১৯৫২ সালের ইতিহাসে ভাষা আন্দোলনের গুরুত্ব বর্ণনা করুন।

ভাষা আন্দোলনের ঐতিহাসিক পটভ‚মি
১৯৪৭ সালে হিন্দীকে ভারতের রাষ্ট্র ভাষা করার সুপারিশের পরিপ্রেক্ষিতে আলীগড় মুসলিম
বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন উপাচার্য জিয়াউদ্দিন আহমদ উর্দুকে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা করার প্রতি গুরুত্ব
আরোপ করেন। এর প্রতিবাদে ডঃ মুহম্মদ শহীদুল াহ ‘পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা সমস্যা‘ শীর্ষক প্রবন্ধে -
উল্লেখ করেছিলেন, ‘বাংলাদেশের কোর্ট ও বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা ভাষার পরিবর্তে উর্দু ভাষা গ্রহণ করা
হইলে উহা রাজনৈতিক পরাধীনতারই নামান্তর হইবে’। তিনি আরো বলেন, ‘একটি গাছ যেমন মাটি,
বাতাস, আলো, সিক্ততা এবং সর্বোপরি তার নিজস্ব অঙ্কুরকে অবলম্বন করে আপন স্বভাবে বর্ধিত হয়,
ভাষা-সংস্কৃতিও তেমনি একটি অঞ্চলের ভ‚-প্রকৃতি, ইতিহাস, মনুষ্যস্বভাব এবং আকা ক্ষাকে অবলম্বন
করে গড়ে ওঠে। মানুষকে কখনো তার সংস্কৃতি থেকে বিযুক্ত করা যায় না। একটি দেশে যদি একটি
মাত্র সংস্কৃতি-ধারা থাকে তাহলে সে দেশটি বৈচিত্র্যহীন এবং সেই কারণে তাৎপর্যহীন একটি দেশ।
মরুভ‚মিতে যেমন বৈচিত্র্য নেই, পৃথিবীর সব মরুভ‚মিই একরকম, তেমনি পাকিস্তান যদি পূর্ব ও
পশ্চিমাঞ্চল মিলিয়ে একই সংস্কৃতির ধারক-বাহক হয় তাহলে পাকিস্তান হবে বৈচিত্র্যহীন এবং সেই
কারণে তাৎপর্যহীন একটি দেশ।’
লেখক সমাজ পাকিস্তানের শুরুতেই উর্দুভাষার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে সতর্ক বাণী উচ্চারণ
করেছিলেন। উর্দু একমাত্র রাষ্ট্রভাষা হলে পূর্ব বাংলার উপর কিরূপ অবিচার হবে এবং সাংস্কৃতিক
জীবনে কিরূপ সংকটের সৃষ্টি হবে সেদিকে তাঁরা সমাজের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিলেন এবং তাৎপর্যমন্ডিত
ভ‚মিকা পালন করেছিলেন। ১৯৪৭ সালের ১৫ই সেপ্টেম্বর ‘তমুদ্দুন মজলিসে’র উদ্যোগে ‘পাকিস্তানের
রাষ্ট্রভাষা বাংলা না উর্দু’ এই নামে একটি স্মরণিকা বের করা হয়। ঐ স্মরণিকায় আবুল মনসুর আহমদ
বাংলা ভাষার প্রতি বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করেছিলেন। তিনি উর্দুকে পাকিস্তানের ‘রাষ্ট্রভাষা’ ও জাতীয়
ভাষারূপে চাপিয়ে দেবার বিপদ ও ষড়যন্ত্র সম্পর্কে ঐতিহাসিক ও রাজনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকে
আলোকপাত করে বলেছিলেন-‘উর্দুকে রাষ্ট্রভাষা করিলে পূর্ব পাকিস্তানের শিক্ষিত সমাজ রাতারাতি
অশিক্ষিত ও সরকারী চাকুরীর অযোগ্য বনিয়া যাইবেন। ঊনবিংশ শতাব্দীর মধ্যভাগে ফার্সী জায়গায়
ইংরেজীকে রাষ্ট্রভাষা করিয়া ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদ মুসলিম শিক্ষিত সমাজকে রাতারাতি অশিক্ষিত ও
সরকারী কাজের অযোগ্য করিয়াছিলেন।’
১৯৪৭ সালের অক্টোবর মাসে তমুদ্দুন মজলিসের উদ্যোগে ঢাকায় অনুষ্ঠিত সাহিত্য সম্মেলনে বাংলাকে
