সুশিক্ষা ও মানসম্পন্ন শিক্ষার জন্যে সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন মানসম্পন্ন শিক্ষক।

শিক্ষক প্রশিক্ষণ
সুশিক্ষা ও মানসম্পন্ন শিক্ষার জন্যে সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন মানসম্পন্ন শিক্ষক। শিক্ষকের গুণগত মান নিশ্চিত করার জন্য
একদিকে প্রয়োজন বিজ্ঞানসম্মত ও স্বচ্ছ নিয়োগ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে যোগ্য শিক্ষক নিয়োগ করা, অন্যদিকে প্রয়োজন
মানসম্মত শিক্ষক-শিক্ষা এবং চাহিদাভিত্তিক যুগপোযোগী পৌনঃপুনিক শিক্ষক প্রশিক্ষণের মাধ্যমে শিক্ষকদের পেশাগত
উৎকর্ষ সাধন করা। দেশের প্রচলিত শিক্ষক প্রশিক্ষণ ব্যবস্থা খুবই গতানুগতিক, অসম্পূর্ণ, সনদপত্র সর্বস্ব, তত্ত¡ীয়
বিদ্যাপ্রধান, ব্যবহারিক শিক্ষা অপূর্ণ, মুখস্থ বিদ্যার ওপর র্নিভরশীল এবং পুরনো পরীক্ষা পদ্ধতি অনুসারী। তাই আশানুরূপ
ফলফাভ হচেছ না। বর্তমানে মাধ্যমিক স্তরে শিক্ষক প্রশিক্ষণের জন্য ১৪টি সরকারি প্রশিক্ষণ কলেজ, জাতীয় শিক্ষা
ব্যবস্থাপনা একাডেমি (নায়েম), মাদ্রাসা শিক্ষক প্রশিক্ষণ ইন্সটিটিউট, উচ্চ মাধ্যমিক কলেজের শিক্ষকদের বিষয়ভিত্তিক
প্রশিক্ষণের জন্য ৫টি এইচএসটিটিআই এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন উচ্চতর প্রশিক্ষণ ও গবেষণার জন্য একটি শিক্ষা
ও গবেষণা ইনস্টিটিউট রয়েছে। বর্তমানে শিক্ষক প্রশিক্ষণের যে ব্যবস্থা রয়েছে তা অপ্রতুল, চাহিদার তুলনায় অপর্যাপ্ত
এবং যুগোপযোগী নয়। তাই প্রশিক্ষকের সংখ্যা বৃদ্ধি ও প্রশিক্ষণের মানোন্নয়ন করা হবে।
শিক্ষকদের মর্যাদা, অধিকার ও দায়িত্ব
সামাজিক বাস্তবতা সামনে রেখে সকল স্তরের ও ধারার শিক্ষকদের মর্যাদা ও সুযোগ-সুবিধা এবং দায়-দায়িত্বের বিষয়
গভীরভাবে বিবেচনা করে তা পুনর্বিন্যাসের লক্ষ্যে পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। এ বিষয়টির দু’টি বিশেষ দিক রয়েছেÑ
শিক্ষকদের মর্যাদা ও সুযোগ-সুবিধা। শিক্ষকদের সামাজিক মর্যাদা শুধুমাত্র সুবিন্যস্ত বাক্য গাঁথার মধ্যে সীমাবদ্ধ রেখে
প্রকৃত অর্থে তাঁদের সামাজিক মর্যাদা দেওয়া না হলে শিক্ষার মানোন্নয়ন সম্ভব নয়। সামাজিক মর্যাদা বৃদ্ধির জন্য শিক্ষকদের
আত্মপ্রত্যয়ী, কর্মদক্ষ ও শিক্ষা ক্ষেত্রে এক একজন সফল অবদানকারী হিসেবে গড়ে তোলা জরুরি। এজন্য শিক্ষকদের
দেশ-বিদেশে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে, শিক্ষাখাতকে শক্তিশালী করার জন্য প্রাপ্ত বৈদেশিক বৃত্তি ও প্রশিক্ষণের সুযোগ
শিক্ষকদের দেওয়া হবে। আর্থিক সুবিধা বৃদ্ধির লক্ষ্যে সকল স্তরের শিক্ষকদের জন্য পৃথক বেতন কাঠামো প্রণয়ন করা
হবে। প্রাথমিক স্তর থেকে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত সকল স্তরের শিক্ষকদের যথাযথ প্রশিক্ষণ, দক্ষতা, মর্যাদা ও দায়বদ্ধতা
নিশ্চিতকরণ জরুরি। তাদের দক্ষতা ও দায়বদ্ধতা মূল্যায়নের অব্যাহত ব্যবস্থা থাকবে।
