নবী করীম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কী ধরনের ঝাড়-ফুঁক করার অনুমতি প্রদান করেছেন। অনুগ্রহপূর্বক বিস্তারিত বলবেন কী?

উত্তর : আত-তাবারানী 'আল-মু'জামুল আওসাত গ্রন্থে' হযরত আলী রাদিয়াল্লাহু আনহুর একটি রিওয়ায়াত উদ্ধৃত করেছেন। তাতে বলা হয়েছে, “একবার নামায পড়ার সময় নবী করীম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বিষ্ণু কামড় দেয়। নামায শেষ করে তিনি বলেন, বিচ্ছুর উপর আল্লাহর লা'নত, সে না নামাযিকে রেহাই দেয়, না আর কাউকে। তারপর তিনি পানি ও লবণ আনান। যে জায়গায় বিচ্ছু কামড়িয়েছিল সেখানে লবণ মিশ্রিত পানি ডলতে থাকেন, আর 'কুল ইয়া আয়্যুহাল কাফিরুন, কুল হুয়াল্লাহু আহাদ, কুল ‘আউযু বিরাব্বিল ফালাক্ব ও কুল 'আউযু বিরববিন নাস' পড়তে থাকেন।” (আল- মু'জামুল আওসাত, মু'জামুস সগীর ও মুসান্নাদে ইবনে আবি শায়বাহ) ৪৭৪

হযরত ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহুর একটি বর্ণনাও হাদীস শরীফে এসেছে। নবী করীম সল্লাল্লাহু

