ব্র্যাক’র লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য বর্ণনা কর ব্র্যাক’র কার্যক্রম আলোচনা করতে পারবে

ব্রাক বাংলাদেশে প্রতিষ্ঠিত অন্যতম বৃহত্তম আন্তর্জাতিক বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা। তৃণমূল পর্যায়ের
দরিদ্র জনগোষ্ঠীকে সংগঠিত করে বৃহত্তর অর্থনৈতিক ও সামাজিক ক্ষমতায়নের অঙ্গীকার নিয়ে বিশ্বের সবচেয়ে বড় এ
উন্নয়ন সংস্থা কাজ করে যাচ্ছে। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের সময় ভারতে আশ্রয় গ্রহণকারী শরণার্থীদের
মধ্যে ত্রাণকার্য পরিচালনায় যে সব সংস্থা গুরুত্বপূর্ণ ভ‚মিকা পালন করে তার মধ্যে জনাব ফজলে হাসান আবেদের প্রতিষ্ঠিত (১৯৭১) অন্যতম। এ সংস্থার মাধ্যমে অর্থ সংগ্রহ করে শরণার্থীদের মধ্যে ত্রাণকার্য পরিচালনা করা
হতো। বাংলাদেশ স্বাধীন হবার পর যুদ্ধে ক্ষতিগ্রস্তদের ত্রাণ ও পুনর্বাসনের
লক্ষ্যে ১৯৭২ সালে সিলেটের শাল্লা গ্রামে "" নামক সংস্থা গঠন করেন জনাব ফজলে
হাসান আবেদ। পল্লীর দরিদ্র এবং শোষিত শ্রেণীর উন্নয়নের প্রয়োজন দীর্ঘ
মেয়াদী বহুমুখী উন্নয়ন কার্যক্রম গ্রহণের লক্ষে ১৯৭৩ সালে ব্র্যাকের নাম পরিবর্তন করে "
হয়। বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন বিশেষত প্রান্তিক ও দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়নে ব্র্যাক অত্যন্ত কার্যকর
ভূমিকা রেখে চলছে। জনগোষ্ঠীভিত্তিক ব্র্যাকের বিভিন্ন উদ্ভাবনা যথা- ক্ষুদ্রঋণ, শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা, কৃষি, আইন সহায়তা,
সামাজিক উবুদ্ধকরণ, জীবিকা সংস্থান, অতি দরিদ্রদেরকে সম্পদ হস্তান্তর, উদ্যোক্তা প্রশিক্ষণ প্রভৃতির মাধ্যমে সমাজে
অধিকার বঞ্চিত প্রান্তিক জনগোষ্ঠী তাদের সুপ্ত সম্ভাবনা বিকাশের পথ খুঁজে পেয়েছে। ১৯৭২ সালে ব্র্যাক তার যাত্রা শুরু
করে বর্তমানে এর ০১ লক্ষ্য ২০ হাজার কর্মী বিশ্বব্যাপী ১১ টি দেশে ১৩৫ মিলিয়ন মানুষের জীবন সংগ্রামে সহায়ক ভূমিকা
পালন করছে। ব্র্যাক এমন এক নতুন ধারার প্রবর্তন করেছে যা উন্নয়ন কর্মসূচিকে সামাজিক উদ্যোগের সঙ্গে সমন্বিত
করেছে এবং একই সঙ্গে প্রতিষ্ঠান ও সেবাগ্রহীতাদের স্বাবলম্বনের পথে এগিয়ে দিয়েছে। ব্র্যাকের ভিশন হলো এমন একটি
পৃথিবী গড়ে তোলা যেখানে কোনো প্রকার শোষণ ও বৈষম্য থাকবে না এবং প্রতিটি মানুষের সম্ভাবনা বিকাশের সুযোগ থাকবে।
ব্রাকের অন্যতম লক্ষ্য হচ্ছে সামাজিক, অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিক, প্রযুক্তি ও অবকাঠামোগত দিক থেকে সুবিধাবঞ্চিত গ্রামীণ
