একদলীয় ব্যবস্থা
সংজ্ঞা : যখন কোন রাষ্ট্রেএকটি মাত্র দল সরকার পরিচালনা, জনমত নিয়ন্ত্রণ ও জনস্বার্থরক্ষায় একচেটিয়াভাবে কাজ করে
তখন ঐ রাষ্ট্রব্যবস্থাকে একদলীয় ব্যবস্থা বলে। সাধারণত একনায়কতান্ত্রিক ও সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্রেএকদলীয় ব্যবস্থা দেখা যায়।
এ্যালমন্ড একদলীয় ব্যবস্থাকে দু’ভাগে বিভক্ত করেছেন; ক. সাধারণ একদলীয় ব্যবস্থা ও খ. সর্বাত্মক একদলীয় ব্যবস্থা। সাধারণ
একদলীয় ব্যবস্থায় রাষ্ট্রপরিচালনায় একটি মাত্র দলের একচেটিয়া আধিপত্য থাকে। কিন্তুজনজীবনের সামাজিক ও অর্থনৈতিক
ক্ষেত্রে ঐ দলের কঠোর নিয়ন্ত্রণ থাকে না। বরং উদার ব্যবস্থা বিরাজ করে। অন্যদিকে, সর্বাত্মক একদলীয় ব্যবস্থায় নেতৃত্ব
দানকারী দল ব্যক্তি ও রাষ্ট্রীয় জীবনের সব ক্ষেত্রেই প্রভাব বিস্তার এবং নিয়ন্ত্রণ আরোপ করে। উগ্রজাতীয়তাবাদী মতাদর্শ
থেকেও এ ধরনের ব্যবস্থার উদ্ভব হতে পারে। কোন প্রকার বিরোধী মত বা সমালোচনা সহ্য করে না। বরং তা পুরোপুরি নিষিদ্ধ
করা হয়।
স্বরূপ : এ ব্যবস্থার সমর্থকগণ একদল ব্যবস্থাকে গণতন্ত্রবিরোধী বলে মানেন না। তাদের এতে একটির অধিক দল থাকলে
সেগুলো হয় শ্রেণীস্বার্থের প্রতিনিধি এবং সামাজিক বৈষম্যের বাহন। যে সমাজে শ্রেণী বৈষম্য নেই, সেখানে বেশি সংখ্যক দলের
প্রয়োজন নেই। একটি মাত্র দলই সমগ্রমানুষের কল্যাণ ও মুক্তির জন্য সচেষ্ট থাকে। তাছাড়া নির্বাচনে একই দল হতে একাধিক
ব্যক্তিও প্রতিদ্ব›িদ্বতা করতে পারে। এটাই গণতন্ত্রের উত্তম দৃষ্টান্ত। জন স্টুয়ার্টমিল -এর মতে, “একদলীয় ব্যবস্থা গণতন্ত্র
বিরোধী।” কারণ, বিরোধী দল ছাড়া গণতন্ত্রফলপ্রসূ হতে পারে না। একদলীয় ব্যবস্থায় রাষ্ট্রের অবকাঠামোগত বা ভৌত উন্নয়ন
হলেও মানুষের ব্যক্তিসত্তার যথাযথ বিকাশ ঘটতে পারে না।
প্রকৃতি ও বৈশিষ্ট্য : একদলীয় ব্যবস্থায় দলের নেতা সবকিছুর নিয়ন্ত্রক হয়ে বসেন। তাঁর চিন্তাধারা, আদর্শ ও মূল্যবোধকেই দল
তথা সমগ্র জাতিকে মেনে নিতে হয়। ব্যক্তি মানুষের মতামত নিয়েই দলের নেতৃত্বের স্তর বিন্যাস ঘটে। কে, কোন পর্যায়ে
নেতৃত্ব দেবে তাও দলীয় নেতা স্থির করেন। নেতার নামেই দল, দেশ তথা রাষ্ট্রপরিচালিত হয়। অর্থাৎ, নেতাই দল, সমাজ
ও রাষ্ট্রের বিকল্প শক্তিরূপে আবির্ভূত হন। এক ব্যক্তি যখন দল ও রাষ্ট্রের উপর তার নিরংকুশ, অবাধ ও একচেটিয়া নিয়ন্ত্রণ
প্রতিষ্ঠায় সফল হন, তখন তার মধ্যে ইগো বা অহংবোধ এবং প্রাধান্য করার প্রবণতা এত বৃদ্ধি পায় যে, তার বিপরীত কিছু
শোনার বা দেখার মানসিকতা থাকে না। ফলে ব্যক্তি স্বাধীনতা সর্বোতভাবে ক্ষুন্ন হয়। সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নে লেনিন বা
