একজন চীন কমিউনিষ্ট নেতা হিসেবে মাও জে ডং এর উত্থান ও বিকাশ পর্যালোচনা করুন।

চীনা কমিউনিষ্ট আন্দোলনের অন্যতম নেতা মাও সেতুং (বর্তমান সংস্করণ মাও জে ডং) ছিলেন
গণপ্রজাতন্ত্রী চীনের প্রধান স্থপতি। তিনি হুনান প্রদেশে শাওশান গ্রামে ১৮৯৩ সালের ২৬ ডিসেম্বর
এক কৃষক পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। নিজ প্রতিভা আর পরিশ্রমের গুণে বিকশিত হন তিনি।
যৌবনের শুরুতে তিনি মাঞ্চু সরকারের বিরুদ্ধে বিদ্রোহে (১৯১১-১২) ন্যাশনাষ্টি আর্মির পক্ষে যুদ্ধ
করেন। ১৯১৮ সালে তিনি হুনানের চাংশা শিক্ষক প্রশিক্ষণ একাডেমি থেকে ¯œাতক ডিগ্রী অর্জনের
পর বেইজিং বিশ্ববিদ্যালয়ে সহকারী গ্রন্থাগরিকের দায়িত্বে নিয়োজিত হন। সে সময় তিনি নয়া
পাশ্চাত্য চিন্তাধারা তথা মার্কসবাদী দর্শনের সংস্পশে আসেন।
১৯২০ সালে মাও জে ডং চাংশা ফিরে আসেন এবং একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের
পদে যোগদান করেন। তাঁর প্রস্তাবিত গণশিক্ষা কর্মসূচী সরকার কর্তৃক প্রত্যাখ্যাত হলে তিনি
একজন আত্মনিবেদিত মার্কসবাদী হয়ে উঠেন এবং সাংহাই কমিউনিষ্ট পার্টির প্রথম কংগ্রেসে
যোগদান পূর্বক চীনা কমিউনিষ্ট পার্টির গোড়াপত্তনের সহযোগিতার হাত সম্প্রসারিত করেন।
১৯২৩ সালে স্থানীয় যুদ্ধবাজদের বিরুদ্ধে কমিউনিষ্ট পার্টি চীনের জাতীয়তাবাদী নেতা সান ইয়াৎ
সেনের কুয়োমিনতাং (যার অর্থ জাতীয় জনদল)-এর সাথে একাত্ম হলে মাও জে ডং হুনান
কৃষকদের সংগঠিত করার কাজে পুরোমাত্রায় রাজনৈতিক কর্মী বনে যান। রুশ মেনশেভিক ধারা
মতো তিনি অনুধাবন করেন যে, চীনের মতো আধা সামন্ততান্তিক ও আধা উপনিবেশিক দেশে
দরিদ্র চাষীরাই বিপ্লব সংগঠনে প্রধান শক্তি হিসেবে কাজ করবে। সর্বহারা শ্রেণীর বিপ্লবী তত্তে¡র
সাথে ‘আধা উপনিবেশিক ও আধা-সামন্তবাদী’ সমাজ ব্যবস্থায় ’জনগণতান্তিক’ বিপ্লবের তত্ত¡ দিয়ে
তিনি মার্কসবাদ লেনিনবাদদের সঙ্গে নতুন মাত্রায় সংযোজন করেন।
তাঁর নিজ প্রদেশ হুনানে দরিদ্র চাষীদের জেগে উঠতে দেখে ১৯২৭ সালের শুরুতে ‘রিপোর্ট অব
দ্য পেজেন্ট মুভমেন্ট ইন হুনান’ বিষয়ক প্রবন্ধ রচনা করেন। এতে তিনি যুক্ত প্রদর্শন করেন যে,
কৃষকরা হল চীনের কমিউনিষ্ট আন্দোলনের এক অপরিমিত শক্তি এবং এশক্তিকে কমিউনিস্টদের