রাষ্ট্রভাষারূপে স্বীকৃতি দানের প্রথম প্রকাশ্য দাবি তোলা হয়। ‘রাষ্ট্রভাষা বাংলা চাই’- এই দাবি
পর্যায়ক্রমে সার্বজনীন দাবিতে পরিণত হয়। ভাষা আন্দোলনকে সাংস্কৃতিক পর্যায়ে উত্তীর্ণ করার ক্ষেত্রে
তমুদ্দুন মজলিসের প্রাথমিক প্রচেষ্টা ছিল উলে খযোগ্য। রাষ্ট্রভাষা প্রশ্নে ইসলামী ভ্রাতৃসংঘের বক্তব্য -
ছিল খুবই তাৎপর্যমন্ডিত। ‘ইসলামী ভ্রাতৃসংঘ দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করে, মাতৃভাষার সাহায্য ছাড়া প্রতিটি
নাগরিকের দেহ ও মনের সর্বাংগীন বিকাশ সাধন করা একেবারেই অসম্ভব। আমাদের প্রিয় নবী হযরত
মুহাম্মদ (সাঃ)-এর আবির্ভাবের সময় হিব্রæ ভাষা পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ সমৃদ্ধশালী ভাষা হিসেবে পরিগণিত
হতো, কিন্তু সাধারণ মানুষের বোধগম্য হওয়ার জন্যেই অপেক্ষাকৃত সহজ ভাষা আরবিতে পবিত্র
কোরআন শরীফ নাজেল হয়। আরবির পরিবর্তে সেদিন যদি অন্য কোন ভাষায় কোরআন শরীফ
নাজেল হতো তবে আরববাসীদের পক্ষে ইসলামের বাণী অতি অল্প সময়ে গ্রহণ করা সম্ভব হতো না।’
তাঁরা আরো বলেনবাংলা ভাষাকে রাষ্ট্রভাষা করার বিরূদ্ধে এক শ্রেণীর লোকের কাছে সস্তা যুক্তি মাতৃভাষার সাহায্য ছাড়া প্রতিটি নাগরিকের দেহ ও মনের সর্বাংগীন বিকাশ সাধন করা একেবারেই অসম্ভব
প্রায়ই শুনতে পাওয়া যায় যে, বাংলা সংস্কৃত ভাষা থেকে উৎপন্ন এবং হিন্দু সাহিত্যিকদের। কোরআন
শরীফ যে সময় অবতীর্ণ হয় সে সময় আরবি কাদের ভাষা ছিল? পুতুল পুঁজারী পৌত্তলিক নাসারাদের
নয় কী? তাহলে আরবি ভাষাকে পবিত্র ভাষার মর্যাদা দেওয়া কেন? আসলে ভাষা ভাব প্রকাশের বাহন
মাত্র।
১৯৪৮ সালের ২৩ ফেব্রæয়ারিতে পাকিস্তান গণপরিষদের প্রথম অধিবেশনে পূর্ব বাংলার কংগ্রেস সদস্য
ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত উর্দু ও ইংরেজীর সাথে বাংলাকেও গণপরিষদের অন্যতম ভাষা হিসেবে ব্যবহার করার
দাবি উত্থাপন করেন। তিনি তাঁর প্রস্তাবে বলেছিলেন, পাকিস্তানের দুই-তৃতীয়াংশ অধিবাসীর মাতৃভাষা
বাংলাই গণপরিষদের অন্যতম ভাষা হওয়া উচিত। তিনি আরো জোর দিয়ে বলেন যে, পাকিস্তানের
সংখ্যাগরিষ্ঠ জনসাধারণের ভাষা হিসেবে বাংলা তার যোগ্য মর্যাদা পাবার দাবি নিশ্চয়ই জানাতে
পারে। উত্তরে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী লিয়াকত আলী খান ক্রুদ্ধ কণ্ঠে জানান যে, একটি মুসলিম রাষ্ট্র
হিসেবে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা হবে একমাত্র উর্দু এবং অন্য ভাষা নয়।
১৯৪৮ সালের মার্চে পাকিস্তানের প্রতিষ্টাতা মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ্ আসেন পূর্ব পাকিস্তানে। লক্ষ লক্ষ
জনতা হাজির হয়েছেন রেসকোর্স ময়দানে। পূর্ব বাংলা তখন মুখর, ছাত্র-জনতার একই আওয়াজ
রাষ্ট্রভাষা বাংলা চাই। সকলকে স্তম্ভিত করে জিন্নাহ ২১ মার্চ রেসকোর্সের বিশাল জনসভায় ঘোষণা
করলেন, উর্দুকে
রাষ্ট্রভাষা করার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘একথা আপনাদেরকে পারিষ্কার করে দেওয়া দরকার যে, পাকিস্ত
