সমাজকর্ম পদ্ধতির ধরন বা প্রকারভেদ
সমাজকর্মের মূল লক্ষ্য হচ্ছে সমস্যাগ্রস্ত ব্যক্তির সামাজিক ভূমিকা পালন ক্ষমতার পুনরুদ্ধারে সহায়তা করা,
যাতে সে নিজেই নিজের সমস্যা সমাধানে পারদর্শী হয়। ব্যক্তি, দল ও সমষ্টির সমস্যার প্রকৃতি, সম্পদ ও সম্পর্ক এবং
পরিবেশ বিবেচনায় সমাজকর্ম পদ্ধতিকে প্রধানত দুইভাগে ভাগ করা যায়। যথাÑ ক) মৌলিক পদ্ধতি ও খ) সহায়ক
পদ্ধতি। মৌলিক পদ্ধতিকে আবার তিনভাগে ভাগ করা হয়েছে। যথাÑ ১) ব্যক্তি সমাজকর্ম ২) দল সমাজকর্ম এবং ৩)
সমষ্টি সংগঠন ও সমষ্টি উন্নয়ন।হ (সমষ্টি সংগঠন) হিসেবে ব্যাখ্যা করেছেন। তবে সমস্যার প্রকৃতি,
সম্পদ সঞ্চালনের ধারা ও কর্মপ্রক্রিয়ার ভিত্তিতে এই পদ্ধতি বাংলাদেশসহ বিশ্বের অন্যান্য দেশে সমষ্টি সংগঠন ও সমষ্টি
উন্নয়ন হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। আবার অস্ট্রেলিয়ায় একে সমষ্টি উন্নয়ন হিসেবে প্রয়োগ করা হচ্ছে। যদিও অতি সম্প্রতি
বাংলাদেশের অনেক লেখক এই পদ্ধতিকে সমষ্টি সমাজকর্ম হিসেবে উল্লেখ করেছেন। সমাজকর্মের পষধংংরপধষ লেখক ও
উপর্যুক্ত বিষয়াদি বিবেচনা করে সমাজকর্মের তৃতীয় মৌলিক পদ্ধতিকে সমষ্টি সংগঠন ও সমষ্টি উন্নয়ন হিসেবে বিবেচনা
করা হলো । অন্যদিকে সহায়ক পদ্ধতিকেও তিনভাগে ভাগ করা হয়েছে। যেমনÑ ১) সমাজকল্যাণ প্রশাসন, ২) সমাজকর্ম
গবেষণা এবং ৩) সামাজিক কার্যক্রম। সমাজকর্ম পদ্ধতিসমূহকে নিচে ছকের মাধ্যমে দেখানো হলো :
চিত্র : ৭.২.১ সমাজকর্ম পদ্ধতি
৭.২.২ সমাজকর্ম পদ্ধতিসমূহ
ক) মৌলিক পদ্ধতি
সমস্যাগ্রস্ত ব্যক্তি, দল ও সমষ্টির সমস্যা মোকাবিলার জন্য সমাজকর্মের যেসকল পদ্ধতি প্রত্যক্ষভাবে বাস্তবক্ষেত্রে প্রয়োগ
করা হয় যে সকল পদ্ধতিসমূহকে মৌলিক পদ্ধতি বলা হয়। সমাজকর্মের মৌলিক পদ্ধতি তিন ধরনের। যথা :
১) ব্যক্তি সমাজকর্ম : ব্যক্তি সমাজকর্ম হলো সমাজকর্মের এমন একটি মৌলিক পদ্ধতি যার সাহায্যে সমস্যাগ্রস্ত ব্যক্তিকে
এমনভাবে সহায়তা করা হয় যাতে ব্যক্তি তার সুপ্ত প্রতিভা ও সম্পদের যথাযথ ব্যবহারের মাধ্যমে নিজেই নিজের সমস্যা
সমাধানে সক্ষম হয়।
২) দল সমাজকর্ম : সাধারণত দল সমাজকর্ম গঠনমূলক দলীয় অভিজ্ঞতার মাধ্যমে দলের সদস্যদের যথাযথ সামাজিক
