বয়স, ব্যাবহার ও লিঙ্গভেদে গরু, মহিষ, ছাগল, ভেড়া ও ঘোড়ার নামকরণ করতে পারবে

বয়স, লিঙ্গ ও ব্যবহারভেদে বিভিন্ন ধরনের গবাদি প্রাণিকে বিভিন্ন ভাবে সংজ্ঞায়িত করা হয়। যেমনক) গরু
১. গরু : স্ত্রী ও পুরুষ উভয় লিঙ্গের গরু জাতিকে সাধাারণ কথায় গরু বলা হয়।
২. বাছুর: গাভীর স্ত্রী ও পুরুষ উভয় বাচ্চাকে বাছুর বলা হয়।
৩. এঁড়ে বাছুর: এক বছরের কম বয়সের পুরুষ বাচ্চাকে এঁড়ে বাছুর বলা হয়।
৪. বকনা বাছুর: এক বছরের কম বয়সের স্ত্রী বাচ্চাকে বকনা বাছুর বলা হয়।
৫. ইয়ারলিং ষাঁড়: এক থেকে দুই বছর বয়স্ক ষাঁড় বাছুরকে ইয়ারলিং ষাঁড় বলা হয়।
৬. বকনা: এক বছর বয়স থেকে প্রথম বাচ্চা দেয়ার পূর্ব পর্যন্ত সময়ের স্ত্রী গরুকে বকনা বলা হয়।
৭. গো-পাল: এ সাথে অনেক গরু থাকলে বা চড়লে তাকে গো-পাল বলা হয়।
৮. গাভী: প্রথম বাচ্চা প্রসব করার পরই স্ত্রী গরুকে গাভী বলা হয়।
৯. ষাঁড়: প্রজননক্ষম পুরুষ (মর্দা) গরুকে ষাঁড় বলা হয়।
১০. স্ট্যাড ষাঁড়: প্রজননের জন্য রক্ষিত প্রাপ্তবয়স্ক ষাঁড়কে স্ট্যাড ষাঁড় বলা হয়।
১১. বলদ: প্রজননশক্তি রহিত খোঁজা করা পুরুষ গরুকে বলদ বলা হয়।
১২. বিফ: প্রাপ্তবয়স্ক গরুর মাংসকে বিফ বলা হয়।
১৩. ভীল: জন্ম থেকে তিন মাস বয়স্ক বাছুরের মাংসকে ভীল বলা হয়।
১৪. বুলার: যে গাভী সবসসয় গরম অবস্থায় থাকে তাকে বুলার বলা হয়।
১৫. স্টিয়ার: খোজাকৃত এঁড়ে বাছুর।
১৬. বেবি কাফ: ছয়-সাত সপ্তাহ পর্যন্ত বয়স্ক বাছুরকে বেবি কাফ বলা হয়।
১৭. ¯িøঙ্ক কাফ: জবাইকৃত গাভীর জরায়ুতে যদি কোন বাচ্চা পাওয়া যায় তাকে ¯িøঙ্ক কাফ বলে।
খ) মহিষ:
১. মহিষ: স্ত্রী ও পুরুষ উভয় লিঙ্গের মহিষ জাতিকে সাধার রকথায় মহিষ বলা হয়।
২. বাফেলো কাফ: মহিষের স্ত্রী ও পুরুষ উভয় বাচ্চাকে বাফেলো কাফ বলা হয়।
৩. বাফেলো বুল কাফ: মহিষের অপ্রাপ্তবয়স্ক পুরুষ বাছুরকে বাফেলো বুল কাফ বলা হয়।
৪. বাফেলো হেইফার কাফ: মহিষের অপ্রাপ্ত বয়স্ক স্ত্রী বাছুরকে বাফেলো হেইফার কাফ বলা হয়।
৫. সি বাফেলো: গাভী মহিষেকে সি বাফেলো বলা হয়।
৬. বাফেলো বুল: প্রজননশক্তিসম্পন্ন প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষ মহিষকে বাফেলো বুল বলা হয়।
