আইন, স্বাধীনতা, গণতন্ত্র
আইন ও স্বাধীনতা
আইন ও স্বাধীনতার সম্পর্ক অত্যন্ত নিবিড় এবং পরস্পর নির্ভরশীল। প্রত্যেক ব্যক্তির স্বাধীনতার সুরক্ষার জন্য
আইনের প্রয়োজন আছে। আবার কোন কোন ক্ষেত্রে কোন কোন আইনকে স্বাধীনতার পরিপন্থীও মনে হয়। আইন ও
স্বাধীনতার সম্পর্ক সংক্রান্ত দুটি পরস্পর বিরোধী মতবাদ প্রচলিত রয়েছে। প্রথম দলটি মনে করেন, আইন ও স্বাধীনতা
গভীরভাবে সম্পর্কযুক্ত। এরিস্টটল, মন্টেস্কু, উইলোবি, বার্কার, লক প্রমুখ মনীষী এই মতের সমর্থক। আবার কেউ কেউ
মনে করেন যে, আইন ও স্বাধীনতা পরস্পর বিরোধী। হার্বার্ট, এ ভি ডাইসি প্রমুখ রাষ্ট্রবিজ্ঞানী এই দলের অন্তর্গত।
আইন ও স্বাধীনতার সম্পর্ক নিচে আলোচনা করা হলআইন স্বাধীনতার ভিত্তি
স্বাধীনতার কোন পরিমাপ নেই। অনেকে মনে করেন, নির্বিচার স্বাধীনতা নাগরিকের কল্যাণের চেয়ে ক্ষতির কারণ হয়ে
থাকে। কোন স্বাধীনতা কতটুকু উপভোগ করা যাবে তা আইনের মাধ্যমে নির্ধারিত হয়। আইন ব্যতীত স্বাধীনতা
স্বেচ্ছাচারিতায় পরিণত হবার আশঙ্কা থেকে এমনটি করা হয়। জন লকের মতে, “যেখানে আইন নেই সেখানে স্বাধীনতাও
নেই।”
আইন স্বাধীনতার রক্ষাকবচ
একজনের স্বাধীনতা যেন অন্যের অধিকার খর্ব না করে সেজন্য বিভিন্ন ধরনের আইন রয়েছে। স্বাধীনতা বঞ্চিতরা আইনের
আশ্রয় নিতে পারে। রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ আইন সংবিধানে নাগরিকদের জন্য অনেক স্বাধীনতার নিশ্চয়তা দেয়া হয়। জন লকের
মতে, যেখানে আইন থাকে না সেখানে কোন স্বাধীনতাও থাকে না।
আইন স্বাধীনতার পরিপূরক
আইন যেমন কেবল নিয়ন্ত্রণ নয় তেমনি স্বাধীনতা মানে যা ইচ্ছে তা করা নয়। উভয়টির সাথেই যৌক্তিকতা বিষয়টি
রয়েছে। আইন স্বাধীনতাকে পূর্ণ করে। স্বাধীনতা কোনভাবে বাধাগ্রস্ত হলে আইনের মাধ্যমে তা বলবৎ করা হয়। অর্থাৎ
আইন ছাড়া স্বাধীনতা পূর্ণতা পায় না।
আইন স্বাধীনতার বিরোধী
আইন সবসময় স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে পারে না। কেবল জনগণের জন্য, জনগণের দ্বারা প্রণীত আইনই স্বাধীনতা রক্ষা
করতে পারে। স্বেচ্ছাচারী ও স্বৈরাচার কর্তৃক প্রণীত আইন অনেক সময়ই স্বাধীনতা বিরোধী। দৃষ্টান্ত হিসেবে দক্ষিণ
আফ্রিকার বর্ণবৈষম্যমূলক আইনের কথা বলা যায়, যা ঐ দেশের কৃষ্ণাঙ্গ নাগরিকদের অধিকার খর্ব করত। তাছাড়া
মার্কসবাদীগণ মনে করেন, পুঁজিবাদী গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় আইন তৈরি হয় মূলত সমাজের প্রভাবশালী শ্রেণির শাসন-শোষণ
টিকিয়ে রাখার জন্য। অর্থাৎ পুঁজিবাদী গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় আইন হল শোষণের হাতিয়ার।
আইন ও স্বাধীনতার সম্পর্কে অনেক বিরুদ্ধ যু্িক্ত থাকতে পারে। তারপরেও এটাই বাস্তবতা যে, আধুনিক রাষ্ট্র ব্যবস্থায়
বিপুল সংখ্যক নাগরিকের স্বাধীনতা নূন্যতম পর্যায়ে হলেও রক্ষা করার জন্য আইনের বিকল্প নেই। তাই উপসংহারে
আর্নেস্ট বার্কারের ভাষায় বলা যায় “স্বাধীনতা ও আইনের মধ্যে বিরোধ নেই”।
সার-সংক্ষেপ
আইন ও স্বাধীনতার সম্পর্ক অত্যন্ত নিবিড়। আইন না থাকলে স্বাধীনতা বলবৎ করা সম্ভব নয়। আবার আইনের জন্য
স্বাধীনতা খর্ব হলে তা গ্রহণযোগ্য হবে না। কোন কোন চিন্তাবিদ আইনকে ব্যক্তির স্বাধীনতার বিরোধী মনে করলেও,
বেশিরভাগই আইনকে স্বাধীনতার রক্ষাকবচ হিসেবে বিবেচনা করেন। পরিশেষে বলা যায় যে, একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে
স্বাধীনতা নিশ্চিত করার জন্য আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার বিকল্প নেই।
পাঠোত্তর মূল্যায়ন-৩.৮
সঠিক উত্তরের পাশে টিক (√) চিহ্ন দিন
১। “আইন হল স্বাধীনতার ”। শূন্যস্থানে কোনটি বসবে?
ক) ফসল খ) অন্য রূপ
গ) সম্পূরক ঘ) শর্ত
২। “স্বাধীনতা ও আইনের বিরোধ নেই” উক্তিটি কার?
ক) এরিস্টটল খ) সক্রেটিস
গ) প্লেটো ঘ) আর্নেস্ট বার্কার
FOR MORE CLICK HERE
এইচএসসি বাংলা নোট ১ম পত্র ও ২য় পত্র
ENGLISH 1ST & SECOND PAPER
এইচএসসি আইসিটি নোট
এইচএসসি অর্থনীতি নোট ১ম পত্র ও ২য় পত্র
এইচএসসি পৌরনীতি ও সুশাসন ১ম পত্র
এইচএসসি পৌরনীতি নোট ২য় পত্র
এইচএসসি সমাজকর্ম নোট ১ম পত্র
এইচএসসি সমাজকর্ম নোট ২য় পত্র
এইচএসসি সমাজবিজ্ঞান নোট ১ম পত্র ও ২য় পত্র
এইচএসসি ইতিহাস নোট ১ম পত্র
এইচএসসি ইতিহাস নোট ২য় পত্র
এইচএসসি ইসলামের ইতি. ও সংস্কৃতি নোট ১ম পত্র
এইচএসসি ইসলামের ইতি. ও সংস্কৃতি নোট ২য় পত্র
এইচএসসি যুক্তিবিদ্যা ১ম পত্র ও ২য় পত্র
এইচএসসি ভূগোল ও পরিবেশ নোট ১ম পত্র ও ২য় পত্র
এইচএসসি ইসলামিক স্টাডিজ ১ম ও ২য় পত্র