ভূমিকা পালনে সহায়তা করে থাকে। তাছাড়া এ পদ্ধতি ব্যক্তিগত, দলীয় ও সমষ্টিগত সমস্যা সমাধানে দলের সদস্যদের
সাহায্য করে।
৩) সমষ্টি সংগঠন ও সমষ্টি উন্নয়ন : সমষ্টির চাহিদা ও প্রয়োজন অনুযায়ী বস্তুগত ও অবস্তুগত সম্পদের সদ্ব্যবহারের
মাধ্যমে সমষ্টির সদস্যদের মনো-সামাজিক সমস্যার সমাধান ও অর্থনৈতিক উন্নয়ন সাধনের ক্ষেত্রে সমাজকর্মের যে পদ্ধতি
ব্যবহার করা হয় তাকে সমষ্টি সংগঠন ও সমষ্টি উন্নয়ন বলা হয়। অতি সম্প্রতি এই পদ্ধতিকে অনেকেই সমষ্টি সমাজকর্ম
হিসেবে অভিহিত করেছেন। এর দু’টি দিক রয়েছে। যথা :
ক) সমষ্টি সংগঠন : সমষ্টি সংগঠন সমাজকর্মের মৌলিক পদ্ধতির একটি বিশেষ দিক, যার মাধ্যমে কোনো একটি নির্দিষ্ট
ভৌগোলিক এলাকার সমাজকল্যাণমূলক প্রয়োজন ও সম্পদের মধ্যে ফলপ্রসূ সামঞ্জস্যবিধান করা হয়।
খ) সমষ্টি উন্নয়ন : জনসমষ্টি উন্নয়ন হলো গ্রামীণ জনগোষ্ঠী কর্তৃক পরিকল্পিত ও বাস্তবায়িত আত্মসাহায্যমূলক কর্মসূচি,
যাতে সরকার শুধুমাত্র কারিগরি নির্দেশনা এবং আর্থিক সহায়তা দিয়ে থাকেন। এর উদ্দেশ্য হলো ব্যক্তিগত পর্যায়ে
আত্মনির্ভরতার উন্নয়ন এবং আত্মনির্ভতার উদ্যোগ গ্রহণে গ্রামীণ জনগোষ্ঠীকে সহায়তা করা।
১) সমাজকল্যাণ প্রশাসন
২) সমাজকর্ম গবেষণা
৩) সামাজিক কার্যক্রম
সমাজকর্ম পদ্ধতি
ক) মৌলিক পদ্ধতি খ) সহায়ক পদ্ধতি
১) ব্যক্তি সমাজকর্ম
২) দল সমাজকর্ম
৩) সমষ্টি সংগঠন ও সমষ্টি
উন্নয়ন
খ) সহায়ক পদ্ধতি
সমাজকর্মের মৌলিক পদ্ধতিসমূহকে বাস্তবক্ষেত্রে যথাযথ প্রয়োগ এবং কাক্সিক্ষত লক্ষ্য অর্জনে যে পদ্ধতি বিশেষভাবে সাহায্য
করে তাই সহায়ক পদ্ধতি। সমাজকর্মের সহায়ক পদ্ধতি তিন ধরনের। যথা :
১) সমাজকল্যাণ প্রশাসন : সমাজকল্যাণ প্রশাসন এমন একটি কৌশল ও প্রক্রিয়া যা সামাজিক নীতিকে সমাজসেবায়
পরিণত করে এবং বিভিন্ন সমাজকল্যাণমূলক পরিকল্পনা ও কর্মসূচিকে সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা ও বাস্তবায়নে সহায়তা করে
থাকে।
২) সমাজকর্ম গবেষণা : সমাজকর্ম গবেষণা হলো সমাজকর্মে ব্যবহৃত জ্ঞান, কৌশল ও পদ্ধতিসমূহর ধারণা ও
সাধারণীকরণের মাধ্যমে যথার্থতা ও কার্যকারিতা নির্ণয়ের বিজ্ঞানভিত্তিক অনুসন্ধান প্রক্রিয়া।
৩) সামাজিক কার্যক্রম : সামাজিক কার্যক্রম হলো একটি সম্মিলিত প্রচেষ্টা, যার মাধ্যমে সমাজে বিদ্যমান বিভিন্ন অবাঞ্ছিত
