বাংলাদেশে সমাজকর্ম পেশা অনুশীলনের ইতিহাস বর্ণনা করতে পারবেন।
বাংলাদেশে সমাজকর্মের পেশাগত যাত্রা শুরু হয় দেশ বিভাগের পর তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে। দেশ বিভাগের
পর ব্যাপক সংখ্যক মোহাজের ভারত থেকে বাংলাদেশে আগমনের ফলে সৃষ্ট আর্থ-সামাজিক সমস্যা
মোকাবিলার জন্য তৎকালীন সরকার ১৯৫১ সালে জাতিসংঘের সাহায্য ও পরামর্শের জন্য আবেদন জানায়। এই আবেদনে
সাড়া দিয়ে ১৯৫২ সালে জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞ দল ঢাকায় আসেন। বিশেষজ্ঞ দল সার্বিক অবস্থা পর্যালোচনা এবং জরিপ
কার্য পরিচালনা ও বিশ্লেষণ করে এদেশে পেশাদার সমাজকর্ম প্রয়োগের সুপারিশ করেন। এই সুপারিশের ভিত্তিতে ১৯৫৩
সালে পেশাদার সমাজকর্ম সৃষ্টির লক্ষ্যে সমাজকর্মের উপর স্বল্পকালীন (তিন মাসের) প্রশিক্ষণ কোর্স চালু করা হয়। এই
প্রশিক্ষণ কোর্সের উপর ভিত্তি করে সমাজকর্মের বাস্তব অনুশীলনের জন্য ১৯৫৪ সালে পরীক্ষামূলকভাবে ঢাকা প্রজেক্ট নামে
শহর সমষ্টি উন্নয়ন প্রকল্প চালুর সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। ১৯৫৫ সালে ঢাকার কায়েতটুলিতে শহর সমষ্টি উন্নয়ন প্রকল্প চালু করা
হয়। বাংলাদেশে মূলত পেশাদার সমাজকর্মের বাস্তব অনুশীলনের সূচনা হয় শহর সমষ্টি উন্নয়ন প্রকল্প (টৎনধহ
চালুর মধ্য দিয়ে। পরবর্তীতে ঢাকা প্রজেক্টের সাফল্যের ভিত্তিতে
ঢাকার গোপীবাগ ও মোহাম্মদপুরে আরো দুটি প্রকল্প গ্রহণ করা হয়। এরপর ১৯৫৯-৬০ সালে বিভাগীয় শহরসহ মোট
বারটি শহরে শহর সমষ্টি উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণ করা হয়। বর্তমানে যা শহর সমাজসেবা কার্যক্রম নামে ৮০টি ইউনিটের
মাধ্যমে সকল পৌর এলাকায় বাস্তবায়িত হচ্ছে।
জাতিসংঘ ও রেডক্রসের সহায়তায় ১৯৫৬ সালে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজে চিকিৎসা সমাজকর্ম চালু করা হয়। এরপর
১৯৬১ সালে চট্টগ্রাম, রাজশাহী, মিটফোর্ড এবং বক্ষব্যাধি হাসপাতালে চিকিৎসা সমাজকর্ম অনুশীলন শুরু হয়। বর্তমানে
দেশের সকল মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও জেলা পর্যায়ের সকল হাসপাতালসহ মোট ৯০টি হাসপাতালে হাসপাতাল
সমাজসেবা নামে কর্মসূচিটি চালু রয়েছে। এদেশে ১৯৬৩ সাথে আন্তঃসার্ভিস প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, ১৯৬৯ সালে আরমানিটোলা
উচ্চ বিদ্যালয় এবং চট্টগ্রামের মুসলিম হাইস্কুলে বিদ্যালয় সমাজকর্ম চালু করা হয়। কিন্তু
দুঃখজনক হলেও সত্য কাঙ্খিত সাফল্য অর্জনে ব্যর্থ হওয়ায় ১৯৮৪ সালে এনাম কমিটির সুপরিশের ভিত্তিতে বিদ্যালয়
সমাজকর্ম কর্মসুচি বন্ধ করে দেয়া হয়।
দেশ স্বাধীনের পর ১৯৭৪ সালে “গ্রামীণ সমাজসেবা” নামে পরীক্ষামূলক প্রকল্প