স্ট্যালিনের শাসনকালে কিংবা বর্তমান চীনের শাসন ব্যবস্থায় একদলীয় বৈশিষ্ট্য পুরাপুরি লক্ষ্য করা যায়। উগ্রজাতীয়তাবাদী
মনোভাবাপন্নজার্মানীর নাৎসী ও ইতালির ফ্যাসিস্ট দলের মাধ্যমে সর্বত্মকবাদী ব্যবস্থার উদ্ভব ঘটেছিল প্রথম মহাযুদ্ধোত্তর
ইউরোপে এবং যার সমাপ্তি ঘটে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের মাধ্যমে।
দ্বিদলীয় ব্যবস্থা : যখন কোন দেশের সরকার পরিচালনায় মূলত দুটি দলই ভূমিকা পালন করে, পর্যায়ক্রমে একটি দল সরকার
পরিচালনা করে এবং অন্যটি সরকারের বিরোধিতার কাজ সম্পাদন করে তখন তাকে দ্বিদলীয় ব্যবস্থা বলে। গ্রেট ব্রিটেন ও
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রেদ্বিদলীয় ব্যবস্থা রয়েছে। দ্বিদলীয় ব্যবস্থায় দেশে দুটির অধিক দল থাকতে পারে। কারণ এ ব্যবস্থা গণতন্ত্রসম্মত।
কিন্তুক্ষমতার পট পরিবর্তনে দু’টি দলই পর্যায়ক্রমে প্রাধান্য বিস্তার করে। এ প্রসঙ্গে গেটেল বলেন, যেখানে পরস্পরবিরোধী
সুসংহত রাজনৈতিক দল আছে, সেখানে ভাল রাজনৈতিক পরিবেশ বিরাজমান থাকবে বলে আশা করা যায়। লাস্কি, বার্কার
প্রমুখ রাষ্ট্রবিজ্ঞানী এ মতের সমর্থক। কিন্তুম্যাকাইভার এ ব্যবস্থার প্রসঙ্গে বলেন, দু’টি দল থাকলে রাজনীতিতে মত প্রকাশের
সুযোগ সীমিত হয়ে যায়। বিরোধী মতামত যাই থাকুকনা কেন, দ্বিদলীয় ব্যবস্থা গণতন্ত্রসুরক্ষা, সংরক্ষণ ও বিকাশে সবচেয়ে
ইতিবাচক ভূমিকা পালন করে। বিশ্বের আদর্শস্থানীয় গণতন্ত্রের দেশ গ্রেট ব্রিটেন ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রএর বড় প্রমাণ। সাধারণত
প্রধান প্রধান জাতীয় ইস্যুতে যেখানে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে এবং সরকার পরিবর্তনের ধারা রুটিনমাফিক চলছে ও
অর্থনৈতিক ও সামাজিক ভেদাভেদ তত প্রকট নয় এমন দেশেই দ্বিদলীয় ব্যবস্থা গড়ে উঠেছে।
বহুদলীয় ব্যবস্থা
সংজ্ঞা : যে সব রাষ্ট্রেদু’য়ের অধিক রাজনৈতিক দল থাকে এবং এসব দলের মধ্যে রাষ্ট্রক্ষমতা লাভের জন্য তীব্রপ্রতিদ্ব›িদ্বতা
হয় সেই রাষ্ট্রের রাজনৈতিক ব্যবস্থাকেই বহুদলীয় ব্যবস্থা বলা হয়। এসব দলের মধ্য হতে একটি দল নির্বাচনে নিরংকুশ জয়
লাভ করে সরকারি ক্ষমতা লাভ করে। কখনও কখনও একটি মাত্র দল নিরংকুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পাওয়ায় কয়েকটি দল
একত্রে মিলে সরকার গঠন করে। ভারত, বাংলাদেশ, পাকিস্তান বহুদলীয় ব্যবস্থার প্রকৃষ্ট উদাহরণ।
সুবিধা
বহুদলীয় ব্যবস্থায় নির্বাচকমন্ডলীর সামনে অনেকগুলো রাজনৈতিক দল তাদের নীতি ও কর্মসূচি নিয়ে উপস্থিত হয়। জনগণ
