শারীরিক সক্ষমতা অর্জনে ব্যায়ামের প্রভাব
দৈহিক ও মানসিক স্বাস্থ্য লাভের জন্য নিয়মিত ও সংযতভাবে অঙ্গ সঞ্চালন করার নামই ব্যায়াম। ভরা পেটে
ব্যায়াম করা ঠিক নয়। শারীরিক সক্ষমতা অর্জনের জন্য ব্যায়ামের কোনো বিকল্প নেই। ব্যায়াম না করলে কখনও শারীরিক
সক্ষমতা অর্জন সম্ভব নয়। তাই সকল বয়সের লোকদের নিয়মমাফিক নির্দিষ্ট ব্যায়াম করা প্রয়োজন। ব্যায়ামের প্রভাবে
শরীরের ভেতর নানারকম পরিবর্তন হয় যা শারীরিক সক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। ব্যায়ামের প্রভাবে শরীরের ভিতর যে
পরিবর্তন হয় তা নিচে উল্লেখ করা হলোÑ
১। হৃৎপিন্ডের (ঐবধৎঃ) পেশি শক্তিশালী হয়: হৃৎপিন্ড হলো দেহের সর্বত্র রক্ত পরিবহনের কেন্দ্র। এটি একটি পেশিবহুল
অঙ্গ। ব্যায়াম বা খেলাধুলা করলে শরীরে রক্ত চলাচল বেড়ে যায়। ফলে হৃৎপিন্ডের পেশি শক্তিশালী ও নিরোগ হয়।
এরূপ হৃৎপিন্ডকে ‘অ্যাথলেটিক’ হার্ট বলে।
২। হৃৎপিন্ডের রক্ত পাম্প করার ক্ষমতা বাড়ে: একজন ব্যক্তির হৃৎপিন্ড প্রতি মিনিটে ১৩০ মিলিলিটার রক্ত পাম্প করে
সমস্ত শরীরে ছড়িয়ে দেয়। ব্যায়াম বা খেলাধুলা করার সময় রক্ত চলাচল বৃদ্ধি পাওয়ার ফলে হৃৎপিন্ডের পাম্প করার
ক্ষমতা বেড়ে যায়। এতে হৃৎপিন্ড সবল ও কর্মক্ষম হয় এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়।
৩। নাড়ির গতি (চঁষংব ৎধঃব) বৃদ্ধি পায়: একজন ব্যক্তি পরিশ্রম করলে তার নাড়ির গতি বা পাল্স্ রেট বেড়ে যায়।
নাড়ির এই গতি স্বাভাবিক হতে অনেক সময় লাগে। ফলে ক্লান্তি সহজে দূর হয় না। অপরদিকে একজন ভালো
খেলোয়াড় যখন ব্যায়াম বা খেলাধুলা করে তখন তার পাল্স্ রেট বেশি বাড়ে না এবং তা দ্রæত স্বাভাবিক হয়ে আসে।
ফলে তার ক্লান্তি তাড়াতাড়ি দূর হয়।
৪। রক্ত চলাচল বাড়ে: ব্যায়াম বা খেলাধুলা করলে শরীরের রক্ত চলাচল বেড়ে যায়। ফলে সাধারণ লোকের চেয়ে একজন
খেলোয়াড়ের মাংসপেশি, হৃৎপিন্ড ইত্যাদির কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি পায় ও মজবুত হয়।
৫। রক্তকণিকা: মানবদেহে তিন প্রকার রক্তকণিকা রয়েছেÑ
ক) লোহিত রক্তকণিকা খ) শ্বেত রক্তকণিকা গ) অনুচক্রিকা
ক) লোহিত রক্তকণিকাÑ লোহিত রক্তকণিকায় হিমোগেøাবিন নামক এক ধরনের উপাদান থাকে বলে রক্ত লাল
দেখায়। মানবদেহে লোহিত রক্তকণিকার সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। এটি শ্বাসকার্যে অক্সিজেন পরিবহনে গুরুত্বপূর্ণ
ভ‚মিকা পালন করে এবং শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে। মানুষের লোহিত রক্তকণিকায় নিউক্লিয়াস থাকে না,
