বাংলাদেশে সমাজকর্ম পেশার সম্ভাবনাসমূহ সম্পর্কে আলোচনা করতে পারবেন।
বাংলাদেশ একটি উন্ননশীল দেশ। এদেশের আর্থ-সামাজিক প্রেক্ষাপটে সমাজকর্মের পেশাগত গুরুত্ব
অপরিসীম। পাকিস্তান আমালে এদেশে সমাজকর্ম শিক্ষার সূচনা ঘটে। জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞ দলের সুপারিশে
১৯৫৩ সালে তৎকালীন পূর্বপাকিস্তানে তথা আজকের বাংলাদেশে বিদ্যমান আর্থ-সামাজিক সমস্যা মোকাবিলায় দক্ষ ও
প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত সমাজকর্মীর চাহিদা পূরণের লক্ষ্যে তিনমাসব্যাপী স্বল্পমেয়াদি প্রশিক্ষণ কোর্সের মাধ্যমে সমাজকর্ম শিক্ষার
যাত্রা শুরু হয়। এই প্রশিক্ষণ কোর্সের সফলতার পর প্রয়োজনের প্রেক্ষিতে শহর সমষ্টি উন্নয়ন কর্মীদের জন্য নয় মাস ব্যাপী
প্রশিক্ষণ কোর্স চালু করা হয়। অতঃপর ১৯৫৫-৫৬ সালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল চিকিৎসা সমাজকর্ম চালু করা
হয়। ১৯৫৮ সালে কলেজ অব সোশ্যাল ওয়েলফেয়ার এ্যান্ড রিসার্চ সেন্টার প্রতিষ্ঠা করা হয়, যা সমাজকর্ম বিষয়ে দেশের
প্রথম উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে পরিচিত। দেশ স্বাধীন হবার পর ১৯৭৩ সালে প্রতিষ্ঠানটির নামকরণ করা হয়
সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট এবং এটিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে একীভূত করা হয়। বর্তমানে এই
ইনস্টিটিউট সমাজকল্যাণে স্নাতক, স্নাতকোত্তর, এম.ফিল, পিএইচ.ডি.সহ স্পেশালাইজড মাস্টার্স প্রদান করছে। এছাড়া
৫টি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়সহ বেশ কিছু বেসরকারি বিশ্ববিদ্যারয়ে সমাজকর্ম শিক্ষা চালু রয়েছে। এক্ষেত্রে উল্লেখ্য ২০১১
সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনস্ত সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট এর নাম পরিবর্তন করে সমাজকর্ম ও গবেষণা
ইনস্টিটিউট এবং ডিগ্রির নাম ব্যাচেলর অব সোশ্যাল ওয়ার্ক ইন সোশ্যাল সায়েন্স করা হলেও দুভার্গ্যজনক হলো সেটিকে
আবার পূর্বের নামে ফিরিয়ে নেয়া হয় যা সমাজকর্ম শিক্ষা তথা পেশার বিকাশে বাধাস্বরূপ।
সমাজকর্ম শিক্ষার প্রসারে ১৯৬৪ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে, ১৯৯২ সালে জগন্নাথ কলেজে (বর্তমানে জগন্নাথ
বিশ্ববিদ্যালয়), ১৯৯৩ সালে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে এবং ২০১৫ সালে পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাজকর্ম শিক্ষা চালু হয়েছে। বর্তমানে আরো কিছু সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাজকর্ম শিক্ষা চালুর বিষয়টি
প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে দেশের প্রায় ১৫০০টি কলেজে স্নাতক (সম্মান) ও স্নাতকোত্তর পার্যায়ে
সমাজকর্ম শিক্ষা চালু রয়েছে। সামাজিক বিজ্ঞানের বিশেষ শাখা হিসেবে উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়েও সমাজকর্ম ঐচ্ছিক বিষয়
হিসেবে চালু আছে। এক্ষেত্রে উল্লেখ্য যে, ২০১৪ সাল থেকে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের শিক্ষা মন্ত্রণালয় কর্তৃক
দেশের সকল কলেজে উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ে বিষয়ের নামকরণ ‘সমাজকল্যাণ’ এর পরিবর্তে ‘সমাজকর্ম’ করা হয়েছে। এই
উদ্যোগ বাংলাদেশে সমাজকর্ম শিক্ষার প্রসারে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত।
তৎকালীন পূর্বপাকিস্তানে পশ্চাত্যের অনুকরণে সমাজকর্ম শিক্ষার সূচনা হয়েছিল। তাই এদেশে দেশজ উপকরণভিত্তিক
শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা একান্ত আবশ্যক। এছাড়া বাংলাদেশে সরকারি ও এনজিও পরিচালিত সামাজিক উন্নয়ন ও
