
ক) বাগদা চিংড়ির প্রাকৃতিক খাদ্য কী কী?
খ) বাংলাদেশে সম্পূরক খাদ্যের কী কী উপকরণ সহজলভ্য?
গ) আমিন সাহেবের দেখা চিংড়ির ঘেরে চাষীরা কী কী প্রাকৃতিক খাদ্য ব্যবহার করেছিলেন তা নাম সহ বর্ণনা করুন।
ঘ) আমিন সাহেব যেসব সম্পূরক খাবারের প্রয়োগ দেখেছিলেন তার উৎস সহ বর্ণনা করুন।
৪। জালাল সাহেব এর একটি মৎস্য খামার রয়েছে। এতে মাছের খাবার তৈরি করার জন্য তিনি মৎস্য কর্মকর্তার নিকট
পরামর্শ চাইলেন। মৎস্য কর্মকর্তা ওনাকে খাবার তৈরির উপকরণ সঠিকভাবে নির্বাচন করে খাবার প্রস্তুত প্রণালী
সম্পর্কে ধারণা দিলেন।
ক) মাছের খাবার তৈরির জন্য কী কী উপকরণ প্রয়োজন?
খ) চিংড়ির উদ্ভিদজাত খাদ্য উৎপাদন পদ্ধতি বর্ণনা করুন।
গ) মাছের খাবার তৈরির ক্ষেত্রে জালাল সাহেব কে খাদ্য উপকরণ নির্বাচনে কী কী বিষয় বিবেচনা করতে হবে?
ঘ) জালাল সাহেব কীভাবে খাবার প্রস্তুত করে সফল হলেন বিস্তারিত লিখুন।
৫। হারুন সাহেব তার বাড়ির দুইটি পুকুরে পৃথকভাবে মাছ ও চিংড়ি চাষ করছেন। কিন্তু লাভজনক না হওয়ায় তিনি
এলাকার মৎস্য কর্মকতার কাছে গেলেন। মৎস্য কর্মকর্তার পরামর্শ অনুযায়ী সঠিকভাবে মাছ ও চিংড়ির খাবার প্রয়োগ
করায় আশানুরূপ ফলন পেলেন।
ক) মাছের সম্পূরক খাবার বলতে কী বোঝায়?
খ) ঘেরে চিংড়ি চাষের জন্য সম্পূরক খাবার কী কী?
গ) পুকুরে চিংড়ির সম্পূরক খাবার প্রয়োগ পদ্ধতি লিখুন।
ঘ) হারুন সাহেব কী পদ্ধতিতে পুকুরে সম্পূরক খাবার প্রয়োগ করে সফল হলেন তা বর্ণনা করুন।
উত্তরমালা
পাঠোত্তর মূল্যায়ন- ৩.১ ঃ ১। গ ২। ক
পাঠোত্তর মূল্যায়ন- ৩.২ ঃ ১। ক ২। ঘ
পাঠোত্তর মূল্যায়ন- ৩.৩ ঃ ১। খ ২। খ
পাঠোত্তর মূল্যায়ন- ৩.৪ ঃ ১। খ ২। গ
FOR MORE CLICK HERE
এইচএসসি বাংলা নোট ১ম পত্র ও ২য় পত্র
ENGLISH 1ST & SECOND PAPER
এইচএসসি আইসিটি নোট
এইচএসসি অর্থনীতি নোট ১ম পত্র ও ২য় পত্র
এইচএসসি পৌরনীতি ও সুশাসন ১ম পত্র
এইচএসসি পৌরনীতি নোট ২য় পত্র
এইচএসসি সমাজকর্ম নোট ১ম পত্র
এইচএসসি সমাজকর্ম নোট ২য় পত্র
এইচএসসি সমাজবিজ্ঞান নোট ১ম পত্র ও ২য় পত্র
এইচএসসি ইতিহাস নোট ১ম পত্র
এইচএসসি ইতিহাস নোট ২য় পত্র
এইচএসসি ইসলামের ইতি. ও সংস্কৃতি নোট ১ম পত্র
এইচএসসি ইসলামের ইতি. ও সংস্কৃতি নোট ২য় পত্র
এইচএসসি যুক্তিবিদ্যা ১ম পত্র ও ২য় পত্র
এইচএসসি ভূগোল ও পরিবেশ নোট ১ম পত্র ও ২য় পত্র
এইচএসসি ইসলামিক স্টাডিজ ১ম ও ২য় পত্র