বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে গবাদিপ্রাণির ভ‚মিকা অপরিসীম। এখানে কৃষকেরা শস্য চাষের পাশাপাশি গবাদি
প্রাণিপাখি লালন-পালন করে থাকেন। হালচাষ, ফসল মাড়াই, মানব ও পণ্য পরিবহন, জৈব সার উৎপাদন এবং জ্বালানি
সরবরাহে প্রাণিসম্পদের রয়েছে গুরুত্বপূর্ণ অবদান। জনগনের আমিষের চাহিদা পূরণে গবাদিপ্রাণি দুধ ও মাংস উৎপাদনের
মাধ্যমে যথেষ্ট অবদান রেখে চলেছে। ভ‚মি ও পুজি স্বল্পতার কারণে প্রাণিসম্পদ দারিদ্র্য বিমোচন ও কর্মসংস্থানের একটি
গুরুত্বপূর্ণ অবলম্বন।
প্রাণিসম্পদ দেশের রপ্তানি বাণিজ্যেও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভ‚মিকা পালন করে। বিশেষ করে চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য
রপ্তানির মাধ্যমে দেশ প্রতি বছর গড়ে প্রায় ১২০০ কোটি আয় করছে। চামড়ার গুণগত মান ও পরিমাণ বৃদ্ধির মাধ্যমে
দেশের রপ্তানি আয় বহুগুণ বৃদ্ধি করা সম্ভব। এছাড়া দেশে দুধ উৎপাদন বৃদ্ধি করে গুড়াঁ দুধের আমদানি কমানোর মাধ্যমে
কষ্টার্জিত বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় করা সম্ভব। দেশের রপ্তানি বহুমূখীকরণের মাধ্যমে রপ্তানি আয় বৃদ্ধিতে প্রাণিসম্পদ খাতের
রয়েছে অপরিসীম সম্ভাবনা। গবাদি প্রাণিজাত বিভিন্ন পণ্য, যেমন- মাংস, হাড়, চর্বিসহ অন্যান্য পণ্য রপ্তানির যথেষ্ট সুযোগ
রয়েছে। রপ্তানি বৃদ্ধির মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের পাশাপাশি মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি ও জীবনযাত্রার মান
উন্নয়ন সম্ভব। এ ইউনিটের বিভিন্ন পাঠে প্রাণিসম্পদ উন্নয়নের সমস্যা ও সম্ভাবনা, গবাদি প্রাণির বয়স, লিঙ্গ ও
ব্যবহারভেদে নামকরণ, গরুর জাত ও জাতের বৈশিষ্ট্য, মহিষের জাত ও জাতের বৈশিষ্ট্য নিয়ে তাত্তি¡ক এবং
ব্যবহারিকভাবে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে।
প্রাণিসম্পদ হচ্ছে অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হওয়ার উদ্দেশ্যে বিশেষ করে খামারে গবাদি প্রাণি ও হাঁস-মুরগি
প্রতিপালন। বাংলাদেশে গবাদিপ্রাণির মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো গরু, মহিষ, ছাগল, ও ভেড়া। এগুলো যেকোন
দেশের জন্যই গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ, কারণ এ গুলো কৃষি কার্যক্রমসহ বিভিন্ন কাজে চালিকা শক্তি। চামড়া ও সারের যোগান
দেয় এবং জনসংখ্যার বৃহৎ অংশের জন্য মাংস ও দুধের প্রধান উৎস। বাংলাদেশের অর্থনীতিতে পালিত প্রাণি সম্পদের
ভূমিকা যথেষ্ঠ গুরুত্বপূর্ণ। প্রাণিসম্পদের সাথে আবশ্যিকভাবে জড়িত রয়েছে গবাদি প্রাণির স্বাস্থ্য ও কল্যান, উৎপাদন
উপাত্তগুলির মান এবং সংশ্লিষ্ট শিল্পগুলির সঙ্গে সম্পর্কিত ব্যবসা উদ্যোগ প্রসারের কার্যকর ব্যবস্থা। পরিসংখ্যান অনুসারে
