গবেষণা প্রস্তাবনা কীভাবে প্রস্তুত করতে হয় তা বর্ণনা কর

গবেষণা প্রস্তাবনা
গবেষণা প্রস্তাবনা সামগ্রিক গবেষণা কার্যক্রমের পূর্ব পরিকল্পনা। একজন গবেষক যখন কোনো বিষয়ে গবেষণা
পরিচালনা করতে চান, তখন অবশ্যই তাকে গবেষণা প্রস্তাবনা তৈরি করতে হয়। গবেষণা প্রস্তাবনার উপর ভিত্তি করেই
গবেষক সামগ্রিক গবেষণাকর্ম পরিচালনা করে থাকেন। একটি উত্তম গবেষণা প্রস্তাবনায় যে সকল বিষয় অন্তর্ভুক্ত থাকে তা
হলো :
১) গবেষণা শিরোনাম : গবেষণাধীন বিষয়ের একটি সুনির্দিষ্ট শিরোনাম থাকতে হয়। অর্থাৎ গবেষক যে বিষয়ে গবেষণা
পরিচালনা করবেন তার একটি সুনির্দিষ্ট ও সুস্পষ্ট শিরোনাম ঠিক করবেন যার মাধ্যমে গবেষণার মূল উদ্দেশ্য
প্রতিফলিত হয়। গবেষণা শিরোনামটি এমন হতে হবে যেন খুব বেশি বড় না হয়, আবার ছোটও না হয়। গবেষণা
শিরোনামটি দেখে যে কেউ যেন এর বিষয়বস্তু সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারণা লাভ করতে পারে।
২) সারসংক্ষেপ : গবেষণা প্রস্তাবনার এ অংশে যে বিষয়ে গবেষণা পরিচালিত হবে তার একটি সংক্ষিপ্ত বর্ণনা থাকবে।
এর মধ্যে গবেষণার তাত্তি¡ক বিষয়বস্তু, লক্ষ্য উদ্দেশ্য, গবেষণাকর্মটি কাদের জন্য পরিচালিত হবে, কী বিষয়ে অনুসন্ধান
করা হবে এবং কোন পদ্ধতি প্রয়োগ করা হবে তার একটি সংক্ষিপ্ত বিবরণ থাকবে।
৩) ভূমিকা : গবেষণার বিষয় সম্পর্কে একটি সংক্ষিপ্ত ও সাধারণ বিবরণ থাকবে। গবেষক যে বিষয়ে গবেষণা পরিচালনা
করবেন তা কী? কতখানি গুরুত্বপূর্ণ? এর যৌক্তিকতাই বা কী? ভূমিকায় এ সকল বিষয়ের সহজবোধ্য সংক্ষিপ্ত
আলোচনা থাকবে।
৪) গবেষণা সমস্যার বিবৃতি : যে বিষয়ের ওপর গবেষণা পরিচালিত হবে তার একটি সংক্ষিপ্ত বিবরণ হলো গবেষণা
সমস্যার বিবৃতি । এখানে কতগুলো প্রশ্ন তুলে ধরা হয় যা বর্তমান গবেষণায় অনুসন্ধান করা হবে ।
৫) ব্যবহৃত প্রত্যয়সমূহের কার্যকরী সংজ্ঞায়ন : গবেষণা প্রস্তাবনার এ অংশে গবেষণায় ব্যবহৃত বিভিন্ন চলক বা
প্রত্যয়সমূহের সাধারণ ব্যাখ্যা বা সংজ্ঞা প্রদান করতে হবে। প্রত্যয়সমূহ গবেষণাকার্যে কী অর্থে ব্যবহৃত হবে তার
সুস্পষ্ট ব্যাখ্যা প্রদান আবশ্যক। একমাত্র সংজ্ঞায়নের মাধ্যমেই গবেষণার প্রত্যয়সমূহ কী অর্থে ব্যবহৃত হবে বা এর
ব্যাপ্তি কী হবে তার যথাযথ ধারণা পাওয়া যায়।
৬) সাহিত্য সমীক্ষা : গবেষণার জন্য নির্বাচিত ও সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে যথার্থ ধারণা লাভের জন্য বিভিন্ন গ্রন্থ, সাময়িকী,