এসব দলকে ভালভাবে বিচার করতে পারে এবং বাছাইয়ের সুযোগ থাকায় এদের মধ্য থেকে একটিকে বেছে নেয়।
বর্তমানে প্রায় প্রতিটি রাষ্ট্রই জাতি রাষ্ট্র, এর আয়তন যেমন বিশাল লোকসংখ্যা তেমনি বিপুল। ফলে জনজীবনের চাহিদা,
সমস্যা ও দাবি বহুমুখী ও বহুমাত্রিক হয়ে থাকে। এক্ষেত্রে বহুদল থাকলে জনমতের কোন দিকই অপ্রকাশিত থাকতে
পারে না। বিভিন্নদলের মাধ্যমে জনগণের বিভিন্নমুখী দাবি প্রকাশিত হয়।
বহুদলীয় ব্যবস্থায় সাধারণত কোন দলই নির্বাচনে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করতে পারে না। ফলে কয়েকটি দল মিলে
কোয়ালিশন সরকার গঠন করে। ফলে একদলের একনায়কত্ববা নির্দয় সংখ্যাগরিষ্ঠতা কুফল থেকে দেশ ও জনগণ মুক্ত
থাকে।
প্রত্যেক দেশেই বিভিন্নধর্ম ও সাংস্কৃতিক স¤প্রদায়ের লোক বাস করে। বহুদলীয় ব্যবস্থা থাকলে এসব স¤প্রদায়ের স্বার্থের
প্রতিনিধিত্বঘটে। এতে সকলেই আনুপাতিক ভাবে শাসন কাজে অংশগ্রহণ ও স্বার্থের চাহিদা পূরণ করতে পারে।
এ ব্যবস্থায় বিভিন্নদল ও মতের মহামিলন ঘটে। ফলে আইনসভা জাতীয় স্বার্থ সম্পর্কিত আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত
হতে পারে এবং তাতে জাতীয় সংহতি ও একতা বৃদ্ধি পায়।
অসুবিধাসমূহ:
বহুদলীয় ব্যবস্থা অস্থিতিশীল। কোন দলই নিরংকুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পাওয়ায় সব চেয়ে বড় দলটিকে অন্যান্য ছোট
দলকে সঙ্গে নিয়ে সম্মিলিত সরকার গঠন করতে হয়। এতে ছোট দলগুলোর সাথে দর কষাকষি করে সরকার চালাতে
হয়। এতে ভুল বুঝাবুঝির সম্ভাবনা থাকে। ফলে কোন দল সরকারের প্রতি সমর্থন প্রত্যাহার করলে সরকারের পতন ঘটে।
তাতে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ক্ষুন্নহয়।
বহুদলীয় সরকার এক প্রকার দুর্বল সরকার। একটি দলের একক সংখ্যাগরিষ্ঠতায় গঠিত সরকার যেমন শক্তিশালী হয়
বহুদল সমন্বয়ে গঠিত সরকার তেমন শক্তিশালী হয় না। ফলে জাতীয় উন্নয়নে সরকার কোন দৃঢ় পদক্ষেপ গ্রহণ করতে
পারে না।
শরীক সব দলের মন জুগিয়ে চলতে হয় বলে এ ব্যবস্থায় সরকার দ্রæত সিদ্ধন্তগ্রহণ করতে পারে না। ফলে জরুরি অবস্থায়
সিদ্ধান্তগ্রহণ সম্ভব হয় না। তাই জনকল্যাণমূলক কার্যাবলী বিলম্বিত হয়।
জনগণ যথেষ্ট মাত্রায় শিক্ষিত না হলে বহু সংখ্যক দলের নীতি ও কর্মসূচি বিচার বিশ্লেষন করে যোগ্যতমকে বাছাই করতে
পারে না। ফলে প্রচারণায় বিভ্রান্তহয়ে ভুল নীতি ও আদর্শের পাল্লায় ভোট প্রদান করে বসে।
বিরোধীদলের ভূমিকা
গণতন্ত্রের সুষ্ঠুকার্যকারিতার জন্য শক্তিশালী বিরোধী দল থাকা দরকার। নিম্নে বিরোধী দলের ভূমিকা ব্যাখ্যা করা হল:
