টি এইচ গ্রীনের রাষ্ট্র দর্শনের বর্ণনা দিন।

পাশ্চাত্যের উপযোগবাদী দার্শনিকবৃন্দ গণতন্ত্র, স্বাধীনতা আর ব্যক্তিস্বাতন্ত্র্যের পক্ষে ছিলেন।
তবে তারা সফল হন নি ব্যক্তি ও রাষ্ট্রের সম্পর্ককে যথার্থ প্রেক্ষাপটে দাঁড় করাতে। জেরেমী
বেন্থাম সহ গোড়ার দিককার উপযোগবাদীরা নানা সমস্যার সমাধান প্রয়াসে ব্যক্তি স্বাতন্ত্র্যবাদের
আদর্শকে ব্যবহার করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু শিল্প বিপ্লবের বন্যায় তা ভেসে যায়।
উপযোগবাদী আদর্শ ঊনিশ শতকের প্রথমার্ধে স্বাধীনতা ও সংস্কারের কেন্দ্রীয় ভিত্তিরূপে
ক্রিয়াশীল থাকলেও পরবর্তীতে তা প্রতিক্রিয়াশীলতা ও বিশেষ সুবিধাবাদিতার স্মারক হয়ে
উঠে। উপযোগবাদের অসফলতার প্রেক্ষাপটে সমস্যা সমাধানের নব পরিকল্পনা নিয়ে যে
বুদ্ধিজীবী-দার্শনিকগণ সামনে চলে আসেন, ব্রিটেনের রাষ্ট্রচিন্তার ইতিহাসে তাঁরাই অক্সফোর্ড
আইডিয়েলিস্ট বা অক্সফোর্ড আদর্শবাদী সম্প্রদায় বলে খ্যাত। গ্রীন, বোসাঙ্কে, রিচি ব্র্যাডলী,
বার্কার, লিন্ডসে, ওয়ালেস এরা ছিলেন এই দলে।
ব্যক্তিজীবন
১৮৩৬ সালে ইংল্যান্ডের এক সাধারণ যাজক পরিবারে টমাস হীল গ্রীন জন্ম নেন।
অক্সফোর্ডেই কাটে তাঁর সারাটা জীবন। ব্যালিয়ল কলেজে টিউটর পদ থেকে তিনি সেখানে
হোয়াইট‘স প্রফেসর অফ মর‌্যাল ফিলোসফি পদে পদোন্নতি পান। শিক্ষকতার বাইরে
সামাজিক-সাংস্কৃতিক পরিমন্ডলে গ্রীনের বিচরণ ছিল। অক্সফোর্ড টাউন কাউন্সিল, অক্সফোর্ড
স্কুল বোর্ড এবং মাধ্যমিক শিক্ষা বিষয়ক কমিটিতে তিনি সদস্য ছিলেন। এ ভাবে নৈতিক
দর্শনের শিক্ষকতার পাশাপাশি জনজীবনে বিচরণ গ্রীনের চেতনায় মানব প্রকৃতির যথার্থ
উপলব্ধি সৃষ্টিতে সহায়ক হয়।
টমাস হীল গ্রীন ও তাঁর সহযোগিদের দর্শনকে ভাববাদ কিংবা আদর্শবাদ বলা হয়। তবে তা
হেগেলের দর্শনের অনুরূপ নয়। গ্রীনের দর্শন বরং হেগেল অপেক্ষা ইমানুয়েল কান্টের
কাছাকাছি। আধ্যাতিœক দর্শনের তাত্তি¡ক বিশ্লেষণ ছেড়ে কেবল নৈতিক ও রাষ্ট্রীয় জীবনের
পরিপ্রেক্ষিতে দেখলে এটা স্বীকার করতেই হবে। হেগেলের ন্যায় ঃ
বা চরম রাষ্ট্রবাদী না হয়ে গ্রীন বরং কান্টের ন্যায় ংবসর ংঃধঃরংঃং বা অর্ধরাষ্ট্রবাদী। কান্টের
ভাববাদ তো বটেই, সেইকালের প্রাচীন গ্রীসীয় প্লেটো-এরিস্টটলের রাষ্ট্রচিন্তা, জ্যা জ্যাক