প্রতিবেদন, কলাম, পত্রপত্রিকা পাঠ আবশ্যক। এর মাধ্যমে গবেষণাধীন বিষয় সম্পর্কে যথাযথ ধারণা পাওয়া সম্ভব।
এছাড়া গবেষণার বিষয়ে পূর্বে কোনো গবেষণা পরিচালিত হয়ে থাকলে সে সম্পর্কিত প্রতিবেদন পাঠ ও পর্যালোচনার
মাধ্যমে বিষয় সম্পর্ক জানা যায় এবং কোনো সুনির্দিষ্ট বিষয়ে ইতোপূর্বে গবেষণা পরিচালিত হয়নি তা চিহ্নিত করা হয়।
৭) গবেষণার যৌক্তিকতা : বর্তমাণ গবেষণা পরিচালনার প্রয়োজনীয়তা কী গবেষণালব্ধ জ্ঞান তত্ত¡ প্রতিষ্ঠায় বা সিদ্ধান্ত
গ্রহণের ক্ষেত্রে, কোনো উন্নয়ন পরিকল্পনা গ্রহণে ও বাস্তবায়নে কী সহায়তা করবে তার সুস্পষ্ট ব্যাখ্যা থাকতে হবে।
৮) গবেষণার উদ্দেশ্য : গবেষণা প্রকল্পে প্রকৃতপক্ষে কী অনুসন্ধান বা বিশ্লেষণ করা হবে তা এখানে স্স্পুষ্টভাবে ব্যাখ্যা
করতে হবে। গবেষণা প্রধান বা সাধারণ উদ্দেশ্য ও বিশেষ উদ্দেশ্য কী এখানে ব্যাখ্যা করা হয়।
৯) গবেষণা পদ্ধতি নির্ধারণ : গবেষণা প্রস্তাবনায় গবেষণাকার্য পরিচালনার জন্য কোন পদ্ধতি প্রয়োগ করা হবে, কেন
প্রয়োগ করা হবে তার বর্ণনা থাকতে হবে। এক্ষেত্রে নমুনায়ন, তথ্য সংগ্রহ, এবং তথ্য বিশ্লেষণের ক্ষেত্রে কোন পদ্ধতি
প্রয়োগ করা হবে তার সুস্পষ্ট ব্যাখ্যা থাকবে।
এছাড়াও গবেষণায় প্রস্তাবনায় নি¤েœাক্ত বিষয়সমূহ উল্লেখ থাকে :
ক) প্রস্তাবিত সময়সূচি : গবেষণা সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সম্পাদনের জন্য সময়সূচি তৈরি করা হয়।
এক্ষেত্রে গবেষণা সম্পাদনের জন্য পর্যায়ক্রমানুসারে প্রধান প্রধান কাজ। যেমনÑ গবেষণা নকশা প্রণয়ন, তথ্য সংগ্রহ,
তথ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ ও বিশ্লেষণ, গবেষণা প্রতিবেদন তৈরি ইত্যাদির তালিকা তৈরি করে কত সময়ের মধ্যে তা
সম্পাদন করা হবে তার সুস্পষ্ট বিবরণ থাকতে হবে।
খ) বাজেট প্রণয়ন : গবেষণা কাজ পরিচালনার জন্য অর্থ একান্ত আবশ্যকীয় বিষয়। গবেষণার জন্য প্রয়োজনীয় অর্থের
উৎস্য, উক্ত অর্থ কোন খাতে কত ব্যয় হবে এবং কীভাবে ব্যয় করা হবে তার বিশদ বিবরণ থাকতে হবে।
গ) সহায়ক গ্রন্থপঞ্জি : গবেষণা বিষয়ের সাথে সংশ্লিষ্ট গ্রন্থ, জার্নাল, গবেষণা প্রবন্ধ, পত্রপত্রিকা, রিপোর্ট, ওয়েবসাইট
প্রভূতি যা গবেষণার জন্য ব্যবহৃত হবে তার একটি তালিকা তৈরি করতে হবে। এটিই হলো সহায়ক গ্রন্থপঞ্জি।
সুনির্দিষ্ট নিয়ম অনুসরণ করে গ্রন্থপঞ্জি লিপিবদ্ধ করা হয়। যেমনÑ সরকার, আবদুল হাকিম (২০০০) “ব্যক্তি সমাজকর্ম
নির্দেশিকা”, ঢাকা : ঈমা প্রকাশনী।
সারসংক্ষেপ