৭. বাফেলো বুলক: প্রজননশক্তি রহিত খোঁজা করা প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষ মহিষকে বাফেলো বুলক বলা হয়।
৮. বাফেন: মহিষের মাংসকে বাফেন বলে।
গ) ছাগল
১. ছাগল: স্ত্রী ও পুরুষ উভয় লিঙ্গের ছাগল জাতিকে সাধারণ কথায় ছাগল বলা হয়।
২. কিড: নবজাতক ছাগল ছানাকে কিড বলা হয়।
৩. বাকলিং: অপ্রাপ্তবয়স্কক পুরুষ ছাগলকে বাকলিং বলা হয়।
৪. গোটলিং: অপ্রাপ্তবয়স্ক স্ত্রী ছাগলকে গোটলিং বলা হয়।
৫. ডো: বাচ্চা দেওয়া প্রাপ্তবয়স্ক স্ত্রী ছাগলকে ডো বলা হয়।
৬. পাঁঠা: প্রজননক্ষম পুরুষ ছাগলকে পাঁঠা বা বাক বলা হয়।
৭. খাসি: প্রজননশক্তি রহিত খোঁজা করা পুরুষ ছাগলকে খাসি বলা হয়।
৮. ছাগল পাল: একসাথে অনেকগুলো ছাগল চরলে তাকে ছাগল পাল বলা হয়।
৯. চেভন: ছাগলের মাংসকে চেভন বলে।
১০. মাাটন: পূর্ণবয়স্ক খাসির মাংসকে মাটন বলা হয়।
ঘ) ভেড়া বা মেষ (ঝযববঢ়)
১. ভেড়া: স্ত্রী ও পুরুষ উভয় লিঙ্গের ভেড়া জাতিকে সাধারণ কথায় ভেড়া বা মেষ বলা হয়।
২. মেষশাবক: এক বছরের কম বয়সের ভেড়ার বাচ্চাকে মেষশাবক বলে।
৩. ভেড়ি: পূর্ণবয়স্ক বাচ্চা প্রদানকারী স্ত্রী ভেড়াকে ভেড়ি বলা হয়।
৪. ভেড়াশাবক: ভেড়ির পুরুষ বাচ্চাকে ভেড়াশাবক বলা হয়।
৫. ভেড়িশাবক: ভেড়ির স্ত্রী বাচ্চাকে ভেড়িশাবক বলা হয়।
৬. হোয়েদার: প্রজননশক্তি রহিত অর্থাৎ খোঁজা করা পুরুষ ভেড়াকে হোয়েদার বলা হয়।
৭. সেগি: প্রজনন কাজে ব্যবহারের পর খোঁজা করা পুরুষ ভেড়াকে সেগি বলা হয়।
৮. র‌্যাম: প্রজননক্ষম পূর্ণবয়স্ক পুরুষ ভেড়াকে র‌্যাম বা টুপ বলা হয়।
৯. মেষ পাল: একসাথে অনেকগুলো মেষ থাকলে তাকে মেষপাল বলা হয়।
১০. মাটন: ভেড়ার মাংসকে মাটন বলা হয়।
১১. ইলড: যে ভেড়ি কোনদিন বাচ্চা প্রসব করেনি তাকে বাজা বা বন্ধ্যা ভেড়ি বা ইলড বলা হয়।
১২. টুপ: প্রজননক্ষম পূর্ণবয়স্ক পুরুষ ভেড়াকে টুপ বলে।
১৩. ল্যাম্ব: এক বছরের কম বয়সের মেষের বাচ্চাকে ল্যাম্ব বা বাচ্চা মেষ বলে।
১৪. ক্রোন: যে ভেড়িকে অধিক বয়স পর্যন্ত বাচ্চা উৎপাদনে নিয়োজিত রাখা হয়, তাকে ক্রোন বা বীজ ভেড়ি বলে ঙ) ঘোড়া
১. হর্স: স্ত্রী ও পুরুষ উভয় লিঙ্গের ঘোড়া প্রজাতিকেই হর্স বা বলা হয়।
২. স্টালিয়ন: প্রজনন কাজে ব্যবহৃত পূর্ণবয়স্ক পুরুষ ঘোড়াকে স্টালিয়ন বা পালের গোদা বলা হয়।