সমর্থন জানানো প্রয়োজন। তাঁর এই পরামর্শের জন্য মস্কোভিত্তিক কুমিনটার্ন (কমিউনিস্ট
ইন্টারন্যাশনাল) মাও-এর বিরুদ্ধে ‘বামপন্থা’র অভিযোগ আনে এবং চীনের ক্ষমতাসীন চীয়াং
কাইশেক স্বয়ং সোভিয়েত প্রভাবকে পরিহার কররে চীনা কমিউনিষ্টদের সাথে তাঁর মিত্রতা ভেঙ্গে
পড়ে। এমতাবস্থায়, ১৯৩১ সালে মাও জে ডং নয়া চায়না-সোভিয়েত রিপাবলিক আন্দোলনের
চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন এবং কমিউনিষ্ট কেন্দ্রীয় কমিটির শহর ভিত্তিক আন্দোলন গড়ে তোলার
সাথে দ্বি-মত পোষণ করেন। কুয়োমিনতাং সরাকার একের পর এক কমিউনিষ্ট নেতৃত্বে পরিচালিত
শহুরে অভ‚্যথান দমন করতে থাকলে মাও জে ডং এর কৃষক নির্ভর আন্দোলন পরিচালনার বিষয়টি
কমিউনিস্টদের কাছে তাৎপর্যপূর্ণ হয়ে উঠে। অবশ্য, চিয়াং কাইশকে সরকার কৃষকদের ‘এটাম
হার্ভেষ্ট’ অভ্যুত্থানকে শক্তি প্রয়োগের মাধ্যমে প্রতিরোধ করলে মাও জে ডং ঝিয়াংজি পাহাড়ে আশ্রয়
নেন এবং যুদ্ধবাজ চুতেহ এর সহযোগিতায় বিপ্লবী গেরিলা লালফৌজ গড়ে তোলার মাধ্যমে
কৃষকদের মধ্যে কমিউনিষ্ট প্রভাব অক্ষুন্ন রাখেন। ফলে চীনের জটিল ক্ষমতা কাঠামোর অভ্যন্তরে
কৃষক মিলিশিয়াদের প্রভাবকে উপেক্ষা করে কমিউষ্টিদের কাজ করা অনেকটা সহজ হয়ে আসে।
পক্ষান্তরে, ১৯৩০-৩৪ সালে চীয়াং কাইশেকের সেনাবাহিনী দফায় দফায় চীনের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে
কিয়াংসি প্রদেশে অভিযান চালিয়ে কমিউনিষ্ট ঘাটিগুলোতে বেষ্টনী তৈরী করে তাদের প্রভাব
বিস্তারকারী এলাকা থেকে বিতাড়িত করতে থাকে। এমতাবস্থায় চীনা কমিউনিষ্ট পার্টি দলের
অভ্যন্তরে বাম হঠকারীদের প্রভাবে মাও-এর গেরিলা যুদ্ধের কৌশল পরিহারপূর্বক কমিউনিষ্টদের
সম্মুখ সমরে অবতীর্ণ হওয়ার নির্দেশ প্রদান করে। মাও-কে দলের নেতৃত্বের পদ থেকে
সাময়িকভাবে অপসারিত হতে হয় একই সময়ে। যুদ্ধে উন্নত অস্ত্রের অধিকারী চীয়াং কাইশেক
বাহিনীর হাতে কমিউনিষ্ট বাহিনীর চরম পরাজয় ঘটে এবং হাজার হাজর লালফৌজ মৃতুবরণ
করে। কুয়োমিনতাং বাহিনীর আক্রমণ প্রতিহত করতে ব্যর্থ হয়ে মাও জে ডং ১৯৩৪ সালের
অক্টোবর মাসে উত্তর-পশ্চিমের সেনসি প্রদেশের দিকে লালফৌজদের নিয়ে কৌশলগত
পশ্চাদপসরণ শুরু করেন। ইতিহাসে এই অভিযাত্রা চীনা ‘লং মার্চ’ নামে খ্যাত। পথিমধ্যে সরকারী