অসহায়, দুস্থ জনগোষ্ঠী, বিশেষ করে নারীদের আয়বৃদ্ধিমূলক এবং সামাজিক উন্নয়নমূলক কাজে সম্পৃক্তকরণের মাধ্যমে
তাদের আর্থ-সামাজিক ও পারিবারিক উন্নয়নের পাশাপাশি জাতীয় উৎপাদন ও উন্নয়নকে তরান্বিত করা। ব্র্যাকের মৌলিক
লক্ষ্য হচ্ছেÑ
ক. দারিদ্র্য, অশিক্ষা এবং সামাজিক অবিচার দূরীভূত করে দরিদ্র জনগোষ্ঠীর ক্ষমতায়নের পথকে প্রশস্ত করা; এবং
খ. বিভিন্ন সামাজিক ও অথনৈতিক কর্মসূচির মাধ্যমে বড় মাপের ইতিবাচক পরিবর্তন এনে সমাজের সকল নারী ও
পুরুষের সম্ভাবনার বিকাশ সাধন।
এসব লক্ষ্যে ব্র্যাক’র মূল্যবোধ হলোÑ সৃজনশীলতা ও উদ্ভাবনী মনোভাব, সততা ও নিষ্ঠা, সর্বজনীনতা এবং কার্যকারিতা। ব্র্যাক’র সাধারণ উদ্দেশ্যসমূহ হলো:
১. দরিদ্র জনগোষ্ঠীকে ক্ষমতায়িত করা;
২. গ্রামীণ মহিলাদের সুপ্ত প্রতিভার বিকাশে সহায়তা করা;
৩. বড় মাপের ইতিবাচক পরিবর্তন আনয়ন করা;
৪. দরিদ্র জনগোষ্ঠীর মধ্যে চাহিদা সৃষ্টি এবং সম্পদ অর্জন প্রক্রিয়ায় প্রবেশের সুযোগ সৃষ্টি করা; এবং
৫. দরিদ্রদের গৃহীত প্রকল্প বাস্তবায়নযোগ্য করে তুলতে প্রতিষ্ঠানিক সহায়তা প্রদান।
৭.২.২ ব্র্যাক’র কার্যক্রম
ব্র্যাক মনে করে দারিদ্র্য একটি অভিশাপ এবং এর কারণগুলো একটি আরেকটির সাথে যুক্ত। বিভিন্ন দিক থেকে
সামগ্রিকভাবে দারিদ্র্যকে মোকাবিলা করা জরুরি। সেজন্য ব্র্যাক’র কার্যক্রমকে মোটামুটি পাঁচটি ভাগে ভাগ করা যেতে
পারে; যথা- অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও সামাজিক সুরক্ষামূলক কার্যক্রম, কল্যাণ ও প্রত্যাবর্তনমূলক কার্যক্রম; ক্ষমতায়ন
কার্যক্রম; সেবা বিস্তৃতমূলক কার্যক্রম ও সমর্থনমূলক কার্যক্রম। নিচে কার্যক্রমগুলোর বর্ণনা দেওয়া হলো:
৭.২.২.১. অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও সামাজিক সুরক্ষামূলক কার্যক্রম
অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও সামাজিক সুরক্ষামূলক কার্যক্রমের আওতায় ব্র্যাক নি¤েœাক্ত কর্মসূচি পরিচালনা করেÑ
ক. অতিদরিদ্র কর্মসূচি
ব্র্যাক’র অতিদরিদ্র কর্মসূচি নামে একটি বিশেষ কর্মসূচি আছে। অর্থনৈতিক পিরামিডের ভিত্তিস্তরে বাস করে যারা, তাদের
অর্থনৈতিক ও সামাজিক অবস্থা উন্নয়নের ক্ষেত্রে অতিদরিদ্র কর্মসূচি বিশেষ ভূমিকা পালন করে। অনেক সময় অতি দরিদ্র
জনগোষ্ঠী ক্ষুদঋণ ও মুল¯্রােতের অন্যান্য দারিদ্র্য বিমোচন কর্মসূচির আওতায় আসতে সক্ষম হয় না। এজন্য ২০০২ সাল
থেকে ব্র্যাক এই জনগোষ্ঠীর অর্থনৈতিক উন্নয়নের ধাপ অতিক্রমে সহায়তায় সম্পদ হস্তান্তর, কর্মদক্ষতার উন্নয়ন এবং
বিশেষ স্বাস্থ্যসেবা সুবিধার মতো নানাবিধ উদ্যোগ গ্রহণ করছে। গবেষণায় দেখা গেছে এ কর্মসূচির ৯৫ শতাংশ সদস্য
