কোনো বৃত্তি বা জীবিকা নির্বাহের উপায়কে পেশার মর্যাদা অর্জন করতে হলে তার মধ্যে কতগুলো সুনির্দিষ্ট বৈশিষ্ট্য থাকা
অপরিহার্য। কোনো বৃত্তি পেশার (ঢ়ৎড়ভবংংরড়হ) মর্যাদা অর্জন করেছে কি না তা যেসব বৈশিষ্ট্যের
আলোকে মূল্যায়ন করা হয় সেগুলোকে পেশার মানদÐ বলা হয়। পেশার বৈশিষ্ট্য বা মানদÐ প্রসঙ্গে সমাজবিজ্ঞানীরা বিভিন্ন
সময়ে বিভিন্ন মত পোষণ করেছেন। সমাজবিজ্ঞানী আর্নেষ্ট গ্রীনউড (ঊধৎহবংঃ বৃত্তি সম্পর্কিত
সমাজতাত্তি¡ক বিশ্লেষণের আলোকে পেশার পাঁচটি স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য ( উল্লেখ করেন, তা হলো : ১) সুশৃঙ্খল তত্ত¡
, ২) পেশাগত কর্তৃত্ব , ৩) সমাজের স্বীকৃতি (
, ৪) পেশাগত নৈতিক মানদÐ (); এবং ৫) পেশাগত সংষ্কৃতি বা সংগঠন
অন্যদিকে ডধৎহবৎ ইড়বযস এর মতে, জনকল্যাণমুখীতা, বিজ্ঞানভিত্তিক সুশৃংখল জ্ঞান ও তত্ত¡, পেশাগত কর্তৃত্ব,
সামাজিক স্বীকৃতি ও নৈতিক মানদÐ এই পাঁচটি বৈশিষ্ট্য যদি কোনো বৃত্তির মধ্যে বিদ্যমান থাকে তবে সেটিকে পেশা
হিসেবে গণ্য করা যায়। মনীষী ঈযধৎষবং উ. এধৎারহ (১৯৯৮) তাঁর æঝড়পরধষ ডড়ৎশ রহ ঈড়হঃবসঢ়ড়ৎধৎু ঝড়পরবঃু”
গ্রন্থে পেশার বিভিন্ন সংজ্ঞা বিশ্লেষণ করে এর কতগুলো মানদÐ নির্ধারণ করেন। সেগুলো হলো সুশৃঙ্খল জ্ঞান ও তাত্তি¡ক
ভিত্তি, বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ, উচ্চ পর্যায়ের দক্ষতা, উপার্জনশীলতা, পেশাগত সংগঠন, পেশাগত
নিয়ন্ত্রণ, পরিমাপযোগ্য ও পর্যবেক্ষণযোগ্য ফলাফল, ঝুঁকিপূর্ণদের সংরক্ষণ এবং সমাজের স্বীকৃতি।
সমাজবিজ্ঞানী ডরষষধস ঊ. ডরপশবহফবহ বলেন, বৈজ্ঞানিক জ্ঞান, নৈপূণ্য বা দক্ষতা, জ্ঞান ও দক্ষতা অর্জনের শিক্ষামূলক
প্রক্রিয়া মানসম্মত ব্যক্তিগত যোগ্যতা, সুশৃঙ্খল নীতিমালা ও মূল্যবোধ, রাষ্ট্র বা সহকর্মীদের দ্বারা পেশাগত মর্যাদা এবং
পেশাগত সংগঠন এই ছয়টি হচ্ছে পেশার বৈশিষ্ট্য। বিভিন্ন মনীষীদের প্রদত্ত মতামত বিশ্লেষণ করে পেশার নিম্নোক্ত বৈশিষ্ট্য
ও মানদÐগুলো স্থির করা যায় :
১. সুশৃঙ্খল জ্ঞান ও তাত্তি¡ক ভিত্তি : প্রত্যেকটি পেশারই সুশৃঙ্খল জ্ঞান ও তাত্তি¡ক ভিত্তি থাকতে হয়। যে জ্ঞান হবে
প্রচারযোগ্য ও প্রয়োগযোগ্য এবং যা অর্জিত, গঠিত ও বিকশিত হয়। পেশাগত সুশৃঙ্খল জ্ঞান ও তাত্তি¡ক ভিত্তি পেশাদার
ব্যক্তিকে তার দায়িত্ব সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে পালনে সক্ষম করে তোলে।
২. বিশেষ দক্ষতা ও নৈপূণ্য : পেশাদার ব্যক্তির জ্ঞান ও যোগ্যতাকে বাস্তবে প্রয়োগের জন্য বিশেষ দক্ষতা ও নৈপূণ্য অর্জন