মোট জাতীয় উৎপাদনের (জিডিপির) প্রায় ২.৯% যোগায় প্রাণিসম্পদ খাত এবং এটির বার্ষিক প্রবৃদ্ধির হার ৫.৫%।
বাংলাদেশের জনসংখ্যার প্রায় ২০% গবাদিপ্রাণি ও হাঁস-মুরগি পালন করে ও প্রজনন কর্মসূচির আওতায় জীবিকা নির্বাহ
করে। জমিচাষ, ভারবহন এবং গোবরের সার ও জ্বালানি সরবরাহ প্রাণিসম্পদের গুরুত্বপূর্ণ অবদান। তদুপরি, গবাদি
প্রাণির চামড়া, হাড়, নাড়াভুঁড়ি ও পালক ইত্যাদি বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের সহায়ক। প্রাণিসম্পদ ভূমিহীন মানুষের জীবিকার
একটা বড় অবলম্বন। বাংলাদেশের শতকরা ৮৩.৯ ভাগ পরিবার গবাদি প্রাণি-পাখি প্রতিপালন করছে। তবে শুধু গরু-মহিষ
প্রতিপালন করছে শতকরা ৪৫.৯ ভাগ পরিবারে। প্রতিটি পরিবারে গড়ে ১.৫টি গরু-মহিষ, ০.৯টি ছাগল ভেড়া ও ৬.৮টি
হাঁস-মুরগি রয়েছে।
গৃহপালিত প্রাণীর গুরুত্বপূর্ণ অবদানসমূহ
বাংলাদেশের আর্থসামাজিক অবস্থা উন্নয়নে গৃহপালিত প্রাণির অবদান রয়েছে। বর্তমান শিল্প বিপ্লবের যুগে কৃষি, শিল্প, খাদ্য
উৎপাদান ছাড়াও বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন ও আত্মকর্মসংস্থানে গৃহপালিত প্রাণির অবদান অপরিসীম। গৃহপালিত প্রাণি থেকে
দুধ, মাংস, ছাড়াও নানা প্রকার দ্রব্য যেমন- শিং, খুর, চামড়া, পশম, চর্বি, রক্ত, দাঁত, হাঁড় ও নাড়িভুড়ি পাওয়া যায়।
১। কৃষিকাজে গৃহপালিত প্রাণির গুরুত্ব:
বাংলাদেশ কৃষি প্রধান দেশ। কৃষি এদেশের অর্থনীতির মূল ভিত্তি। গবাদি প্রাণিই কৃষকদের একমাত্র অবলম্বন বা
কৃষিকাজের প্রধান হাতিয়ার। কৃষির সাথে সম্পর্কিত প্রায় প্রতিটি কাজে গবাদিপ্রাণিই কিছু না কিছু ভূমিকা রয়েছে। তবে
ফসল উৎপাদনে গবাদিপ্রাণির ভূমিকা সবচেয়ে বেশি। কারণ আমাদের দেশের অধিকাংশ কৃষকই গরীব এবং তাদের খÐিত
জমিতে যান্ত্রিক শক্তি ব্যবহার করে চাষ করা যায় না। তাই যান্ত্রিক শক্তির বিকল্প হিসেবে গবাদি প্রাণি শক্তিই জমি চাষের
একমাত্র অবলম্বন। নিচে কৃষিকাজে গবাদিপ্রাণির গুরুত্ব আলোচনা করা হল।
ক) গবাদি প্রাণিশক্তির ব্যবহার
বাংলাদেশে গবাদি প্রাণিশক্তির প্রধান উৎস গরু ও মহিষ। কৃষি কর্মকাÐ, যেমন- ভূমিকর্ষন, শস্য মাড়াই, ঘানি টানাসহ
পরিবহন কাজে গবাদি প্রাণি শক্তি ব্যবহার করা হয়।
খ. গবাদি প্রাণির মলমূত্রের ব্যবহার
গবাদি প্রাণির গোবর প্রধানত জ¦ালানি, জৈব সার ও বায়োগ্যাস তৈরির জন্য ব্যবহার করা হয়।
১. জৈব সার উৎপাদন: গবাদি প্রাণির মলমূত্র উৎকৃষ্ট মানের জৈব সার উৎপাদনে এ সার ব্যবহার করা হয়। গোবর
সার জমিতে ব্যবহারের ফলে জমির উর্বরতা বৃদ্ধি পায়।
২. জ¦ালানি সরবরাহ ও বায়োগ্যাসের উৎপাদন: গবাদি প্রাণির গোবর দিয়ে ঘুটে তৈরি করে জ¦ালানি হিসেবে ব্যবহার
করা হয়। প্রচলিত জ¦ালানির ২৫% আসে গোবর থেকে। গোবর দিয়ে বায়োগ্যাস উৎপাদন করে রান্নাবান্না এবং
বাতি জ¦ালানোর কাজে ব্যবহার করা যায়।