রুশোর ‘‘সোশাল কন্ট্রাক্ট’’-এর সাধারণ ইচ্ছা এবং ইংল্যান্ডের গোঁড়া খ্রিষ্টীয় ধর্মমত বিরোধী
নন-কনফরমিস্ট রাজনৈতিক বিশ্বাস - এ সব প্রভাব রেখেছে গ্রীনের চিন্তায়।
ব্যক্তির স্বাধীনতা, নৈতিক জীবন এবং রাষ্ট্রীয় হস্তক্ষেপ
আরো কয়েকটি রচনা থাকলেও ১৮৭৯ সালে প্রকাশিত ‘‘দি প্রিন্সিপল্স অফ পলিটিক্যাল
অবলিগেশন্স’’ নামক গ্রন্থটিই গ্রীনের চিন্তার ব্যাপক ও যথার্থ বহি:প্রকাশ ঘটায়। উদারতা ও
ব্যক্তিস্বাধীনতার ঐতিহ্য গ্রীনের চিন্তার ভিত্তি। গ্রীন বেন্থাম ও মিলের দার্শনিক চরমবাদ অথবা
রুশো ও হেগেলের রাষ্ট্রীয় সর্বাত্মকবাদের কোনো চরমেই যান নি। মানুষের স্বাধীনতার প্রশ্নে
গ্রীন এদের থেকে স্বতন্ত্র। উল্লিখিত উভয় চরমপন্থা পরিত্যাগ করার নিমিত্তে গ্রীন ‘পজিটিভ’ বা
‘ইতিবাচক’ স্বাধীনতার গভীরতর ভিত্তি সন্ধান করেন।
গ্রীন ব্যক্তি স্বাধীনতার নীতিকে সমর্থন করেছেন। অথচ তিনি চরম স্বাতন্ত্র্যবাদীদের ন্যায় রাষ্ট্রীয়
হস্তক্ষেপের বিরোধী ছিলেন না। তাঁর স্বাধীনতার ধারণা নৈতিকতাপ্রসূত। কিন্তু সেটা মানুষের
স্বাধীনতার স্বার্থেই রাষ্ট্রীয় হস্তক্ষেপের আবশ্যকতাকে অনুভব করে। স্বাধীনতার সঙ্গে নৈতিক
কল্যাণবোধের সম্পর্ক নেই - উপযোগবাদীদের এই ধারণাকে গ্রীন সমর্থন করেন নি। যা ইচ্ছা,
যেমনটা ইচ্ছা করার স্বাধীনতা হলো স্বেচ্ছাচার। সেটা মানুষের স্বাধীনতা নয়। সকল রকম
রাষ্ট্রীয় হস্তক্ষেপ বিবর্জিত অবস্থায় স্বাধীনতা নেই। এমন অবস্থায় স্বাধীনতার অনুসন্ধান
স্বাধীনতার ‘নেগেটিভ’ বা ‘নেতিবাচক’ ধারণার স্মারক। বস্তুত: তা স্বাধীনতাহীনতা। গ্রীনের
মতে, স্বাধীনতা একটা ‘ইতিবাচক’ প্রত্যয় ও প্রপঞ্চ। এর সঠিক উপস্থিতি রাষ্ট্রীয় যৌক্তিক
হস্তক্ষেপের মাধ্যমেই উপলব্ধ হতে পারে। ডাবি- উ. এস. ম্যাকগভার্ন তাঁর “ঋৎড়স খঁঃযবৎ
ঃড় ঐরঃষবৎ” গ্রন্থে যথার্থই বলেন, গ্রীনের দর্শনে মানবিক স্বাধীনতা যা খুশী করার সুযোগ নয়।
প্রকৃত স্বাধীনতা মানুষের সৎ ইচ্ছা থেকে উত্থাপিত লক্ষ্যগুলো হাসিলের পথে দেখা দেয়া বাধাবিপত্তি থেকে মুক্তির স্মারক। স্বাধীনতা হচ্ছে মানুষের যাবতীয় ক্ষমতার অবাধ প্রকাশ যার
মাধ্যমে সে বা তারা মানবিক কল্যাণ নিশ্চিত করবে। গ্রীনের মতে, লন্ডন শহরের বস্তি এলাকার
অশিক্ষিত ও পানাসক্ত লোকদের শিক্ষা গ্রহণ না করার কিংবা যেমন ইচ্ছা মদ-জুয়া, তাসপাশা, ঘোড়দৌড় নিয়ে ব্যস্ত থাকার স্বাধীনতা প্রকৃত স্বাধীনতা হতে পারে না। একজন এথেনীয়