দেখতে অনেকটা বৃত্তের মতো। পূর্ণ বয়স্ক ব্যক্তির রক্তে লোহিত রক্তকণিকার সংখ্যা প্রতি কিউবিক মিলিলিটারে
প্রায় ৫০ লক্ষ। পুরুষের তুলনায় মহিলাদের রক্তে লোহিত রক্তকণিকা কম থাকে। তুলনামূলকভাবে শিশুদের
দেহে রক্তকণিকার পরিমাণ বেশি থাকে। আমাদের জীবনে প্রতি ১২০ দিনে লোহিত রক্তকনিকা ধ্বংস হয়, আবার
সমপরিমাণে তৈরিও হয়। ব্যায়াম করলে লোহিত রক্তকণিকার সংখ্যাও বেড়ে যায় এবং বেশি দিন বাঁচে।
খ) শ্বেত রক্তকণিকাÑ মানুষের শরীরে শ্বেত রক্তকণিকার সংখ্যা অনেক কম। লাল অস্থিমজ্জা ও লসিকাগ্রন্থিতে শ্বেত
রক্তকণিকা তৈরি হয়। এদের রং নেই কিন্তু নিউক্লিয়াস আছে। প্রতি কিউবিক মিলিলিটারে ৫-১০ হাজার শ্বেত
রক্তকণিকা থাকে। এরা সাধারণত ১২-১৩ দিন বেঁচে থাকে। ব্যায়াম করলে এরা বেশিদিন বাঁচে এবং সংখ্যায়
বেড়ে যায়। শ্বেত রক্তকণিকা রক্তে প্রবেশকারী রোগজীবাণু ধ্বংস করে দেহকে রক্ষা করে। ফলে শারীরিক
সক্ষমতা মজবুত ও শক্তিশালী হয়।
গ) অনুচক্রিকাÑ অনুচক্রিকা আকারে ছোট, গোলাকার ও বর্ণহীন। এরা গুচ্ছাকারে থাকে। প্রতি কিউবিক মিলিলিটারে
প্রায় ২ লক্ষ ৫০ হাজার অণুচক্রিকা থাকে। অস্থিমজ্জার মধ্যে অনুচক্রিকা উৎপন্ন হয়। দেহের কোনো স্থানে ক্ষত
হলে সেখানে ৩ মিনিটের মধ্যে রক্ত জমাট বাঁধতে সাহায্য করে।
৬। শ্বাস নিঃশ্বাস (জবংঢ়রৎধঃরড়হ): ব্যায়াম ও খেলাধুলা করার সময় ঘন ঘন শ্বাস গ্রহণ করতে হয়। ফলে পর্যাপ্ত পরিমাণ
অক্সিজেন গ্রহণ ও নিঃশ্বাসের সাথে কার্বন ডাই অক্সাইড বের হয়ে যায়। ঘন ঘন শ্বাস নিঃশ্বাসের ফলে বুকের গভীরতা
বেড়ে যায়। ফলে শারীরিক সক্ষমতাও বৃদ্ধি পায়।
৭। মাংসপেশি (গঁংপষব): আমাদের শরীরে বিভিন্ন ধরনের মাংসপেশি থাকে। মাংসপেশি শরীরকে গতিপ্রাপ্ত করে।
মাংসপেশি শরীরের তাপ উৎপাদন করে এবং তাপের সমতাও রক্ষা করে। ব্যায়াম ও খেলাধুলার ফলে মাংসপেশি
সংখ্যায় বাড়ে না তবে আকৃতিতে বড় হয়, টিস্যুগুলো মোটা ও শক্তিশালী হয়। মাংসপেশির কাজ করার ক্ষমতা বাড়ে।
মাংসপেশিতে অক্সিজেন ও রক্তের পরিমাণ বৃদ্ধি পায়। ফলে শারীরিক সক্ষমতাও অনেক বেড়ে যায়।
• দৈহিক ও মানসিক স্বাস্থ্য ঠিক রাখার জন্য নিয়মিত ও যথাযথভাবে অঙ্গ সঞ্চালন করাকে ব্যায়াম বলে।
• ভরা পেটে ব্যায়াম করা উচিত নয়।
• ব্যায়াম বা খেলাধুলা করলে হৃৎপিন্ডের পেশি শক্তিশালী ও নিরোগ হয়।
• হৃৎপিন্ডের রক্ত পাম্প করার ক্ষমতা বাড়ে।
• ব্যায়াম করলে নাড়ির গতি বা পাল্স্ রেট বৃদ্ধি পায় এবং রক্ত চলাচল বেড়ে যায়।
