নিরক্ষরতা দূরীকরণে বাংলাদেশ সরকারের গৃহীত প্রচেষ্টাসমূহ বর্ণনা করুন।

বাংলাদেশে নিরক্ষরতার স্বরূপ
আধুনিককালে নিরক্ষরতা মানুষের জীবনের একটি অভিশাপ। উন্নত বিশ্বের বিশেষ করে ইউরোপ,
উত্তর আমেরিকা এবং পূর্ব এশিয়ার দেশগুলো অত্যন্ত সাফল্যের সাথে নিরক্ষরতা সমস্যার সমাধান
করেছে। পক্ষান্তরে ল্যাটিন আমেরিকা, আফ্রিকা ও দক্ষিণ এশিয়ায় এ সমস্যা অত্যন্ত প্রকট।
জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচীর অর্থায়নে ইসলামাবাদাস্থ মানব উন্নয়ন কেন্দ্রের ১৯৯৮ সালের দক্ষিণ
এশিয়ায় মানব উন্নয়ন শীর্ষক রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে যে, দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে
বাংলাদেশের শতকরা ৬২ ভাগ, ভারতের ৪৮ ভাগ, পাকিস্তানের ৬২ ভাগ, নেপালের ৭২ ভাগ,
শ্রীলংকার ১০ ভাগ, ভ‚টানের ৫৮ ভাগ এবং মালদ্বীপের ৭ ভাগ মানুষ নিরক্ষর। এ সব দেশগুলোতে
মহিলাদের মধ্যে নিরক্ষরতার হার আরো বেশী। উক্ত রিপোর্টে দেখা যায়, দক্ষিণ এশিয়ার প্রাপ্ত বয়স্ক
মহিলাদের ক্ষেত্রে নিরক্ষরতার হার বাংলাদেশে শতকরা ৭৪ ভাগ, ভারতে ৬২ ভাগ, পারিস্তানে ৭৬
ভাগ, নেপালে ৮৬ ভাগ, শ্রীলংকায় ১৩ ভাগ, ভ‚টানে ৭২ ভাগ এবং মালদ্বীপে ৭ ভাগ। প্রাপ্ত তথ্য
অনুযায়ী শ্রীলংকা এবং মালদ্বীপে স্বাক্ষরতার হার মোটামুটি সন্তোষজনক। বালাদেশ, ভারত, পাকিস্ত
ান, নেপাল ও ভ‚টানের ক্ষেত্রে তা অত্যন্ত হতাশাজনক।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা অধিদপ্তর হতে ১৯৯৭ সালে প্রকাশিত
উলে খিত তথ্য অনুযায়ী বাংলাদেশের প্রাপ্ত বয়স্কদের (১৫ বৎসরের উর্দ্ধে) মধ্যে স্বাক্ষরতার হার -
১৯৭৪ সালে ছিল শতকরা ২৫.৮ ভাগ, ১৯৮১ সালে ২৯.২ ভাগ, ১৯৯১ সালে ৩৫.৩ ভাগ এবং
১৯৯৭ সালে ৪৭.৩ ভাগ। অর্থাৎ ১৯৭৪ থেকে ১৯৯৭ এই ২৩ বৎসরে সাক্ষরতার হার বেড়েছে মাত্র
২১.৫% ভাগ। গত পঞ্চাশ বছরে শহরে বসবাসকারী মানুষের সংখ্যা, গণ মাধ্যমের বিকাশ,
অকৃষিম‚লক কাজে অংশগ্রহণকারী মানুষের সংখ্যা যে হারে বেড়েছে, সাক্ষরতার হার বাংলাদেশে সে
হারে বাড়েনি, বেড়েছে তার চেয়েও কম হারে। তবে এ সময়কালে নারীদের স্বাক্ষরতা এবং শিক্ষার
হার বেড়েছে তাৎপর্যপূর্ণ মাত্রায়। লক্ষ্যণীয় যে, ১৯৪১ সালে নারীদের সাক্ষরতার হার ছিল ৭.৯%
ভাগ। ১৯৯১ সালে তা ২৫.৪% ভাগে উন্নীত হয়েছে। অথচ পুরুষদের মধ্যে এ হার ১৮.৮% থেকে
৩৮.৯% এ উপনিত হয়েছে। অর্থাৎ গত পঞ্চাশ বছরে পুরুষদের সাক্ষরতার হার বেড়ে হয়েছে প্রায়
দ্বিগুণ, আর মেয়েদের হয়েছে প্রায় তিনগুণ।
এ প্রসংগে উল্লেখ করা প্রয়োজন যে, বাংলাদেশের উপজাতীয়দের মধ্যে চাকমাদের সাক্ষরতার হার