৩. গেলডিং: দুই বছর বয়সের আগে যে পুরুষ ঘোড়াকে খোঁজা করা হয়োছে তাকে গেলডিং বলা হয়।
৪. কোল্ট: এক বছরের বেশি অপ্রাপ্ত বয়সের পুরুষ ঘোড়াকে ঘোটক বা কোল্ট বলা হয়।
৫. কোল্ট ফোল: এক বছরের কম বয়সের ঘোড়ার পুরুষ বাচ্চাকে মর্দা বাচ্চা বা কোল্ট ফোল বলা হয়।
৬. ফিলি: এক বছরের অধিক অপ্রাপ্ত বয়স্ক স্ত্রী ঘোড়াকে ফিলি বলা হয়।
৭. ফিলি ফোল: এক বছরের কম বয়সের মাদি বা ঘোটকি বাচ্চাকে বাচ্চা ঘোটকী বা ফিলি ফোল বলা হয়।
৮. মেয়ার: প্রাপ্তবয়স্ক স্ত্রী জাতীয় ঘোড়াকে ঘোটকি বা মেয়ার বলা হয়।
সারসংক্ষেপ
বাংলাদেশে যত গৃহপালিত প্রাণি আছে সবগুলোই দেশের উৎপাদনমুখী ও অর্থনৈতিক কর্মকান্ডে ব্যাপক সহায়তা করে।
তাছাড়া এরা নিজেরাও অর্থকরী হিসেবে নিবেচিত। গবাদি প্রাণি সমূহকে বয়স। লিঙ্গ ও ব্যাপবহার ভেদে জানার মাধ্যমে
এদেরকে সহজে চিহ্নিত কএবং উৎপাদনশীলতা সম্পর্কে জানান যায়। কারন গবাদি প্রাণি সম্পদের উন্নয়নের সাথে জাতীয উন্নয়ন জড়িত।
১। এক বছর বয়স থেকে প্রথম বাচ্চা দেয়ার পূর্ব পর্যন্ত স্ত্রী গরুকে কি বলে?
(ক) বাছুর (খ) ওঁড়ে
(গ) বকনা বাছুর (ঘ) বকনা
২। প্রাপ্ত বয়স্ক গরুর মাংসকে কি বলে?
(ক) মাটন (খ) বিফ
(গ) চেভন (ঘ) রেড মিট
৩। নবজাতক ছাগল ছানাকে কি বলে?
(ক) মেয়ার (খ) স্যাগি
(গ) কিড (ঘ) বাকলিং
৪। প্রজননক্ষম পুরুষ ঘোড়াকে কি বলে?
(ক) গেলডিং (খ) ফিলি
(গ) ষ্ট্যালিয়ন (ঘ) কোল্ট দেশী গরুর জাত ও বৈশিষ্ট্য বর্ণনা কর বিদেশী ও উন্নত গরুর জাত ও বৈশিষ্ট্য সংকর জাতের গরু গবাদি প্রাণির মধ্যে গরু প্রধান। আমাদের দেশে প্রায় প্রতিটি কৃষক পরিবারে ২-৪ টি গরুপালন করতে দেখা
যায়। এমনকি আজকাল শহর ও শহরতলেিতও গরু পালনের গুরুত্ব বেড়েছে। বাংলাদেশে বিভিন্ন জাতের গরু
পাওয়া যায়। গরুর জাতকে ২টি বিষয়ের উপর ভিত্তি করে শ্রেণীবিভাগ করা যায়। যথাক) উৎপত্তির ভিত্তিতে ও
খ) উৎপাদন বা ব্যবহারের ভিত্তিতে
ক) উৎপত্তির ভিত্তিতে গরুর জাতকে প্রধানত তিনটি শ্রেণীতে ভাগ করা যায়। যথা১. দেশি জাতের গরু
২. বিদেশি উন্নত জাতের গরু ও
৩. উন্নত সংকর জাতের গরু
দেশি জাতের গরু:
বাাংলাদেশে আদিকাল থেকে যে জাতের গরু পালন করা হচ্ছে সেগুলোকে দেশি জাতের গরু বলা হয়া। দেশি জাতের গরু