বাহিনীর সাথে বহু সংঘর্ষ মোকাবেলা করে প্রায় ১২,৫০০ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করে চীনা
লাল ফৌজদের সেনশি পৌঁছাতে এক বছর সময় লেগে যায়। অবশ্য হুনান, হুপে প্রভৃতি এলাকা
থেকে লালফৌজদের এখানে পৌঁছাতে আরো এক বছর অতিরিক্ত সময় লেগে যায়। অবশ্য হুনান,
হুপে প্রভৃতি এলাকাতে থেকে লালফৌজদের এখানে পৌঁছাতে আরো এক বছর অতিরিক্ত সময়ের
প্রয়োজন হয়। মাও পরিচালিত এই লং মার্চ লালফৌজদের কেবল অকাল ধ্বংসের হাত থেকেই
রক্ষা করেনি, বরং চলার পথে বিজয়ের পর বিজয় অর্জনের মাধ্যমে কুয়োমিনতাং বাহিনীর মনোবল
বহুলাংশে ভেঙ্গে দিতে সমর্থ হয়। লং মার্চ ব্যাপক এলাকার জনগণকে সমাজতান্ত্রিক আদর্শে উদ্বুদ্ধ
করে এবং মুক্তাঞ্চল সৃষ্টির মাধ্যমে জনগণ ও কমিউনিষ্ট ক্যাডারদের মধ্যে সেতুবন্ধন তৈরী করে।
এই সুদীর্ঘ পদযাত্রা প্রকৃত কমিউনিষ্ট ক্যাডারদের মধ্যে সেতুবন্ধন তৈরী এবং প্রকৃত কমিউনিষ্টদের
জন্যে এক অগ্নিপরীক্ষা হিসেবে কাজ করে। সর্বোপরি, লং মার্চের মধ্য দিয়ে মাও জে ডং কমিউনিষ্ট
পার্টির চেয়ারম্যান ও অবিসংবাদিত নেতা হিসেবে আবিভর্‚ত হন। মাও গেরিলা যুদ্ধ ও রণকৌশল
উদ্ভাবনের মাধ্যমে মার্কসীয় বিপ্লব তত্তে¡র ক্ষেত্রে এক মৌরিক অবদান রেখে যান। ১৯৪৫ সালে
মাও জনগণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব করেন। এ পর্বে বিপ্লবী কমিউনিষ্টরা চীনের অনেক অঞ্চলে
নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জাপানীদের আতœসমর্পণের পর ১৯৪৬ সালের জুলাই মাসে
চীয়াং কাউশেক বাহিনী এবং কমিউনিষ্টদের মধ্যে গৃহযুদ্ধ শুরু হয়। এই গৃহযুদ্ধে ১৯৪৯ সালে
মাও-এর নেতৃত্বে চীনের মূল ভ‚খন্ডে কমিউনিষ্ট শাসন প্রতিষ্ঠিত হয় এবং চীয়াং কাইশেকের
কুয়োমিনটাং সরকার তাইওয়ানে আশ্রয় গ্রহণে বাধ্য হয়। একই বছরের ১ অক্টোবর মাও জে ডং
চীনকে গণপ্রজাতন্ত্রী চীন ঘোষণা করে নিজে সে সরকারের চেয়াম্যান পদ গ্রহণ করেন।
ক্ষমতা গ্রহণের পর মাও জে ডং জাতীয় প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সুসংহত এবং জনগণের স্বার্থ রক্ষার
উদ্দেশ্যে জনগণের রাষ্ট্রযন্ত্রকে সুদৃঢ় করার পরিকল্পনা নেন। তিনি প্রথমত চীনে সোভিয়েত
ইউনিয়ন ধাঁচের সমাজতান্ত্রিক সমাজ গড়ার লক্ষ্যে ভুমি সংস্কার, ভারী শিল্প কারখানা স্থাপন এবং