৩. মাছের খাদ্য: গোবর মাছের খাদ্য হিসেবেও পুকুরে ব্যবহার করা যায়। গোবর মাছের প্রাকৃতিক খাদ্য প্ল্যাঙ্কটনো
সংখ্যা বৃদ্ধি করে পুকুরের পানির উর্বরতা বাড়ায়, ফলে মাছের উৎপাদন বাড়ে।
৪. পরিবেশ রক্ষা: জৈব সার হিসেবে গোবর ব্যবহার হওয়ায় রাসায়নিক সার কম লাগে। ফলে রাসায়নিক ক্ষতির
প্রভাব থেকে পরিবেশ রক্ষা হয়। পরিবেশ সংরক্ষণে গবাদি প্রাণির মল/গোবর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
২। খাদ্য উৎপাদনে প্রাণিসম্পদের গবাদি প্রাণির গুরুত্ব
খাদ্য উৎপাদনে গবাদি গবাদি প্রাণির গুরুত্ব অপরিসীম। দুধ ও মাংস আমিষজাতীয় খাদ্য যার সিংহভাগ আসে গবাদি প্রাণি
থেকে। আমিষ আমাদের স্বাস্থ্য রক্ষার জন্য অপরিহার্য উপাদান। দেহের ক্ষয়পূরুণ, বৃদ্ধিসাধন ও দেহ গঠনের জন্য আমিষ
খাদ্যের প্রয়োজন অপরিসীম। নি¤েœ খাদ্য হিসেবে গবাদি প্রাণির গুরুত্ব আলোচনা করা হলো।
ক) মাংস ও মাংসজাত খাদ্য:
আমিষের প্রধান উৎস প্রাণির মাংস। প্রাণির টাটকা মাংসে ১৫-২০% আমিষ থাকে । গরু, মহিষ, ছাগাল ও ভেড়া থেকে
মাংস পাওয়া যায়। মাংসের সাথে লাগানো চর্বি শক্তির উৎস হিসেবে কাজ করে। তাছাড়া মাংস দিয়ে নানাবিধ মজাদার
খাবার যেমন- চপ, কাটলেট, কাবাব, রোস্ট প্রভৃতি তৈরি করা যায়। মাংস খনিজ উৎস। এতে ক্যালসিয়াম ও ফসফরাস
থাকে যা দাঁতের গঠনে সহায়তা করে। মাংসে লোহা থাকে, যা রক্তশূন্যতা দূর করে। এছাড়াও ভিটামিনের মধ্যে থায়ামিন,
ভিটামিন বি১২ প্রচুর পরিমাণে থাকে বলে মাংসকে ভিটামিন বি কমপ্লেক্সের উৎস বলা হয়। মাংস ছাড়াও গবাদি প্রাণির যকৃৎ
(কলিজা) হৃৎপিÐ, প্লীহা, ফুসফুস, মগজ, লেজ ও ক্ষেত্রবিশেষে নাড়িভূঁড়ি খাদ্য হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
খ) দুধ ও দুগ্ধজাত খাদ্য
দুধ একটি আদর্শ খাদ্য। দুধ ও দুগ্ধজাত সামগ্রী খুব জনপ্রিয়। আমদের দেশে যে দুধ উৎপাদন হয়ে তা মূলত আসে গরু ও
মহিষ থেকে। এই দুধের ৫০% তরল দুধ সরাসারি পান করা হয় এবং বাকি ৫০% দুগ্ধজাত দ্রব্য, যেমন- ঘি, ছানা, দই,
মাখন, মিষ্টি ও পনির তৈরিতে ব্যবহৃত হয়, যা খাদ্য হিসেবে অত্যন্ত জনপ্রিয়।
গ) গবাদি প্রাণির নাড়িভূঁড়ি
প্রাণি জবাই করার পর নাড়িভূঁড়ি যেখানে সেখানে না ফেলে এটা হাঁস-মুরগি এবং মাছের উন্নতমানের আমিষজাত খাদ্য
হিসেবে ব্যবহার করা যায়। এতে মুরগি ও মাছের উৎপাদন বহুলাংশে বৃদ্ধি পাবে। তাছাড়া গবাদি প্রাণির নাড়িভূঁড়ির কিছু
অংশ মানুষ খাদ্য হিসেবেও ব্যবহার করে। গবাদি প্রাণির নাড়িভূঁড়ি উন্নতমানের আমিষজাতীয় খাদ্য।
ঘ) চর্বি
গবাদি প্রাণির চর্বি মানুষের খাদ্য হিসেবে ব্যবহৃত হয়। এছাড়াও রাসায়নিক পদার্থ, পিচ্ছিলকারক পদার্থ ও সাবান তৈরির
কারখানায় ও পুকুরে মাছের খাদ্য হিসেবে চর্বি ব্যবহার করা যায়।
৩। জাতীয় আয় ও বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনে গবাদি প্রাণির গুরুত্ব
বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনে আমাদের দেশে চামড়ার স্থান তৃতীয়। প্রতি বছর একশ কোটি টাকার চামড়া ও চামড়াজাত দ্রব্য
বিদেশে রপ্তানি করা হয়। এছাড়া হাড়, রক্ত, পশম, গোবর প্রভৃতি গবাদি প্রাণিজাত দ্রব্যের অনেক অর্থনৈতিক গরুত্ব
রেেয়ছে। নি¤েœ এ সম্পর্কে আলোচনা করা হলো।
ক) চামড়া ও চামড়াজাত দ্রব্য রপ্তানি
বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের উল্লেখযোগ্য অংশ আসে চমড়া ও চমড়াজাত পণ্য রপ্তানির মাধ্যমে। গরু, মহিষ ও ছাগলের চামড়া
বিদেশে রপ্তানি করা হয়। গবাদি প্রাণির চামড়া থেকে জুতা, সুটকেস, ব্যাগ, বেল্ট, সেন্ডেল, জ্যাকেট, খেলনা, বাদ্যযন্ত্র
ইত্যাদি তৈরি করে বিদেশে রপ্তানি করা হয়। চামড়া থেকে তৈরি চামড়াজাত দ্রব্য রপ্তানিতে অনেক বেশি লাভ পাওয়া যায়।
বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনে গবাদি প্রাণির চামড়া তৃতীয় স্থানে রয়েছে।
খ) শিং, খুর ও হাড়ের ব্যবহার
শিং, খুর, হাড় ইত্যাদি গবাদি প্রাণি পাখির খাদ্য এবং সার হিসেবে ব্যবহার হয়। গরু মহিষের শিং দ্বারা উৎকৃষ্ট মানের
চিরুনি তৈরি হয়। এদেশে ব্যাপক হারে পোল্ট্রি ফার্ম ও ডেইরি খামার গড়ে উঠায় বোনমিলের চাহিদা বেড়েছে। সস্তা
জনশক্তি ও অব্যবহৃত বিপুল পরিমাণ হাড় ব্যবহারের মাধ্যমে দেশে রপ্তানিমুখী শিল্প গড়ে উঠতে পারে। গবাদি প্রাণির হাড়
দ্বারা তৈরি হয় মানুষের ব্যবহার্য বোতাম ও আঠা। তাছাড়া এক্স-রে এবং ফিল্মে নেগেটিভ তৈরিতেও হাড় ব্যবহার করা
হয়। গবাদি প্রাণির শিং, খুর ও হাড় থেকে জিলাটিন, আঠা, গহনা, চিরুনি, বোতাম, ছাতা ও ছুরির বাট এবং হাড়ের গুড়া
থেকে সার তৈরি করা যায়। এগুলো রপ্তানিযোগ্য পণ্য।
গ) রক্তের ব্যবহার
গবাদি প্রাণির রক্তে খনিজ পদার্থ হরমোন ও অন্যান্য উপাদান থাকে। রক্ত আমিষের উৎস। গবাদি প্রাণির রক্ত শুকিয়ে
গবাদিপ্রাণির খাদ্য হিসাবে ব্যবহার করা যায়। গবাদি প্রাণির রক্ত জীবণুমুক্তভাবে সংগ্রহ, সংরক্ষণ ও বিপণনের ব্যবস্থা
করতে পারলে সম্ভাবনাময় গবাদি প্রাণিপাখির খাদ্য কারখানা গড়ে উঠবে, যা দেশের চাহিদা মিটিয়ে ও বৈদেশিক মুদ্রা
আয়ের উৎস হিসেবেও বিবেচিত হতে পারে। তাছাড়া শুকনো রক্ত জমিতে সার হিসেবে ব্যবহার করা যায়। গবাদি প্রাণির
রক্তে ১১% নাইট্রোজেন থাকে। যদি পরিকল্পিত পদ্ধতিতে কসাইখানায় গবাদি প্রাণি জবাইয়ের মাধ্যমে স্বাস্থ্যসম্মত মাংস
উৎপাদন এবং গবাদি প্রাণির রক্ত জীবাণুমুক্তভাবে সংরক্ষণ করা হয় তবে গবাদি প্রাণি পাখির খাদ্য তৈরির কারখানা গড়ে
উঠার সম্ভবনা উজ্জ্বল হয়ে উঠবে। এভাবে দেশের চাহিদা মিটিয়ে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করার সুযোগও বাড়বে।
ঘ) চর্বি ও দাঁতের ব্যবহার
গবাদি প্রাণির চর্বি থেকে মোমবাতি, গিøসারিন, সাবান, লুব্রিকেটিং তেল, সিনথেটিক রাবার ও প্লাষ্টিক তৈরি হয়। এসব