ানের রাষ্ট্রভাষা হবে উর্দু, অন্য কোন ভাষা নয়। এ ব্যাপারে যদি কেউ আপনাদেরকে বিভ্রান্ত করার
চেষ্টা করে তাহলে বুঝতে হবে যে, সে হচ্ছে রাষ্ট্রের শক্র।’ এ কথা বলার সঙ্গে সঙ্গে রেসকোর্সে
উপস্থিত জনতার ‘না, না’ ধ্বনি উচ্চারণ করেন। এই কঠিন আঘাতে জমায়েত লক্ষ মানুষ সেদিন
আশ্চর্য হয়েছিল। ২৪ মার্চ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে কার্জন হলে সমাবর্তন উৎসবে ভাষণ দিতে এসে জিন্নাহ্
পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা প্রশ্নে রেসকোর্সের কথাই পুনর্ব্যক্ত করে বলেন, ‘প্রিয় ছাত্রগণ আমি তোমাদের
জানাতে চাই যে, একমাত্র উর্দুই হবে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা।’ ছাত্ররা সমস্বয়ে এর প্রতিবাদ জানায়।
১৯৫০ সালের সেপ্টেম্বরে ‘মৌলিক নীতিমালা কমিটির’ প্রকাশিত রিপোর্ট-এ উর্দুকে পাকিস্তানের
একমাত্র রাষ্ট্রভাষা করার কথা বলা হয়। শতকরা ৫৬ জন লোকের মাতৃভাষাকে রাষ্ট্রভাষার মর্যাদা না
দেওয়ার অর্থ সেই ভাষাকে ধ্বংস করে দেওয়া। মাতৃভাষার প্রতি এই অবমাননার ফলে বাঙালিদের
মনে তীব্র অসন্তোষ দানা বেঁধে ওঠে। জনমনে ভীষণ ক্ষোভ দেখা দেয় আর ঐ অসন্তোষের মুখে
গভর্ণর জেনারেল নাজিমউদ্দিন ১৯৫২ সালের ২৬ শে জানুয়ারি ঘোষণা করেন, ‘উর্দুই হবে
পাকিস্তানের একমাত্র রাষ্ট্রভাষা।’ এই ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে প্রতিবাদের ঝড় উঠে এবং আন্দোলনের গতি
নতুন রূপ নেয়। নাজিমউদ্দিনের বক্তব্যে সংগ্রামী ছাত্র জনতা-বিক্ষোভে ফেটে পড়ে এবং ঐ উক্তির
প্রতিবাদে ৩০ জানুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ধর্মঘট পালিত হয়। বাংলা ভাষার বিরুদ্ধে সকল
ষড়যন্ত্রকারীদের পরিকল্পনা ধূলিস্যাৎ করার মানসে সচেতন ছাত্র সমাজ ‘রাষ্ট্রভাষা কর্মপরিষদ’ গঠন
করেন। কাজী গোলাম মাহবুব পরিষদের আহবায়ক নির্বাচিত হন। ২১শে ফেব্রæয়ারি ভাষা দিবস এবং
হরতাল পালনের সিদ্ধান্ত নেয় হয় এবং উক্ত দিবসকে সফল করে তোলার জন্য ৪ ফেব্রæয়ারি পল্টন
ময়দানে জনসভা অনুষ্ঠিত হয়।
রাষ্ট্রভাষা আন্দোলন চ‚ড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছে ১৯৫২ সালের একুশে ফেব্রæয়ারিতে। ঐ দিন অনুষ্ঠিতব্য
প্রাদেশিক পরিষদের অধিবেশনকে সামনে রেখে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীরা প্রদেশব্যাপী
আন্দোলনের রূপরেখা তৈরি করে। নুরুল আমিন সরকার ঐ দিন ১৪৪ ধারা জারী করে এবং মিছিল
শোভাযাত্রা নিষিদ্ধ ঘোষণা করে। কিন্তু সংগ্রামী ছাত্রসমাজ বীর বিক্রমে ১৪৪ ধারা উপেক্ষা করে
‘রাষ্ট্রভাষা বাংলা চাই’, ‘১৪৪ ধারা মানি না-মানব না’- ইত্যাদি úোগানে আকাশ বাতাস প্রকম্পিত
করে মিছিল বের করলে পুলিশ ছাত্র-জনতার উপর গুলি চালায়। পুলিশের গুলিতে বরকত, সালাম,
জব্বার, রফিক প্রমুখ ধর্মঘটী ছাত্র নিহত হলেন। এই মৃত্যুকে উপলক্ষ করে গণজাগরণের বিস্ফোরণ
ঘটে; দাবানলের মত সমগ্র দেশব্যাপী আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে। ২২ ও ২৩ ফেব্রæয়ারিতেও ঢাকায়