৭২% ভাগ। অথচ লুসাই, বোম প্রভৃতি উপজাতির মধ্যে এ হার ১৫% ভাগ এবং মুরং ও খুমীদের
মধ্যে মাত্র ৫% ভাগ। এ থেকে স্পষ্ট যে, চাকমা উপজাতি শিক্ষাক্ষেত্রে অনেক অগ্রসর। তবে অন্যান্য
উপজাতি জনগোষ্ঠীর মধ্যেকার স্বাক্ষরতার নি¤œহার অত্যন্ত উদ্বেগজনক।
শহরে এবং গ্রামের মধ্যে সাক্ষরতার ক্ষেত্রে গ্রামের মানুষ শহরের তুলনায় অনেক পিছনে পড়ে
রয়েছে। ১৯৯১ সালের আদমশুমারিতে উল্লেখিত স্থানভিত্তিক সাক্ষরতার তুলনামূলক হিসেবে দেখা
যায়, শহুরে জনসংখ্যার মধ্যে সাক্ষরতার হার ৪৯.৭% ভাগ আর গ্রামের জনসংখ্যার মধ্যে এ হার মাত্র
২৭.৮% ভাগ। এ থেকে স্পষ্ট যে, ্সাক্ষরতার ক্ষেত্রে গ্রাম ও শহরের জনসাধারণের মধ্যে বিস্তর
ব্যবধান বিদ্যমান রয়েছে। পঞ্চম পঞ্চ-বার্ষিক পরিকল্পনায় নারী ও পুরুষ এবং গ্রাম ও শহরের
মধ্যেকার সাক্ষরতার ব্যবধান কমিয়ে আনার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। এছাড়া, ২০০২ সালের মধ্যে
বয়স্ক সাক্ষরতার হার ৮০ শতাংশে উন্নীত করার প্রত্যাশা ব্যক্ত করা হয়েছে। এ সব লক্ষ্য ও আকাঙ্খা
বাস্তবায়িত হলে নিরক্ষরতার অভিশাপ থেকে বাংলাদেশ অনেকাংশে মুক্ত হবে বলে আশা করা যায়।
তবে এক্ষেত্রে আরো উচ্চাভিলাশী পরিকল্পনা গ্রহণের প্রয়োজন আছে। কেননা শিক্ষাই জাতির
মেরুদন্ড। কাজেই শিক্ষা ক্ষেত্রে অগ্রগতি অর্জনের মধ্যে দিয়েই জাতির উন্নয়ন নিশ্চিত করতে হবে।
বাংলাদেশে নিরক্ষরতার কারণ
বিভিন্ন কারণে বাংলাদেশে নিরক্ষরতা সমস্যা এখনও ্এতো ব্যাপকভাবে রয়ে গেছে। আর্থ-সামাজিক
ব্যবস্থা, রাষ্ট্রীয় নীতি ও ধর্মীয় মূল্যবোধ ইত্যাদি বিভিন্ন কারণে নিরক্ষরতার অভিশাপ থেকে এ দেশের
মানুষ আজো মুক্তি পায় নি। মুলতঃ যেসব কারণকে নিরক্ষরতার জন্য দায়ী করা যায় তা হলোবাংলাদেশের ভ‚-প্রকৃতি, আবহাওয়া ও জলবায়ু। এ দেশে অতি সহজে ফসল ফলিয়ে জীবন নির্বাহ
করা যায়। সে কারণে সনাতন পদ্ধতিতে চাষ করে কৃষি উৎপাদন ব্যবস্থা আজও চালু আছে। এ
ধরনের কৃষি উৎপাদন পদ্ধতির জন্য প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার প্রয়োজন হয় না। ফলে সনাতন কৃষি নির্ভর
অর্থনীতির এদেশে সাক্ষরতার প্রয়োজনীয়তাই অনেক মানুষ অনুভব করে নি। এ কারণে নিরক্ষরতাও
সহজে দূর হয় নি।
বাংলাদেশ দারিদ্র্যপীড়িত একটি দেশ। বিশেষ করে গ্রামীণ দারিদ্র্য এখানে অত্যন্ত প্রকট। ফলে দরিদ্র
মানুষের পক্ষে তাদের সন্তানদের শিক্ষার ব্যয় বহন করা সম্ভব হয় না। এ ছাড়া, দরিদ্র পিতা-মাতা
তাদের শিশু সন্তানদের কৃষি কাজে কিংবা সামান্য আয়-উপার্জনের জন্য দিনমজুরী কিংবা অন্য কোন
