নবী করীম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার পারিবারিক জীবনে ঝাড়-ফুঁক এর বিষয়ে কী দৃষ্টিভঙ্গি পোষণ করতেন?

উত্তর : বস্তুত রসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের পারিবারিক জীবন সম্পর্কে হযরত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহার চেয়ে আর কারো বেশি জানার কথা নয়। এ বিষয়ে শরীয়াতের দৃষ্টিভঙ্গি ব্যাখ্যা করার জন্য কয়েকটি হাদীস এখানে বর্ণনায় আনবো। বিভিন্ন হাদীস গ্রন্থে হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহুর একটি সুদীর্ঘ রিওয়ায়াত রয়েছে। রিওয়ায়াতটিতে নবী করীম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “আমার উম্মতের মধ্যে সত্তর হাজার এমন সৌভাগ্যশালী লোক রয়েছে, যারা কোনো প্রকার হিসাব-নিকাশ ছাড়াই জান্নাতে প্রবেশ করবে (অর্থাৎ বিনা হিসেবে বেহেশতে যাবে), যারা না দাগ দেয়ার চিকিৎসা করে, না ঝাড়-ফুঁক করায়, আর না শুভাশুভ লক্ষণ নির্ণয় করে (অর্থাৎ না ফালনামায় বিশ্বাস করে ) এবং তারা স্বীয় প্রভু আল্লাহ্ রব্বুল 'আলামীনের উপর ভরসা রাখে।” (সহীহ আল বুখারী ও মুসলিম) ৪৬৩ হযরত মুগীরা ইবনে শু'বা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, রসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “যে ব্যক্তি দাগ দেয়ার চিকিৎসা করালো এবং ঝাড়-ফুঁক করালো, সে আল্লাহ্র উপর তাওয়াক্কুল থেকে নিঃসম্পর্ক হয়ে গেলো (অর্থাৎ আল্লার উপর ভরসা ছেড়ে দিলো)।” (আত-তিরমিযী) ৪৬৪
হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, “রসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দশটি জিনিস অপছন্দ করতেন। এর মধ্যে একটি হচ্ছে ঝাড়-ফুঁক করা, তবে সূরা ‘আল ফালাক্ক’ ও সূরা 'আন্-নাস' অথবা এ দু'টি ও সূরা ইখলাসে'র মাধ্যমে ঝাড়-ফুঁক করা যাবে।” (আবূ দাউদ ও মুসতাদরাক) ৪৬৫

সহীহ মুসলিমে আউফ ইবনে মালিক আশজাঈ রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে একটি রিওয়ায়াত উদ্ধৃত হয়েছে, তাতে তিনি বলেছেন, জাহিলিয়াতের যুগে আমরা ঝাড়-ফুঁক করতাম। আমরা নবী করীম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে জিজ্ঞেস করলাম, এ ব্যাপারে আপনার অভিমত কী? তিনি বললেন, “তোমরা যে জিনিস দিয়ে ঝাড়-ফুঁক করো তা আমার সামনে পেশ করো। তার মধ্যে যদি শিরক না থাকে, তাহলে তার সাহায্যে ঝাড়ায় কোনো ক্ষতি নেই।” (সহীহ মুসলিম) ৪৬৬

সহীহ মুসলিম, মুসনাদে আহমাদ ও ইবনে মাজাহতে হযরত জাবির ইবনে আব্দুল্লাহ রাদিয়াল্লাহু আনহুর একটি রিওয়ায়াত উদ্ধৃত হয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, “নবী করীম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঝাড়- ফুঁক নিষেধ করে দিয়েছিলেন। অতঃপর হযরত আমর ইবনে হাযমের বংশের লোকেরা এলো। তারা বললো, আমাদের কাছে কিছু আমল আছে যার সাহায্যে আমরা বিচ্ছু বা সাপে কামড়ানো রোগীকে ঝাড়তাম, কিন্তু আপনি তা নিষিদ্ধ করে দিয়েছেন। তারপর তারা যা পড়তো তা নবী করীম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে শোনালো। তিনি বললেন, এর মধ্যে তো আমি কোনো ক্ষতি দেখছি না। তোমাদের মধ্যে কেউ যদি তার কোনো ভাইয়ের উপকার করতে পারে, তাহলে তার অবশ্যই তা করা উচিত।” (সহীহ মুসলিম ও ইবনে মাজাহ) ৪৬৭