ক্রীতদাস, যে কেবল প্রভুর লালসা নিবৃত্তির কাজে ব্যবহৃত, কিংবা বস্তির একজন অশিক্ষিত
মাতালকে সেখানে রেখে দেয়াতে রাষ্ট্রের যে নিস্পৃহতার বহি:প্রকাশ ঘটে, তাকে স্বাধীনতার
অভিব্যক্তি বরা যায় না।
গ্রীনের মতে, নৈতিক জীবনের সঙ্গে সম্পর্কহীন কোনো স্বাধীনতা নেই। সেটাই প্রকৃত স্বাধীনতা
যা নৈতিক জীবন গড়ে তোলার সহায়ক। এমন স্বাধীনাতর পথে বাঁধা অনেক এবং মানুষের
একক বিক্ষিপ্ত প্রয়াসে তা দূরীকরণ অসম্ভব। রাষ্ট্রীয় হস্তক্ষেপ এজন্যেই জরুরি। ব্যক্তির
ইতিবাচক নৈতিক জীবন কেমন হবে, তা সে নির্ধারণ করবে। রাষ্ট্র সেক্ষেত্রে পস্তক্ষেপ করবে
না। আবার ঐ নৈতিক জীবন লাভের ক্ষেত্রে বাধাসমূহ অপসারণে রাষ্ট্র হস্তক্ষেপ করবে,
প্রয়োজনীয় ভ‚মিকা রাখবে। এমন হস্তক্ষেপ স্বাধীনতা বিরুদ্ধ নয়। উপযোগবাদীগণের সঙ্গে
গ্রীনের অক্সফোর্ড আদর্শবাদ এখানেই স্বতন্ত্র।
গ্রীনের ব্যক্তি স্বাধীনতার চিন্তা হতে এটি স্পষ্ট যে, রাষ্ট্র সে ক্ষেত্রে কোনো নেসেসারী ইভিল বা
প্রয়োজনীয় আপদ নয়। রাষ্ট্র উল্টো নেসেসারী গুড বা প্রয়োজনীয় কল্যাণ। রাষ্ট্রের মাধ্যমেই
মানুষ তার নৈতিক পূর্ণতার আদর্শ হাসিল করতে পারে। এ লক্ষ্যে রাষ্ট্র আবশ্যকীয় ও
কল্যাণকর। তা ছাড়া নৈতিকতা ও কল্যাণের বিবেচনা ছাড়াও আইনের দৃষ্টিতেও রাষ্ট্রের অস্তিত্ব
অনিবার্য। কেননা সমাজে একমাত্র রাষ্ট্রই বৈধ আইন প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করার প্রতিষ্ঠান এবং
এই আইনই অধিকারসমূহের নিশ্চয়তা বিধানকারী। গ্রীন মনে করেন নৈতিক চেতনাবোধই
মানুষকে জানিয়ে দেয় তার কি করা উচিৎ আর কি করা উচিৎ নয়। ওদিকে অশিক্ষা, অজ্ঞতা,
ঔদাসীন্য, নৈতিকবোধের অভাব মানুষের স্বাধীনতার প্রতিবন্ধক। রাষ্ট্র প্রতিবন্ধকতার কবল
থেকে মানুষের জীবন ও স্বাধীনতাকে নির্বিঘœ করে। এ কাজে বলপ্রয়োগের আবশ্যকতা রয়েছে
এবং বল প্রয়োগের বৈধ ও স্বীকৃত মাধ্যম হচ্ছে রাষ্ট্র।
রাষ্ট্র মানুষের অধিকার ও যাবতীয় আইনের একমাত্র উৎস। এটি বল প্রয়োগের মাধ্যম। তাই
এটি সর্বাধিক শক্তিশালী সংস্থা। গ্রীন এ মত পোষণ করেন। আর্নেস্ট বার্কার তাঁর ‘‘পলিটিক্যাল
থট ইন ইংল্যান্ড’’ গ্রন্থে ঠিকই বলেছেন, রাষ্ট্রের আবির্ভাবের পূর্বে পারিবারিক পর্যায়ে কিছু