ধরনের কাজে নিয়োজিত করে। ফলে বেঁচে থাকার প্রয়োজন মিটাতে গিয়ে সেই শিশুর পক্ষে লেখাপড়া
করা সম্ভব হয় না। ফলে সে নিরক্ষর থেকে যায়।
প্রাক-ব্রিটিশ যুগে গ্রাম ছিল মূলতঃ স্থবির সমাজ-সংগঠন। সামাজিক গতিশীলতা না থাকায় এবং
বর্ণপ্রথা-ভিত্তিক শ্রম বিভাজনের কারণে উত্তরাধিকার সূত্রে পেশা নির্ধারিত হতো। ফলে পেশাগত
প্রয়োজনে যোগ্যতা অর্জনের কোন অবকাশ ছিল না। এ কারণে তৎকালে শিক্ষা বিস্তার ঘটেনি। ব্রিটিশ
আমলে আধুনিক শিক্ষার বিকাশ ঘটলেও তা ছিল উচ্চ শ্রেণীর মধ্যে সীমাবদ্ধ। ফলে সাধারণ মানুষ
শিক্ষার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হয়েছে। অর্থাৎ আমাদের সমাজের ঐতিহাসিক বিকাশ প্রক্রিয়ার ধারাটিই
নিরক্ষরতার অন্যতম কারণ।
শিক্ষা স¤প্রসারণের জন্য কিংবা নিরক্ষরতা দূরীকরণের জন্য যে ধরনের রাষ্ট্রীয় উদ্যেগ প্রয়োজন তার
অভাবও এ সমস্যার জন্য-অনেকটা দায়ী। ইউনেস্কোর মতে, জাতীয় আয়ের শতকরা ৭ ভাগ বা
জাতীয় বাজেটের শতকরা ৩০ ভাগ বাংলাদেশের শিক্ষাখাতে ব্যয় করা প্রয়োজন। সেখানে ১৯৮৪-৮৫
সালে শিক্ষাখাতে ব্যয় করা হয়েছে জাতীয় আয়ের শতকরা ১.৪৮ ভাগ বা জাতীয় বাজেটের ৮.০৪%
ভাগ, ১৯৮৫-৮৬ সালে জাতীয় আয়ের শতকরা ১.৩৯ ভাগ বা জাতীয় বাজেটের ৮.০৮% ভাগ এবং
১৯৮৬-৮৭ সালে জাতীয় আয়ের ২.০২% ভাগ বা জাতীয় বাজেটের ৯.৯৪% ভাগ। বর্তমানে
শিক্ষাখাতে ব্যয় করা হচ্ছে জাতীয় আয়ের শতকরা ৩ ভাগ বা জাতীয় বাজেটের ১৭% ভাগ মাত্র। এ
থেকে দেখা যায়, শিক্ষা খাতে সম্পদের প্রবাহ বৃদ্ধির ক্ষেত্রে রাষ্ট্রীয় নীতি শিক্ষা স¤প্রসারণ ও দ্রæত
গতিতে নিরক্ষরতা দূরীকরণে সহায়ক নয়। অর্থাৎ রাষ্ট্রীয় পরিকল্পনা ও শিক্ষানীতি নিরক্ষরতা সমস্যার
জন্য দায়ী।
বাংলাদেশে আনুষ্ঠানিক, অনানুষ্ঠানিক ও উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা কার্যক্রম যতটুকু স¤প্রসারিত হওয়া
দরকার তা হয় নি। এজন্য সাক্ষরতা অর্জনে কিংবা গ্রহণে ইচ্ছুক ব্যক্তিদের একটি অংশও সাক্ষরতা
অর্জন বা শিক্ষার সুযোগ থেকে বঞ্চিত রয়েছে। ছেলে ও মেয়ে, গ্রাম ও শহর, ধনী ও দরিদ্র ইত্যাদি
ব্যবধানকে বিবেচনায় এনে গণশিক্ষা ও প্রাথমিক শিক্ষা প্রচলন করা হয় নি। ফলে এক্ষেত্রে আশানুরূপ
সাফল্যও আসে নি। ধর্মীয় গোড়ামী ও সামাজিক কুসংস্কার নারীদের শিক্ষা থেকে দূরে সরিয়ে
রেখেছে। রক্ষণশীল পরিবারের মেয়েরা আজও পর্দা-প্রথার কারণে শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। মেয়ে
শিক্ষার্থীদের সামাজিক নিরাপত্তার অভাব, বাল্য বিবাহ ইত্যাদিও নারীদেরকে নিরক্ষরতার অন্ধকারে
নিমজ্জিত করেছে।