অতিদরিদ্র্যের আবর্ত থেকে বেরিয়ে আসতে পেরেছে।
খ. কৃষি ও খাদ্য নিরাপত্তা
খাদ্য ঘাটতির ফলে বিশ্বজুড়ে খাদ্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধির প্রবণতা এবং খাদ্য নিরাপত্তার উপর জলবায়ুর বিরুপ প্রভাবের
প্রেক্ষাপটে ব্র্যাক কৃষিখাতে তার কর্মপ্রয়াসকে জোরদার করে তুলেছে। আটটি দেশে পরিচালিত এই কর্মসূচিতে নতুন কৃষি
প্রযুক্তির উদ্ভব, আর্থিক সেবা এবং উৎপাদন ও বিপনন পদ্ধতিকে গুরুত্ব প্রদান করা হয়। এই কর্মসূচির লক্ষ্য দ্বিবিধ।
প্রথমত: দরিদ্র কৃষকদের বসতাবাড়িভিত্তিক প্রান্তিক কৃষি কর্মকাÐে সহযোগিতা প্রদান করে বহুবিধ দারিদ্র্য দূরীকরণের
উদ্যোগে সহায়তা করা। এসব কর্মকান্ডের মধ্যে রয়েছে স্বল্প পরিসরে দল ও সবজির চাষ এবং হাঁস মুরগি ও গবাদি পশু
পালন। দ্বিতীয়ত: গবেষণা ও উন্নয়ন কার্যক্রম।
গ. সমন্বিত উন্নয়ন কর্মসূচি
ব্র্যাক ২০১১ সালে কৌশলগত অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে সর্বাধিক প্রান্তিক ও অবহেলিত জনগোষ্ঠীর বহুমাত্রিক দারিদ্র্য
দূরীকরণের লক্ষ্যে ইনটিগ্রেটেড ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রাম (আইডিপি) অর্থাৎ সমন্বিত উন্নয়ন কর্মসূচি শুরু করেছে। দেশের
প্রত্যন্ত এলাকায় যথা হাওর ও চরাঞ্চলে বসবাসকারী এবং আদিবাসী জনগোষ্ঠী যারা উন্নয়নের মূলধারা থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে
আছে তাদের দারিদ্র্য ও বিপন্নতা থাকলে আইডিপি কাজ করছে। ব্র্যাকের মৌলিক সেবা, উন্নত জীবিকার সুযোগ, সামাজিক
উদ্বুদ্ধকরণ ও ক্ষমতায়ন, গবেষণা, জ্ঞান ও তথ্যভান্ডার ব্যবস্থাপনা প্রভৃতি ক্ষেত্রে একীভূত ও সমন্বিত উদ্যোগের মাধ্যমে আইডিপি কাজ করে।
ঘ. মাইক্রোফাইনান্স বা ক্ষুদ্রঋণ
সামাজিকভাবে বঞ্চিত ও বিভিন্ন ক্ষুদ্রগোষ্ঠি মানুষ এবং সরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে অবসরপ্রাপ্ত বাছাইকৃত শ্রমিকদের জীবনমান
উন্নয়নে ব্র্যাক ক্ষুদ্রঋণ সেবা প্রদান করে। বাংলাদেশে এই কর্মসূচির সদস্য সংখ্যা ৭.৭৮ মিলিয়ন এবং ৬৪ টি জেলায়
বকেয়ার পরিমাণ ৬৯৩.৯২ মিলিয়ন মার্কিন ডলার (ব্র্যাক বার্ষিক রিপোর্ট,২০১৬)। দরিদ্র জনগোষ্ঠীর দক্ষতা উন্নয়ন, পণ্যের
বাজার দর নিশ্চিতকরণ এবং সামাজিক সেবা তথ্য সরবরাহের মাধ্যমে বাজারের সঙ্গে যোগসূত্র স্থাপন এর অন্যতম লক্ষ্য।
উন্নয়ন এবং প্রযুক্তির সহায়তা প্রদানের লক্ষ্যে বাংলাদেশসহ সর্বমোট ৯ টি দেশে এ কর্মসূচি চালু আছে। ঙ. ব্র্যাক এন্টারপ্রাইজ এ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট
ব্র্যাকের উন্নয়ন কর্মসূচিকে টেকসই করা, ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের উৎপাদন ও উৎপাদন পরবর্তী বিপণন কাজে সহায়তা,