পণ্যের রপ্তানি সম্ভবনা উজ্জ¦ল। গবাদি প্রাণির দাঁত দ্বারা বোতাম, চিরুনি ইত্যাদি তৈরি হয়।
ঙ) মাংস ও দুধ রপ্তানি
বাংলাদেশে এখনও মাংস ও দুধ রপ্তানি অগ্রাধিকার পায়নি। কারণ বর্তমান দেশে প্রানিজ প্রোটিনের বিপুল ঘাটতি রয়েছে।
তবে আস্তে আস্তে এগুলোর উৎপাদন বাড়লে বাংলাদেশের পক্ষেও দিন দিন এগুলো রপ্তানি সম্ভব হবে। এছাড়াও দুগ্ধজাত
খাদ্যদ্রব্য, যেমন- মিষ্টি, সন্দেশ, কেক, বিস্কুট, চকলেট, ইত্যাদি তৈরি করেও রপ্তানি করা যেতে পারে।
চ) পশমের ব্যবহার
গবাদিপ্রাণি বিশেষ করে ভেড়ার, পশম দ্বারা বিভিন্ন ধরনের কম্বল, শীতের পোশাক, ব্রাশ ও কৃত্রিম চুল তৈরি করা হয় যা
বিদেশে রপ্তানি করে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা যায়।
ছ) দাঁত, চুল, এড্রেনাল গন্থি ও অগ্ন্যাশয়ের ব্যবহার
গবাদি প্রাণির দাঁত দিয়ে বোতাম, চিরুনি তৈরি হয়। গবাদি প্রাণির চুল থেকে ব্রাশ, বস্ত্র ও কৃত্রিম চুল প্রভৃতি তৈরি করা
হয়। এড্রেনাল গ্রন্থির নিষ্কাশন থেকে ঔষুধ তৈরি হয়। অগ্ন্যাশয় থেকে ইনসুলিন তৈরি হয়।
৪। শিল্প হিসেবে প্রাণিসম্পদের গুরুত্ব
অতীতে প্রাণিসম্পদ কেবল শস্য উৎপাদনের একটি পরিপূরক হিসেবে ব্যবহৃত হতো, কিন্তু বর্তমানে বানিজ্যিকভিত্তিত্তে
খামার স্থাপন ও গবাদি প্রাণিজাত পন্যের বিপনন ব্যবস্থায় অনেক উন্নয়ন ঘটেছে। ফলে দেশে ছোট বড় অনেক ডেইরি
খামার ও শিল্প গড়ে উঠেছে। শিল্প হিসেবে গৃহপালিত গবাদি প্রাণির গুরুত্ব নি¤œরুপ:
ক) দুগ্ধ (ডেইরি) শিল্প: দেশে বহু ক্ষুদ্র ও মাঝারি দুগ্ধ খামার রয়েছে। আমাদের দেশে ক্ষুদ্র ও মাঝারি আকারের এসব
খামার কৃষিখাত হিসেবে বিবেচিত হলেও পৃথিরীর অন্যান্য দেশে তা ডেইরি শিল্প হিসেবে বিবেচিত হয়। মিল্ক ভিটা
বাংলাদেশের বৃহত্তম দুগ্ধ প্রক্রিয়াজাতকণ ও দুগ্ধসামগ্রী উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান। তাছাড়া বেসরকারীভাবে দেশে বেশকিছু
দুগ্ধ প্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্প গড়ে উঠেছে। যেগুলোতে পাস্তুরিকৃত তরল দুধ উৎপাদন ছাড়াও কনডেন্সড মিল্ক, ফেøভারড
মিল্ক, পাউডার মিল্ক উৎপাদন করে বাজারজাত করা হচ্ছে। দুধ দ্বারা তৈরি বেশকিছু আইসক্রিম তৈরির কারখানাও দেশে
স্থাপিত হয়েছে। তাছাড়া ঘি, মাখন, পনির ইত্যাদি এ শিল্পেরই অবদান।
খ) মাংস ও মাংসজাত শিল্প: মাংস ও মাংসজাত পন্য বিভিন্ন দেশে গুরুত্বপূর্ণ শিল্প হলেও আমাদের দেশে এ শিল্প এখনও
প্রসার লাভ করেনি। অবশ্য বর্তমানে শহরাঞ্চলে হিমায়িত মাংসের প্রতি মানুষের আগ্রহ বাড়ছে। ফলে দেশে মাংস
প্রক্রিয়াজাতকরণ ও মাংসজাত দ্রব্য উৎপাদনের শিল্প গড়ে ওঠার সম্ভবনা বাড়ছে।
গ) চামড়া শিল্প: দেশে চামড়া প্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্প অধিক পরিমাণে গড়ে তোলা এবং বিভিন্ন চামড়াজাত দ্রব্য, যেমনব্যাগ, জুতা, স্যুটকেইস, স্যান্ডেল, খেলনা, আসবাপত্র, বাদ্যযন্ত্র, সৌখিন দ্রব্য প্রভৃতি উৎপাদন করে বিদেশ রপ্তানি করা