ধর্মঘট পালিত হয় এবং স্বতঃস্ফ‚র্তভাবে হাজার হাজার লোক ‘রাষ্ট্রভাষা বাংলা চাই’, ‘খুনী নুরুল
আমিনের ফাঁসি চাই’, ‘পুলিশী জুলুম চলবে না, চলবে না’, ইত্যাদি úোগান দিতে দিতে ঢাকার প্রধান ভাষা ভাব প্রকাশের বাহন মাত্র।
পথগুলো অতিক্রম করেআবদুল গাফফার চৌধুরী জনমনের সেই বিশেষ অবস্থাটি ধরে রেখেছেন
তাঁর অমর ’একুশের গানে’, ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রæয়ারি’। এই গানের সুরে সুরে
সেদিন বাংলার আকাশে-বাতাসে পথে ঘাটে নেমে এসেছিল বাঙালি জাতীয়তাবাদের নতুন চেতনা।
উলে খ্য যে, ভাষা আন্দোলনের মূল চালিকা শক্তি ছিল ছাত্র সমাজ। -
ভাষা আন্দোলনের গুরুত্ব
বায়ান্নর একুশে ফেব্রæয়ারি বাংলাদেশের ইতিহাসে এক গুরুত্বপূর্ণ ও গৌরবোজ্জ্বল অধ্যায়। একুশে
ফেব্রæয়ারি শুধু একটা ঘটনা নয়, এটা সমগ্র জাতির সর্বকালের জন্যে একটা চেতনা আর দিক
নির্দেশনার দিক। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ কোন আকস্মিক বা বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। ১৯৫২ সালের
ঐতিহাসিক ভাষা আন্দোলনের বীজ থেকে রাজনৈতিক ক্রমবিকাশের মধ্যদিয়ে এদেশের সংগ্রামী মানুষ
দুর্বার আন্দোলনের পথ ধরে কাঙিক্ষত স্বাধীনতা অর্জন করেছে। মহান একুশে ফেব্রæয়ারিতে
কয়েকজন তরুণ যুবক বুকের তাজা রক্ত ঢেলে গোড়াপত্তন ঘটিয়েছিল এই দেশ ও জাতির স্বাধিকার
চেতনার। ভাষা শহীদ ও ভাষা সৈনিকরা ত্যাগ ও তিতিক্ষার মাধ্যমে এটাই প্রমাণ করে গেছেন যে,
জাতীয় স্বকীয়তা জাতিসত্তার অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ। একুশে ফেব্রæয়ারির সেই মহালগ্ন থেকেই বাঙালির
সাংস্কৃতিক সংগ্রামের সূচনা এবং এ সংগ্রাম থেকেই বাঙালিদের কাছে স্পষ্ট হয়ে উঠেছিল পশ্চিমা
শাসকগোষ্ঠীর শোষণ ও নিপীড়নের আসল চেহারা। ভাষা আন্দোলন সেই শোষণ উৎপীড়নের বিরুদ্ধে
সংগ্রামী চেতনা যুগিয়েছে। একুশের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে এদেশের জনগণ ১৯৭১ সালে রুখে
দাঁড়িয়েছিল পাকিস্তানী অগণতান্ত্রিক ও স্বৈরাচারী শাসনের বিরুদ্ধে।
বস্তুতঃ যে অন্তর্নিহিত দুর্বলতা পাকিস্তানের ভাঙ্গন এবং স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার মূল কারণ, তার
বহিঃপ্রকাশ ঘটে পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার পর পরই, রাষ্ট্রভাষার প্রশ্নে। পূর্ব পাকিস্তানের ইতিহাসে ভাষা
আন্দোলন ছিল এক নতুন দিকদর্শন। এই আন্দোলন বাঙালিদের মনে যে বৈপ বিক চেতনা ও -
ঐক্যের উন্মেষ ঘটায় তা পরবর্তীকালে সকল আন্দোলনের প্রাণশক্তি ও অনুপ্রেরণা হিসেবে কাজ
করেছে। এই আন্দোলনের মধ্যদিয়ে ছাত্র-জনতা যে গণতান্ত্রিক আন্দোলনের সূচনা করে তা ক্রমশ
শক্তিশালী হতে থাকে। ১৯৫৪ সালে যুক্তফ্রন্টের ঐতিহাসিক বিজয়, ’৬২-র শিক্ষা আন্দোলন, ’৬৬-র
স্বাধিকার আন্দোলন, ’৬৯-র গণ-অভ্যুত্থান ও আইয়ুব শাহীর পতন, ’৭০-এর নির্বাচন এবং সর্বোপরি