কর্মসংস্থান সৃষ্টি করে দারিদ্র্য বিমোচন এবং বাণিজ্যিক উদ্যোক্তার লভ্যাংশ ব্র্যাকের উন্নয়ন কর্মসূচিতে স্থানান্তর করার লক্ষ্যে
পরিচালিত হয় ব্র্যাক এন্টারপ্রাইজ এ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট। আড়ং ব্র্যাক এন্টারপ্রাইজ অন্যতম উদাহরণ। ব্র্যাক ডেইরি, ব্র্যাক
কিচেন, ব্র্যাক ফিশারিজ, ব্র্যাক পোলট্রি ইত্যাদিও অন্যতম উদাহরণ। এসব প্রতিষ্ঠান থেকে যে মুনাফা হয় তার ৫০
শতাংশ উন্নয়ন কর্মসূচিতে বাকী ৫০ শতাংশ পুনর্বিনিয়োগ হয়।
৭.২.২.২. কল্যাণ ও প্রত্যাবর্তনমূলক কার্যক্রম
ব্র্যাক কল্যাণ ও প্রত্যাবর্তনমূলক কর্মসূচির আওতায় নি¤েœাক্ত কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকে:
ক. দুর্যোগ, পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলা: প্রাকৃতিক দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় ব্র্যাক’র প্রাতিষ্ঠানিক দক্ষতা বৃদ্ধি,
আবহাওয়ার পূবার্ভাস প্রদান, জলবায়ু পরিবর্তন ও প্রাকৃতিক দুর্যোগের মধ্যে যোগসূত্রবিষয় জ্ঞান প্রদান করে দুর্যোগ
মোকাবিলা ও ঝুঁকিহ্রাসকল্পে এলাকার জনগোষ্ঠীকে প্রস্তুত করে তোলা।
খ. স্বাস্থ্য, পুষ্টি ও জনসংখ্যা কার্যক্রম: ব্র্যাক স্বাস্থ্য কর্মসূচি দরিদ্র, সুবিধাবঞ্চিত এবং সমাজের প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর কাছে
প্রতিরোধমূলক, প্রচারমূলক, প্রতিকারমূলক ও পুনর্বাসন সমন্বিত স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দিচ্ছে। স্বাস্থ্যক্ষেত্রে টেকসই
উন্নয়নের লক্ষ্যে ব্র্যাক প্রশিক্ষিত স্বাস্থ্যসেবিকার মাধ্যমে সাশ্রয়ী জরুরী স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দিচ্ছে। এছাড়া গর্ভবতী মা
ও নবজাতকের স্বাস্থ্যসেবা, পুষ্টিশিক্ষা, ছোঁয়াছে রোগ প্রতিরোধ ও সাধারণ জীবনমান উন্নয়নে এ কার্যক্রম কাজ চালিয়ে যাচ্ছে।
গ. ওয়াটার, স্যানিটেশন এ্যান্ড হাইজিন কার্যক্রম: ব্রাকের এ কর্মসূচি ২৪৮ টি উপজেলায় গ্রাম ও প্রত্যন্ত অঞ্চলের
জনগণের নিকট টেকসই ও সমন্বিত ওয়াটার স্যানিটেশন ও হাইজিনসেবা পৌঁছে দিচ্ছে। এ কর্মসূচির পাঁচটি ক্ষেত্র
হলো পানি (পানির পুরানো উৎসের প্রয়োজনীয় সংস্কার এবং অগ্রসর প্রযুক্তির ব্যবহার), স্যানিটেশন স্বাস্থ্যসেবা
(ল্যাট্রিন স্থাপন, ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের বিকাশ এবং দরিদ্র জনগণের জন্য ভর্তুকি ও প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা), হাইজিন (স্বাস্থ্য