শিক্ষাক্রম, পাঠ্যসূচি ও পাঠ্যপুস্তক
শিক্ষার মূল প্রাণবিন্দু শিক্ষাক্রম। তাই শিক্ষাক্রমে জাতীয় আদর্শ, লক্ষ্য, উদ্দেশ্য ও সমকালীন চাহিদার প্রতিফলন ঘটবে
এটা যেমন প্রত্যাশিত, তেমনি শিক্ষার্থীদের বয়স, মেধা ও গ্রহণক্ষমতা অনুযায়ী শিক্ষাক্রম প্রণীত হবে এটাও কাক্সিক্ষত।
যেহেতু একটি দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা দেশের বিরাজমান আর্থ-সামাজিক ও রাজনৈতিক অবস্থা, দীর্ঘদিনের লালিত সাংষ্কৃতিক
ঐতিহ্য, ধর্মীয় বিশ্বাস, নৈতিক ও মানবিক মূল্যবোধের ওপর গড়ে ওঠা বাঞ্ছনীয় তাই পরিকল্পিত শিক্ষা ব্যবস্থার শিক্ষাক্রমে
এগুলোর প্রতিফলন সুনিশ্চিত করা হবে। মূলত শিক্ষার্থীর জ্ঞান, দৃষ্টিভঙ্গি, দক্ষতা ও কাঙ্খিত আচরণিক পরিবর্তনের মাধ্যমে
একটি দক্ষ, দেশপ্রেমিক, আত্মনির্ভরশীল, নৈতিক মূল্যবোধসম্পন্ন, শ্রমনিষ্ঠ সুনাগরিক জনগোষ্ঠী গড়ে তোলাই শিক্ষার
লক্ষ্য। তাই শিক্ষাক্রম, পাঠ্যসূচি ও পাঠ্যপুস্তকের গুরুত্ব অপরিসীম। শিক্ষার লক্ষ্য অর্জনের উপযোগী শিক্ষাক্রম ও
পাঠ্যসূচি প্রণয়ন করা হবে। আর সেই শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যসূচির আলোকেই রচিত হবে পাঠ্যপুস্তক। পুস্তক প্রণয়নের ক্ষেত্রে
লক্ষ্য রাখা হবে যে প্রকৃত শিক্ষা যেন জীবনঘনিষ্ঠ হয় এবং তা শিক্ষার্থীদের মধ্যে দেশপ্রেম, মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় অনুপ্রাণিত
করে এবং চিন্তিাশক্তি, অনুসন্ধিৎসা ও সৃজনশীলতার বিকাশ ঘটাতে সহায়ক হয়।
শিক্ষা প্রশাসন
শিক্ষানীতির সফল বাস্তবায়নের মাধ্যমে দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং শিক্ষা ব্যবস্থার গুণগত উৎকর্ষ সাধনের মাধ্যমে
মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিতকরণ নির্ভর করে শিক্ষা ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে নিয়োজিত প্রশাসনের ওপর। শিক্ষার সার্বিক
মানোন্নয়ন এবং নাগরিকগণের জন্য শিক্ষা সুবিধা স¤প্রসারণের জন্য যথাযথ কর্মসূচি এবং প্রকল্প প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের
সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য শিক্ষা প্রশাসনকে আধুনিকায়ন প্রয়োজন। শিক্ষা ব্যবস্থাপনায় সুশাসন নিশ্চিত করার জন্য সকল স্তরের
শিক্ষা ব্যবস্থাপনা ও প্রশাসনকে দুর্নীতিমুক্ত, দক্ষ, গতিশীল, জবাবদিহিমূলক, স্বচ্ছ এবং ফলপ্রসূ করার প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ
বাস্তবতা ও চাহিদার আলোকে নির্ধারণ ও বাস্তবায়ন করা হবে।
সারসংক্ষেপ
একটা জাতির উন্নতির চাবিকাঠি হলো শিক্ষা। দারিদ্য্র বিমোচনের লক্ষ্যপূরণে শিক্ষাই হচ্ছে প্রধান অবলম্বন। মেধা ও
মননে আধুনিক এবং চিন্তা-চেতনায় প্রাগ্রসর একটি সুশিক্ষিত জাতিই একটি দেশকে উন্নতির শিখরে পৌঁছে দিতে পারে।
তাই শিক্ষাই জাতির মেরুদÐ। স্বাধীনতার পরপরই একটি শিক্ষানীতি প্রণয়নের জন্য প্রখ্যাত বিজ্ঞানী ও শিক্ষাবিদ ড.
