ডিম অর্নুবর হওয়ার কারণসমূহ বল ফোটানো ডিমের যতœ সম্পর্কে লিখ ডিম কিভাবে সংরক্ষণ করতে হয় তা বর্ণনা কর

প্রতিটি প্রাণী ও পশু-পাখি বংশ বৃদ্ধির মাধ্যমে বছরের পর বছর অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখে। পোল্ট্রির ক্ষেত্রে ডিম হচ্ছে বংশ বৃদ্ধি
তথা সংখ্যা বৃদ্ধির প্রধান মাধ্যম। শুধু তাই নয় এটি ব্যবসার সফলতা অথবা ব্যর্থতা নির্ধারণ করে। যে ডিম থেকে
পরবর্তীতে বাচ্চা ফোটানো যায় তাকে হ্যাচিং ডিম বলে। হ্যাচিং ডিম হওয়ার পূর্ব শর্ত অবশ্যই নিষিক্ত হতে হবে। নিষিক্ত
না হলে কখনোই সেই ডিম থেকে বাচ্চা হবে না। হ্যাচিং ডিম নির্বাচনের ক্ষেত্রে বাড়তি সতর্কতা নিতে হবে। সেই সাথে
ডিম ফোটানোর পদ্ধতিও জানা প্রয়োজন। হ্যাচিং ডিম পাওয়ার জন্য কি করনীয় তাও জানা অত্যাবশ্যক। নিষিক্ত ডিম
পাওয়া ও তা থেকে বাচ্চা উৎপাদন, ডিমের যতœ ইত্যাদি সম্পর্কে ধারণা থাকলে একজন সফল হ্যাচারিম্যান তথা লাভজনক খামারি হওয়া সম্ভব।
এ ইউনিটে ডিম নির্বাচন, ডিম ফোটানো পদ্ধতি, ডিম অনুর্বর হওয়ার কারণ, ডিমের যতœ ও সংরক্ষণের ওপর তত্ত¡ীয় ও ব্যবহারিকসহ বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে।
অনুর্বর ডিম
মোরগ মুরগির মিলন ব্যতীত উৎপাদিত ডিমকে অর্নুবর ডিম বা অনিষিক্ত ডিম বলে। ডিম ফোটানোর হার
ডিমের উর্বরতার সাথে সম্পর্কিত। অনুর্বর ডিম থেকে কখনও বাচ্চা ফোটে না। এ জন্য ডিম অনুর্বর হওয়ার কারণ জানা
প্রয়োজন। নিচে ডিম অনুর্বর হওয়ার সম্ভাব্য কারণগুলো উল্লেখ করা হয়েছে।
১. অপর্যাপ্ত পুষ্টি: মোরগের শুক্রাণু দিয়ে ডিম নিষিক্ত হয়। তাই মোরগের পুষ্টির অভাব হলে বীর্যে মৃত শুক্রাণুর সংখ্যা
বেড়ে যায়। ফলে ডিম অনুর্বর হওয়ার সম্ভবনা বাড়ে।
২. মোরগ ও মুরগির অনুপাত: সাধারণত হালকা জাতের ৮-১০টি মুরগির জন্য একটি মোরগ এবং ভারি জাতের ৫-৬টি
মুরগির জন্য কমপক্ষে ১টি মোরগ রাখা অত্যাবশ্যক। মোরগ-মুরগির অনুপাত ঠিক না থাকলে প্রজনন হার কমে যায়
এবং ডিম নিষিক্ত না হলে বাচ্চা পাওয়া যায় না। লক্ষ্য রাখতে হবে নির্বাচনকৃত মোরগের স্বাস্থ্য যেন ভালো থাকে।
৩. মুরগির বয়স: ডিম পাড়া শুরুর প্রথম ৬-৮ মাস ডিম ফোটানোর হার সবচেয়ে বেশি থাকে। বয়স বাড়ার সাথে সাথে
ডিম ফোটানোর হার কমতে থাকে। তবে মুরগির বয়স এক বছর পর্যন্ত ডিম ফোটানোর হার ভালো থাকে। মোরগের
ক্ষেত্রে ১ বছর পর্যন্ত প্রজনন হার ভালো থাকে। বয়স বাড়লে ডিম অনুর্বর হওয়ার সংখ্যা বাড়ে।
৪. আন্তঃপ্রজনন: আন্তঃপ্রজনন বলতে বুঝায় পরিবারের অর্থাৎ খুব কাছের সম্পর্কেও মোরগ-মুরগির মধ্যে প্রজনন।