বিষয়ে আচরণগত পরিবর্তনে সহায়তা) স্কুল স্যানিটেশন ও হাইজিন শিক্ষা, এবং সরকারি-বেসরকারি অংশদারিত্ব। এ
কর্মসূচির আওতায় ১৫০ টি উপজেলায় ৩৮.৮ মিলিয়ন লোকের হাইজিন শিক্ষা, ২৫.৬ মিলিয়ন লোকের জন্য
স্যানিটারি ল্যাট্রিন এবং ১৮ মিলিয়ন লোকের জন্য বিশুদ্ধ পানির ব্যবস্থা করেছে।
৭.২.২.৩ ক্ষমতায়ন কার্যক্রম: ব্রাকের ক্ষমতায়ন কর্মসূচির আওতায় নি¤েœাক্ত কার্যবলী সম্পন্ন হয়Ñ
ক) জেন্ডার, জাস্টিস এ্যান্ড ডাইভারসিটি: জেন্ডার বৈষম্য দূরীকরণ নারীদের মানবাধিকার, জেন্ডার ভূমিকা, সংগঠন ও
সমাজে সচেতনতা তৈরি, জনগণের মধ্যে জেন্ডার সম্পর্কে সচেতনতা গড়ে তোলার লক্ষ্যে ব্র্যাকের এ কর্মসূচি
পরিচালিত হয়। এ কর্মসূচির আওতায় সভার আয়োজন, কর্মসূচি পালন, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক মৈত্রীনেট তৈরি করা হয়।
খ) মানবাধিকার ও আইনি সহায়তা : দরিদ্র ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে, ন্যায়বিচার প্রাপ্তির অধিকার নিশ্চিত করা, আইনের
শাসন সুসংগত করা ও বিরোধ নিষ্পক্তি করার লক্ষ্যে ১৯৮৬ সাল থেকে ব্র্যাকের এ কর্মসূচি নানা বিবর্তনের মাধ্যমে
এগিয়ে গেছে। এই কর্মসূচির আওতায় ৬১ টি জেলায় মোট ৫৭৩ টি আইনি সহায়তা কেন্দ্র রয়েছে। আইনি সহায়তা
প্রদানের জন্য ব্র্যাক’র চারশত প্যানেল আইনজীবী রয়েছে।
৪। সেবা বিস্তৃতমূলক কার্যক্রম
এ কর্মসূচির আওতায় শিক্ষা, অভিবাসন, দক্ষতা উন্নয়ন ও শহর উন্নয়ন কার্যক্রম পরিচালিত হয়। এসব কার্যক্রমের
সংক্ষিপ্ত বর্ণনা দেওয়া হলোক) শিক্ষা: ব্র্যাক বিশ্বের ছয়টি দেশে শিক্ষা কর্মসূচি পরিচালনা করে। এ কর্মসূচির আওতায় বিশ্বব্যাপী সাত লক্ষাধিক
ছাত্রছাত্রী পড়াশোনা করে। ব্র্যাক নতুন ধরনের শিক্ষাদান পদ্ধতি ও উপকরণ নিয়ে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষাব্যবস্থার সম্পূরক
হিসেবে প্রত্যন্ত অঞ্চলের লক্ষ লক্ষ শিশুকে শিক্ষার আওতায় নিয়ে আসছে যাদের বেশিরভাগই অতিদরিদ্র সংঘাত, বঞ্চনা ও উচ্ছেদের শিকার।
খ) অভিবাসন: প্রতারিত হওয়া থেকে রক্ষার জন্য ব্র্যাকের আরেকটি পদক্ষেপ হলো অভিবাসন কার্যক্রম। এ কর্মসূচি
অভিবাসন-পূর্ব, অভিবাসনকালীন এবং প্রত্যাবর্তন পরবর্তী এই তিনটি পর্যায়ে সকল ক্ষেত্রে কাজ করে এবং অভিবাসী
কর্মীদের অধিকার ও মর্যাদা রক্ষা করে নিরাপদ অভিবাসন নিশ্চিত করে।
গ) দক্ষতা উন্নয়ন: দক্ষতা উন্নয়ন কার্যক্রমের আওতায় ব্র্যাক তরুণদের প্রশিক্ষণ উদ্যোক্তা তৈরি এবং ছোট ও মাঝারি
শিল্পের প্রসারে কাজ করে। ব্র্যাক এ পর্যন্ত ৫ লাখ তরুণকে বিভিন্ন বিষয়ে প্রশিক্ষণ দিয়েছে। ৪ লাখ বেকার যুবকের প্রশিক্ষণের মাধ্যমে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করছে।