• মানবদেহে ৩ প্রকার রক্তকণিকা থাকেÑ১. লোহিত রক্তকণিকা ২. শ্বেত রক্তকণিকা ৩. অণুচক্রিকা।
• আমাদের শরীরে লোহিত রক্তকণিকার সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। এটি শ্বাসকার্যে অক্সিজেন পরিবহন করে এবং
শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে। পূর্ণবয়স্ক ব্যক্তির রক্তে লোহিত রক্তকণিকার সংখ্যা প্রতি কিউবিক
মিলিলিটারে প্রায় ৫০ লক্ষ।
• মানুষের শরীরে শ্বেত রক্তকণিকার সংখ্যা অনেক কম। প্রতি কিউবিক মিলিলিটারে ৫-১০ হাজার শ্বেত
রক্তকণিকা থাকে। এটি রক্তে প্রবেশকারী রোগজীবাণু বিনষ্ট করে দেহকে রক্ষা করে।
• অনুচক্রিকা আকারে ছোট, গোলাকার ও বর্ণহীন। প্রতি কিউবিক মিলিলিটারে প্রায় ২ লক্ষ ৫০ হাজার
অনুচক্রিকা থাকে। এটি রক্ত জমাট বাঁধতে সাহায্য করে।
• ব্যায়াম করলে বেশি পরিমাণ অক্সিজেন গ্রহণ ও নিঃশ্বাসের সাথে কার্বন-ডাই-অক্সাইড বের হয়।
• মাংসপেশি শরীরকে চালনা করে, শরীরে তাপ উৎপাদন এবং তাপের সমতাও রক্ষা করে।
সঠিক উত্তরের পাশে টিক () চিহ্ন দিন।
১। শারীরিক সক্ষমতা অর্জনের জন্য কোনটি অপরিহার্য?
ক) ব্যায়াম করা খ) বেশি কথা বলা
গ) অতিরিক্ত আহার করা ঘ) কম নিদ্রা
২। মানবদেহে কত প্রকার রক্তকণিকা থাকে?
ক) ২ প্রকার খ) ৩ প্রকার
গ) ৪ প্রকার ঘ) ৫ প্রকার
৩। ব্যায়াম করলে কী হয়?
র. শরীর অসুস্থ হয়
রর. শরীর অতিরিক্ত মোটা হয়
ররর. হৃৎপিন্ডের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি পায়
নিচের কোনটি সঠিক?
ক) র খ) রর
গ) ররর ঘ) রর ও ররর
৪। ব্যায়াম করলে লোহিত রক্তকণিকার সংখ্যা কী হয়?
ক) স্বাভাবিক থাকে খ) কমে যায়
গ) মরে যায় ঘ) বেড়ে যায়
৫। মাংসপেশির কাজ কী?
ক) টিস্যুগুলোকে ছিড়ে ফেলা খ) শরীরকে গতিপ্রাপ্ত করা
গ) হাড়কে বিনষ্ট করা ঘ) কোষ তৈরি করা
FOR MORE CLICK HERE
এইচএসসি বাংলা নোট ১ম পত্র ও ২য় পত্র
ENGLISH 1ST & SECOND PAPER
এইচএসসি আইসিটি নোট
এইচএসসি অর্থনীতি নোট ১ম পত্র ও ২য় পত্র
এইচএসসি পৌরনীতি ও সুশাসন ১ম পত্র
এইচএসসি পৌরনীতি নোট ২য় পত্র
এইচএসসি সমাজকর্ম নোট ১ম পত্র
এইচএসসি সমাজকর্ম নোট ২য় পত্র
এইচএসসি সমাজবিজ্ঞান নোট ১ম পত্র ও ২য় পত্র
এইচএসসি ইতিহাস নোট ১ম পত্র
এইচএসসি ইতিহাস নোট ২য় পত্র
এইচএসসি ইসলামের ইতি. ও সংস্কৃতি নোট ১ম পত্র
এইচএসসি ইসলামের ইতি. ও সংস্কৃতি নোট ২য় পত্র
এইচএসসি যুক্তিবিদ্যা ১ম পত্র ও ২য় পত্র
এইচএসসি ভূগোল ও পরিবেশ নোট ১ম পত্র ও ২য় পত্র
এইচএসসি ইসলামিক স্টাডিজ ১ম ও ২য় পত্র