সুশাসন, রাজনৈতিক শিক্ষা, আইনের শাসন, সমন্বয় সাধন, জবাবদিহিতা।
সুশাসন প্রতিষ্ঠায় নেতৃত্ব
সুশাসন এবং নেতৃত্ব বর্তমান সময়ের অত্যন্ত জনপ্রিয় আলোচ্য বিষয়। সঠিক এবং কার্যকরী নেতৃত্ব থাকলে
রাষ্ট্রে সুশাসন প্রতিষ্ঠা সহজ হয়। সুশাসন প্রতিষ্ঠার জন্য অনেকগুলো পূর্বশর্তের মধ্যে যোগ্য নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠা অন্যতম। নি¤েœ
সুশাসন প্রতিষ্ঠায় নেতৃত্বের ভূমিকা আলোচনা করা হল−
১। নীতি নির্ধারক ঃ নেতার প্রথম ও প্রধান কাজ হল রাষ্ট্রীয় নীতি নির্ধারণ এবং তা বাস্তবায়ন করা। জনস্বার্থের অনুকূল,
যুগোপযোগী রাষ্ট্রীয় নীতিমালা গ্রহণে নেতৃত্বের দক্ষতার সাথে সুশাসনের বিষয়টি গভীরভাবে জড়িত।
২। জনমত গঠন ঃ রাষ্ট্রের বিভিন্ন বিষয়ে নেতারা জনমত গঠন করেন। জনগণ রাষ্ট্রের সকল ক্ষমতার উৎস। জনগণ যাতে
রাষ্ট্রীয় কার্যে অংশগ্রহণ করতে পারে সেদিকে নেতৃত্বকে গুরুত্ব দিতে হবে। সাধারণ নাগরিকেরা উন্নয়ন প্রক্রিয়ায় যদি
অংশগ্রহণ করে তাহলে সে রাষ্ট্রে সুশাসন প্রতিষ্ঠিত হয়।
৩। রাজনৈতিক শিক্ষার প্রসার ঃ একজন নেতা রাজনৈতিক শিক্ষার প্রসারে অনেক বড় ভূমিকা রাখেন। রাষ্ট্র, সমাজ,
উন্নয়ন, পররাষ্ট্রনীতি থেকে শুরু করে অনেকগুলো বিষয়ে রাজনৈতিক নেতৃত্ব নিয়মিত বক্তব্য দিয়ে থাকেন।
নির্বাচনের প্রাক্কালে বিভিন্ন রকম সভা-সমাবেশ, মিছিল, ব্যানার, ফেস্টুন, লিফলেট, পোস্টার, শব্দযন্ত্র, র্যালি প্রভৃতির
মাধ্যমে নেতারা জনগণের দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা করে। এ ধরনের সকল কর্মকান্ড থেকে সাধারণ জনগণ অবিরাম
রাজনৈতিক শিক্ষা লাভ করে।
৪। পরিকল্পনা প্রণয়ন ঃ পরিকল্পনা প্রণয়ন নেতার একটি বিশেষ কাজ। সঠিক ও উন্নয়নমুখী পরিকল্পনা প্রণয়ন করা
প্রতিটি রাষ্ট্রের জন্য অপরিহার্য। সুষ্ঠু, উন্নত, কার্যকরী পরিকল্পনা প্রণয়নের উপর নেতার সাফল্য নির্ভর করে। নেতা
যদি সর্বদা সংবিধানসম্মত পন্থা গ্রহণ করে তাহলে সে দেশে সুশাসন প্রতিষ্ঠিত হবে।
৫। রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ঃ রাজনৈতিক পরিবেশ স্থিতিশীল থাকলে সুশাসন প্রতিষ্ঠা পায়। রাজনৈতিক পরিবেশ
স্থিতিশীল রাখার জন্য অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হয় নেতাদের। রাজনৈতিক পরিবেশ স্থিতিশীল হলে উন্নয়ন
ত্বরান্বিত হয়। উন্নয়ন ত্বরান্বিত হলে সুশাসন নিশ্চিত হয়।
৬। ঐক্যমত ঃ ঐক্যমত সৃষ্টি করা নেতার অন্যতম কাজ। নেতারা বিভিন্নভাবে জনগণের মধ্যে বিভিন্ন বিতর্কিত বিষয়ে
ঐক্যমত সৃষ্টি করেন। জনসমাজে ঐক্যমত্য থাকলে যে কোন দেশে সার্বিক উন্নয়নে প্রাণ আসে। যথাযথ উন্নয়ন হলে
দেশে সুশাসন প্রতিষ্ঠা পায়।
৭। গণতন্ত্র সুরক্ষা ঃ গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থায় সুশাসন নিশ্চিত হয়। গণতান্ত্রিক ধারাকে অব্যাহত রাখার দায়িত্ব