আমলাতান্ত্রিক কেন্দ্রীকরণের প্রতি মনোযোগী হন। কিন্তু সানঝি অবস্থানকালে কৃষকদের সাথে
সংশ্রবের ভিতর দিয়ে চীনের স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্যের প্রতি তিনি মনোযোগী হয়ে উঠেন। ফলশ্রæতিতে
সোভিয়েত মডেলের বিকল্প হিসেবে চীনা সাম্যবাদ গড়ে তোলায় তিনি তৎপর হন। অর্থনৈতিক
ক্ষেত্রে তিনি আধুনিক শিল্পায়িত সমবায় পদ্ধতির চাইতে স্থানীয় উদ্যোগে শ্রম নির্ভর স্বনির্ভর
কর্মসূচীর প্রতি গুরুত্বরোপ করেন। তাঁর মতে, অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে সমাজতান্ত্রিক বিপ্লবই যথেষ্ট
নয়, রাজনীতি ও আদর্শের ক্ষেত্রেও অনুরূপ পূর্নাঙ্গ সমাজতান্ত্রিক বিপ্লব সম্পাদন করা প্রয়োজন।
আর সে লক্ষ্যে পরিচালিত সংগ্রাম অত্যন্ত দীর্ঘকাল ধরেই অব্যাহত থাকবে বলে তাঁর ধারণা।
রাজনৈতিকভাবে তিনি যে জনগণতান্ত্রিক বিপ্লবের ধারণা বিকশিত করেন তাতে বুদ্ধিজীবী, কৃষক,
গেরিলা নেতা সবাই আর্থ-সামাজিক কৌশলের সাথে একাত্ম হয়ে সমাজতন্ত্রে পৌঁছানোর লক্ষ্যে
দ্রæততম পথ উদ্ভাবনে সক্ষম হবে বলে তাঁর ধারণা। ১৯৫৬ সালে সোভিয়েত ইউনিয়নে স্ট্যালিনের
প্রতি অবজ্ঞা প্রদর্শনের নীতি অনুসৃত হলে এর প্রতিক্রিয়া হিসেবে মাও জে ডং চীনে ‘শত ফুল
ফুটতে দাও’ নীতির আওতায় বুদ্ধিজীবীদের কাছ থেকে আমলাতন্ত্র ও প্রশাসনের সমালোচনা
আহবান করেন। কিন্তু চীনা বুদ্ধিজীবীরা এ সুযোগে আমলাতন্ত্রের সমালোচনা আহবান করেন।
কিন্তু চীনা বুদ্ধিজীবীদের কাছ থেকে আমলাতন্ত্র ও প্রশাসনের যৌক্তিকতা এমনকি মাও-এর
ব্যক্তিগত সমালোচনায় মুখর হয়ে উঠে। এর পরিপ্রেক্ষিতে ১৯৫৮ সালে তিনি ‘বৃহৎ উল্লম্ফন
কর্মসূচী’ নীতিমালার মাধ্যমে আমলাতান্ত্রিক রাষ্ট্রকে স্থানীয় স্বায়ত্বশাসিত কমিউনের মাধ্যমে
প্রতিস্থাপিত করার উদ্যোগ গ্রহণ করেন। কমিউনের সকল সদস্যদের অংশগ্রহণের মাধ্যমে এবং
তাদের ইচ্ছার ভিত্তিতে স্থানীয় উৎপাদন, বণ্টন উন্নয়ন, প্রশাসন প্রভৃতি পরিচালনার ব্যবস্থা গৃহীত
হয়। কিন্তু প্রশাসনিক স্থবিরতার কারণে মাও - এর ‘বৃহৎ এবং জনগণের মধ্যে মতভেদ দেখা দেয়।
অনেকে মাও ও তাঁর অনুসারীদের সমালোচনামূখর হয়ে উঠেন । পক্ষান্তরে, মধ্যপন্থীরা এই
ব্যর্থতার জন্য দল ও সরকারের অভ্যন্তরে লুকিয়ে থাকা ধনতন্ত্রী ও বিচ্যুতদের দায়ী করেন। অবশ্য,