ও অনাকাক্সিক্ষত অবস্থাগুলোর সুপরিকল্পিত পরিবর্তন সাধন করে জনগণের চাহিদার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে সামাজিক উন্নয়ন
সাধনে প্রচেষ্টা চালানো হয়।
সারসংক্ষেপ
নিয়ত পরিবর্তনশীল সমাজব্যবস্থায় নিত্যনতুন সমস্যার উদ্ভব হয়। আর এসকল সমস্যা থেকে মানুষকে দূরে রাখতে
উদ্ভব হয়েছে সমাজকর্ম নামক যুগোপযোগী পেশার। মানুষের সমস্যার প্রকৃতি অনুযায়ী এ পেশায় রয়েছে বিভিন্ন সমাধান
পদ্ধতি। সমাজকর্মের এ পদ্ধতিসমূহ প্রধানত দুভাগে বিভক্ত। যথাÑ ক) মৌলিক পদ্ধতি ও খ) সহায়ক পদ্ধতি।
সমাজকর্মের মৌলিক পদ্ধতি তিন ধরনের। যথাÑ ১) ব্যক্তি সমাজকর্ম, ২) দল সমাজকর্ম ও ৩) সমষ্টি সংগঠন ও সমষ্টি
উন্নয়ন। সমাজকর্মের সহায়ক পদ্ধতিও তিন ধরনের। যথাÑ ১) সমাজকল্যাণ প্রশাসন, ২) সমাজকর্ম গবেষণা এবং ৩)
সামাজিক কার্যক্রম।
পাঠোত্তর মূল্যায়ন-৭.২
সঠিক উত্তরের পাশে টিক (√) চিহ্ন দিন :
১। সমাজকর্মের সমস্যা সমাধান পদ্ধতি প্রধানত কয় ধরনের?
ক) ২ খ) ৩
গ) ৪ ঘ) ৫
২। দলের সমস্যা সমাধানে সমাজকর্মের কোন পদ্ধতি প্রয়োগ করা হয়?
ক) ব্যক্তি সমাজকর্ম খ) দল সমাজকর্ম
গ) সমষ্টি সমাজকর্ম ঘ) সামাজিক কার্যক্রম
৩। ব্যক্তি সমাজকর্ম সমস্যাগ্রস্ত ব্যক্তিরÑ
র. সমস্যা সমাধান করে
রর. ব্যক্তিকে তার সামাজিক ভূমিকা পালনে সক্ষম করে তোলে
ররর. ব্যক্তির উপযোগী পরিবেশ তৈরি করে
নিচের কোনটি সঠিক?
ক) র ও রর খ) র ও ররর
গ) রর ও ররর ঘ) র, রর ও ররর
FOR MORE CLICK HERE
এইচএসসি বাংলা নোট ১ম পত্র ও ২য় পত্র
ENGLISH 1ST & SECOND PAPER
এইচএসসি আইসিটি নোট
এইচএসসি অর্থনীতি নোট ১ম পত্র ও ২য় পত্র
এইচএসসি পৌরনীতি ও সুশাসন ১ম পত্র
এইচএসসি পৌরনীতি নোট ২য় পত্র
এইচএসসি সমাজকর্ম নোট ১ম পত্র
এইচএসসি সমাজকর্ম নোট ২য় পত্র
এইচএসসি সমাজবিজ্ঞান নোট ১ম পত্র ও ২য় পত্র
এইচএসসি ইতিহাস নোট ১ম পত্র
এইচএসসি ইতিহাস নোট ২য় পত্র
এইচএসসি ইসলামের ইতি. ও সংস্কৃতি নোট ১ম পত্র
এইচএসসি ইসলামের ইতি. ও সংস্কৃতি নোট ২য় পত্র
এইচএসসি যুক্তিবিদ্যা ১ম পত্র ও ২য় পত্র
এইচএসসি ভূগোল ও পরিবেশ নোট ১ম পত্র ও ২য় পত্র
এইচএসসি ইসলামিক স্টাডিজ ১ম ও ২য় পত্র