নেতৃবৃন্দের হাতে। নেতৃবৃন্দ গণতন্ত্রকে সুরক্ষা দিলে সুশাসন সুরক্ষা পাবে। কেননা গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার মধ্যেই
সুশাসন বিদ্যমান।
৮। আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা ঃ আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় নেতৃবৃন্দকে ভূমিকা রাখতে হয়। একজন ভালো নেতা আইনের
শাসন প্রতিষ্ঠায় সকল উদ্যোগে নিজেকে শামিল করেন। রাষ্ট্রে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা পেলে সুশাসন স্বাভাবিক হয়ে
ওঠে।
৯। স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা ঃ স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা আধুনিক গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে সুশাসন প্রতিষ্ঠায় কার্যকরী ভূমিকা
রাখে। এ বিষয়ে সহযোগিতা করেন নেতৃবৃন্দ। সঠিক নেতৃত্বই প্রশাসনিক স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করে
সুশাসন প্রতিষ্ঠায় ভূমিকা রাখে।
১০। সমন্বয় সাধন ঃ যোগ্য নেতৃত্ব রাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ বিভিন্ন দল, সংগঠন, ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের মধ্যে কাজের সমন্বয়
সাধন করে থাকেন। এর ফলে দেশের উন্নয়ন, প্রবৃদ্ধি ও সুশাসন নিশ্চিত হয়।
পরিশেষে বলা যায়, সুশাসন প্রতিষ্ঠায় নেতৃত্বের গুরুত্ব অপরিসীম। কারণ শাসনকার্য পরিচালনার মূলে রয়েছে নেতৃত্ব।
বিশেষ করে উন্নয়নশীল দেশগুলোতে সুশাসন নিশ্চিত করার জন্য যোগ্য নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠার কোন বিকল্প নেই।
সার-সংক্ষেপ
বর্তমান সময়ে গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থার ক্ষেত্রে সুশাসন হচ্ছে অন্যতম প্রধান চাহিদা। সুশাসন ব্যতীত গণতান্ত্রিক ধারা
অব্যাহত রাখা সম্ভবপর নয়। সুশাসন প্রতিষ্ঠায় নেতৃত্বের গুরুত্ব অপরিসীম। আধুনিক শাসন ব্যবস্থায় নেতা তাঁর কার্যাবলি
গণতান্ত্রিকভাবে সম্পাদনের মাধ্যমে সুশাসন প্রতিষ্ঠায় ভূমিকা রাখেন। সঠিক নেতৃত্বের মাধ্যমে একটি রাষ্ট্র উন্নতির শীর্ষে
অবস্থান করতে পারে। দক্ষ ও সঠিক নেতৃত্ব ছাড়া সুশাসন প্রতিষ্ঠিত হতে পারে না।
পাঠোত্তর মূল্যায়ন-৮.৯
সঠিক উত্তরের পাশে টিক (√) চিহ্ন দিন
১। নেতার প্রথম ও প্রধান কাজ কি?
(ক) সমন্বয় সাধন (খ) স্বচ্ছতা
(গ) নীতি নির্ধারণ (ঘ) পরিকল্পনা প্রণয়ন
২। রাষ্ট্রের সকল ক্ষমতার উৎস কে?
(ক) রাজনৈতিক দল (খ) জনগণ
(গ) চাপসৃষ্টিকারী গোষ্ঠী (ঘ) আমলা
৩। সুশাসন প্রতিষ্ঠায় নেতৃত্ব−
(র) নীতি নির্ধারণ করে (রর) আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করে (ররর) জনমত গঠন করে
নিচের কোনটি সঠিক?