ছায়া সরকার গঠন : সংসদীয় ব্যবস্থায় সরকারী দল প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বেসরকার গঠন করে এবং সরকারের বিভিন্নবিভাগ
ও মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব মন্ত্রীদের মধ্যে বন্টন করে দেয়। পাশাপাশি বিরোধীদলও তার সংসদীয় দলের নেতার নেতৃত্বে
একটি ছায়া সরকার গঠন করে এবং সরকারের মতই বিভিন্নদফতরের নীতিমালার পাশাপাশি
নিজেদের নীতিমালা আইনসভায় তুলে ধরে এবং এসব ক্ষেত্রে সরকারের ভুলত্রæটি নির্দেশ করে।
বিরোধিতার নীতিমালা ও কার্যসূচি প্রণয়ন ঃ গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রেক্ষমতাসীন দল সরকারের দায়িত্বগ্রহণ করার সাথে সাথে
তাদের বিরোধী দলগুলো স্থির করে কিভাবে তারা সরকারের গৃহীত সিদ্ধান্তও কার্যক্রমের বিরোধিতা করবে। এ বিরোধিতা
শুধুমাত্র বিরোধিতার জন্যই করা হয় না, বরং কিছু সুনির্দিষ্ট নীতিমালার মাধ্যমেই করা হয়। এসব নীতিমালার মধ্যে
কোন্টি কখন, কি পরিস্থিতিতে বাস্তবায়িত করা হবে তার জন্য কার্যসূচিও প্রণয়ন করা হয়।
গণসংযোগ সাধন : বিরোধীদল সরকারের গৃহীত পদক্ষেপের ভুলত্রæটি জনগণের সামনে তুলে ধরে এবং সরকারের
দুর্বলতাগুলো দেখিয়ে দেয়। সরকার কর্তৃক প্রণীত আইন ও বিধিমালা সম্বন্ধে জনগণকে অবহিত করে। এতে বিরোধীদল
নির্বাচনের পর জনগণের নিকট নিজেদের আদর্শ ও কর্মসূচি পুনরায় প্রচার করার সুযোগ পায়। অধ্যাপক লাওয়েল বলেন,
দলগুলো আদর্শ বিক্রেতা হিসেবে কাজ করে।
জনমত সংগঠন : বিরোধীদল নির্বাচনে জয়ী হতে বা আইনসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করতে না পারার কারণগুলো
পর্যালোচনা করে। এ সময় কোন্ কোন্ ক্ষেত্রে তাদের কি দুর্বলতা ছিল তাও খতিয়ে দেখার চেষ্টা করে। অতঃপর এ
বিষয়গুলো জনগণের কাছে তুলে ধরে এবং নিজেদের ভুলত্রæটি স্বীকার করে জনমতকে তাদের অনুকূলে সংগঠিত করার
চেষ্টা করে।
সরকারের সমালোচনা : বিরোধী দল আইনসভায় বিতর্ক, আলোচনা, মুলতবী প্রস্তাব উপস্থাপন, ছাঁটাই প্রস্তাব পেশ,
প্রশ্নোত্তার ইত্যাদির মাধ্যমে সরকারের সমালোচনা করে থাকে। সমালোচনার চূড়ান্তপর্যায়ে সরকারের বিরুদ্ধে অনাস্থা
প্রস্তাব এনে সরকারকে ক্ষমতা হতে অপসারণের চেষ্টাও চালায়। আইনসভার বাইরেও জনসভা, প্রচার, প্রোপাগান্ডা,
বিবৃতি, আলোচনাসভা ইত্যাদির মাধ্যমে সরকারের সমালোচনা করা হয়।
বিকল্প সরকার গঠনের প্রস্তাব : সসংদীয় গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় অনেক সময় সমমনা দল বা গ্রæপের সহায়তা ও সমর্থনে