এ সব কারণ ছাড়াও শিক্ষা কার্যক্রমকে আকর্ষণীয় না করা, ব্যবহারিক শিক্ষার প্রতি কম গুরুত্ব প্রদান,
পাঠদান পদ্ধতির ক্রটি, শিক্ষা উপকরণের অভাব, শিক্ষক-শিক্ষার্থীর অনুপাত যুক্তিসঙ্গত না হওয়া,
যথার্থ পরিদর্শনের অভাব, শিশু শিক্ষার্থীদের এবং শিক্ষা গ্রহণে আগ্রহী শিশুদের প্রতি অভিভাবকদের
উদাসীনতা ইত্যাদি কারণও শিক্ষা বিস্তারে সংকট সৃষ্টি তথা নিরক্ষরতা সমস্যার জন্য কম-বেশী দায়ী।
নিরক্ষরতা দূরীকরণে সরকারী প্রচেষ্টা
বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর সংবিধানে সার্বজনীন শিক্ষার অঙ্গীকার ঘোষণা করা হয়। ১৯৭২ সালে
গঠিত কুদরাত-ই-খুদা শিক্ষা কমিশনের রিপোর্টেও শিক্ষা বিস্তারের প্রতি গুরুত্বারোপ করা হয়েছিল।
এছাড়া প্রতিটি পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় শিক্ষাকে অগ্রাধিকার প্রদানের প্রয়োজনীয়তা স্বীকৃত হয়েছে এবং
পর্যায়ক্রমে শিক্ষা খাতে ব্যয় বৃদ্ধি ও শিক্ষার স¤প্রসারণ হযেছে। বিশেষ করে তৃতীয় পঞ্চবার্ষিক
পরিকল্পনায় গণশিক্ষা কর্মসূচি গৃহীত হয়। চতুর্থ পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় এর সাথে যুক্ত হয়
উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা কর্মসূচী। কিন্তু এ সব কর্মসূচি সাক্ষরতা বৃদ্ধির ক্ষেত্রে খুব সফল হয় নি। তবে
নব্বইয়ের দশকের শুরু থেকে সাক্ষরতার হার বৃদ্ধি করার ব্যাপারে ব্যাপক প্রচেষ্টা নেয়া হয়। এর
সাথে যুক্ত হয় আন্তর্জাতিক উৎসাহ ও সহযোগিতা। এ পর্যায়ে সূচনা হয় সবার জন্য শিক্ষা
আন্দোলনের। ১৯৯২ ও ১৯৯৫ সালে যথাক্রমে গঠন করা হয় প্রাথমিক ও গণশিক্ষা বিভাগ নামে
একটি পৃথক মন্ত্রণালয় এবং উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা অধিদপ্তর নিরক্ষরতা থেকে মুক্তি পাওয়ার লক্ষ্যে ও
সবার জন্য শিক্ষা আন্দোলনের অংশ হিসেবে ২০০০ সাল নাগাদ অর্জনের জন্য ৪টি জাতীয় লক্ষ্যমাত্রা
স্থির করা হয়েছিল।
১. প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তির হার শতকরা ৯৫ শতাংশে উন্নীত করা ;
২. ছাত্রীভর্তির হার শতকরা ৯৪ শতাংশে উন্নীত করা ;
৩. প্রাথমিক শিক্ষা পর্যায়ে ঝরে পড়ার হার শতকরা ৬০ শতাংশ থেকে শতকরা ৩০ ভাগে হ্রাস করা এবং ৪. বয়স্ক সাক্ষরতার হার শতকরা ৬২ শতাংশে উন্নীত করা।
পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় জাতীয় এই লক্ষ্যমাত্রার সাথে সঙ্গতিপূর্ণ করে গণশিক্ষা সম্পর্কিত নিæোক্ত
লক্ষ্যমাত্রা স্থির করা হয়েছে ঃ
-বয়স্ক সাক্ষরতার হার ২০০২ সালের মধ্যে ৮০ শতাংশে উন্নীত করা ;
-প্রযুক্তি দক্ষতা, উদ্যোক্তা-দক্ষতা ও নেতৃত্বের দক্ষতা বাড়িয়ে শিক্ষার্থীদের ক্ষমতায়ন করা ;