কুদরাত এ খুদার নেতৃত্বে দেশের প্রথম শিক্ষা কমিশন গঠন করা হয়েছিল। উক্ত কমিশন ব্যাপক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে
১৯৭৪ সালে গণমুখী আধুনিক এবং বিজ্ঞানভিত্তিক একটি শিক্ষানীতি প্রণয়ণ করে। আর্থ-সামাজিক ও রাজনৈতিক
পরিবর্তন এবং সময়ের প্রয়োজনে এটি সংশোধন ও পরিমার্জন করা হয়েছে। সর্বশেষ ২০১০ সালে জাতীয় অধ্যাপক
কবীর চৌধুরীকে চেয়ারম্যান ও ড. কাজী খলীকুজ্জামান আহমদকে কো-চেয়ারম্যান করে ১৮ সদস্য বিশিষ্ট শিক্ষানীতি
প্রণয়ন কমিটি গঠন করা হয়। উক্ত কমিটির তত্ত¡াবধানে একটি যুগোপযোগী শিক্ষানীতি প্রণয়ন করা হয় যা জাতীয়
শিক্ষানীতি ২০১০ নামে প্রজাতন্ত্রের অনুমোদন লাভ করে। এই শিক্ষানীতির মূল উদ্দেশ্য হলো জনমুখী উন্নয়ন ও
প্রগতিশীল নেতৃত্বদানে উপযোগী মননশীল, যুক্তিবাদী কুসংস্কারমুক্ত, অস¤প্রদায়িক, দেশপ্রেমিক নাগরিক গড়ে তোলা।
জাতীয় শিক্ষানীতি ২০১০ এ শিক্ষার উদ্দেশ্য ও লক্ষ্যসহ মোট ২৮টি বিষয় এবং ২টি সংযোজনীর উপর আলোকপাত
করা হয়েছে। শিক্ষানীতিতে আলোচিত ২৮টি বিষয় হলোÑ ১) শিক্ষার উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য, ২) প্রাক-প্রাথমিক ও প্রাথমিক
শিক্ষা, ৩) বয়স্ক ও উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা, ৪) মাধ্যমিক শিক্ষা, ৫) বৃত্তিমূলক ও কারিগরি শিক্ষা, ৬) মাদরাসা শিক্ষা, ৭)
ধর্ম ও নৈতিক শিক্ষা, ৮) উচ্চশিক্ষা, ৯) প্রকৌশল শিক্ষা, ১০) চিকিৎসাসেবা ও স্বাস্থ্য শিক্ষা, ১১) বিজ্ঞান শিক্ষা, ১২)
তথ্যপ্রযুক্তি শিক্ষা, ১৩) ব্যবসায় শিক্ষা, ১৪) কৃষি শিক্ষা, ১৫) আইনশিক্ষা, ১৬) নারীশিক্ষা, ১৭) কারুকলা ও
সুকুমারবৃত্তি শিক্ষা, ১৮) বিশেষ শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও শারীরিক শিক্ষা, স্কাউট ও গার্লস গাইড এবং ব্রতচারী, ১৯) ক্রীড়াশিক্ষা,
২০) গ্রন্থাগার, ২১) পরীক্ষা ও মূল্যায়ন, ২২) শিক্ষার্থীকল্যাণ ও নির্দেশনা, ২৩) শিক্ষার্থী ভর্তি, ২৪) শিক্ষক প্রশিক্ষণ,
২৫) শিক্ষকদের মর্যাদা, অধিকার ও দায়িত্ব, ২৬) শিক্ষাক্রম, পাঠ্যসূচি ও পাঠ্যপুস্তক, ২৭) শিক্ষা প্রশাসন এবং ২৮)
শিক্ষার স্তর নির্বিশেষে বিশেষ কয়েকটি পদক্ষেপ।
পাঠোত্তর মূল্যায়ন-১০.৪
সঠিক উত্তরের পাশে টিক (√) চিহ্ন দিন :
১। জাতীয় শিক্ষানীতি ২০১০ এ শিক্ষার কয়টি উদ্দেশ্য নির্ধারণ করা হয়েছে?