কোয়ালিশন সরকার গঠন করা হয়। বিরোধীদল এ অবস্থায় কোয়ালিশনের অংশীদার দলগুলোর মধ্যে অনৈক্য দৃষ্টির চেষ্টা
করে এবং ক্ষমতাসীন দলের প্রতি সমর্থন প্রত্যাহার করার জন্য এসব দলকে উদ্ধুদ্ধ করে। তাদের সে প্রচেষ্টা সফল হয়
যখন আইনসভায় সরকারী দল আস্থা ভোটে পরাজয় বরণ করে। এভাবে ক্ষমতাসীন সরকারের পতন ঘটলে বিরোধী দল
তার ঘনিষ্ট সহযোগী দল ও অন্যান্য নতুন মিত্র দলের সমর্থনে বিকল্প সরকার গঠনে উদ্যোগী হয়।
সরকারের সহায়তা : বিরোধীদল শুধুমাত্র বিরোধিতার জন্যই বিরোধিতা করে না। কারণ গণতন্ত্রহচ্ছে পরিচর্যা ও
অংশগ্রহণের সরকার। বিরোধীদল যেমন সরকারের ভুলত্রæটি ও অপকর্মের সমালোচনা করবে, তেমনি জাতীয় সংকট,
প্রাকৃতিক দুর্যোগ, যুদ্ধ, জরুরী অবস্থা, জাতীয় স্বার্থ ইত্যাদির প্রশ্নেসরকারী দলের পাশে গিয়ে দাঁড়াবে। সরকারী দলকে
প্রয়োজনীয় পরামর্শ প্রদান করবে এবং জনগণকে ঐক্যবদ্ধভাবে সংকট মোকাবেলার জন্য আহŸান জানাবে।
সরকার নিয়ন্ত্রণ : বিরোধীদলের মূল কাজ হচ্ছে সরকারকে নিয়ন্ত্রণ করা। কারণ যে সরকারের ওপর কোন নিয়ন্ত্রণ থাকে
না, সে সরকার গণতান্ত্রিক হয়েও শুধুমাত্র একচেটিয়া ক্ষমতা ও সংখ্যাগরিষ্ঠতার জোরে স্বৈরাচারী ভূমিকা গ্রহণ করতে
পারে।
সারকথা
একদলীয়, দ্বিদলীয় ও বহুদলীয় ব্যবস্থা বিশ্লেষণ করলে দেখা যায় যে, গণতান্ত্রিক জীবন পদ্ধতি প্রতিষ্ঠায় দ্বিদল ব্যবস্থাই উপযুক্ত।
এতে কোন প্রকার ত্রæটি যে নেই তা বলা যায় না। কারণ দুটি দল পর্যায়ক্রমে রাষ্ট্রের শাসনক্ষমতা লাভ করায় জনগণের পক্ষে
এদের যে কোন একটিকে নির্বাচিত করতেই হয়। তা সত্তে¡ও এ ব্যবস্থায় গুণের অংশ বেশি। বিশেষত স্থিতিশীল সরকার গঠন
ও উন্নয়ন কাজ ত্বরান্বিত করার ক্ষেত্রে দ্বিদলীয় ব্যবস্থাই সর্বোত্তম। তাই যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য এ ব্যবস্থার মাধ্যমে গণতন্ত্রের
সর্বাধিক বিকাশ ও প্রতিষ্ঠায় সাফল্য অর্জন করেছে। গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় সরকারী দল যেমনি, বিরোধীদলও তেমনই গুরুত্বপূর্ণ
ভুমিকা পালন করে এবং কার্যাবলী সম্পাদন করে। গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় সকলের অংশগ্রহণ অপরিহার্য। কারণ গণতন্ত্রদলব্যবস্থার
উপরই গড়ে ওঠে। সেইসব দলের মধ্যে কোনটি সরকারী দল হিসাবে সরকার পরিচালনা করার সুযোগ পায়। আবার কোনটি
বিরোধী দল হিসেবে কার্য সম্পাদন ও ভুমিকা পালনের মধ্য দিয়ে সমাজে শান্তি, স্থিতি ও ভারসাম্য রক্ষা করে থাকে। তাই
গণতন্ত্রেবিরোধীদলের ভ‚মিকা অত্যন্তগুরুত্বপূর্ণ।
সঠিক উত্তরে টিক () চিহ্ন দিন
১. দ্বিদলীয় ব্যবস্থার অর্থ কি ?