-শিক্ষার্থীদের বর্ণসাক্ষরতা, সংখ্যা সাক্ষরতা ও যোগাযোগ সংক্রান্ত সাক্ষরতা বাড়ানো ;
-গ্রাম ও শহরাঞ্চলে সাক্ষরতার ক্ষেত্রে নারী-পুরুষ বৈষম্য কমানো ;
-নব্য সাক্ষরদের জন্য অব্যাহত শিক্ষা কর্মসূচি চালু করা ;
-দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের মধ্যে সাক্ষরতার বৈষম্য হ্রাস করা ;
উল্লেখিত এসব সরকারী পদক্ষেপ সফল হলে এবং পাশাপাশি বেসরকারী প্রচেষ্টা স¤প্রসারিত হলে
বাংলাদেশ নিরক্ষরতার অভিশাপ থেকে মুক্ত হবে বলে আশা করা যায়।
নিরক্ষরতা দূরীকরণে গ্রহণযোগ্য পদক্ষেপ
বাংলাদেশ থেকে নিরক্ষরতা দূর করার ক্ষেত্রে যে সব পদক্ষেপ গ্রহণ করা যায় তা হলো ঃ
জাতীয় বাজেটে শিক্ষা খাতে ব্যয় বরাদ্দ অন্ততঃ শতকরা ৩০ ভাগে উন্নীত করা ;
শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা দ্বিগুণ করা ;
গরীব শিক্ষার্থীদের পরিবারকে শিক্ষার বিনিময়ে পর্যাপ্ত খাদ্য প্রদান ;
শিক্ষার্থীদের মধ্যে যারা অত্যন্ত দরিদ্র তাদের বিনামূল্যে শিক্ষা উপকরণ সরবরাহ ও ভাতা প্রদান ;
মেয়ে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা বিধানের কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ ও বাল্য বিবাহ বন্ধ করা ;
শিক্ষক প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা ও বিদ্যালয় পরিদর্শনের ব্যবস্থাকে কার্যকর করা ;
বয়স্ক নিরক্ষরদের সাক্ষরতার বিনিময়ে কাজের ব্যবস্থা গ্রহণ করা ;
উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা কার্যক্রমে বেসরকারী সাহায্য সংস্থাগুলোকে (এন.জি.ও) সক্রিয় করা ;
শিক্ষার উপযোগিতা সম্পর্কে গণসচেতনতা বৃদ্ধি করা এবং
গণমাধ্যমকে শিক্ষা বিস্তারের মাধ্যম হিসেবে কার্যকরভাবে ব্যবহার করা।
সারকথাঃ বাংলাদেশের অধিকাংশ মানুষ নিরক্ষর। এর মধ্যে শহরের তুলনায় গ্রামের এবং পুরুষের
তুলনায় নারীরেদর মধ্যে নিরক্ষরতার হার বেশী। বিভিন্ন কারণে বাংলাদেমের অধিকাংশ মানুষ এখনও নিরক্ষরতার অন্ধকারে নিমজ্জিত। বিশেষ করে ব্যাপক দারিদ্র, ধর্মীয় মূল্যবোধ এবং রাষ্ট্রীয় অবহেলা
এর জন্য তবে কিছুকাল ধরে নিরক্ষরতা দ্রæত দূরীকরণের জন্য সরকারী ও বেসরকারীভাবে উদ্যোগ
গ্রহণ করা হয়েছে। প্রতিষ্ঠানিক ও অ-প্রাতিষ্ঠানিক এই উভয় কার্যক্রমের মাধ্যমে নিরক্ষর জনগোষ্ঠীকে
অক্ষরজ্ঞান প্রদানের সেসব প্রচেষ্টা নেয়া হয়েছে তাতে আশা করা যায় বাংলাদেশে এ সমস্যা
সমাধানের ক্ষেত্রে শীঘ্রই তাৎপর্যপূর্ণ অগ্রগতি সাধিত হবে।
সঠিক উত্তরটি লিখুন।
১. মানব উন্নয়ন রিপোর্ট ১৯৯৮তে বাংলাদেশের নিরক্ষরতার শতকরা হার কত ?