মূলত পরিশ্রমী জাত। এ জাতের বলদ কৃষিকাজ ও ভার বহনের কাজে বেশ উপযোগী। তবে চট্টগ্রাম, পাবনা, সিরাজগঞ্জ,
মুন্সিগঞ্জ, ফরিদপুর এবং ঢাকার কিছু এলাকায় বেশকিছু দেশি জাতের গরু আছে যেগুলো আকারে কিছুটা বড় হয় এবং
এগুলো থেকে বেশি পরিমাণে দুধ পাওয়া যায়। দেশি জাতের গরুর মধ্যে পাবনাইয়া, লাল চাঁটগাঁ, ফরিদপুর দেশি ছোট
গরু প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য।
বৈশিষ্ট্য:
১. আকারে ছোট, পরিশ্রমী, কুঁজ উচু।
২. প্রাপ্ত বয়স্ক গরুর ওজন গড়ে ২৫০ কেজি।
৩. মাংস বেশ সুস্বাদু।
৪. গাভী হতে দৈনিক ১-৩ লিটার দুধ পাওয়া যায়।
৫. গাভীর গড়পড়তা দোহনকাল ৭-৮ মাস।
নিচে কয়েকটি দেশি জাতের গরুর বিবরণ দেওয়া হল।
ক) লাল চট্টগ্রাম
গরুর আদি বাসস্থান চট্টগ্রাম ও পার্বত্য চট্টগ্রাম জেলা। এদেরকে লাল চাঁটগাঁ বলে। এগুলো মূলত দ্বৈত উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত
জাত। জমি চাষ ও ভার বহনের কাজে বেশ উপযোগী।
বৈশিষ্ট্য:
১. গায়ের রঙ লাল, মুখ খাটো ও চওড়া।
২. গরু দেখতে ছোটখাটো, পেছনের দিক বেশ ভারি।
৩. চামড়া পাতলা, শিং ছোট ও চ্যাপ্টা।
৪. ওলানের শিরা বেশ স্পষ্ট এবং ওলান বেশ বড়।
৫. গাভী দৈনিক ২-৩ লিটার দুধ দেয়।
৬. পূর্ণবয়স্ক ষাড় ও গাভীর ওজন যথাক্রমে ৩৫০-৪০০ কেজি ও ২৫০-৩০০ কেজি।
৭. লেজ যথেষ্ট লম্বা এবং শেষ প্রান্তের চুলের গুচ্ছ লাল বর্ণের।
৮. গলকম্বল ছোট এবং ঘাড় চিকন।
৯. মাথা ছোট ও পোল উন্নত।
১০. দুধে চর্বির পরিমাণ ৪-৫%।
খ) দেশি ছোট গরু:
বাংলাদেশের সকল এলাকায় এ ধরনের গরু দেখা যায়।
বৈশিষ্ট্য:
১. এরা আকারে ছোট এবং শান্ত প্রকৃতির।
২. গায়ের রঙ সাদা, কালো, লাল, কাজলা বা বিভিন্ন রঙ- এর মিশ্রণ হতে পারে।
৩. মাথা ছোট এবং অনেকটা বর্গাকৃতির।
৪. কপাল চওড়া ও চ্যাপ্টা।
৫. শিং চোখা ও সামনে ও উপরের দিকে বাঁকানো।
৬. গাভী দৈনিক ০.৫-১ লিটার দুধ দেয়।
৭. দুধে চর্বির পরিমাণ কম।
বিদেশি উন্নত জাতের গরু
বাংলাদেশে যে সকল বিদেশি উন্নত জাতের গরু পাওয়া যায় সেগুলোকে দুভাগে ভাগ করা যায়। যথা- ইউরোপীয় জাতের
গরু এবং উপমহাদেশীয় গরু।
১। ইউরোপীয় জাতের গরু