ঘ) শহর উন্নয়ন : ব্র্যাক শহর উন্নয়নের জন্য বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনা করে। শহর গভর্নেন্স, শহরাঞ্চলে মৌলিক সেবা
সকলের কাছে পৌঁছে দেয়া এবং নি¤œ আয়ের মানুষের অধিকার রক্ষায় কাজ করে। এছাড়া কমিউনিটি ভিত্তিক
অগ্নিনির্বাপক প্রশিক্ষণ ও সচেতনায় ব্র্যাক কাজ করছে।
৭.২.২.৫ সমর্থনমূলক কর্মসূচি
ব্রাকের অনেকগুলো সমর্থনমূলক কর্মসূচি রয়েছে। যেমনÑ প্রশাসন, সামাজিক পরিবর্তনের জন্য এ্যাডভোকেসি, যোগাযোগ
স্থাপন, প্রতিবন্ধি অন্তর্ভুক্তিকরণ, মানবসম্পদ উন্নয়ন, নিরাপত্তা প্রভৃতি সমর্থন মূলক কর্মসূচি রয়েছে।
সারসংক্ষেপ
দরিদ্র ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর উন্নয়ন, নারীর ক্ষমতায়ন, কৃষি ও খাদ্য নিরাপত্তায় বেসরকারি সমাজ উন্নয়নমূলক সংস্থা
হিসেবে ব্র্যাক অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ ভূমিকা রেখে চলছে। শোষণ ও বৈষম্যহীন এবং সবার জন্য সম্ভাবনা বিকাশের সুযোগ
নিশ্চিত করার লক্ষ্য নিয়ে ব্র্যাক মুলত পাঁচ ধরনের কর্মসূচি পরিচালনা করে। সেগুলো হলো- ক. অথনৈতিক উন্নয়ন ও
সামাজিক সুরক্ষামূলক, খ. কল্যাণ ও প্রত্যাবতর্নন মূলক কার্যক্রম, গ. ক্ষমতায়ন কার্যক্রম, ঘ. সেবা বিস্তৃতিমূলক কার্যক্রম
ও ঙ. সমর্থনমূলক কার্যক্রম।
পাঠোত্তর মূল্যায়ন-৭.২
সঠিক উত্তরের পাশে টিক (√) চিহ্ন দিন:
১। ব্র্যাক প্রতিষ্ঠিত হয় কত সালে?
ক. ১৯৭৩ সালে খ. ১৯৭২ সালে
গ. ১৯৭৪ সালে ঘ. ১৯৭৬ সালে
২। ব্র্যাকের অন্যতম ভিশন কী?
ক. মানুষের লিখনী শক্তির বিকাশ খ. মানুষের মতামত প্রদানের মাধ্যমের বিকাশ
গ. মানুষের সম্ভাবনা বিকাশ ঘ. মানুষের ধর্মীয় স্বাধীনতা বিকাশ

FOR MORE CLICK HERE
এইচএসসি বাংলা নোট ১ম পত্র ও ২য় পত্র
ENGLISH 1ST & SECOND PAPER
এইচএসসি আইসিটি নোট
এইচএসসি অর্থনীতি নোট ১ম পত্র ও ২য় পত্র
এইচএসসি পৌরনীতি ও সুশাসন ১ম পত্র
এইচএসসি পৌরনীতি নোট ২য় পত্র
এইচএসসি সমাজকর্ম নোট ১ম পত্র
এইচএসসি সমাজকর্ম নোট ২য় পত্র
এইচএসসি সমাজবিজ্ঞান নোট ১ম পত্র ও ২য় পত্র
এইচএসসি ইতিহাস নোট ১ম পত্র
এইচএসসি ইতিহাস নোট ২য় পত্র
এইচএসসি ইসলামের ইতি. ও সংস্কৃতি নোট ১ম পত্র
এইচএসসি ইসলামের ইতি. ও সংস্কৃতি নোট ২য় পত্র
এইচএসসি যুক্তিবিদ্যা ১ম পত্র ও ২য় পত্র
এইচএসসি ভূগোল ও পরিবেশ নোট ১ম পত্র ও ২য় পত্র
এইচএসসি ইসলামিক স্টাডিজ ১ম ও ২য় পত্র

Copyright © Quality Can Do Soft.
Designed and developed by Sohel Rana, Assistant Professor, Kumudini Government College, Tangail. Email: [email protected]