বাংলাদেশে বসবাসরত হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের শাস্ত্রীয় বিবাহের দালিলিক প্রমাণ সুরক্ষার জন্য “হিন্দু বিবাহ
রেজিস্ট্রেশন আইন, ২০১২” প্রণীত হয়। ২০১২ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর তারিখে প্রণীত আইনটিতে সর্বমোট ১৫টি ধারা
রয়েছে। এ আইনের ধারাসমূহ নিচে আলোচনা করা হলো:
ধারা-১। সংক্ষিপ্ত শিরোনাম, প্রয়োগ ও প্রবর্তন: এ আইন হিন্দু বিবাহ রেজিস্ট্রেশন আইন, ২০১২ নামে অভিহিত হবে এবং
নাগরিকত্ব নির্বিশেষে বাংলাদেশে বসবাসরত সকল হিন্দু ধর্মাবলম্বীর জন্য এটি প্রযোজ্য হবে। সরকারি গেজেটে বিজ্ঞপ্তি
প্রকাশের তারিখ হতে এটি কার্যকর হবে।
ধারা-২। সংজ্ঞা: বিষয় বা প্রসঙ্গের পরিপন্থী কোনো কিছু না থাকলে এ আইনেÑ
ক) হিন্দু অর্থ বাংলাদেশের হিন্দু ধর্মাবলম্বী কোনো নাগরিক;
খ) হিন্দু বিবাহ নিবন্ধক অর্থ ধারা-৪ এর অধীন নিয়োগপ্রাপ্ত হিন্দু বিবাহ নিবন্ধক;
গ) হিন্দু বিবাহ অর্থ হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের মধ্যে সম্পন্ন ও হিন্দু শাস্ত্র মোতাবেক প্রচলিত প্রথা ও রীতি অনুযায়ী অনুমোদিত
বিবাহ; এবং
ঘ) জেলা রেজিস্ট্রার অর্থ ১৯০৮ এর অধীন নিযুক্ত রেজিস্ট্রার বা তদকর্তৃক ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোনো
কর্মকর্তা।
ধারা-৩। হিন্দু বিবাহ নিবন্ধন: অন্য কোনো আইন, প্রথা ও রীতিনীতিতে যাই থাকুক না কেন, হিন্দু বিবাহের দালিলিক
প্রমাণ সুরক্ষার উদ্দেশ্যে হিন্দু বিবাহ বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে নিবন্ধন করা যাবে। তবে কোনো হিন্দু বিবাহ এ
আইনের অধীনে নিবন্ধিত না হলেও হিন্দু শাস্ত্র অনুযায়ী সম্পন্ন বিবাহের বৈধতা ক্ষুণœ হবে না।
ধারা-৪। বিবাহ নিবন্ধক নিয়োগ: এ আইনের অধীনে হিন্দু বিবাহ রেজিস্ট্রেশনের উদ্দেশ্যে সরকার সিটি করপোরেশন
এবং প্রতিটি উপজেলায় একজন করে হিন্দু বিবাহ নিবন্ধক নিয়োগ প্রদান করবে যিনি এ আইনে হিন্দু বিবাহ নিবন্ধক
হিসেবে অভিহিত হবেন।
ধারা-৫। হিন্দু বিবাহ নিবন্ধনের ক্ষেত্রে বিধিনিষেধ: অন্য কোনো আইনে যাই থাকুক না কেন ২১ বছরের কম বয়স্ক কোনো
হিন্দুপুরুষ ও ১৮ বছরের কম বয়স্ক কোনো হিন্দু নারী বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হলে এ আইনের অধীনে তা নিবন্ধনযোগ্য হবে
না।
ধারা-৬। বিবাহ নিবন্ধন পদ্ধতি: হিন্দু ধর্ম, রীতিনীতি ও আচার-অনুষ্ঠান অনুযায়ী হিন্দু বিবাহ সম্পন্ন হওয়ার পর উক্ত
বিবাহের দালিলিক প্রমাণ সুরক্ষার উদ্দেশ্যে বিবাহের যে কোনো পক্ষের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে হিন্দু বিবাহ নিবন্ধক
নির্ধারিত পদ্ধতিতে নিবন্ধন করবেন। এ আইন কার্যকর হওয়ার পূর্বে হিন্দু ধর্ম, রীতিনীতি ও আচার-অনুষ্ঠান অনুযায়ী
সম্পন্নকৃত বিবাহের ক্ষেত্রে একই পদ্ধতিতে নিবন্ধন করা যাবে।
ধারা-৭। বিবাহ নিবন্ধন ফিস: সরকার সময় সময় বিধি দ্বারা হিন্দু বিবাহ নিবন্ধন ফিস এবং প্রতিলিপি সরবরাহের নিমিত্ত
প্রয়োজনীয় ফিস নির্ধারণ করতে পারবে।
ধারা-৮। বিবাহ নিবন্ধকের দায়িত্ব পালন: ধারা ৪ অনুযায়ী নিয়োগপ্রাপ্ত হিন্দু বিবাহ নিবন্ধকের দায়িত্ব পালন সরকারি
চাকুরি হিসেবে গণ্য হবেনা।
ধারা-৯। সবেতনে চাকরির ক্ষেত্রে বাধা নিষেধ: কোনো হিন্দু বিবাহ নিবন্ধক তাকে যে এলাকার জন্য নিয়োগ প্রদান করা
হয়েছে সে এলাকার নির্ধারিত প্রতিষ্ঠান ব্যতীত অন্য কোথায়ও সবেতনে চাকরি করতে পারবেন না।
ধারা-১০। নিবন্ধন বহিসমূহ পরিদর্শন: কোনো ব্যক্তি নির্ধারিত ফিস পরিশোধ করে হিন্দু বিবাহ নিবন্ধন বহি পরিদর্শন বা