ইউরোপীয় জাতের গরুর মধ্যে হলস্টেন ফ্রিজিয়ান, জার্সি, ব্রাউন সুইস, আয়ারশায়ার উল্লেখযোগ্য। আমাদের দেশে
হলস্টেন ফ্রিজিয়ান এবং জার্সি ষাঁড় প্রজননের কাজে ব্যবহার করা হয়। এদের কুঁজ নেই।
ক) হলস্টেন ফ্রিজিয়ান
আদি বাসস্থান:
হল্যান্ডের ফ্রিজল্যান্ড প্রদেশ এদের আদি বাসস্থান। বর্তমানে পৃথিবীর প্রায় সর্বত্র পাওয়া যায়।
বৈশিষ্ট্য:
১. এ জাতের গরুর বর্ণ ছোট-বড় কালো-সাদা রঙে মেশানো হয়।
২. উন্নত জাতের গাভীর মধ্যে এরা আকারে সবচেয়ে বড় হয়।
৩. মাথা লম্বাটো হয়। অন্যান্য জাতের গরুর ন্যায় এদের কুঁজ হয় না।
৪. পূর্ণবয়স্ক ষাঁড়ের ওজন প্রায় ৮০০-১০০০ কেজি ও গাভীর
ওজন প্রায় ৫০০-৬০০ কেজি হয়ে থাকে।
৫. গাভী দিনে প্রায় ৪০ লিটার পর্যন্ত দুধ দিয়ে থাকে।
৬. এ জাতের বকনা প্রায় দেড় থেকে দুই বছর বয়সে প্রথম বাচ্চা
দেয়।
৭. দুধে চর্বি থাকে ৩.৫% থেকে ৪%।
৮. শরীর বেশ পুষ্ট, পিছনের অংশ ভারী এবং ওলানগ্রন্থি বেশ বড়।
৯. গাভী শান্ত প্রকৃতির কিন্তু ষাঁড়গুলো বদমেজাজি।
১০. জন্মের সময় বাছুরের ওজন গড়ে ৪০-৪৫ কেজি হয়।
১১. অধিক দুধ দানের জন্য এ জাত বিশ্ববিখ্যাত ।
১২. মাথা ও পেছনের পা বেশ সোজা।
১৩. এ জাতের গাভী পরবর্তী বাচ্চা দেয়ার আগ পর্যন্ত একটানা দুধ দেয়।
১৪. এরা বছওে ৪৫০০-৯০০০ লিটার পর্যন্ত দুধ দেয়।
খ) জার্সি
আদি বাসস্থান: ইউরোপের জার্সি ও ইংলিশ চ্যানেল দ¦ীপপুঞ্জ জার্সি গাভীর আদি বাসস্থান। ইউরোপ ও আমেরিকাসহ
পৃথিবীর বহু দেশে এ জাতের গরু পাওয়া যায়।
বৈশিষ্ট্য:
১. আকার তুলনামূলক ভাবে ছোট।
২. জন্মের সময় বাচ্চা দুর্বল ও ছোট হয়।
৩. গায়ের রঙ ফিকে লাল এবং গাঢ় বাদামি হয়।
৪. মাথা লম্বা, এদের কুঁজ হয় না, ফলে শিরদাড়া সোজা হয়।
৫. শরীরে মেদ কম থাকে, লেজের রঙ কালো।
৬. গাভীর ওলান বেশ বড় হয়, পা গুলো ছোট কিন্তু মজবুত।
৭. গাভী ও ষাঁড়ের ওজন যথাক্রমে ৪.-০০-৫০০ কেজি ও ৬০০-
৮০০ কেজি।
৮. একটি গাভী হতে বছরে ৩৫০০-৪৫০০ কেজি দুধ পাওয়া
যায়।
৯. গরু স্বল্পসময়ে বয়ঃপ্রাপ্ত হয় এবং দীর্ঘসময় ধরে বাচ্চা ও দুধ
দেয়।
১০. শিং পাতলা ও সামনের দিকে কিছুটা বাঁকানো থাকে
১১. দৈনিক ১৫-২০ কেজি দুধ দেয়।
১২. দুধে চর্বিও পরিমাণ ৫% হয়।
২। উপমহাদেশীয় জাতের গরু Ñ এদের কুঁজ হয়।
ক) শাহীওয়াল (ঝধযরধিষ)