অধিকার থাকলেও বস্তুত যাবতীয় অধিকার তখন কেবল আদর্শগত পর্যায়ে কল্পনা করা যায়
তবে বাস্তবে তা অর্থহীন। আবার ঐ অধিকারগুলোই যখন রাষ্ট্র কর্তৃক স্বীকৃত তখন তা আদর্শ
থেকে বাস্তবে অনুভ‚ত হয়, মানুষের প্রকৃত অধিকারে রূপ পায়।
কান্টের দ্বারা গ্রীন প্রভাবিত হলেও রাষ্ট্রের গৌরব বাড়াতে গিয়ে তিনি কান্টের মতো সমাজের
অন্যান্য গোষ্ঠী, সংঘ, করপোরেশনের স্বতন্ত্র অস্তিত্বকে অস্বীকার করেন নি। গ্রীনের মতে,
রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে কোনো অধিকার না থাকলেও রাষ্ট্রের বাইরে মানুষের অধিকার রয়েছে। রাষ্ট্রের
মাধ্যমে, এর স্বীকৃতিতেই মানুষ অন্যান্য সংঘের অধিকার ভোগ করে।
রাষ্ট্র ও আইনের প্রতি মানুষের আনুগত্যের কারণ
রাষ্ট্র ও আইনের প্রতি মানুষের আনুগত্যের কারণ কি ? এর উত্তর নানারূপ। যেমন, শক্তির
ভয়ে মানুষ রাষ্ট্রকে মেনে নেয়। কারো মতে, আনুগত্য প্রকাশের পেছনে সচেতন মনের ভ‚মিকা
নেই, কেবল অভ্যাসই ক্রিয়াশীল। উপযোগীবাদীদের ধারণা, এমন মান্যতায় মানুষের আনন্দ
বর্ধিত হয়, সে জন্যে মানুষ রাষ্ট্র ও আইনকে মানে। গ্রীন রাষ্ট্র ও আইন মানার প্রশ্নে স্পিনোজা,
হব্স, লক, রুশোর অভিমতকে ভিত্তিহীন বলে মনে করেন। তাঁর মতে, রাষ্ট্র মানুষের নৈতিক
জীবন সৃজনে যতটা অবদান রাখতে পারে বা রাখে, তার ভিত্তিতেই মানুষ রাষ্ট্র ও আইনকে
মান্য করে। গ্রীনের মতে, মানুষের ইচ্ছা ও প্রজ্ঞার সামর্থ্যসমূহ যাতে সে অবাধে ব্যবহার
করতে পারে বহি:শক্তি দ্বারা প্রভাবিত না হয়ে নিজের সম্ভাব্য সন্তোষের মধ্যে ও নৈতিকতার
ভিতর থেকে, সেটা সম্ভব করে তোলাই পৌর প্রতিষ্ঠানসমূহের কাজ। রাষ্ট্র এ দায়িত্ব আরো
বড় পরিসরে পালন করে। মানুষ প্রজ্ঞা ব্যবহার করে ‘ংবষভ ঢ়বৎভবপঃরড়হ’ বা আত্মপূর্ণতা
লাভ করতে পারে। সামাজিক সংগঠনসমূহ এবং রাষ্ট্র তাকে এ কাজে সহায়তা দেয়। কিন্তু
মানুষের নৈতিকবোধ, প্রজ্ঞা ও ইচ্ছাই এ ক্ষেত্রে মূল্যবান। তাই রাষ্ট্রসহ যাবতীয় সামাজিক
সংগঠনের প্রকৃত ভিত্তি হলো নাগরিকগণের নিজস্ব ইচ্ছা, বাইরের কোনো বলপ্রয়োগ নয়। গ্রীন
বলেন, ‘’ডরষষ, হড়ঃ ভড়ৎপব, রং ঃযব নধংরং ড়ভ ঃযব ংঃধঃব.” গ্রীনের মতে, নৈতিক জীবনের সাথে
রাষ্ট্রের সম্পর্ক একান্তই সহায়কমূলক, সৃষ্টিমূলক নয় (ধীঁরষরধৎু, হড়ঃ পৎবধঃরাব)। অর্থাৎ
