জবাবদিহিতা, সুশাসন, বিচার বিভাগীয় নিয়ন্ত্রণ, ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণ, নিরপেক্ষ
প্রশাসন।
আমলাতন্ত্রের জবাবদিহিতা ও সুশাসন
আমলাতন্ত্রের জবাবদিহিতা বলতে বুঝায় অধ:স্তন কর্তৃক প্রশাসনের ঊধ্বর্তন কর্তৃপক্ষের বরাবরে নিজ-নিজ
কাজকর্মের কৈফিয়ত দেওয়া। প্রশাসনের জবাবদিহিতা নিশ্চিত হলে সুশাসন প্রতিষ্ঠা পায়। নি¤েœ আমলাতন্ত্রের
জবাবদিহিতা ও সুশাসন বাস্তবায়নের বিষয়গুলো আলোচনা করা হল:
১। আইনসভার মাধ্যমে জবাবদিহিতা: আমলাতন্ত্রকে আইনসভার মাধ্যমে জবাবদিহিতার মধ্যে এনে সুশাসন বাস্তবায়ন
করা যায়। আইনসভার যে সকল সদস্য প্রশাসনের সাথে জড়িত তাদেরকে আইনসভায় বিভিন্ন প্রশ্ন-উত্তর পর্বের মাধ্যমে
জবাবদিহি করতে হয়। এর মাধ্যমে সরকারের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত হয় এবং সুশাসন শক্তিশালী হয়।
২। প্রশাসনিক জবাবদিহিতা: আমলাতন্ত্রে প্রশাসনিক জবাবদিহিতার মাধ্যমে সুশাসন নিশ্চিত করা যায়। প্রশাসনে পদক্রম
অনুসারে অধঃস্তন কর্তৃপক্ষ তার কাজ-কর্মের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট দায়ী থাকেন। জনসেবার সাথে সম্পৃক্ত
প্রশাসনিক কর্তৃপক্ষকে তদারকি করেন ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ। এর মাধ্যমে সেবার মান বৃদ্ধি পায় এবং সুশাসন প্রতিষ্ঠিত হয়।
৩। বিচার বিভাগীয় নিয়ন্ত্রণ: আমলাতন্ত্রকে বিচার বিভাগীয় নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে জবাবদিহিতার মধ্যে এনে সুশাসন প্রতিষ্ঠা
করা যায়। আমলাতন্ত্র আইন বিভাগ দ্বারা যেমন নিয়ন্ত্রিত তেমনি বিচার বিভাগ দ্বারাও নিয়ন্ত্রিত। আমলাদের দ্বারা কোন
ব্যক্তির বা প্রতিষ্ঠানের অধিকার ক্ষুন্ন হলে উক্ত ব্যক্তি বিচার বিভাগ বা আইনের আশ্রয়লাভ করতে পারেন। আদালত ন্যায়
বিচার প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে সমাজে সুশাসন বাস্তবায়ন করে।
৪। রাজনৈতিক জবাবদিহিতা: আমলাতন্ত্রকে রাজনৈতিক জবাবদিহিতার মধ্যে অন্তভর্‚ক্তকরণের মাধ্যমে সুশাসন প্রতিষ্ঠা
করা যায়। আমলারা প্রকৃত পক্ষে রাজনৈতিক কর্তৃপক্ষের আদেশ বাস্তবায়ন করে থাকে। রাজনৈতিক কর্তৃপক্ষ আমলাদের
কাজের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করলে প্রশাসনে স্বচ্ছতা, নিরপেক্ষতা ও কাজের গতিশীলতা বৃদ্ধি পাবে।
৫। নাগরিকদের মাধ্যমে জবাবদিহিতা: আমলাতন্ত্রকে নাগরিকদের মাধ্যমে জবাবদিহিতার আওতায় নিয়ে এসে সুশাসন
প্রতিষ্ঠা সম্ভব। নাগরিকদেরকে বেশি সংখ্যক সরকারি কাজের সাথে সম্পৃক্ত করতে পারলে আমলাতন্ত্রকে আরো বেশি
জবাবদিহিতার মধ্যে নিয়ে আসা যাবে। সাধারণ জনগণ যত বেশি সরকারি কাজের সাথে সম্পৃক্ত হবে, আমলাতন্ত্র তত
বেশি জবাবদিহিতায় বাধ্য হবে ফলে সমাজে সুশাসন প্রতিষ্ঠা পাবে।
৬। ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণ: বিকেন্দ্রীকরনের মাধ্যমে আমলাতন্ত্রকে কেন্দ্র থেকে প্রান্তে পৌঁছে দিতে হবে। এর মাধ্যমে
সরকারি কাজের দীর্ঘসূত্রিতা হ্রাস পাবে। জনগণ আরো বেশি আমলাদের কাছে আসার সুযোগ পাবে। জনগণের সমস্যার