গ্রহণের মাধ্যমে সমাজকর্মের সমষ্টি উন্নয়ন পদ্ধতির বাস্তব প্রয়োগ পল্লী এলাকায় সম্প্রসারিত হয়। বর্তমানে দেশের সকল
উপজেলায় কর্মসূচিটি চালু রয়েছে। সমাজকর্ম বিকাশের ধারায় এদেশে শিশুকল্যাণ, প্রবেশন, প্যারোল, আফটার কেয়ার
সার্ভিস, কিশোর উন্নয়ন কেন্দ্র, প্রতিবন্ধী প্রশিক্ষণ ও পুনর্বাসনে সমাজকর্মের কৌশল ও পদ্ধতি প্রয়োগ শুরু হয়। বাংলাদেশে
কিশোর উন্নয়ন কেন্দ্রগুলোতে সোশ্যাল কেস ওয়ার্কার ও সাইকিয়াট্রিক সোশ্যাল ওয়ার্কার নামে পদ সৃষ্টি করা হয়।
উপরিউক্ত আলোচনা থেকে প্রতীয়মান হয় যে, বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও পেশাদার সমাজকর্মের বিকাশ ও
অনুশীলন বিস্তৃতি লাভ করছে।
সারসংক্ষেপ
ঢাকা প্রজেক্টের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে সমাজকর্ম পেশার অনুশীলন শুরু হয়, যা বর্তমানে শহর সমাজসেবা টঝঝ নামে
৮০টি ইউনিটের মাধ্যমে সমগ্র পৌর এলাকায় চালু রয়েছে। হাসপাতালে চিকিৎসা সমাজকর্মের মাত্রা শুরু হয় ১৯৫৬
সালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যা বর্তমানে ৯০টি হাসপাতালে ‘হাসপাতাল সমাজসেবা’ নামে পরিচালিত
হচ্ছে। ১৯৬৯ সালে বিদ্যালয় সমাজকর্ম চালু হলেও তা ১৯৮৪ সালে বন্ধ হয়ে যায়। দেশ স্বাধীনের পর ১৯৭৪ সালে
গ্রামীণ সমাজসেবা (জঝঝ) চালু হয়, যা বর্তমানে সমগ্র দেশের সকল উপজেলায় পরিচালিত হচ্ছে। এছাড়া শিশুকল্যাণ,
সংশোধনমূলক কর্যক্রম, প্রতিবন্ধীকল্যাণসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে সমাজকর্ম জ্ঞান ও পদ্ধতি প্রয়োগ করা হচ্ছে। বাংলাদেশে
সমাজকর্ম পেশার অনুশীলন দিন দিন বিস্তৃতি লাভ করছে।
সঠিক উত্তরের পাশে টিক (√) চিহ্ন দিন :
১। বাংলাদেশে বিদ্যালয় সমাজকর্ম বন্ধ হয়ে যায় কত সালে?
ক) ১৯৬৩ সালে খ) ১৯৬৯ সালে
গ) ১৯৮৪ সালে ঘ) ১৯৮৫ সালে
২। বর্তমানে “হাসপাতাল সমাজসেবা” কর্মসূচি চালু রয়েছে কতটি হাসপাতালে?
ক) ৯০টি খ) ৯১টি
গ) ৮৮টি ঘ) ৮৯টি
FOR MORE CLICK HERE
এইচএসসি বাংলা নোট ১ম পত্র ও ২য় পত্র
ENGLISH 1ST & SECOND PAPER
এইচএসসি আইসিটি নোট
এইচএসসি অর্থনীতি নোট ১ম পত্র ও ২য় পত্র
এইচএসসি পৌরনীতি ও সুশাসন ১ম পত্র
এইচএসসি পৌরনীতি নোট ২য় পত্র
এইচএসসি সমাজকর্ম নোট ১ম পত্র
এইচএসসি সমাজকর্ম নোট ২য় পত্র
এইচএসসি সমাজবিজ্ঞান নোট ১ম পত্র ও ২য় পত্র
এইচএসসি ইতিহাস নোট ১ম পত্র
এইচএসসি ইতিহাস নোট ২য় পত্র
এইচএসসি ইসলামের ইতি. ও সংস্কৃতি নোট ১ম পত্র
এইচএসসি ইসলামের ইতি. ও সংস্কৃতি নোট ২য় পত্র
এইচএসসি যুক্তিবিদ্যা ১ম পত্র ও ২য় পত্র
এইচএসসি ভূগোল ও পরিবেশ নোট ১ম পত্র ও ২য় পত্র
এইচএসসি ইসলামিক স্টাডিজ ১ম ও ২য় পত্র