মানুষের স্বাধীনতা ও নৈতিক জীবন অর্জনের প্রশ্নে, কল্যাণ হাসিলের ব্যাপারে রাষ্ট্র জরুরি এবং
তা প্রতিবন্ধকতা অপসারণকারী। রাষ্ট্রীয় সহযোগিতা ও হস্তক্ষেপ এ জন্যে দরকার, কিন্তু তা
মানুষের ইচ্ছার ভিত্তিতেই।
সরকারের শ্রেণীবিভাগ
গ্রীন মনে করেন, একটি রাষ্ট্র যতক্ষণ তার উপরোক্ত যথার্থ ভ‚মিকা পালন করে, ততক্ষণ সে
মানুষের নিরঙ্কুশ আনুগত্য দাবি করতে পারে। কিন্তু রাষ্ট্র এ দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হলে, নিপীড়ক
হয়ে উঠলে মানুষের অধিকার আছে রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে যাবার। গ্রীন লোকায়ত সরকার এবং স্বৈরাচারী সরকার - এই দুই মূল বিভাজন
টেনেছেন সরকার প্রশ্নে।
নিয়মতন্ত্র ও রাষ্ট্রের বিরুদ্ধাচরণ
গ্রীন মনে করেন, লোকায়ত সরকার কোনো দেশে বিদ্যমান থাকলে এবং আইন প্রণয়ন ও
বাতিলকরণের সংবিধানসম্মত পদ্ধতি থাকলে, নাগরিকদের কর্তব্য নিয়মতান্ত্রিক ও
সংবিধানসম্মত পথে অবাঞ্ছিত আইন বদল ও বাতিলের চেষ্টা করা। যতক্ষণ না তা পরিবর্তিত
হয়, তা ততক্ষণ মেনে চলা। কিন্তু স্বৈরাচারী সরকারের জনস্বার্থ ও কল্যাণ বিরোধী আইন ও
জনস্বার্থ বিরোধী কাজ-কারবার না মানা, এ সবের বিরোধিতা করা এবং সে ক্ষেত্রে আইন
ল ঘন নাগরিকদের জন্য একান্ত করণীয়। গ্রীন মনে করেন, সার্বিক সামাজিক সৎ ও কল্যাণময়
জীবনের বিপরীতে না গেলে আইন মানতে হবে। কোনো নাগরিকের যা ইচ্ছা করার
স্বাধীনতাকে প্রশ্রয় দেয়া যায় না। রাষ্ট্রের কোনো আইন সমাজ কল্যাণের বিপরীতে গেলে সে
সম্পর্কে নাগরিক সাধারণকে সচেতন হতে হবে এবং তা তাদের উপলব্ধিতে থাকতে হবে।
তবেই কেবল রাষ্ট্রীয় আইনের বিরুদ্ধাচরণ করা যাবে। মূল্যায়ন
গ্রীন হেগেলের মতো সমাজ ও রাষ্ট্রকে একীভ‚ত (রফবহঃরভু) করে দেখেন নি। তিনি সমাজকে
রাষ্ট্র অপেক্ষা বড় মনে করেছেন ও উচুঁতে স্থান দিয়েছেন। গ্রীন হেগেলের মতো সর্বাত্মকবাদী
ছিলেন না, যদিও আদর্শবাদী ছিলেন। রাষ্ট্র, আইন, অধিকার, নৈতিকতা, মানুষের স্বাধীনতা
ইত্যাদি প্রশ্নে গ্রীন বেন্থামের উপযোগবাদ এবং হেগেলের ভাববাদ অপেক্ষা অনেক বেশী
বাস্তবমুখীনতার পরিচয় দিয়েছেন। তিনি কান্টের চেয়েও এগিয়ে রয়েছেন। সামাজিক
কল্যাণবোধ, ব্যক্তির স্বাধীনতা ও অধিকার, রাষ্ট্রের দায়, আইনের মান্যতা, নাগরিকদের