আদি বাসস্থান:
শাহীওয়াল জাতের গরুর আদি বাসস্থান পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশের মন্টগোমারী জেলা। এশিয়া মহাদেশের অনেক
দেশেই শাহীওয়াল জাতের গরু পাওয়া যায়। পাকিস্তান থেকে এ জাতের
গরু আমাদের দেশে আমদানি করা হয়েছে।
বৈশিষ্ট্য:
১. এ জাতের গরু আকারে বেশ বড় হয়।
২. এদের মাথা চওড়া, পা ছোট ্এবং শিং পুরু।
৩. গায়ের রং তামাটে লাল ।
৪. মাথা প্রশস্ত কিন্তু শিং ছোট ও মোট হয়।
৫. নাভীর চার পাশের চামড়া মোটা ও ঢিলা।
৬. ওলান বড় ও ঝুলন্ত।
৭. বলদ অলস প্রকৃতির ও ধীরগতি সম্পন্ন।
৮. গলকম্বল, কান ও নাভী সাধারণত ঝুলানো থাকে।
৯. পূর্ণবয়স্ক গাভীর ওজন প্রায় ৩৫০-৪৫০ কেজি এবং ষাঁড়ের
ওজন প্রায় ৫০০-৭০০ কেজি হয়ে থাকে।
১০. একটি গাভী দিনে প্রায় ১২-১৫ কেজি দুধ দেয় এবং বছওে ৩০০ দিন পর্যন্ত দুধ দিয়ে থাকে।
১১. শাহীওয়াল ষাঁড় ও দেশী গাভীর সংকরায়নে উৎপন্ন গরুর দুধ উৎপাদন ও হালচাষের জন্য ভাল।
১২. বকনা তিন থেকে সাড়ে তিন বছর বয়সে প্রথম বাচ্চা দেয়।
১৩. এদের লেজ লম্বা এবং প্রায় মাটি ছুয়ে যায়।
১৪. লেজের মাথায় একগোছা কালো লোম থাকে।
১৫. জন্মের সময় বাছুরের ওজন ২২-২৮ কেজি হয়।
খ) লাল সিন্ধি (জবফ ঝরহফযর)
আদি বাসস্থান:
পাকিন্তানের সিন্ধু প্রদেশের করাচী, লাসবেলা ও হায়দারাবাদ, এ জাতের গরুর আদি বাসস্থান। এ জাতের গরু লাল বলে
এদের লাল সিন্ধু বলা হয়। পাকিস্তান, ভারত, যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা,
ইন্দোনেশিয়া, থাইল্যান্ড, শ্রীলংকা ও আফ্রিকাতে এ জাতের গরু পাওয়া
যায়।
বৈশিষ্ট্য:
১. গায়ের রং গাঢ় লাল হয় এবং নাভী বড় ও ঝুলানো হয়।
২. কপাল প্রশস্ত ও উন্নত কান নিচের দিকে ঝুলানো হয়।
৩. দেহের অনুপাতে মাথা ছোট, নাকের চূড়া চওড়া।
৪. ওলানের বাটগুলো সুগঠিত এবং চার কোণায় সমদূরত্বে
সমভাবে বসানো।
৫. শিং ভোতা, যা পাশে ও পিছনের দিকে বাঁকানো।
৬. গাভী দৈনিক ১০ লিটার পর্যন্ত এবং বছরের ৩৫০ দিন দুধ
দেয়।
৭. বকনা ৩ বছর বয়সে প্রথম বাচ্চা দেয়।
৮. বলদ বা ষাঁড় হালচাষ ও গাড়ি টানার কাজে বেশ উপযোগী।
৯. গাভী ও ষাঁড়ের ওজন যথাক্রমে ৩৫০-৪০০ কেজি এবং ৪০০-৫০০ কেজি।
১০. গাভীর বার্ষিক দুধ উৎপাদন ক্ষমতা ৩৫০০ লিটার।