১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে বিশেষভাবে প্রেরণা যুগিয়েছে ভাষা আন্দোলন। এই আন্দোলন বাঙালিকে
স্বাধীন জাতি হিসেবে জেগে ওঠার মন্ত্র দিয়েছে এবং এর সংগ্রামী শিখা তাঁদের চলার পথকে করেছে
আলোকিত। বাংলা ভাষাকে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে স্বীকৃতির সংগ্রাম অর্থনৈতিক, গণতান্ত্রিক, ধর্মনিরপেক্ষ
এবং জাতীয়তাবাদের প্রশ্নের সঙ্গে অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত ছিল। তাই ভাষা আন্দোলনের ইতিহাস
গণজাগরণের ইতিহাস।
সারকথা: ভাষা আন্দোলন বাংলাদেশের ইতিহাসে এক গুরুত্বপূর্ণ ও গৌরবোজ্জ্বল অধ্যায়। এটা সমগ্র
জাতির সর্বকালের জন্য একটা চেতনা আর দিক নির্দেশনার দিক। ভাষা আন্দোলন এদেশবাসীকে
স্বৈরাচারী শাসন ও সাম্রাজ্যবাদী শোষণ ব্যবস্থার অবসানকল্পে প্রতিবাদ করতে সাহস যুগিয়েছে। ভাষা
আন্দোলনই বাঙালি জাতীয়তাবাদের উন্মেষ ঘটিয়েছে। ১৯৫২ সালের পরবর্তীকালে যে কোন ধরনের আন্দোলন বা সংগ্রাম ভাষা আন্দোলনের দ্বারা প্রভাবিত হয়েছে।
১. ১৯৪৭ সালে উর্দুকে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা করার প্রস্তাব করেনক. আলীগড় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য;
খ. ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য;
গ. কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য;
ঘ. করাচী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য।
২. তমুদ্দন মজলিস প্রতিষ্ঠা করেনক. ড. মুহাম্মদ শহীদ উল্লাহ;
খ. অধ্যাপক আবুল কাসেম;
গ. ফররুখ আহমদ;
ঘ. ড. এনামুল হক।
৩. ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত কোন দলের সদস্য ছিলেন?
ক. আওয়ামী লীগের;
খ. মুসলিম লীগের;
গ. কংগ্রেসের;
ঘ. কম্যুনিস্ট পার্টির।
৪. ১৯৫২ সালে রাষ্ট্রভাষা কর্মপরিষদের আহবায়ক ছিলেনক. শেখ মুজিবুর রহমান;
খ. কাজী গোলাম মাহবুব;
গ. তাজউদ্দিন আহমদ;
ঘ. আতাউর রহমান খান।
রচনামূলক প্রশ্ন
১. ভাষা আন্দোলনের পটভ‚মি আলোচনা করুন।
২. ১৯৫২ সালের ইতিহাসে ভাষা আন্দোলনের গুরুত্ব বর্ণনা করুন।
উত্তরঃ ১ ক, ২ খ, ৩ গ, ৪ খ।

FOR MORE CLICK HERE
এইচএসসি বাংলা নোট ১ম পত্র ও ২য় পত্র
ENGLISH 1ST & SECOND PAPER
এইচএসসি আইসিটি নোট
এইচএসসি অর্থনীতি নোট ১ম পত্র ও ২য় পত্র
এইচএসসি পৌরনীতি ও সুশাসন ১ম পত্র
এইচএসসি পৌরনীতি নোট ২য় পত্র
এইচএসসি সমাজকর্ম নোট ১ম পত্র
এইচএসসি সমাজকর্ম নোট ২য় পত্র
এইচএসসি সমাজবিজ্ঞান নোট ১ম পত্র ও ২য় পত্র
এইচএসসি ইতিহাস নোট ১ম পত্র
এইচএসসি ইতিহাস নোট ২য় পত্র
এইচএসসি ইসলামের ইতি. ও সংস্কৃতি নোট ১ম পত্র
এইচএসসি ইসলামের ইতি. ও সংস্কৃতি নোট ২য় পত্র
এইচএসসি যুক্তিবিদ্যা ১ম পত্র ও ২য় পত্র
এইচএসসি ভূগোল ও পরিবেশ নোট ১ম পত্র ও ২য় পত্র
এইচএসসি ইসলামিক স্টাডিজ ১ম ও ২য় পত্র

Copyright © Quality Can Do Soft.
Designed and developed by Sohel Rana, Assistant Professor, Kumudini Government College, Tangail. Email: [email protected]