হলে তা লাভজনক শিল্প হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হবে।
ঘ) অন্যান্য শিল্প
গবাদি প্রাণির হাড়, খুর, শিং প্রভৃতি থেকে বোতাম, চিরুনি, খেলনা, ছাতা ও বাট প্রভৃতি শিল্প গড়ে তোলা যায়। গবাদি
প্রাণির চুল থেকে ব্রাশ, বস্ত্র, কৃত্রিম চুল প্রভৃতি এবং হাড়ের গুঁড়া থেকে গবাদি প্রাণি খাদ্য ও সার তৈরির জন্য ক্ষুদ্রায়তন
শিল্প গড়ে তোলা যায়। গবাদি প্রাণির চর্বি থেকে মোমবাতি, গিøসারিন, সাবান, লুব্রিকেটিং অয়েল, সিনথেটিক রাবার ও
প্লাষ্টিক তৈরির শিল্প গড়ে তোলা যায়। গবাদি প্রাণির রক্ত থেকে বøাডমিল, কোলাজেন, অগ্ন্যাশয় থেকে ইনসুলিন এবং
এড্রেনানল গ্রন্থি থেকে ঔষধ তৈরি হয়। গবাদি প্রাণির ক্ষুদ্রান্ত্র থেকে সার্জিক্যাল সুতা, টেনিস র্যাকেট স্ট্রিং, মিউজিক্যাল
স্ট্রিং প্রভৃতি তৈরি করা যায়। গবাদি প্রাণির দাঁত দিয়ে বোতাম, চিরুনি প্রভৃতি তৈরির ক্ষুদ্র শিল্প গড়ে তোলা যায়। দেশী
ভেড়ার পশম দিয়ে কার্পেট ও কম্বল তৈরির ক্ষুদ্র শিল্প গড়ে উঠতে পারে।
৫। আত্মকর্মসংস্থান ও দারিদ্র দূরীকরণে গবাদি প্রাণির গুরুত্ব
বাংলাদেশের দারিদ্র দূরীকরণের জন্য সর্বোত্তম শিল্প হিসেবে প্রাণিসম্পদকে বিবেচনা করা যেতে পারে। কারণ এর জন্য
বেশি জমি ও পুঁজির দরকার নেই। আত্মকর্মসংস্থান ও দারিদ্র দূরীকরনে ছাগল, গরু, ভেড়া, মহিষ ও ঘোড়া কতটুকু প্রভাব
বিস্তার করতে পারে সংক্ষেপে নিচে তা আলোচনা করা হলো।
ক) আত্মর্কসংস্থান ও দারিদ্র বিমোচনে ছাগল পালন:
আত্মকর্মসংস্থান ও দারিদ্র বিমোচনে ছাগল পালন প্রথম স্থান দখল করে আছে। বিত্তহীন, ভূমিহীন, দরিদ্র ব্যক্তি, বেকার,
যুবক দুস্থ মহিলা যে কেউ ছাগল পালন করে দারিদ্র দূর করতে পারে। ছাগল পালন লাভজনক। কম পুঁজিতে কম পরিশ্রমে
ছাগল পালন করা যায়। ছাগলের জন্য উৎকৃষ্টমানের খাবারের দরকার হয় না। এগুলোকে বাড়ির আশেপাশে জমির আইলে
চরালে ও অল্প খাবার দিলেই চলে। এদের খাবার খরচ কম।
খ) আত্মর্কসংস্থান ও দারিদ্র বিমোচনে গরু পালন:
গাভী পালন করে দুধ বিক্রির মাধ্যমে বেকার জনগোষ্ঠী প্রচুর আয় করতে পারেন। তাছাড়া গরু মোটাতাজা করে তা বিক্রি
করে কম সময়ে প্রচুর লাভবান হওয়া যায়। আস্তে আস্তে গাভীর সংখ্যা বাড়িয়ে গাভীর খামার তৈরি করা যায়।
গ) আত্মর্কসংস্থান ও দারিদ্র বিমোচনে ভেড়া পালন:
ভেড়ার মাংস ছাগলের মত সুস্বাদু বিধায় ভেড়া পালন করে মাংসের ব্যবসা করা যায়। ভেড়ার দাম খুব কম হওয়ায় বেকার
যুবক, দুস্থ মহিলা, দরিদ্র কৃষক সহজেই ভেড়া ক্রয় করে পালন করতে পারে।
ঘ) আত্মর্কসংস্থান ও দারিদ্র বিমোচনে মহিষ পালন:
একজোড়া মহিষ একটন পর্যন্ত ভার বহন করতে পারে। মালিক মহিষের গাড়ি ও হাল ভাড়া দিতে পারে অথবা নিজের জমি