(ক) র (খ) র ও রর
(গ) র ও ররর (ঘ) র, রর ও ররর
ক. বহুনির্বাচনী প্রশ্ন
নিচের উদ্দীপকটি পড়–ন ১নং ও ২নং প্রশ্নের উত্তর দিন ঃ
‘ক’ একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র। জাতীয় নির্বাচনে কবির খান তার দলের পক্ষে কাজ করে। দলটি অন্যান্য দলের চেয়ে
সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়ে জয়লাভ করে এবং সরকার গঠন করে।
১। উদ্দীপকের ‘ক’ রাষ্ট্রে কোন ধরনের দলীয় ব্যবস্থা বিদ্যমান?
(ক) একদলীয় (খ) দ্বি-দলীয়
(গ) নির্দলীয় (ঘ) বহুদলীয়
২। উদ্দীপকের কবির খান কী ধরনের দলের সদস্য?
(ক) চাপসৃষ্টিকারী দল (খ) আঞ্চলিক দল
(গ) রাজনৈতিক দল (ঘ) সাংস্কৃতিক দল
নিচের উদ্দীপকটি পড়–ন ৩নং প্রশ্নের উত্তর দিন ঃ
ড. সরোয়ার হোসেন একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক। বিশেষ জ্ঞান, উচ্চতর শিক্ষা ও দক্ষতার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়
থেকে তিনি অনেক সুখ্যাতি ও সম্মান অর্জন করেছেন। এই ধারাবাহিকতাতে তাঁর মধ্যে এক ধরনের নেতৃত্বের বিকাশ
ঘটেছে।
৩। ড. সরোয়ার হোসেনের নেতৃত্ব কোন প্রকৃতির?
(ক) সম্মোহনী (খ) প্রশাসনিক
(গ) রাজনৈতিক (ঘ) বিশেষজ্ঞসুলভ
নিচের উদ্দীপকটি পড়–ন ৪নং ও ৫নং প্রশ্নের উত্তর দিন ঃ
মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান একটি রাজনৈতিক দলের সদস্য। তিনি তার দল থেকে মনোনয়ন নিয়ে জাতীয় নির্বাচনে
অংশগ্রহণ করতে চান। দলের নীতি, আদর্শ ও কর্মসূচির পক্ষে জনমত গড়ে তুলতে তিনি কাজ করে যাচ্ছেন। তিনি তার
অনুগত কর্মীদের দেশ-প্রেম ও জাতীয় স্বার্থে অনুপ্রাণিত হতে উদ্বুদ্ধ করেন।
৪। উদ্দীপকের উল্লেখিত দলটি কোন ধরনের−
(ক) চাপসৃষ্টিকারী দল (খ) রাজনৈতিক দল
(গ) উপদল (ঘ) স্বার্থান্বেষী দল
৫। উদ্দীপকের উল্লেখিত সংগঠনটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে গুরুত্বপূর্ণ কেননা এর মাধ্যমে−
(ক) ব্যক্তিস্বার্থ সংরক্ষিত হয় (খ) বিদেশী স্বার্থ রক্ষা হয়
(গ) জনমত সংগঠিত হয় (ঘ) নির্বাচন ভন্ডুল হয়
সৃজনশীল প্রশ্ন
১। আধুনিক যুগকে বলা হয় প্রতিনিধিত্বমূলক গণতন্ত্রের যুগ। জনগণ ভোটের মাধ্যমে প্রতিনিধি নির্বাচন করে এবং
পরোক্ষভাবে শাসনকার্যে অংশগ্রহণ করে। এ জন্য প্রতিনিধিত্বমূলক গণতন্ত্রকে দলীয় সরকার ব্যবস্থাও বলা হয়।
মিজানুর রহমান “ক” রাজনৈতিক দলের একজন নেতা। তিনি অত্যন্ত সৎ, দক্ষ, অভিজ্ঞ, পরিশ্রমী, ত্যাগী ও
দায়িত্বশীল নেতা হিসেবে সবার কাছে সুপরিচিত। তিনি সব সময় তার নির্বাচনী এলাকার জনগণের পাশে থাকেন।
জনগণও তাকে খুব পছন্দ করে এবং ভোট দিয়ে জয়ী করে। তিনি জনগণ ও সরকারের সেতু বন্ধন হিসেবে কাজ
করেন এবং সুশাসন প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন।
(ক) নেতৃত্ব কী?
(খ) রাজনৈতিক দল কাকে বলে?