আবশ্যক। পেশাদার ব্যক্তির শুধু জ্ঞান থাকলেই হবে না, জ্ঞানকে বাস্তবে প্রয়োগ করার দক্ষতা ও নৈপূণ্যতা অর্জন
করতে হবে। পেশাদার ব্যক্তির এরূপ দক্ষতা অর্জন ও অর্জিত জ্ঞানকে প্রয়োগ করার নৈপূণ্য একটি মানসম্মত শিক্ষা
প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে আসে।
৩. পেশাগত দায়িত্ব ও জবাবদিহিতা : পেশাগত জ্ঞানকে পেশার উন্নয়ন ও সামাজিক কল্যাণের জন্য প্রয়োগ করা প্রত্যেক
পেশাদার ব্যক্তির পেশাগত দায়িত্ব। পেশাগত দায়িত্বের সাথে পেশাগত জবাবদিহিতা বিষয়টিও ওতপ্রোতভাবে জড়িত।
যে কোনো পেশার উন্নয়ন ও বিকাশ যথাযথ পেশাগত দায়িত্ব পালন ও জবাবদিহিতার সাথে সম্পৃক্ত।
৪. পেশাগত নীতিমালা ও মূল্যবোধ : পেশা নিজস্ব মূল্যবোধ ও নীতিমালা নির্ভর হয়ে থাকে। পেশাগত মূল্যবোধ ও
নীতিমালা একটি পেশাকে অপর পেশা থেকে আলাদা ও স্বতন্ত্র সত্ত¡া প্রদান করে। এছাড়া পেশাদার ব্যক্তির পেশাগত
আচরণ নিয়ন্ত্রণে এই বৈশিষ্ট্য একান্ত আবশ্যক। উদাহরণস্বরূপ বলা যায় যে, একজন চিকিৎসক ব্যক্তিগত সুবিধা
লাভের আশায় রোগীকে অপ্রয়োজনীয় প্যাথলোজিক্যাল পরীক্ষা করার পরামর্শ দিতে পারেন না। অনুরূপভাবে একজন
আইনজীবী বাদী-বিবাদী উভয়পক্ষ থেকে আর্থিক সুবিধা আদায়ের বিনিময়ে একই সঙ্গে উভয়পক্ষকে আইনী সহায়তা
দিতে পারেন না।
৫. পেশাগত নিয়ন্ত্রণ ও পেশাগত সংগঠন : পেশাগত নিয়ন্ত্রণ যে কোনো পেশার পেশাগত মর্যাদা লাভের গুরুত্বপূর্ণ শর্ত।
এক্ষেত্রে বিধি-বিধান ও আইনের মাধ্যমে পেশার অন্তর্ভুক্তি, পেশাগত পরিচিতি, অনুশীলন, শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ ইত্যাদি
সংরক্ষণ ও নিয়ন্ত্রণ করা উল্লেখযোগ্য। পেশাগত নিয়ন্ত্রণের উদাহরণ হচ্ছে সার্টিফিকেট, লাইসেন্স এবং রেজিস্ট্রেশন।
পেশাগত সংগঠনের মাধ্যমে পেশার সামাজিক উন্নয়ন, স্বার্থ সংরক্ষণ তথা সার্বিক বিকাশ ও নিয়ন্ত্রণ সম্ভব। পেশাগত
সংগঠন পেশার গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য ও মানদÐ হিসেবে বিবেচিত।
৬. সামাজিক স্বীকৃতি : রাষ্ট্র বা সমাজকর্তৃক আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি ব্যতীত কোনো বৃত্তি পেশার মর্যাদা লাভ করতে পারে না।
এই স্বীকৃতি সাধারণত সার্টিফিকেট, লাইসেন্স অথবা রেজিস্ট্রেশন সিস্টেমের মাধ্যমে প্রদান করা হয়।
৭. জনকল্যাণমুখীতা ও উপার্জনশীলতা : জনকল্যাণকে উদ্দেশ্য করে প্রত্যেক পেশাদার ব্যক্তি আয়ের উৎস হিসেবে তার
অর্জিত জ্ঞান ও দক্ষতা বাস্তবে প্রয়োগ করে থাকে। তাই জনকল্যাণমুখীতা ও উপার্জনশীলতা পেশার গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য।