ক. দেশে মাত্র দুটি দল থাকা;
খ. দুটি দলের প্রাধান্য বজায় থাকা;
গ. দুটি দল মিলিতভাবে সরকার পরিচালনা করা;
ঘ. দুটি দলের নির্বাচনে অংশগ্রহণ।
২. একদলীয় ব্যবস্থার মূল বৈশিষ্ট্য কি ?
ক. দলনেতা সব কিছুর নিয়ন্ত্রক হয়ে বসা;
খ. দলের ক্ষারা রাষ্ট্রক্ষমতা নিয়ন্ত্রণ;
গ. দল কর্তৃক ব্যক্তি ও সমাজ জীবনের উপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা;
ঘ. সরকারে একচেটিয়া আধিপত্য কিন্তুঅর্থনৈতিক ও সামাজিক ক্ষেত্রে উদারতা বজায় রাখা।
৩. বহুদলীয় ব্যবস্থা কাকে বলে ?
ক. রাজনৈতিক ক্রিয়াকলাপের অনেকগুলো দলের অংশগ্রহণ;
খ. অনেকগুলো দল মিলে রাষ্ট্রপরিচালনা করা;
গ. অনেকগুলো দলের মধ্যে থেকে একটি দলকে বেছে নেয়া;
ঘ. একাধিক দল মিলিতভাবে সরকার গঠনের মাধ্যমে রাষ্ট্রপরিচালনা করা।
সঠিক উত্তর ঃ ১.খ ২.ক ৩.ক
সংক্ষিপ্ত উত্তরমূলক প্রশ্ন
১। বহুদলীয় ব্যবস্থার দুটি অসুবিধা বর্ণনা করুন।
২। একদলীয় ব্যবস্থার বৈশিষ্ট্যসমূহ কি কি ?
৩। গণতন্ত্রেবিরোধীদল কেন সরকারকে নিয়ন্ত্রণ করতে চায়?
রচনামূলক প্রশ্ন
১। বহুদলীয় ব্যবস্থার সুবিধা ও অসুবিধা বর্ণনা করুন।
২। গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় বিরোধী দলের ভূমিকা সম্পর্কেআলোচনা করুন।
FOR MORE CLICK HERE
এইচএসসি বাংলা নোট ১ম পত্র ও ২য় পত্র
ENGLISH 1ST & SECOND PAPER
এইচএসসি আইসিটি নোট
এইচএসসি অর্থনীতি নোট ১ম পত্র ও ২য় পত্র
এইচএসসি পৌরনীতি ও সুশাসন ১ম পত্র
এইচএসসি পৌরনীতি নোট ২য় পত্র
এইচএসসি সমাজকর্ম নোট ১ম পত্র
এইচএসসি সমাজকর্ম নোট ২য় পত্র
এইচএসসি সমাজবিজ্ঞান নোট ১ম পত্র ও ২য় পত্র
এইচএসসি ইতিহাস নোট ১ম পত্র
এইচএসসি ইতিহাস নোট ২য় পত্র
এইচএসসি ইসলামের ইতি. ও সংস্কৃতি নোট ১ম পত্র
এইচএসসি ইসলামের ইতি. ও সংস্কৃতি নোট ২য় পত্র
এইচএসসি যুক্তিবিদ্যা ১ম পত্র ও ২য় পত্র
এইচএসসি ভূগোল ও পরিবেশ নোট ১ম পত্র ও ২য় পত্র
এইচএসসি ইসলামিক স্টাডিজ ১ম ও ২য় পত্র