সমাধান দ্রæত হবে। জনগণের ক্ষোভ হ্রাস পেয়ে সুশাসন প্রতিষ্ঠা পাবে।
৭। নিরপেক্ষতা প্রমাণ: নিরপেক্ষ আমলাতন্ত্র সুশাসনের জন্য বিশেষভাবে প্রয়োজন। আমলাদের নিরপেক্ষতা সুশাসনকে
শক্তিশালী করে। প্রশাসনের জবাবদিহিতা আমলাদের নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করে সুশাসন প্রতিষ্ঠা করে।
৮। দুর্নীতি হ্রাস: রাষ্ট্রে সুশাসন প্রতিষ্ঠার অন্যতম বড় বাধা দুর্নীতি। প্রশাসনিক জবাবদিহিতা সরকারি আমলাদের দুর্নীতি
হ্রাস করতে পারে। দুর্নীতি হ্রাস পেলে কাজের স্থবিরতা দূর হবে এবং সুশাসন নিশ্চিত হবে।
পরিশেষে বলা যায়, আধুনিক কল্যাণমূলক রাষ্ট্রব্যবস্থায় সুশাসন প্রতিষ্ঠার জন্য আমলাতন্ত্রের জবাবদিহিতা অত্যাবশ্যক।
সুশাসন ব্যতীত রাষ্ট্রের সার্বিক উন্নয়ন ও জনগণের কল্যাণ সম্ভব নয়। আর আমলাতন্ত্রের জবাবদিহিতা ব্যতীত সুশাসন
প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব নয়।
সার-সংক্ষেপ
জবাবদিহিতা হল সুশাসনের চাবিকাঠি। সুশাসন নিশ্চিতকরণের জন্য সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রাখতে পারে জবাবদিহিতা।
আমলাতান্ত্রিক জবাবদিহিতা, পেশাগত জবাবদিহিতা, আইনগত জবাবদিহিতা, রাজনৈতিক জবাবদিহিতা প্রভৃতি সুনিশ্চিত
হলে দুর্বল ও ভঙ্গুর শাসন ব্যবস্থার লক্ষণগুলো পর্যায়ক্রমে দূরীভূত হবে। সেখানে সুশাসন প্রতিষ্ঠিত হবে। আমলাতন্ত্রের
জবাবদিহিতা ও সুশাসন প্রতিষ্ঠিত হলে সে রাষ্ট্রের সার্বিক কল্যাণ সাধন সুনিশ্চিত।
পাঠোত্তর মূল্যায়ন-১১.৩
সঠিক উত্তরের পাশে টিক (√) চিহ্ন দিন
১। কর্মকর্তা-কর্মচারিগণ কার নিকট জবাবদিহি করতে বাধ্য?
ক) জনগণের নিকট খ) প্রধানমন্ত্রীর নিকট
গ) ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার নিকট ঘ) মন্ত্রীর নিকট
২। কোন নীতি অনুসারে আমলাতন্ত্রে বিভিন্ন পদের শ্রেণিবিন্যাস ও সংগঠন করা হয়?
ক) পদসোপান নীতি খ) দলীয় নীতি
গ) রাষ্ট্রীয় নীতি ঘ) রাষ্ট্রীয় মূলনীতি
৩। অনুন্নত বিশ্বে আমলারা নিজেদেরকে কী মনে করেন?
ক) জনগণের সেবক খ) জনগণের প্রভু
গ) জনগণের রক্ষক ঘ) জনগণের বন্ধু
৪। পেশাগত দায়িত্ব হিসেবে আমলাগণ বিভিন্ন কার্যক্রম পালন করেন। তাদের কাজকে কি হিসেবে মূল্যায়ন করা যায়?
ক) প্রভুত্ব করা খ) সরকারের ফরমায়েশ খাটা
গ) দলের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করা ঘ) জনসেবা করা
FOR MORE CLICK HERE
এইচএসসি বাংলা নোট ১ম পত্র ও ২য় পত্র
ENGLISH 1ST & SECOND PAPER
এইচএসসি আইসিটি নোট
এইচএসসি অর্থনীতি নোট ১ম পত্র ও ২য় পত্র
এইচএসসি পৌরনীতি ও সুশাসন ১ম পত্র
এইচএসসি পৌরনীতি নোট ২য় পত্র
এইচএসসি সমাজকর্ম নোট ১ম পত্র
এইচএসসি সমাজকর্ম নোট ২য় পত্র
এইচএসসি সমাজবিজ্ঞান নোট ১ম পত্র ও ২য় পত্র
এইচএসসি ইতিহাস নোট ১ম পত্র
এইচএসসি ইতিহাস নোট ২য় পত্র
এইচএসসি ইসলামের ইতি. ও সংস্কৃতি নোট ১ম পত্র
এইচএসসি ইসলামের ইতি. ও সংস্কৃতি নোট ২য় পত্র
এইচএসসি যুক্তিবিদ্যা ১ম পত্র ও ২য় পত্র
এইচএসসি ভূগোল ও পরিবেশ নোট ১ম পত্র ও ২য় পত্র
এইচএসসি ইসলামিক স্টাডিজ ১ম ও ২য় পত্র