দ্রোহের চ‚ড়ান্ত সুযোগ প্রশ্নে গ্রীন রাষ্ট্রবিজ্ঞানের জগতকে পূর্বাপেক্ষা অনেক বেশি বাস্তবানুগ ও
পরিশীলিত করেছেন, একথা নিঃসন্দেহে বলা যায়।
সারকথা
গ্রীনের দর্শনে বলপ্রয়োগ নয়, বরং নাগরিকদের ইচ্ছাই রাষ্ট্রের ভিত্তি। গ্রীন হেগেলের
মতো সমাজ ও রাষ্ট্রকে একীভ‚ত করে দেখেননি। সমাজকে রাষ্ট্র অপেক্ষা বড় ও উঁচুতে
স্থান দিয়েছেন। তিনি আদর্শবাদী হলেও সর্বাতœকবাদী ছিলেন না। রাষ্ট্র, আইন,
অধিকার, নৈতিকতা, মানুষের স্বাধীনতা ইত্যাদি প্রশ্নে তিনি বেন্থামের উপযোগবাদ,
হেগেলের ভাববাদ এবং কান্টের দর্শন অপেক্ষাও অগ্রসর। রাষ্ট্র ও আইনের প্রতি মানুষের
আনুগত্যের কারণ সম্পর্কে গ্রীনের ব্যাখ্যা অত্যন্ত প্রভাব বিস্তারকারী।
সঠিক উত্তরের পাশে টিক () চিহ্ন দিন।
১। টমাস হিল গ্রীনের সারাটি জীবন অতিবাহিত হয় -
ক) ক্যামব্রিজে; খ) অক্সফোর্ডে ;
গ) লন্ডনে; ঘ) হিল্টনে।
২। ডরষষ, হড়ঃ ভড়ৎপব রং ঃযব নধংরং ড়ভ ঃযব ংঃধঃব - এ উক্তিটি কে করেন?
ক) টমাস হিল গ্রীন; খ) ম্যাকাইভার;
গ) ম্যাক্সওয়েভার; ঘ) মঁন্টেস্কু।
সংক্ষিপ্ত উত্তরমূলক প্রশ্ন
১। ব্যক্তি স্বাধীনতার অর্থ কী?
২। রাষ্টীয় স্বাধীনতা এবং ব্যক্তি স্বাধীনতা কী?
৩। গ্রীনের মতে কেন মানুষ আইনের প্রতি অনুগত হয়?
৪। ‘শক্তি নয় ইচ্ছাই হলো রাষ্ট্রের ভিত্তি’ - এ কথার ব্যাখ্যা কী?
রচনামূলক প্রশ্ন
১। টি এইচ গ্রীনের রাষ্ট্র দর্শনের বর্ণনা দিন।
সঠিক উত্তর
১। খ, ২। ক

FOR MORE CLICK HERE
এইচএসসি বাংলা নোট ১ম পত্র ও ২য় পত্র
ENGLISH 1ST & SECOND PAPER
এইচএসসি আইসিটি নোট
এইচএসসি অর্থনীতি নোট ১ম পত্র ও ২য় পত্র
এইচএসসি পৌরনীতি ও সুশাসন ১ম পত্র
এইচএসসি পৌরনীতি নোট ২য় পত্র
এইচএসসি সমাজকর্ম নোট ১ম পত্র
এইচএসসি সমাজকর্ম নোট ২য় পত্র
এইচএসসি সমাজবিজ্ঞান নোট ১ম পত্র ও ২য় পত্র
এইচএসসি ইতিহাস নোট ১ম পত্র
এইচএসসি ইতিহাস নোট ২য় পত্র
এইচএসসি ইসলামের ইতি. ও সংস্কৃতি নোট ১ম পত্র
এইচএসসি ইসলামের ইতি. ও সংস্কৃতি নোট ২য় পত্র
এইচএসসি যুক্তিবিদ্যা ১ম পত্র ও ২য় পত্র
এইচএসসি ভূগোল ও পরিবেশ নোট ১ম পত্র ও ২য় পত্র
এইচএসসি ইসলামিক স্টাডিজ ১ম ও ২য় পত্র

Copyright © Quality Can Do Soft.
Designed and developed by Sohel Rana, Assistant Professor, Kumudini Government College, Tangail. Email: [email protected]