ক) ২০ খ) ২৫
গ) ৩০ ঘ) ৩৫
২। জাতীয় শিক্ষানীতি ২০১০ অনুযায়ী প্রাথমিক শিক্ষা কোন শ্রেণি পর্যন্ত নির্ধারণ করা হয়েচে?
ক) পঞ্চম শ্রেণি খ) ষষ্ঠ শ্রেণি
গ) সপ্তম শ্রেণি ঘ) অষ্টম শ্রেণি
৩। জাতীয় শিক্ষানীতি ২০১০ অনুযায়ী প্রাথমিক শিক্ষায় শিক্ষক-শিক্ষার্থী অনুপাত কত?
ক) ১ : ৩০ খ) ১ : ৪০
গ) ১ : ৫০ ঘ) ১ : ৬০
৪। জাতীয় শিক্ষানীতি ২০১০ অনুযায়ী ধর্ম ও নৈতিক শিক্ষার উদ্দেশ্য হলোÑ
র. শিক্ষার্থীদের নিজ নিজ ধর্ম সম্পর্কে পরিচিতি এবং জীবন ও সমাজে নৈতিক চরিত্র গঠন
রর. প্রচলিত ব্যবস্থাকে গতিশীল করে যথাযথ মানসম্পন্ন ধর্মীয় ও নৈতিক শিক্ষাদান
ররর. প্রত্যেক ধর্মে ধর্মীয় মৌল বিষয়সমূহের সঙ্গে নৈতিকতার উপর জোর দেওয়া
নিচের কোনটি সঠিক?
ক) র ও রর খ) র ও ররর গ) রর ও ররর ঘ) র, রর ও ররর
৫। জাতীয় শিক্ষানীতি ২০১০ অনুযায়ী কৃষিশিক্ষার উদ্দেশ্য হলোÑ
র. দেশের মাটি, পানি ও প্রাকৃতিক সম্পদ সম্পর্কে সচেতনতা সৃষ্টি
রর. জাতীয় উন্নয়নে কৃষি নির্ভর আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নয়ন
ররর. কৃষিতে আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহারে উদ্বুদ্ধকরণ ও সচেতনতা সৃষ্টি
নিচের কোনটি সঠিক?
ক) র ও রর খ) র ও ররর গ) রর ও ররর ঘ) র, রর ও ররর

FOR MORE CLICK HERE
এইচএসসি বাংলা নোট ১ম পত্র ও ২য় পত্র
ENGLISH 1ST & SECOND PAPER
এইচএসসি আইসিটি নোট
এইচএসসি অর্থনীতি নোট ১ম পত্র ও ২য় পত্র
এইচএসসি পৌরনীতি ও সুশাসন ১ম পত্র
এইচএসসি পৌরনীতি নোট ২য় পত্র
এইচএসসি সমাজকর্ম নোট ১ম পত্র
এইচএসসি সমাজকর্ম নোট ২য় পত্র
এইচএসসি সমাজবিজ্ঞান নোট ১ম পত্র ও ২য় পত্র
এইচএসসি ইতিহাস নোট ১ম পত্র
এইচএসসি ইতিহাস নোট ২য় পত্র
এইচএসসি ইসলামের ইতি. ও সংস্কৃতি নোট ১ম পত্র
এইচএসসি ইসলামের ইতি. ও সংস্কৃতি নোট ২য় পত্র
এইচএসসি যুক্তিবিদ্যা ১ম পত্র ও ২য় পত্র
এইচএসসি ভূগোল ও পরিবেশ নোট ১ম পত্র ও ২য় পত্র
এইচএসসি ইসলামিক স্টাডিজ ১ম ও ২য় পত্র

Copyright © Quality Can Do Soft.
Designed and developed by Sohel Rana, Assistant Professor, Kumudini Government College, Tangail. Email: [email protected]