চাষে ব্যবহার করতে পারে। যারা মহিষ পালন করে তারা মহিষের দুধ দিয়ে মাখন, ঘি, দই, মিষ্টি, পনির তৈরি করে ব্যবসা
করতে পারে। দুই বছরে কম বয়সের মহিষের বাছুরের মাংস গরুর মাংসের মতোই খেতে সুস্বাদু এবং মাংসের আঁশ কম।
ফসল মাড়াই, ইটের ভাটায় কাঁদা ছানা করা, আখ মাড়াই প্রভৃতি কাজের জন্য মহিষ ব্যবহার করা হয়।
৬। প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষায় গবাদি প্রাণির গুরুত্ব
গবাদি প্রাণির আগাছা, লতাপাতা ও মাঠ ফসলের অবশিষ্টাংশ খেয়ে আমাদের পরিবেশকে আবর্জনামুক্ত রাখে। আমাদের
দৈনন্দিন খাবারের অবশিষ্টাংশ যেমন তরিতরকারির খোসা, গমের ভূষি, ভাতের মাড় ইত্যাদি গবাদি প্রাণি খেয়ে আমাদের
পরিবেশ সুরক্ষা করে। গবাদি প্রাণির মলমূত্র উৎকৃষ্ট মানের জৈবসার যা জমির উর্বরতা বৃদ্ধি করে এবং রাসায়নিক সার
ব্যবহারের খরচ ও ক্ষতি কমায়। গবাদি প্রাণির মল উত্তম জ¦ালানি হিসাবে ব্যবহৃত হচ্ছে। এতে করে জ¦ালানি তো পূরন
হচ্ছেই পাশাপাশি পরিবেশ ও নির্মল থাকছে।
বাংলাদেশে গবাদি প্রাণি উন্নয়নের সমস্যাবলী
বাংলাদেশে গবাদি প্রাণি যেমন প্রয়োজনের তুলনায় কম তেমনি তা গুনগত দিক থেকেও অত্যন্ত নি¤œমানের। বাংলাদেশের
প্রাণি সম্পদ উন্নয়নের প্রধান সমস্যাগুলো নিচে আলোচনা করা হলো১. প্রাণি সম্পদের স্বল্পতা: বাংলাদেশের কৃষিকাজ পরিচালনা, পরিবহন ও যাতায়াতের জন্য যে পরিমান
প্রাণিসম্পদের প্রয়োজন সে তুলনায় প্রাণি সম্পদের সংখ্যা খুবই কম।
২. নি¤œমানসম্পন্ন গবাদি প্রাণি: এ দেশের গবাদি প্রাণির গঠন প্রকৃতি ও স্বাস্থ্যের দিক দিয়ে অত্যন্ত নি¤œমানের।
আমাদের দেশের গবাদি প্রাণি ওজনে যেমন কম আকারেও তেমনি ছোট।
৩. রোগের ব্যপকতা: বাংলাদেশে প্রাণিসম্পদ উন্নয়নের অন্যতম প্রধান সমস্যা হল রোগব্যধির আক্রমন। এদেশে
প্রতিবছর তড়কা, বাদলা, গো-বসন্ত ইত্যাদি রোগে বহু গবাদি প্রাণি অকালেই মারা যায়।
৪. গবাদি প্রাণির খাদ্যের স্বল্পতা: বনভূমি ও অন্যান্য পতিত জমি ক্রমাগত চাষের আওতায় আনার ফলে গবাদি
প্রাণির চারনক্ষেত্রের অভাবে গবাদি প্রাণি খাদ্যের সমস্য দেখা দিয়েছে।
৫. ব্যবসায়িকভাবে গবাদি প্রাণি পালনের অভাব: দেশে বানিজ্যকভাবে গবাদি প্রাণি পালন করা হয় না।
৬. অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ: এদেশের গবাদি প্রাণির বাসস্থান অধিকাংশেক্ষেত্রেই ভেজা, কাদাময় ও স্যাঁতস্যাতে বিশেষ
করে বর্ষাকালে অবস্থা আরো করুন হয়। তাছাড়া মশামাছি থেকে নিরাপদে রাখার মত ব্যবস্থাও অধিকাংশে কৃষক
নেয় না। যার ফলে গবাদি প্রাণি ক্রমশ নি¤œমানের হয়।
৭. সুষ্ঠু পরিকল্পনা ও প্রজনন ব্যবস্থার অভাব: বাংলাদেশে প্রাণি সম্পদ উন্নয়নের অন্যতম প্রধান সমস্যা হল সুষ্ঠু
পরিকল্পনার অভাব। আমাদের দেশে আজও উন্নত জাতের গবাদি প্রাণি উৎপাদনের কোন সুপ্রতিষ্ঠিত প্রজনন
