রাষ্ট্রঃ উৎপত্তি ও কার্যাবলি


ইউনিট

রাষ্ট্রঃ উৎপত্তি ও কার্যাবলি
(ঙৎরমরহ ধহফ ঋঁহপঃরড়হং ড়ভ ঝঃধঃব)
সামাজিক ও রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠানের মধ্যে সবচেয়ে বড় ও গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান হল রাষ্ট্র। সামাজিক ও রাজনৈতিক শৃঙ্খলা
স্থাপন এবং সকল নাগরিকের স্বার্থ রক্ষার ক্ষেত্রে রাষ্ট্রের নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন কাঙ্খিত। প্রাচীনকালে- ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র নগর
নিয়ে নগর রাষ্ট্র গঠিত হত। এসব নগর রাষ্ট্রের শাসনকার্যে নাগরিকগণ সরাসরিভাবে অংশগ্রহণ করত। আধুনিক রাষ্ট্র
বিশাল আকৃতির এবং এর জনসংখ্যা অনেক বেশি। যার ফলে আধুনিককালে জনগণ নির্বাচিত প্রতিনিধির মাধ্যমে রাষ্ট্রীয়
কাজে পরোক্ষভাবে অংশ নেয়। আধুনিক রাষ্ট্রকে কেন্দ্র করে নাগরিক জীবনের চরম অভিব্যক্তির প্রকাশ ঘটে। রাষ্ট্রের সাথে
নাগরিকের সম্পর্ক অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ। এ প্রসঙ্গে রাষ্ট্রবিজ্ঞানের জনক এরিস্টটল বলেন, “রাষ্ট্রের বাইরে যে বসবাস করে, সে
হয় পশু না হয় দেবতা।” এ ইউনিটে রাষ্ট্রের ধারণা, রাষ্ট্র ও সরকারের সম্পর্কের ধরণ, রাষ্ট্রের উৎপত্তি সম্পর্কে বিভিন্ন
মতবাদ, আধুনিক রাষ্ট্রের কার্যাবলি, কল্যাণ রাষ্ট্রের ধারণা আলোচনা করা হয়েছে। জনসমষ্টি, ভূ-খন্ড, সরকার, সার্বভৌমত্ব, উপাদান।
রাষ্ট্রে ধারণা
প্রাচীনকালে গ্রীক দার্শনিকগণ ‘রাষ্ট্র’ অর্থে পোলিস (চড়ষরং) কথাটি ব্যবহার করতেন। রোমান দার্শনিকগণ ‘রাষ্ট্র’
বোঝাতে ‘সিভিটাস’ (ঈরারঃধং) কথাটি ব্যবহার করতেন। প্রাচীন গ্রীক পন্ডিত থেকে শুরু করে আধুনিক রাষ্ট্রবিজ্ঞানীদের