আন্তঃপ্রজননের ফলে অনুর্বতার হার বাড়ে এবং প্রাপ্ত বাচ্চায় বেশির ভাগ থেকে অস্বাভাবিক লক্ষণ দেখা যায়।
৫. রোগ ও শারীরিক অক্ষমতা: মোরগ-মুরগির উভয়ের ক্ষেত্রে রোগ একটি বিশেষ কারন যার ফলে ডিম অনুর্বর হতে
পারে। রোগাক্রান্ত মুরগির থেকে প্রাপ্ত ডিম অনুর্বর হওয়ার সম্ভবনা থাকে। মুরগির ওজন অতিরিক্ত হলে প্রজনন
অঙ্গের মাধ্যমে শুক্রাণু সঠিক জায়গায় পৌঁছাতে পারবে না ফলে ডিম অনুর্বর হয়।
৬. ঋতুর প্রভাব: অতিরিক্ত গরম পড়লে সাময়িকভাবে ডিমের উর্বরতা কমে যায়। শীতকালে পাড়া ডিম গ্রীষ্মকালের
ডিমের চেয়ে বেশি উর্বর হয়।
৭. কর্তৃত্ত¡: ঝাঁকের মধ্যে সাধারনত মোরগ মুরগির উপর কর্তৃত্ব খাটিয়ে থাকে। যদি বিপরীত ঘটনা ঘটে তবে মিলন ঘটে
না এতে অনুর্বর ডিম উৎপাদন হয়। অন্যদিকে, মোরগ আক্রমণাত্বক হলে মুরগি ভয় পায় এবং লুকিয়ে থাকে, ফলে
ডিম অনুর্বর হয়।
৮. ভিটামিন ও খণিজপদার্থের অভাব: মোরগের উর্বরতা বাড়ানোর জন্য খাদ্যে ভিটামিন ও খণিজপদার্থের অভাব পূরণ
করা বাঞ্চনীয়। বিশেষ করে খাদ্যে দীর্ঘদিন হতে ভিটামিন ই এর পর্যাপ্ততা না থাকলে মোরগ বন্ধা হয়ে যাওয়ার
সম্ভবনা বেড়ে যায়। এতে অনুর্বর ডিম উৎপাদিত হয়।
৯. মোরগের বয়স: অপরিপক্ক মোরগকে প্রজনন কাজে ব্যবহার করলে অনুর্বর ডিম পাওয়া যায়।
১০. মুরগির বাসস্থান: প্রজননের জন্য ব্যবহৃত ঘর পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন ও পর্যাপ্ত আলো ও বায়ু চলাচল থাকতে হবে।
বাসস্থানের উপর ডিমের উর্বরতা অনেকাংশে নির্ভর করে।
ফোটনোর ডিমের যতœ ও সংরক্ষণ
ফোটানোর ডিমের সঠিক পরিচর্চা দরকার। ডিম বসানোর পূর্ব পর্যন্ত যতœ নিলে ডিম ভালো থাকে। ফোটানোর ডিম বেশি
দিন সংরক্ষণ করা হলে ডিম ফোটার হার কমে যায়। খোসার আকারভেদে ৮,০০০-১০,০০০ ছিদ্র থাকেব। এসব ছিদ্র
দিয়ে সহজেই রোগজীবাণু ডিমের ভিতর প্রবেশ করতে পারে এবং ডিম পচে যায়। ডিম সংরক্ষণ করার জন্য একটি
পরিষ্কার স্থান নির্বাচন করতে হবে।
ডিম সংরক্ষণের সময় নি¤েœাক্ত ব্যবস্থাপনা সঠিকভাবে করা উচিততাপমাত্রা: ডিম সংরক্ষণ জন্য খুব বেশি গরম বা ঠাÐা কোনোটাই ভালো না। বাচ্চা ফোটানোর ডিম ৫০-৫৫ ফারেনহাইট
বা ১০-১২ সেলসিয়াস তাপমাত্রায় রাখতে হবে। বানিজ্যিকভাবে বড় বড় হ্যাচারিতে (যেখানে ডিম ফোটানো হয়)
শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত কক্ষে ডিম সংরক্ষণ করা হয়।
আর্দ্রতা: বাচ্চা ফোটানোর ডিম সংরক্ষণের জন্য আপেক্ষিক আদ্রতা ৬৫-৭৫%-এ রাখতে হবে। আর্দ্রতা কম হলে ডিম
থেকে জলীয় বাষ্পের মাধ্যমে জলীয় অংশের পরিমাণ কমে যায়, ফলে ডিম ফোটার হার কমে যায়। জলীয় অংশের