এর অন্তর্ভুক্ত কোনো বিবাহ নিবন্ধনের প্রতিলিপি সংগ্রহ করতে পারবেন।
ধারা-১১। নিবন্ধন বহি সংরক্ষণ: প্রত্যেক হিন্দু বিবাহ নিবন্ধক বছরের শুরুতে নিবন্ধন বহিতে নতুন ক্রমিক নম্বর
উল্লেখপূর্বক বিবাহ নিবন্ধন করবেন এবং নিবন্ধক দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি পেলে নিবন্ধন বহি ও অন্যান্য কাগজপত্র নিরাপত্তা
হেফাজতের জন্য সংশ্লিষ্ট জেরা রেজিস্ট্রারের নিকট জমা প্রদান করবেন।
ধারা-১২। বিবাহ নিবন্ধনের প্রতিলিপি প্রদান: এ আইনের অধীন হিন্দু বিবাহ নিবন্ধনের ক্ষেত্রে বিবাহের পক্ষদ্বয় বা তাদের
মনোনীত প্রতিনিধি কর্তৃক আবেদনের প্রেক্ষিতে হিন্দু বিবাহ নিবন্ধক নির্ধারিত সময়ের মধ্যে উক্ত বিবাহ নিবন্ধনের
প্রতিলিপি সরবরাহ করবেন।
ধারা-১৩। তত্ত¡াবধান, নিয়ন্ত্রণ ইত্যাদি: প্রত্যেক হিন্দু বিবাহ নিবন্ধক সংশ্লিষ্ট জেলার রেজিস্ট্রারের তত্ত¡াবধান ও নিয়ন্ত্রণে
থেকে তার উপর অর্পিত দায়িত্ব পালন করবেন।
ধারা-১৪। নিয়োগ স্থগিত বা বাতিলকরণ: সরকারের নিকট যদি সন্তোষজনকভাবে এই মর্মে প্রতীয়মান হয় যে, কোনো
হিন্দু বিবাহ নিবন্ধক তার দায়িত্ব পালনে কোনো অসদাচরণের জন্য দায় অথবা দায়িত্ব পালনে অক্ষম তাহলে সরকার
লিখিত আদেশ দ্বারা তার নিয়োগ অনধিক দুই বছরের জন্য স্থগিত বা বাতিল করতে পারেন।
ধারা-১৫। বিধি প্রণয়নের ক্ষমতা: এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণের জন্য সরকারি গেজেট প্রজ্ঞাপন দ্বারা সরকার যেকোনো
বিধি প্রণয়ন করতে পারবেন।
সারসংক্ষেপ
বাংলাদেশে বসবাসরত হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের শাস্ত্রীয় বিবাহের দালিলিক প্রমাণ সুরক্ষার জন্য “হিন্দু বিবাহ রেজিস্ট্রেশন
আইন, ২০১২” প্রণীত হয়। ২০১২ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর তারিখে প্রণীত আইনটিতে সর্বমোট ১৫টি ধারা রয়েছে।
বাংলাদেশে এই প্রথম হিন্দু বিবাহ রেজিষ্ট্রেশন সংক্রান্ত কোনো আইন প্রণয়ন করা হয়েছে। বাংলাদেশে বসবাসরত সকল
হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের জন্য এ আইন প্রযোজ্য হবে। এ আইন অনুযায়ী পুরুষের বয়স ২১ এবং মহিলোাদের বয়স ১৮
বছরের কম হলে বিবাহ নিবন্ধনযোগ্য হবে না।
পাঠোত্তর মূল্যায়ন-৫.৯
সঠিক উত্তরের পাশে টিক (√) চিহ্ন দিন :
১। হিন্দু বিবাহ রেজিস্ট্রেশন আইন, ২০১২-এর বিধান অনুযায়ী ছেলেমেয়ের বিবাহের ন্যূনতম বয়স নির্ধারণ করা হয়েছে
কত বছর?
ক) ১৮ ও ১৫ বছর খ) ২১ ও ১৮ বছর
গ) ২৩ ও ২০ বছর ঘ) ২৫ ও ২৩ বছর
২। বাংলাদেশে হিন্দু বিবাহ রেজিস্ট্রেশন আইন, ২০১২ কবে প্রণীত হয়?
ক) ২৪ জুলাই, ২০১২ খ) ২৪ আগস্ট, ২০১২
গ) ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০১২ ঘ) ২৪ অক্টোবর, ২০১২
FOR MORE CLICK HERE
এইচএসসি বাংলা নোট ১ম পত্র ও ২য় পত্র
ENGLISH 1ST & SECOND PAPER
এইচএসসি আইসিটি নোট
এইচএসসি অর্থনীতি নোট ১ম পত্র ও ২য় পত্র
এইচএসসি পৌরনীতি ও সুশাসন ১ম পত্র
এইচএসসি পৌরনীতি নোট ২য় পত্র
এইচএসসি সমাজকর্ম নোট ১ম পত্র
এইচএসসি সমাজকর্ম নোট ২য় পত্র
এইচএসসি সমাজবিজ্ঞান নোট ১ম পত্র ও ২য় পত্র
এইচএসসি ইতিহাস নোট ১ম পত্র
এইচএসসি ইতিহাস নোট ২য় পত্র
এইচএসসি ইসলামের ইতি. ও সংস্কৃতি নোট ১ম পত্র
এইচএসসি ইসলামের ইতি. ও সংস্কৃতি নোট ২য় পত্র
এইচএসসি যুক্তিবিদ্যা ১ম পত্র ও ২য় পত্র
এইচএসসি ভূগোল ও পরিবেশ নোট ১ম পত্র ও ২য় পত্র
এইচএসসি ইসলামিক স্টাডিজ ১ম ও ২য় পত্র