১৯৫৭ সালে জনগণের মধ্যকার দ্ব›েদ্বর সঠিক পরিচর্যা বিষয়ক বক্তৃতায় মাও সমাজতান্ত্রিক সমাজের
অভ্যন্তরে এই ধরনের সংঘাতকে অনিবার্য ও ইতিবাচক হিসেবে মতামত প্রদান করেন।
১৯৫৯ সালে মাও জে ডং রাষ্ট্র প্রধান হিসেবে অবসর গ্রহণ করেন এবং সরকার ও কমিউষ্টি পার্টির
নিয়ন্ত্রণ কার্যত: নিজের হাতেই রেখে দেন। সমাজতান্ত্রিক সমাজ গঠনের দ্ব›দ্ব ও স্ববিরোধিতার
প্রেক্ষাপটে মাও জে ডং ১৯৬৫ সালে লিন পিয়াও-এর নেতৃত্ত¡াধীন পিপলস লিবারেশন আর্মির
সহায়তায় পাটি, সরকার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও শিল্প প্রতিষ্ঠানসহ সকল পর্যায় থেকে বিরুদ্ধবাদীদের
উচ্ছেদ অভিযান শুরু করেন। এই অভিযানই চীনের ইতিহাসে ‘সাংস্কৃতিক বিপ্লব’ নামে খ্যাত।
১৯৬৬ সালের মাঝে এই বিপ্লব সমগ্র চীনে ছড়িয়ে পড়ে। মাও জে ডং এর চিন্তাধারা সম্বলিত ছোট্ট
‘লাল নোট বই’ এ সময় চীনসহ তৃতীয় বিশ্বের নানা দেশে গসপেলের মর্যাদা পায়। মাওয়ের
চিন্তাধারা আলোকে তাঁর সমর্থক বুর্জোয়া মতবাদপুষ্ট ও বিপ্লবী চিন্তাধারার পরিপন্থী হিসেবে কথিত
অসংখ্য নেতা-কর্মী ও কর্মচারী এ সময় কর্মচ্যুত, এমনকি নিহত হয়। ক্ষেত্রবিশেষ রেড গার্ডরা
ব্যক্তিস্বার্থে ও ব্যক্তিগত আক্রোশ মেটানোর হাতিয়ার হিসেবে সাংস্কৃতিক বিপ্লবকে ব্যবহার করে।
১৯৬৮ সালে চীনের রাষ্ট্র প্রধান, লং মার্চের সময়কার অন্যতম তাত্তি¡ক নেতা, ‘হাউ টু বি এ গুড
কমিউনিষ্ট’ গ্রন্থের প্রণেতা লিও শাও চি-কেও একই অভিযোগে রাষ্ট্র ও দলের সকল পদ থেকে
অপসারণ করা হয় । এই সময়েই বহিষ্কৃত হন দেং জিয়াং পিং-সহ আরো অনেক নেতৃবৃন্দ।
১৯৬৯ সালের সাংস্কৃতিক বিপ্লবের প্রধান নেতা লিন পিয়াওকে মাও-এর উত্তরাধিকারী মনোনীত
করা হয়। ১৯৭০ সালে মাও-কে সার্বোচ্চ কমান্ডারের পদে বসানো হলে তিনি তার উগ্রপন্থী ও
উদারপন্থী অনুসারীদের মধ্যে ভারসাম্য আনার চেষ্টা করেন। কিন্তু তাদের সম্পর্ক মনকষাকষির
পর্যায়েই থেকে যায়। ১৯৭১ সালের মধ্যে লিন পিয়াও ক্ষমতা থেকে অপসারিত হন এবং সোভিয়েত
ইউনিয়নে পালানোর পথে বিমান দুর্ঘটনায় নিহত হন। ৯ সেপ্টেম্বর ১৯৭৬ সালে মাও বেইজিং -
এর মৃত্যুবরণ করেন। মাওয়ের মুত্যুর পর ক্ষমতা দখলকারী দেং জিয়াও পিং পন্থীরা সাংস্কৃতিক
বিপ্লবের তীব্র সমালোচনা করেন। নতুন সরকার লিও শাও চিসহ সাংস্কৃতিক বিপ্লবের ফরে নিগৃহীত