১১. দুধে চর্বির ভাগ ৫%।
ঘ) হারিয়ানা
আদি বাসস্থান:
হারিয়ানা জাতের গরুর আদি বাসস্থান ভারতের হারিয়ানা জেলা। ছাড়া
এশিয়ার বহু দেশ, যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণাঞ্চল এবং ল্যাটিন আমেরিকায় এ
জাতের গরু পাওয়া যায়। বলদগুলো জমি চাষ ও পরিবহনে উত্তম।
বৈশিষ্ট্য:
১. গায়ের রং সাদা বা হালকা ধূসর।
২. এরা বেশ শক্তিশালী ও পরিশ্রমি হয়।
৩. সুগঠিত ও আঁটিসাঁট ও লাল হয়।
৪. শিং লম্বা, চিকন এবং মসৃণ হয়।
৫. মাথা লম্বা ও অপেক্ষকৃত সরু।
৬. নাভী শরীরের সাথে লাগানো।
৭. গাভী প্রায় ৩০০ দিন দুধ দেয় এবং বছরে ৩০০০-৩৫০০ কেজি দুধ দেয়।
৮. তাপ সহনশীলতা হারিয়ানার অন্যতম বৈশিষ্ট্য।
৯. গাভী ও ষাঁড়ের ওজন যথাক্রমে ৪০০-৫০০ কেজি ও ৮০০-১০০০ কেজি।
১০. বকনার প্রথম বাচ্চা প্রসব করতে ৪ বছর সময় লেগে যায়।
১১. দুধে চর্বির পরিমাণ ৫%।
উন্নত জাতের সংকর গরু
উন্নত জাতের ষাঁড়ের সঙ্গে দেশি গাভীর মিশ্রণে যে জাতের গরু উৎপাদন করা হয় তাকে সংকর জাতের গরু বলে। সংকর
জাত আসলে মিশ্রজাত। সংকর জাত সৃষ্টি করার প্রক্রিয়াকে সংকরায়ন বলে। আমাদের দেশে দেশী অনুন্নত গাভীকে
বিদেশী উন্নত জাতের ষাঁড়ের মাধ্যমে সংকরায়ন করে তার থেকে উন্নত সংকর বাছুর উৎপাদন করা হচ্ছে। সংকরায়নের
জন্য আগে বিদেশ থেকে আমদানি করা জাতের ষাঁড় আমদানি করা হতো । কিন্তু দেশের চাহিদার তুলনায় এত বেশি ষাঁড়
আমদানি করা ব্যয়বহুল। এজন্য কমসংখ্যক ষাঁড় দিয়ে বেশিসংখ্যক গাভীকে প্রজনন করার বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি অর্থাৎ কৃত্রিম
প্রজনন ব্যবস্থা দেশে চালু হয়েছে। কৃত্রিম প্রজনন ব্যবস্থায় উন্নত জাতের ষাঁড় থেকে সংগ্রহ করে বীর্য বা বীজ গাভীর জনন
অঙ্গে প্রতিস্থাপন করে ডিম্বাণু নিষিক্ত করা হয়। আমাদের দেশে এ পদ্ধতি খুব ধীরে ধীরে চালু হয়েছে। বর্তমানে গ্রাম ও
শহর সর্বত্রই এ পদ্ধতি অবলম্বন করে বহু সংকর বাছুর উৎপাদন হচ্ছে।
ধ) উৎপাদন ব্যবহারের ভিত্তি করে গরুর শ্রেণীবিভাগ
দুধ ও মাংস উৎপাদন এবং কার্যকারিতর উপর ভিত্তি করে গরুর জাতকে প্রধানত চারটি শ্রেণীতে বিভক্ত করা হয়। যেমন১. দুধাল জাত (গরষশ ইৎববফ): এ শ্রেণীর গাভীগুলো সাধারণত অধিক পরিমাণে দুধ দিয়ে থাকে। যেমন-হলস্টেইনফ্রিজিয়ান, শাহীওয়াল, জার্সি, লাল সিন্ধি, ব্রাউন সুইস, আয়ার শায়ার, গুয়ারেন্সি ইত্যাদি।