ইউনিট সমাপ্তির সময় ইউনিট সমাপ্তির সর্বোচ্চ সময় ১ সপ্তাহ
বাংলাদেশ উš§ুক্ত বিশ^বিদ্যালয় এইচএসসি প্রোগ্রাম
ইউনিট ছয় পৃষ্ঠা ৯৩
মধ্যে রাষ্ট্রের ধারণা বা সংজ্ঞা নিয়ে যথেষ্ট মত পার্থক্য রয়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি উড্রো উইলসন বলেন,
“রাষ্ট্র হচ্ছে আইনের প্রয়োজনে নির্দিষ্ট ভ‚-খন্ডে সংগঠিত একটি জনসমাজ।” অধ্যাপক জেমস গার্নার রাষ্ট্রের একটি সুন্দর ও
গ্রহনযোগ্য সংজ্ঞা প্রদান করেছেন। তিনি বলেন, “সুনির্দিষ্ট ভ‚খন্ডে স্থায়ীভাবে বসবাসকারী, সুসংগঠিত সরকারের প্রতি
স্বভাবজাতভাবে আনুগত্যশীল, বহি:শক্তির নিয়ন্ত্রনমুক্ত স্বাধীন জনসমষ্টিকে রাষ্ট্র বলে।”
রাষ্ট্র সম্পর্কে বিভিন্ন মনীষীর ধারণা বিশ্লেষণ করে আমরা বলতে পারি, যে রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠানের নির্দিষ্ট ভ‚-খন্ড,
সুসংগঠিত সরকার, জনসমষ্টি ও সার্বভৌম ক্ষমতা রয়েছে তাকে রাষ্ট্র বলে।
রাষ্ট্রের উপাদান
রাষ্ট্রের চারটি উপাদান থাকে। যথাÑ (১) জনসমষ্টি, (২) ভ‚-খন্ড, (৩) সরকার ও (৪) সার্বভৌমত্ব।
১। জনসমষ্টি: রাষ্ট্র গঠনের প্রথম উপাদান জনসমষ্টি। জনসমষ্টি ব্যতীত রাষ্ট্র হতে পারে না। তবে একটি রাষ্ট্র গঠনের জন্য
জনসংখ্যা কত হতে হবে তার কোন ধরা বাঁধা নিয়ম নেই। জনসংখ্যা কম হতে পারে; আবার বেশিও হতে পারে।
যেমন, বাংলাদেশের জনসংখ্যা প্রায় ১৬ কোটি, চীনের জনসংখ্যা প্রায় ১৩৫ কোটি, আবার ব্রæনাই প্রায় ৪ লক্ষ। তবে
অ্যারিস্টটল এর মতে রাষ্ট্রে জনসংখ্যা সামঞ্জস্যপূর্ণ হওয়া উত্তম।
২। ভ‚খন্ড: রাষ্ট্র গঠনের দ্বিতীয় উপাদান হল ভূখন্ড। জনসমষ্টিকে স্থায়ীভাবে বসবাসের জন্য ভ‚খন্ড আবশ্যক। ভ‚খন্ড বলতে
রাষ্ট্রের ভ‚মি, নদ-নদী, পাহাড়-পর্বত, সামুদ্রিক জলসীমা বোঝায়। রাষ্ট্র গঠনের জন্য কি পরিমান ভ‚খন্ড প্রয়োজন, তার
নির্দিষ্টতা নেই। অর্থাৎ রাষ্ট্রের আয়তন ছোটও হতে পারে, আবার বড়ও হতে পারে। যেমন বাংলাদেশের আয়তন
১,৪৭,৫৭০ বর্গ কিঃ মিঃ, অন্যদিকে ভারতের আয়তন ৩,২৮৭,২৬৩ বর্গ কিঃমিঃ।
৩। সরকার: রাষ্ট্রের তৃতীয় উপাদান সরকার। সরকারের মাধ্যমে রাষ্ট্র পরিচালিত হয়। রাষ্ট্র পরিচালনার ক্ষেত্রে সরকার
তিন ধরনের কাজ করে। যথাÑ আইন সংক্রান্ত, শাসন সংক্রান্ত ও বিচার সংক্রান্ত। এ তিন ধরনের কাজের জন্য
সরকারের তিনটি বিভাগ রয়েছে। যথাÑ আইন, শাসন ও বিচার বিভাগ। অর্থাৎ সরকার গঠিত হয় এ তিন বিভাগ
নিয়ে। তবে বিশ্বের প্রায় সব সরকার ৩টি বিভাগ নিয়ে গঠিত হলেও সরকারের রূপ ও প্রকৃতি এক নয়। যেমনÑ
বাংলাদেশে সংসদীয সরকার ব্যবস্থা, আবার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে রাষ্ট্রপতি শাসিত সরকার ব্যবস্থা বিদ্যমান।
৪। সার্বভৌমত্ব: রাষ্ট্র গঠনের সর্বাপেক্ষা গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হল সার্বভৌমত্ব। এটি রাষ্ট্রের চরম, পরম ও সর্বোচ্চ ক্ষমতা।
সার্বভৌমত্ব ব্যতীত কোন দেশ রাষ্ট্র বলে পরিগণিত হতে পারে না। যেমনÑ ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বরের পূর্বে
বাংলাদেশের অন্যান্য উপাদান থাকা সত্তে¡ও সার্বভৌম ক্ষমতা না থাকায় বাংলাদেশ রাষ্ট্র বলে পরিগণিত হতে পারে
নি। সার্বভৌমত্বের দু’টো দিক রয়েছে। যথাÑ (ক) অভ্যন্তরীণ সার্বভৌমত্ব, যার দ্বারা রাষ্ট্র তার সীমানার মধ্যে যেকোন
ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের উপর অবাধ ও সীমাহীন ক্ষমতার অধিকারী। এ ক্ষমতার মাধ্যমে রাষ্ট্র অভ্যন্তরীণ শান্তি-শৃঙ্খলা
বজায় রাখে। (খ) বাহ্যিক সার্বভৌমত্ব - এ ক্ষমতা বলে রাষ্ট্র বহি:শত্রæর আক্রমণ থেকে নিজেকে রক্ষা করে।
সার-সংক্ষেপ
যে সামাজিক সংগঠনের জনসমষ্টি, ভ‚খন্ড, সরকার ও সার্বভৌমত্ব রয়েছে তাকে রাষ্ট্র বলে। রাষ্ট্রের উপাদান ৪টি। যথাÑ
(১) জনসমষ্টি, (২) ভ‚খন্ড, (৩) সরকার ও (৪) সার্বভৌমত্ব। এ চারটি উপাদানের মধ্যে সার্বভৌমত্ব অন্যতম। সার্বভৌমত্বকে রাষ্ট্রের প্রাণ বলা হয়।
পাঠোত্তর মূল্যায়ন-৬.১
সঠিক উত্তরের পাশে টিক (√) চিহ্ন দিন
১। “রাষ্ট্র হচ্ছে আইনের প্রয়োজনে নির্দিষ্ট ভূ-খন্ডে সংগঠিত একটি জনসম্পদ”-কে বলেছেন।
ক) সক্রেটিস খ) অ্যারিস্টটল
গ) উড্রো উইলসন ঘ) অধ্যাপক গার্নার
২। রাষ্ট্র গঠনের সর্বাপেক্ষা গুরুত্বপূর্ন উপাদানÑ
ক) জনসমষ্টি খ) ভূখন্ড
গ) সরকার ঘ) সার্বভৌমত্ব
৩। ঢাকা রাষ্ট্র নয়, কারণÑ
ক) ক্ষুদ্র আয়তন খ) অত্যধিক জনসংখ্যা
গ) সার্বভৌমত্ব নেই ঘ) রাজধানী