(গ) উদ্দীপকে মিজানুর রহমানের বৈশিষ্ট্যের আলোকে একজন নেতার প্রয়োজনীয় গুণাবলি আলোচনা করুন।
(ঘ) সুশাসন প্রতিষ্ঠায় নেতৃত্বের ভূমিকা ব্যাখ্যা করুন।
২। আধুনিক গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক ব্যবস্থায় জনগণ তাদের অধিকার সম্পর্কে খুব বেশি সচেতন। কিন্তু একক প্রচেষ্টায় যে
তা সব সময় লাভ করা যায় না সে সম্পর্কেও তারা অবগত। ফলে প্রত্যেকেই তাদের নিজ-নিজ অবস্থান থেকে বিভিন্ন
সংগঠনের সাথে যুক্ত হয় আবার কিছু সংগঠন গড়েও তোলেন। এর মধ্যে আবার কিছু সংগঠনের প্রধান লক্ষ্য নির্বাচিত
হয়ে জনকল্যাণ সাধন করা আর কিছু সংগঠনের লক্ষ্য হচ্ছে নির্দিষ্ট একটি গোষ্ঠীর স্বার্থ হাসিল করা।
(ক) রাজনৈতিক দল সম্পর্কে এডমন্ড বার্কের প্রদত্ত সংজ্ঞাটি তুলে ধরুন।
(খ) চাপসৃষ্টিকারী গোষ্ঠী বলতে কী বোঝায়?
(গ) উদ্দীপকের আলোকে উল্লিখিত সংগঠনের সাথে আপনার পাঠ্য বইয়ের কোন সংগঠনের মিল আছে? ব্যাখ্যা
করুন।
(ঘ) উদ্দীপকের আলোকে রাজনৈতিক ও চাপসৃষ্টিকারী গোষ্ঠীর মধ্যে সম্পর্ক বিশ্লেষণ করুন।
উত্তরমালা
পাঠোত্তর মূল্যায়ন- ৮.১ ঃ ১। খ ২। ক ৩। ঘ ৪। খ
পাঠোত্তর মূল্যায়ন- ৮.২ ঃ ১। গ ২। গ ৩। ঘ ৪। গ
পাঠোত্তর মূল্যায়ন- ৮.৩ ঃ ১। খ ২। খ ৩। গ ৪। খ
পাঠোত্তর মূল্যায়ন- ৮.৪ ঃ ১। খ ২। গ ৩। ঘ ৪। গ
পাঠোত্তর মূল্যায়ন- ৮.৫ ঃ ১। ক ২। ক ৩। ক ৪। ঘ
পাঠোত্তর মূল্যায়ন- ৮.৬ ঃ ১। ঘ ২। ঘ ৩। খ ৪। ক
পাঠোত্তর মূল্যায়ন- ৮.৭ ঃ ১। ক ২। ঘ ৩। খ ৪। ঘ
পাঠোত্তর মূল্যায়ন- ৮.৮ ঃ ১। খ ২। গ ৩। ঘ
পাঠোত্তর মূল্যায়ন- ৮.৯ ঃ ১। গ ২। খ ৩। ঘ
চূড়ান্ত মূল্যায়ন ঃ ১। ঘ ২। গ ৩। ঘ ৪। খ ৫। গ
FOR MORE CLICK HERE
এইচএসসি বাংলা নোট ১ম পত্র ও ২য় পত্র
ENGLISH 1ST & SECOND PAPER
এইচএসসি আইসিটি নোট
এইচএসসি অর্থনীতি নোট ১ম পত্র ও ২য় পত্র
এইচএসসি পৌরনীতি ও সুশাসন ১ম পত্র
এইচএসসি পৌরনীতি নোট ২য় পত্র
এইচএসসি সমাজকর্ম নোট ১ম পত্র
এইচএসসি সমাজকর্ম নোট ২য় পত্র
এইচএসসি সমাজবিজ্ঞান নোট ১ম পত্র ও ২য় পত্র
এইচএসসি ইতিহাস নোট ১ম পত্র
এইচএসসি ইতিহাস নোট ২য় পত্র
এইচএসসি ইসলামের ইতি. ও সংস্কৃতি নোট ১ম পত্র
এইচএসসি ইসলামের ইতি. ও সংস্কৃতি নোট ২য় পত্র
এইচএসসি যুক্তিবিদ্যা ১ম পত্র ও ২য় পত্র
এইচএসসি ভূগোল ও পরিবেশ নোট ১ম পত্র ও ২য় পত্র
এইচএসসি ইসলামিক স্টাডিজ ১ম ও ২য় পত্র