কোনো নির্দিষ্ট বিষয়ে গবেষণা পরিচালনার প্রাথমিক কাজ হলো গবেষণা প্রস্তাবনা প্রস্তুত ও কর্তৃপক্ষের নিকট জমাদান।
গবেষণা প্রস্তাবনা সামগ্রিক গবেষণা কার্যক্রমের পূর্বে পরিকল্পনা। যাতে গবেষণার বিষয় বা সমস্যা, গবেষণার উদ্দেশ্য ও
যৌক্তিকতা সংক্ষেপে বর্ণনা করা হয়। গবেষণা প্রস্তাবনার উপর ভিত্তি করেই গবেষক সামগ্রিক গবেষণাকর্ম পরিচালনা
করে থাকেন। গবেষণা প্রস্তাবনায় সাধারণত যে বিষয়গুলো উপস্থাপন করা হয় তা হলোÑ ১) গবেষণা শিরোনাম, ২)
সারসংক্ষেপ, ৩) ভূমিকা, ৪) গবেষণা সমস্যার বিবৃতি, ৫) প্রত্যয়সমূহের কার্যকর সংজ্ঞায়ন, ৬) সাহিত্য সমীক্ষা, ৭)
গবেষণার উদ্দেশ্য ও যৌক্তিকতা এবং ৮) গবেষণায় ব্যবহৃত পদ্ধতি।
পাঠোত্তর মূল্যায়ন-৯.১০
সঠিক উত্তরের পাশে টিক (√) চিহ্ন দিন :
১। সামগ্রিক গবেষণা কার্যক্রমের পূর্ব পরিকল্পনাকে কী বলা হয়?
ক) গবেষণা প্রস্তাবনা খ) অনুকল্প
গ) সামাজিক কার্যক্রম ঘ) সারসংক্ষেপ
২। গবেষণা প্রস্তাবনার কোন স্তরে প্রত্যয়সমূহের ব্যাখ্যা দেয়া হয়?
ক) ভূমিকা খ) সারসংক্ষেপ
গ) প্রত্যয়সমূহের কার্যকর সংজ্ঞায়ন ঘ) সহায়ক গ্রন্থপঞ্জি
৩। গবেষণা প্রস্তাবনার বাজেটে যে সকল বিষয়ের বিবরণ থাকেÑ
র. অর্থের উৎস নির্ধারণ রর. কোন খাতে কত অর্থ ব্যয় হবে ররর. অর্থ কীভাবে ব্যয় হবে
নিচের কোনটি সঠিক?
ক) র ও রর খ) র ও ররর
গ) রর ও ররর ঘ) র, রর ও ররর
৪। গবেষণা প্রস্তাবনার কোনটি দেখে গবেষণার বিষয়বস্তু সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়?
ক) গবেষণা শিরোনাম খ) গবেষণার সার সংক্ষেপ
গ) গবেষণার যৌক্তিকতা ঘ) প্রস্তাবিত সময়সূচি

FOR MORE CLICK HERE
এইচএসসি বাংলা নোট ১ম পত্র ও ২য় পত্র
ENGLISH 1ST & SECOND PAPER
এইচএসসি আইসিটি নোট
এইচএসসি অর্থনীতি নোট ১ম পত্র ও ২য় পত্র
এইচএসসি পৌরনীতি ও সুশাসন ১ম পত্র
এইচএসসি পৌরনীতি নোট ২য় পত্র
এইচএসসি সমাজকর্ম নোট ১ম পত্র
এইচএসসি সমাজকর্ম নোট ২য় পত্র
এইচএসসি সমাজবিজ্ঞান নোট ১ম পত্র ও ২য় পত্র
এইচএসসি ইতিহাস নোট ১ম পত্র
এইচএসসি ইতিহাস নোট ২য় পত্র
এইচএসসি ইসলামের ইতি. ও সংস্কৃতি নোট ১ম পত্র
এইচএসসি ইসলামের ইতি. ও সংস্কৃতি নোট ২য় পত্র
এইচএসসি যুক্তিবিদ্যা ১ম পত্র ও ২য় পত্র
এইচএসসি ভূগোল ও পরিবেশ নোট ১ম পত্র ও ২য় পত্র
এইচএসসি ইসলামিক স্টাডিজ ১ম ও ২য় পত্র

Copyright © Quality Can Do Soft.
Designed and developed by Sohel Rana, Assistant Professor, Kumudini Government College, Tangail. Email: [email protected]