FOR MORE CLICK HERE
এইচএসসি বাংলা নোট ১ম পত্র ও ২য় পত্র
ENGLISH 1ST & SECOND PAPER
এইচএসসি আইসিটি নোট
এইচএসসি অর্থনীতি নোট ১ম পত্র ও ২য় পত্র
এইচএসসি পৌরনীতি ও সুশাসন ১ম পত্র
এইচএসসি পৌরনীতি নোট ২য় পত্র
এইচএসসি সমাজকর্ম নোট ১ম পত্র
এইচএসসি সমাজকর্ম নোট ২য় পত্র
এইচএসসি সমাজবিজ্ঞান নোট ১ম পত্র ও ২য় পত্র
এইচএসসি ইতিহাস নোট ১ম পত্র
এইচএসসি ইতিহাস নোট ২য় পত্র
এইচএসসি ইসলামের ইতি. ও সংস্কৃতি নোট ১ম পত্র
এইচএসসি ইসলামের ইতি. ও সংস্কৃতি নোট ২য় পত্র
এইচএসসি যুক্তিবিদ্যা ১ম পত্র ও ২য় পত্র
এইচএসসি ভূগোল ও পরিবেশ নোট ১ম পত্র ও ২য় পত্র
এইচএসসি ইসলামিক স্টাডিজ ১ম ও ২য় পত্র

Copyright © Quality Can Do Soft.
Designed and developed by Sohel Rana, Assistant Professor, Kumudini Government College, Tangail. Email: [email protected]