হযরত জাবির ইবনে আব্দুল্লাহ রাদিয়াল্লাহু আনহু আরো একটি হাদীস বর্ণনা করেন, যা সহীহ মুসলিমে উদ্ধৃত আছে। তাতে বলা হয়েছে, “বনূ আমর পরিবারের লোকেরা সাপে কামড়ানো রোগীর নিরাময়ের একটি প্রক্রিয়া জানতো। রসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদেরকে তা প্রয়োগ করার অনুমতি দেন।” (সহীহ মুসলিম ও ইবনে মাজাহ) ৪৬৮

হযরত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা একটি রিওয়ায়াত উল্লেখ করেছেন যা উপরোক্ত কথাটি সমর্থন করে। এই রিওয়ায়াতটিও মুসলিম, মুসনাদে আহমাদ ও ইবনে মাজাহতে উদ্ধৃত রয়েছে। হযরত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা বলেছেন, “রসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আনসারদের একটি পরিবারকে প্রত্যেক বিষাক্ত প্রাণীর কামড়ে ঝাড়-ফুঁক করার অনুমতি দিয়েছিলেন।” (সহীহ মুসলিম, মুসনাদে আমাদ ও ইবনে মাজাহ) ৪৬৯

হযরত আনাস রাদিয়াল্লাহু আনহুও ঠিক একই ধরনের রিওয়ায়াত উল্লেখ করেছেন, যেখানে বলা হয়েছে, “রসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বিষাক্ত প্রাণীর কামড়, পিঁপড়ার দংশন ও বদ নযর থেকে নিরাপদ থাকার জন্য ঝাড়-ফুঁক করার অনুমতি দিয়েছিলেন।” (সহীহ মুসলিম, মুসনাদে আহমাদ, আত- তিরমিযী ও ইবনে মাজাহ) ৪৭০

হযরত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা বর্ণিত হাদীসের ভাষাও একই। (সহীহ মুসলিম) ৪৭১

ইমাম আহমাদ তাঁর মুসনাদে উম্মুল মু'মিনীন হযরত হাফসা রাদিয়াল্লাহু আনহার একটি বর্ণনা উদ্ধৃত করেছেন। তাতে হযরত হাফসা রাদিয়াল্লাহু আনহা বলেন, “একদিন নবী করীম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমার কাছে এলেন। তখন আমার কাছে শিফা নামের এক মহিলা বসেছিলেন। তিনি পিঁপড়া, মাছি প্রভৃতির দংশনে ঝাড়-ফুঁক করতেন।" নবী করীম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, “হাফসাকেও এই আমল শিখিয়ে দাও।” (মুসনাদে আহমাদ) ৪৭২

শিফা বিনতে আব্দুল্লাহ রাদিয়াল্লাহু আনহার ঝাড়-ফুঁক সংক্রান্ত একটি রিওয়ায়াত ইমাম আহমাদ, আবূ দাউদ ও আন-নাসাঈ উদ্ধৃত করেছেন। তিনি (শিফা) বলেন, একদা নবী করীম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমার নিকট আসেন, যখন আমি হাফসা রাদিয়াল্লাহু আনহার নিকট ছিলাম। তখন তিনি আমাকে বললেন, “তুমি হাফসাকে যেমন লেখাপড়া শিখিয়েছো, তেমনিভাবে ঝাড়-ফুঁকের আমলও শিখিয়ে দাও।” (মুসনাদে আহমাদ ও আবূ দাউদ)

FOR MORE CLICK HERE
NTRCA COLLEGE LEVEL HISTORY/ইতিহাস গাইড/ বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ইতিহাস
১০ তম বিসিএস -৪৪তম বিসিএস এর প্রশ্ন ও সমাধান 10th BCS to 44th Bcs MCQ Question Solution
বিসিএস ব্যাংক প্রাইমারি পরীক্ষার-এর প্রশ্ন ও সমাধান
সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন SEO বই লেখক : মোঃ মিজানুর রহমান
মাতৃস্বাস্থ্য/Motherhood
ওষুধ নির্দেশিকা
সহীহ বুখারী শরীফ হাদিস আরবি বাংলা (৭৫৬৩ টি হাদিস)
সহীহ মুসলিম শরীফ হাদিস আরবি বাংলা (৭৪৫৩ টি হাদিস)
সুনানে তিরমিজি শরীফ হাদিস আরবি বাংলা (৩৯৫৬ টি হাদিস)
সুনানে নাসায়ী শরীফ হাদিস আরবি বাংলা (৫৭৫৮ টি হাদিস)
সুনানে ইবনে মাজাহ শরীফ হাদিস আরবি বাংলা (৪৩৪১ টি হাদিস)
সুনানে আবু দাউদ শরীফ হাদিস আরবি বাংলা (৫২৭৪ টি হাদিস)

Copyright © Quality Can Do Soft.
Designed and developed by Sohel Rana, Assistant Professor, Kumudini Government College, Tangail. Email: [email protected]