পরিমাণ ১৪%-এর বেশি কমে গেলে ডিম থেকে বাচ্চা ফোটানোর হার অস্বাভাবিকভাবে কমে যায়।
ডিম নাড়াচাড়া করা: ফোটানোর ডিম বেশি দিন সংরক্ষণ করলে তা ঘুরিয়ে দিতে হবে যাতে ডিমের সবদিকে তাপমাত্রা ও
আর্দ্রতা ঠিক থাকে। সংরক্ষণের সময় ডিমের মোটা অংশ ট্রের উপর দিকে এবং সরু অংশে নিচের দিকে করে রাখতে হবে।
ফোটানোর ডিম সাবধানে নাড়াচাড়া করতে হবে। অতিরিক্ত ঝাঁকানো হলে ডিম থেকে বাচ্চা ফোটার হার কমে যায়।
ডিম সংগ্রহ: ফোটানোর ডিম দিনে ৩ বার সংগ্রহ করতে হবে। ডিম দীর্ঘক্ষণ ডিম পাড়ার বাক্সে রাখলে তা অতি দ্রæত
জীবাণু দ্বারা আক্রান্ত হতে পারে। অনেক সময় মুরগিকে ঠোঁট দিয়ে ডিম ভেঙ্গে ফেলতে দেখা যায়। সে কারণে যত দ্রæত
সম্ভব ফোটানোর ডিম ডিম পাড়ার বাক্স থেকে সরিয়ে নিতে হবে।
শিক্ষার্থীর কাজ শ্রেণীকক্ষে দলগতভাবে ডিম অনুর্বর হওয়ার সম্ভাব্য কারন সমূহ আলোচনা করবে।
সারসংক্ষেপ
দলে মোরগ না থাকলে ডিম উর্বর হয় না। উর্বর ডিম পাওয়ার জন্য মোরগ ও মুরগির নির্দিষ্ট অনুপাত বজায় রাখতে
হয়। উর্বর ডিম থেকে বাচ্চা নিশ্চিত পাওয়ার জন্য পর্যাপ্ত তাপমাত্রা, আর্দ্রতা ও ডিম নাড়াচাড়া সহ কিছু বিষয়াদি ঠিক ভাবে মেনে বলতে হবে। সব কিছু ঠিক থাকলে নিষিক্ত বা উর্বর ডিম থেকে একটি সুস্থ সবল বাচ্চা পাওয়া সম্ভব।
পাঠোত্তর মূল্যায়ন-৮.১
বহুনির্বাচনি প্রশ্ন
১। হালকা জাতের ১টি মোরগ কতটি মুরগির জন্য যথেষ্ট?
(ক) ৮-১০টি (খ) ৫-৬টি
(গ) ৩-৪টি (ঘ) ১৫-২০টি
২। ডিম সংরক্ষনের সঠিক মাপমাত্রা কত?
(ক) ১০-১২০
সে. (খ) ১৫-২০০
সে.
(গ) ৫০-৫৫০
সে. (ঘ) ৬৫-৭৫০
সে.
৩। মোরগের উর্বরতা বাড়ানো সাথে কোন ভিটামিন সম্পর্কিত?
(ক) ভিটামিন এ (খ) ভিটামিন বি
(গ) ভিামিন সি (ঘ) ভিটামিন ই

FOR MORE CLICK HERE
এইচএসসি বাংলা নোট ১ম পত্র ও ২য় পত্র
ENGLISH 1ST & SECOND PAPER
এইচএসসি আইসিটি নোট
এইচএসসি অর্থনীতি নোট ১ম পত্র ও ২য় পত্র
এইচএসসি পৌরনীতি ও সুশাসন ১ম পত্র
এইচএসসি পৌরনীতি নোট ২য় পত্র
এইচএসসি সমাজকর্ম নোট ১ম পত্র
এইচএসসি সমাজকর্ম নোট ২য় পত্র
এইচএসসি সমাজবিজ্ঞান নোট ১ম পত্র ও ২য় পত্র
এইচএসসি ইতিহাস নোট ১ম পত্র
এইচএসসি ইতিহাস নোট ২য় পত্র
এইচএসসি ইসলামের ইতি. ও সংস্কৃতি নোট ১ম পত্র
এইচএসসি ইসলামের ইতি. ও সংস্কৃতি নোট ২য় পত্র
এইচএসসি যুক্তিবিদ্যা ১ম পত্র ও ২য় পত্র
এইচএসসি ভূগোল ও পরিবেশ নোট ১ম পত্র ও ২য় পত্র
এইচএসসি ইসলামিক স্টাডিজ ১ম ও ২য় পত্র

Copyright © Quality Can Do Soft.
Designed and developed by Sohel Rana, Assistant Professor, Kumudini Government College, Tangail. Email: [email protected]