সবাইকে সসম্মানে পুনর্বাসন এবং সাংস্কৃতিক বিপ্লবের মন্ত্রনাদাতা চার নেতাকে ‘চার কুচক্রী’ হিসেবে শাস্তি প্রদান করে।
সারকথা
চীনা কমিউনিষ্ট নেতা মাও জে ডং গণপ্রজাতন্ত্রী চীনের স্থপতি। কার্ল মার্কস ও লেনিনের
পাশাপাশি তাঁকে মার্কসবাদী দর্শনের অন্যতম মহান তাত্তি¡ক হিসেবে গণ্য করা হয়।
এশিয়ার পরিস্থিতিতে কৃষকদের বিপ্লবী শক্তি আবিষ্কার ও গেরিলা যুদ্ধের কলা-কৌশল
উদ্ভাবনের মাধ্যমে মাও জে ডং মার্কসবাদ-লেনিনবাদী বিপ্লবী তত্ত¡কে বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে
সর্বাধিক সাফল্যের স্বাক্ষর রাখেন। দীর্ঘ ২৭ বছর গণপ্রজাতন্ত্রী চীন শাসনের মাধ্য দিয়ে
তিনি বিংশ শতাব্দীর পৃথিবীতে অন্যতম নেতার আসনে অধিষ্ঠিত হন।
সঠিক উত্তরের পার্শ্বে() টিক চিহ্ন দিন।
১। মাও জে ডং কখন মার্কসবাদী চিন্তাধারার সংস্পর্শে আসেন?
ক) চাংশা শিক্ষক প্রশিক্ষণ একাডেমিতে পড়াশুনাকালে;
খ) চাংশা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করার সময়;
গ) বেইজিং বিশ্ববিদ্যালয়ে সহকারী গ্রন্থাগারিকের দায়িত্ব পালনকালে;
ঘ) চীনের জাতীয়তাবাদী নেতা সান ইয়াৎ সেনের সাহচর্যে।
সংক্ষিপ্ত উত্তরমূলক প্রশ্ন
১। চীনা লং মার্চ কী?
২। ‘শত ফুল ফুটতে দাও’ এর তাৎপর্য কী?
রচনামূলক প্রশ্ন
১। একজন চীন কমিউনিষ্ট নেতা হিসেবে মাও জে ডং এর উত্থান ও বিকাশ পর্যালোচনা করুন।
সঠিক উত্তর :
১। গ

FOR MORE CLICK HERE
এইচএসসি বাংলা নোট ১ম পত্র ও ২য় পত্র
ENGLISH 1ST & SECOND PAPER
এইচএসসি আইসিটি নোট
এইচএসসি অর্থনীতি নোট ১ম পত্র ও ২য় পত্র
এইচএসসি পৌরনীতি ও সুশাসন ১ম পত্র
এইচএসসি পৌরনীতি নোট ২য় পত্র
এইচএসসি সমাজকর্ম নোট ১ম পত্র
এইচএসসি সমাজকর্ম নোট ২য় পত্র
এইচএসসি সমাজবিজ্ঞান নোট ১ম পত্র ও ২য় পত্র
এইচএসসি ইতিহাস নোট ১ম পত্র
এইচএসসি ইতিহাস নোট ২য় পত্র
এইচএসসি ইসলামের ইতি. ও সংস্কৃতি নোট ১ম পত্র
এইচএসসি ইসলামের ইতি. ও সংস্কৃতি নোট ২য় পত্র
এইচএসসি যুক্তিবিদ্যা ১ম পত্র ও ২য় পত্র
এইচএসসি ভূগোল ও পরিবেশ নোট ১ম পত্র ও ২য় পত্র
এইচএসসি ইসলামিক স্টাডিজ ১ম ও ২য় পত্র

Copyright © Quality Can Do Soft.
Designed and developed by Sohel Rana, Assistant Professor, Kumudini Government College, Tangail. Email: [email protected]