যেমনÑ চিকিৎসা, আইন, শিক্ষকতা ইত্যাদি ক্ষেত্রে উভয় জনকল্যাণমুখীতা ও উপার্জনশীলতার দিকটি লক্ষণীয়।
৮. ঐতিহাসিক পটভূমি ও বাস্তবমুখী জ্ঞান : পেশাদার ব্যক্তির জ্ঞান অবশ্যই বাস্তবমুখী ও প্রয়োগ উপযোগী। এছাড়া
প্রত্যেক পেশার পেশা হিসেবে সুপ্রতিষ্ঠিত হওয়ার পেছনে পর্যায়ক্রমিক ও ধারাবাহিক পটভূমি বিদ্যমান। যার ফলে
প্রতিটি পেশার নিজস্ব ঐতিহাসিক বিবর্তনের ইতিহাস গড়ে ওঠে।
উপরোক্ত বৈশিষ্ট্য বা মানদÐের আলোকে কোনো বৃত্তি বা জীবিকা পেশা কি না তা নির্ধারণ করা হয়। সেজন্য এগুলোকে
পেশার মানদÐ হিসেবে অভিহিত করা হয়।
সারসংক্ষেপ
পেশা বলতে নির্দিষ্ট বৈশিষ্ট্য, দক্ষতা, নৈপূণ্য ও মর্যাদা সম্পন্ন কোনো বৃত্তিকে বোঝায়। অন্যভাবে বলা যায়, কোনো
বিষয়ে সুনির্দিষ্ট তাত্তি¡ক ও ব্যবহারিক জ্ঞান নির্ধারিত সময়ে অর্জন করে সে জ্ঞানকে বাস্তবে প্রয়োগ করে জীবিকা অর্জনের
উপায় হচ্ছে পেশা। প্রত্যেক পেশার নিজস্ব কিছু বৈশিষ্ট বা মানদÐ আছে, যা তাকে স্বতন্ত্র মর্যাদায় অধিষ্টিত করে।
পেশার বৈশিষ্ট্য ও মানদÐ সংক্রান্ত সমাজবিজ্ঞানীদের বিভিন্ন মত বিশ্লেষণ করলে পেশার সুনির্দিষ্ট বৈশিষ্ট্য পাওয়া যায়।
সুশৃঙ্খল জ্ঞান ও তাত্তি¡ক ভিত্তি, বিশেষ দক্ষতা ও নৈপূণ্য পেশাগত দায়িত্ব ও জবাবদিহিতা, পেশাগত নীতিমালা ও
মূল্যবোধ, পেশাগত নিয়ন্ত্রণ ও পেশাগত সংগঠন, সামাজিক স্বীকৃতি এবং ঐতিহাসিক পটভূমি ও বাস্তবমুখী জ্ঞান হচ্ছে
পেশার সুনির্দিষ্ট বৈশিষ্ট্য বা মানদÐ যেগুলোর উপস্থিতিতে কোনো বৃত্তি পেশার মর্যাদা অর্জন করে।
সঠিক উত্তরের পাশে টিক (√) চিহ্ন দিন :
১। পেশা শব্দটি কোন ভাষা থেকে আগত?
ক) আরবি খ) ফারসি
গ) উর্দু ঘ) বাংলা
২। পেশা শব্দটির আভিধানিক অর্থ কী?
ক) কাজ খ) জীবিকা
গ) খাদ্য ঘ) ব্যবসা
FOR MORE CLICK HERE
এইচএসসি বাংলা নোট ১ম পত্র ও ২য় পত্র
ENGLISH 1ST & SECOND PAPER
এইচএসসি আইসিটি নোট
এইচএসসি অর্থনীতি নোট ১ম পত্র ও ২য় পত্র
এইচএসসি পৌরনীতি ও সুশাসন ১ম পত্র
এইচএসসি পৌরনীতি নোট ২য় পত্র
এইচএসসি সমাজকর্ম নোট ১ম পত্র
এইচএসসি সমাজকর্ম নোট ২য় পত্র
এইচএসসি সমাজবিজ্ঞান নোট ১ম পত্র ও ২য় পত্র
এইচএসসি ইতিহাস নোট ১ম পত্র
এইচএসসি ইতিহাস নোট ২য় পত্র
এইচএসসি ইসলামের ইতি. ও সংস্কৃতি নোট ১ম পত্র
এইচএসসি ইসলামের ইতি. ও সংস্কৃতি নোট ২য় পত্র
এইচএসসি যুক্তিবিদ্যা ১ম পত্র ও ২য় পত্র
এইচএসসি ভূগোল ও পরিবেশ নোট ১ম পত্র ও ২য় পত্র
এইচএসসি ইসলামিক স্টাডিজ ১ম ও ২য় পত্র