২. মাংসল জাত (ইববঃ ইৎববফ): মাংস উৎপাদনের জন্য এ জাতগুলো বেশি পরিচিত। যেমন- অ্যাঙ্গাস, বিফ মাষ্টার,
ব্রাহ্মণ, ডেবন, সর্টহর্ন, হালিকার ইত্যাদি।
৩. দ্বৈত উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত জাত এ শ্রেণীর গাভী মোটামুটি ভাল দুধ দেয় এবং এদেরকে
কৃষিকাজেও ব্যবহার করা যায়। যেমন- হারিয়ানা, থাষ্টার্কার, রেডপোল,কাংক্রেজ,মিল্কিং সর্টহর্ন ইত্যাদি।
৪. শ্রম বা ভারবাহী জাত: এ জাতের বলদ গরুগুলো কৃষিকাজ এবং ভার বহনে বেশি উপযোগী। যেমন- অমৃত মহল, মালভি, হরিয়ানা, ধান্নি, কৃষ্ণভেলি, ভাগনারি ইত্যাদি।
সারসংক্ষেপ
গরুর জাতকে দুই উপায়ে বিভক্ত করা যায়। যথাÑ উৎপত্তি এবং উৎপাদন বা ব্যাবহারের ভিত্তিতে। বাংলাদেশের চট্টগ্রাম
এবং পার্বত্য চট্ট্রগ্রাম জেলায় রেড চিটাগাং গরু দেখতে পাওয়া যায়। আমাদের দেশের গরু অনুন্নত।
পাঠোত্তর মূল্যায়ন-১১.৩
বহুনির্বাচনি প্রশ্ন
১। দেশী গাভী হতে দৈনিক প্রাপ্ত দুধের পরিমাণ কত?
(ক) ১ লিটার (খ) ২০৫ লিটার
(গ) ১-৩ লিটার (ঘ) ৮-১০ লিটার
২। হল্যান্ডের ফ্রিজিয়ান প্রদেশ হতে কে জাতের গরুর উৎপত্তি?
(ক) জার্সি (খ) আয়ার শায়অর
(গ) হলস্টিন ফ্রিজিয়ান (ঘ) সিন্টি

FOR MORE CLICK HERE
এইচএসসি বাংলা নোট ১ম পত্র ও ২য় পত্র
ENGLISH 1ST & SECOND PAPER
এইচএসসি আইসিটি নোট
এইচএসসি অর্থনীতি নোট ১ম পত্র ও ২য় পত্র
এইচএসসি পৌরনীতি ও সুশাসন ১ম পত্র
এইচএসসি পৌরনীতি নোট ২য় পত্র
এইচএসসি সমাজকর্ম নোট ১ম পত্র
এইচএসসি সমাজকর্ম নোট ২য় পত্র
এইচএসসি সমাজবিজ্ঞান নোট ১ম পত্র ও ২য় পত্র
এইচএসসি ইতিহাস নোট ১ম পত্র
এইচএসসি ইতিহাস নোট ২য় পত্র
এইচএসসি ইসলামের ইতি. ও সংস্কৃতি নোট ১ম পত্র
এইচএসসি ইসলামের ইতি. ও সংস্কৃতি নোট ২য় পত্র
এইচএসসি যুক্তিবিদ্যা ১ম পত্র ও ২য় পত্র
এইচএসসি ভূগোল ও পরিবেশ নোট ১ম পত্র ও ২য় পত্র
এইচএসসি ইসলামিক স্টাডিজ ১ম ও ২য় পত্র

Copyright © Quality Can Do Soft.
Designed and developed by Sohel Rana, Assistant Professor, Kumudini Government College, Tangail. Email: [email protected]