ব্যবস্থা নেই। তাছাড়া, দেশে আজ ও বিজ্ঞানসম্মত উপায়ে গবাদি প্রাণি প্রতিপালনের ব্যবস্থা গড়ে উঠেনি।
এখনও নি¤œমানের গবাদি প্রাণি দ্বারা প্রজনন করা হয়।
৮. চিকিৎসা ব্যবস্থার সীমাবদ্ধতা: আমাদের দেশে গবাদি প্রাণি চিকিৎসা ব্যবস্থার অবস্থা অত্যন্ত নাজুক। তাছাড়াও
গবাদি প্রাণিকে খামারিরা নিয়মিত কৃমিনাশক খাওয়ান না।
৯. গবাদি প্রাণির পরিবর্তে যান্ত্রিক শক্তির ব্যবহার: লাঙ্গল চাষ,আখ মাড়াই, ধানসহ অন্যান্য ফসল মাড়াই, ইটের
ভাটা, খাদ্যশস্য পরিবহন ইত্যাদি নানাবিধ কাজে বর্তমান গবাদি প্রাণি শক্তি ব্যবহৃত না হয়ে ডিজেল চালিত যন্ত্র
ব্যবহৃত হচ্ছে। এতে করে গবাদি প্রাণি চালিত যন্ত্র ও পরিবহনের ব্যবহার ব্যাপক হ্রাস পাওয়ায় গবাদি প্রাণির ও
ব্যবহার মানুষ দ্রæত নিরুৎসাহিত হচ্ছে। ফলস্বরুপ গবাদি প্রাণি পালন ও উন্নায়নে ব্যাঘাত ঘটছে।
সারসংক্ষেপ
গবাদিপ্রাণি বাংলাদেশের অর্থনীতির জন্য একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ খাত। একটি গবাদিপ্রাণির উপজাত হিসেবে যা কিছু
পাওয়া যায়, তার সব কিছুই গুরুত্বপূর্ণ। যেমন মাংস, চামড়া, নাড়িভুঁড়ি, শিং ইত্যাদির চাহিদা দেশের বাজার ছাড়াও
বিদেশে রয়েছে। বাংলাদেশ দেশীয় চাহিদা মেটানোর পরও বিদেশে গত অর্থবছরে প্রায় ১ বিলিয়ন ডলারের চামড়া ও
চামড়াজাত পণ্য রফতানি করেছে। রফতানির ক্ষেত্রে তৈরি পোশাকের পর চামড়া শিল্পের অব্সথান। গত অর্থবছরে প্রায়
১৫০ কোটি টাকার নাড়িভুঁড়ি, শিং ইত্যাদি রফতানি করা হয়েছে। এছাড়া বিদেশে হালাল মাংসের ব্যাপক চাহিদা
রয়েছে। তাই রফতানি বহুমুখীকরণে লাইভস্টক খাতের উন্নয়ন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের ক্ষেত্রে
গার্মেন্টস শিল্পের পরেই এ খাতের যথেষ্ট সম্ভাবনা রয়েছে।
পাঠোত্তর মূল্যায়ন-১১.১
বহুনির্বাচনি প্রশ্ন
১। গবাদি প্রাণির মাংসে আমিষের পরিমান কত?
(ক) ১০-১৫% (খ) ১৫-২০%
(গ) ২০-২৫% (ঘ) ২৫-৩০%
২। বø্যাক বেঙ্গল ছাগল বছরে কতবার বাচ্চা দেয়?
(ক) ২ বার (খ) ১ বার
(গ) ৩ বার (ঘ) ৪ বার
৩। গবাদি প্রাণির মলমূত্রের প্রধান ব্যাবহার কোনটি?
(ক) মাছের খাদ্য (খ) বায়োগ্যাস
(গ) জ্বালানি (ঘ) জৈব সার
FOR MORE CLICK HERE
এইচএসসি বাংলা নোট ১ম পত্র ও ২য় পত্র
ENGLISH 1ST & SECOND PAPER
এইচএসসি আইসিটি নোট
এইচএসসি অর্থনীতি নোট ১ম পত্র ও ২য় পত্র
এইচএসসি পৌরনীতি ও সুশাসন ১ম পত্র
এইচএসসি পৌরনীতি নোট ২য় পত্র
এইচএসসি সমাজকর্ম নোট ১ম পত্র
এইচএসসি সমাজকর্ম নোট ২য় পত্র
এইচএসসি সমাজবিজ্ঞান নোট ১ম পত্র ও ২য় পত্র
এইচএসসি ইতিহাস নোট ১ম পত্র
এইচএসসি ইতিহাস নোট ২য় পত্র
এইচএসসি ইসলামের ইতি. ও সংস্কৃতি নোট ১ম পত্র
এইচএসসি ইসলামের ইতি. ও সংস্কৃতি নোট ২য় পত্র
এইচএসসি যুক্তিবিদ্যা ১ম পত্র ও ২য় পত্র
এইচএসসি ভূগোল ও পরিবেশ নোট ১ম পত্র ও ২য় পত্র
এইচএসসি ইসলামিক স্টাডিজ ১ম ও ২য় পত্র