সমাজসেবা কার্যক্রমে পেশাদার সমাজকর্মী নিয়োগের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। তাই বাংলাদেশের বিদ্যমান শিক্ষা কার্যক্রম ও
পাঠ্যসূিচ দেশজকরণের পাশাপাশি পাঠ্যসূিচতে ঈঝডঊ এর নির্দেশনা অনুযায়ী যুগোপযোগী নতুন নতুন কোর্স সংযুক্ত
করা একান্ত আবশ্যক। সেজন্য ঈঝডঊ এর আদলে ইঈঝডঊ কে গতিশীল সংগঠন হিসেবে প্রতিষ্ঠা করার প্রচেষ্টা
অব্যাহত রাখতে হবে। তাহলে এদেশে বিদ্যমান অর্থনৈতিক ও মনো-সামাজিক সমস্যা সমাধানে দেশজ জ্ঞানের সম্ভাব্য
সর্বোত্তম ও টেকসই ব্যবহারের মাধ্যমে সমাজকর্ম শিক্ষা বিকাশের সম্ভাবনা বাস্তবে পরিলক্ষিত হবে।
পরিশেষে বলা যায়, বাংলাদেশে সমাজকর্ম শিক্ষার সম্ভাবনার সাথে সমাজকর্মের পেশাগত সংগঠনের স্বক্রিয় তৎপরতা ও
পেশাগত স্বীকৃতির বিষয়টি বিশেষভাবে জড়িত। ভবিষ্যতে বাংলাদেশে সমাজকর্ম পেশার স্বীকৃতি লাভ করবে এ বিষয়ে
দ্বিধা না থাকলেও সময়ের বিষয়টি বিশেষভাবে বিবেচ্য। আশা করা যায়, সমাজকর্মের শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও পেশাগত
সংগঠনের সমন্বয়ে সমন্বিত প্রচেষ্টা ও তৎপরতার অদূর ভবিষ্যতে এদেশে সমাজকর্ম একটি পূর্ণাঙ্গ পেশা হিসেবে প্রতিষ্ঠা
পাবে। ফলে এদেশে সমাজকর্ম শিক্ষার নতুনদ্বার উন্মোচিত হবে।
সারসংক্ষেপ
বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক প্রেক্ষাপটে সমাজকর্মের পেশাগত সম্ভাবনা ও গুরুত্ব অপরিসীম। তৎকালীন পূর্বপাকিস্তানে
জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞদলের সুপারিশে ১৯৫৩ সালে এদেশে সমাজকর্ম শিক্ষার সূচনা ঘটে। বর্তমানে দেশের পাঁচটি
সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাজকর্ম শিক্ষা চালু হয়েছে। বর্তমানে আরো কিছু সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাজকর্ম শিক্ষা
চালুর বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে দেশের প্রায় ১৫০০টি কলেজে সমাজকর্ম শিক্ষা চালু
রয়েছে। সামাজিক বিজ্ঞানের বিশেষ শাখা হিসেবে উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়েও সমাজকর্ম ঐচ্ছিক বিষয় হিসেবে চালু আছে।
বাংলাদেশে সমাজকর্ম শিক্ষার সম্ভাবনার সাথে সমাজকর্মের পেশাগত সংগঠনের স্বক্রিয় তৎপরতা ও পেশাগত স্বীকৃতির
বিষয়টি বিশেষভাবে জড়িত। আশা করা যায়, সকলের সমন্বিত প্রচেষ্টা ও তৎপরতার অদূর ভবিষ্যতে সমাজকর্মকে
একটি পূর্ণাঙ্গ পেশা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করলে এদেশে সমাজকর্ম শিক্ষার নতুনদ্বার উন্মোচিত হবে।
পাঠোত্তর মূল্যায়ন-১১.৫
সঠিক উত্তরের পাশে টিক (√) চিহ্ন দিন :
১. পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাজকর্ম শিক্ষা চালু হয় কবে?
ক) ২০১৩ সালে খ) ২০১৪ সালে
গ) ২০১৫ সালে ঘ) ২০১৬ সালে
২. কলেজ অব সোশ্যাল ওয়েলফেয়ার এ্যান্ড রিসার্চ সেন্টার নামটি পরিবর্তন করে কোন নামকরণটি করা হয়?
ক) সমাজকর্ম ও গবেষণা ইনস্টিটিউট খ) সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট
গ) সমাজকর্ম গবেষণা ইনস্টিটিউট ঘ) সমাজকল্যাণ গবেষণা ইনস্টিটিউট
FOR MORE CLICK HERE
এইচএসসি বাংলা নোট ১ম পত্র ও ২য় পত্র
ENGLISH 1ST & SECOND PAPER
এইচএসসি আইসিটি নোট
এইচএসসি অর্থনীতি নোট ১ম পত্র ও ২য় পত্র
এইচএসসি পৌরনীতি ও সুশাসন ১ম পত্র
এইচএসসি পৌরনীতি নোট ২য় পত্র
এইচএসসি সমাজকর্ম নোট ১ম পত্র
এইচএসসি সমাজকর্ম নোট ২য় পত্র
এইচএসসি সমাজবিজ্ঞান নোট ১ম পত্র ও ২য় পত্র
এইচএসসি ইতিহাস নোট ১ম পত্র
এইচএসসি ইতিহাস নোট ২য় পত্র
এইচএসসি ইসলামের ইতি. ও সংস্কৃতি নোট ১ম পত্র
এইচএসসি ইসলামের ইতি. ও সংস্কৃতি নোট ২য় পত্র
এইচএসসি যুক্তিবিদ্যা ১ম পত্র ও ২য় পত্র
এইচএসসি ভূগোল ও পরিবেশ নোট ১ম পত্র ও ২য় পত্র
এইচএসসি ইসলামিক স্টাডিজ ১ম ও ২য় পত্র