ক. ৬২ ভাগ;
খ. ৪৮ ভাগ;
গ. ৩৮ ভাগ;
ঘ. ৫২ ভাগ।
২. ১৯৭৪ থেকে ১৯৯৭ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশে সাক্ষরতার হার শতকরা কতভাগ বেড়েছে ?
ক. ৩৮.৫ ভাগ;
খ. ১৮.০ ভাগ;
গ. ২১.৫ ভাগ;
ঘ. ২৬.৫ ভাগ।
৩. বাংলাদেশের উপজাতীয়দের মধ্যে চাকমাদের সাক্ষরতার হার কত?
ক. ৪৫% ভাগ;
খ. ৫০% ভাগ;
গ. ৫৬% ভাগ;
ঘ ৭২% ভাগ।
সংক্ষিপ্ত উত্তরমূলক প্রশ্ন
১. নারী ও পুরুষদের মধ্যে সাক্ষরতার হার বৃদ্ধির তুলনামূলক চিত্র উল্লেখ করুন।
২. সবার জন্য শিক্ষা আন্দোলনের অংশ হিসেবে ২০০০ সাল নাগাদ যে চারটি লক্ষ্য অর্জনের কথা
বলা হয়েছে তা কি কি ?

রচনামূলক প্রশ্ন ঃ
১. বাংলাদেশে নিরক্ষরতা সমস্যার কারণসমূহ চিহ্নিত করুন।
২. নিরক্ষরতা দূরীকরণে বাংলাদেশ সরকারের গৃহীত প্রচেষ্টাসমূহ বর্ণনা করুন।
উত্তরমালাঃ ১. ক, ২. গ, ৩. ঘ।

FOR MORE CLICK HERE
এইচএসসি বাংলা নোট ১ম পত্র ও ২য় পত্র
ENGLISH 1ST & SECOND PAPER
এইচএসসি আইসিটি নোট
এইচএসসি অর্থনীতি নোট ১ম পত্র ও ২য় পত্র
এইচএসসি পৌরনীতি ও সুশাসন ১ম পত্র
এইচএসসি পৌরনীতি নোট ২য় পত্র
এইচএসসি সমাজকর্ম নোট ১ম পত্র
এইচএসসি সমাজকর্ম নোট ২য় পত্র
এইচএসসি সমাজবিজ্ঞান নোট ১ম পত্র ও ২য় পত্র
এইচএসসি ইতিহাস নোট ১ম পত্র
এইচএসসি ইতিহাস নোট ২য় পত্র
এইচএসসি ইসলামের ইতি. ও সংস্কৃতি নোট ১ম পত্র
এইচএসসি ইসলামের ইতি. ও সংস্কৃতি নোট ২য় পত্র
এইচএসসি যুক্তিবিদ্যা ১ম পত্র ও ২য় পত্র
এইচএসসি ভূগোল ও পরিবেশ নোট ১ম পত্র ও ২য় পত্র
এইচএসসি ইসলামিক স্টাডিজ ১ম ও ২য় পত্র

Copyright © Quality Can Do Soft.
Designed and developed by Sohel Rana, Assistant Professor, Kumudini Government College, Tangail. Email: [email protected]