আলাইহি ওয়াসাল্লাম হযরত ইমাম হাসান ও ইমাম হুসাইনের ওপর এ দু'য়া পাঠ করতেন: “আউযু বিকালিমাতিল্লাহিত তাম্মাতি মিন কুল্লি শাইত্বনিন ওয়াহাম্মাতিন ওয়ামিন কুল্লি আয়নিল লাম্মাতি।”
“আমি আল্লাহ্র বরকতপূর্ণ বাক্যসমূহ দ্বারা প্রত্যেক শয়তান, বিষাক্ত প্রাণনাশক ও বদনযরের অনিষ্ট হতে আশ্রয় প্রার্থনা করছি। তিনি বলতেন, আমাদের পিতা ইবরাহীম আলাইহিস সালাম ইসমাঈল ও ইসহাক আলাইহিস সালামকে এ দু'য়া পড়ে ঝাড়ফুঁক করতেন।” (সহীহ আল বুখারী, মুসনাদে আমাদ, আত-তিরমিযী ও ইবনে মাজাহ) ৪৭৫
এভাবে ইবরাহীম আলাইহিস সালাম তাঁর দুই পুত্র ইসহাক ও ইসমাঈলের জন্য আশ্রয় প্রার্থনা করতেন। হযরত উসমান ইবনে আবিল-আস আস সাকাফী রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে সামান্য শব্দের হেরফের সহকারে মুসলিম, মুআত্তা, তাবারানী ও হাকীমে একটি রিওয়ায়াত উদ্ধৃত হয়েছে, তাতে বলা হয়েছে, “তিনি রসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট অভিযোগ করেন যে আমি যখন থেকে মুসলমান হয়েছি, তখন থেকেই একটি ব্যথা অনুভব করছি। এ ব্যথা আমাকে মেরে ফেলে দিয়েছে। নবী করীম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, যেখানে ব্যথা হচ্ছে, সেখানে তোমার ডানহাত রেখো। তারপর তিনবার বিসমিল্লাহ পড়ো এবং সাতবার এ দু'য়াটি পড়ে সেখানে হাত বুলাও।” “আউযু বিইয্যাতিল্লাহি ওয়াকুদরতিহি মিন শাররি মা’আজিদু ওয়া উহাযিরু।” “আমি আল্লাহ্ ও তাঁর কুদরাতের আশ্রয় চাচ্ছি সে জিনিসের অনিষ্ট হতে যাকে আমি অনুভব করছি এবং যার ভয়ে আমি ভীত।” (সহীহ মুসলিম ও মুসনাদে আহমাদ) ৪৭৬
তিরমিযী শরীফে হাদীসটি এভাবে বর্ণনা করা হয়েছে যে উসমান ইবনে আবুল আস রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন,
“রসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের কাছে এলেন। তখন আমি ধ্বংসাত্মক ব্যথায় অস্থির ছিলাম। তিনি বলেন তোমার ডান হাত দিয়ে ব্যথার স্থানটি সাতবার মার্জন করো এবং বলো, আউযু বিইয্যতিল্লাহি ওয়াকুওয়াতিহি মিন শাররি মাআজিদু ।”
“আমি আল্লাহর ইজ্জত ও সম্মান, তাঁর কুদরত ও শক্তি এবং তাঁর রাজত্ব, সার্বভৌমত্ব ও কর্তৃত্বের কাছে আমার এই কষ্ট থেকে আশ্রয় চাই।” রাবী বলেন, আমি তাই করলাম। “আল্লাহ আমার সকল ব্যথা দূর করে দিলেন। এরপর থেকে আমি আমার পরিবারের লোকদের ও অন্যান্যদেরকে এটি শেখাই ।” (মুয়াত্তা ইমাম মালিক ও আত-তিরমিযী) ৪৭
মুসনাদে আহ্মাদ ও তাহাবী গ্রন্থে তালক ইবনে আলী রাদিয়াল্লাহু আনহুর একটি বর্ণনা রয়েছে। তাতে তিনি বলেন, “নবী করীম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের উপস্থিতিতেই আমাকে বিচ্ছু কামড় দেয়। তিনি কিছু পড়ে আমাকে ফুঁক দেন এবং কামড়ানো জায়গায় হাত বুলান।” (মুসনাদে আহমাদ) ৪৭৮ সহীহ মুসলিম শরীফে হযরত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহার বর্ণনায় বলা হয়েছে, “একবার নবী করীম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অসুস্থ হয়ে পড়েন। তখন হযরত জিবরাঈল আলাইহিস সালাম এসে তাঁকে জিজ্ঞেস করেন, হে মুহাম্মাদ! আপনি কি অসুস্থ হয়ে পড়েছেন? তখন নবী করীম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জবাব দেন, হ্যাঁ। তখন জিবরাঈল আলাইহিস সালাম বলেন, আমি আল্লাহর নামে
আপনাকে ঝাড়ছি এমন প্রত্যেক জিনিস থেকে, যা আপনাকে কষ্ট দেয় এবং প্রত্যেকটি নট্স ও হিংসুকের হিংসা-দৃষ্টির অনিষ্ট থেকে। আল্লাহ্ আপনাকে নিরাময় দান করুন। আমি তাঁর নামে আপনাকে ঝাড়ছি কিংবা ফুঁক দান করছি।” (সহীহ মুসলিম ও আত-তিরমিযী) ৪৭৯
প্রায় একই ধরনের আরো একটি বর্ণনা মুসনাদে আহমাদে হযরত উবাদা ইবনে সামিত রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে উদ্ধৃত হয়েছে। তিনি বলেন, আমি “নবী করীম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে দেখতে গেলাম। তিনি এতো অসুস্থ ছিলেন যার প্রচণ্ডতা সম্পর্কে আল্লাহই ভালো জানেন। অতঃপর আমি তাঁর কাছে গেলাম। তখন তিনি সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে গেছেন। আমি তাঁকে বললাম, আমি আপনার কাছে সকালে এসেছিলাম। তখন আপনি এতো অসুস্থ ছিলেন, যার প্রচণ্ডতা সম্পর্কে আল্লাহই ভালো জানেন এবং আমি আপনার কাছে রাতে এলাম। আর আপনি সুস্থ হয়ে গেছেন। তখন তিনি বললেন, হে ইবনুস সামিত, জিবরঈল আলাইহিস সালাম আমাকে ঝাড় ফুক করায় আমি সুস্থ হয়েছি। আমি কি তোমাকে শেখাবো না? আমি বললাম, জি হ্যাঁ। তিনি বললেন, “বিসমিল্লাহি আরক্বীকা মিন কুল্লি শায়ঈন য়ুযীকা মিন হাসাদি কুল্লি হাসিদিন ওয়া আয়নিন বিসমিল্লাহি ইয়াশফীকা ।” (মুসনাদে আহমাদ) ৪৮০
সহীহ মুসলিম ও মুসনাদে আমাদে হযরত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা থেকেও এমনই ধরনের রিওয়ায়াত উদ্ধৃত হয়েছে।

FOR MORE CLICK HERE
NTRCA COLLEGE LEVEL HISTORY/ইতিহাস গাইড/ বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ইতিহাস
১০ তম বিসিএস -৪৪তম বিসিএস এর প্রশ্ন ও সমাধান 10th BCS to 44th Bcs MCQ Question Solution
বিসিএস ব্যাংক প্রাইমারি পরীক্ষার-এর প্রশ্ন ও সমাধান
সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন SEO বই লেখক : মোঃ মিজানুর রহমান
মাতৃস্বাস্থ্য/Motherhood
ওষুধ নির্দেশিকা
সহীহ বুখারী শরীফ হাদিস আরবি বাংলা (৭৫৬৩ টি হাদিস)
সহীহ মুসলিম শরীফ হাদিস আরবি বাংলা (৭৪৫৩ টি হাদিস)
সুনানে তিরমিজি শরীফ হাদিস আরবি বাংলা (৩৯৫৬ টি হাদিস)
সুনানে নাসায়ী শরীফ হাদিস আরবি বাংলা (৫৭৫৮ টি হাদিস)
সুনানে ইবনে মাজাহ শরীফ হাদিস আরবি বাংলা (৪৩৪১ টি হাদিস)
সুনানে আবু দাউদ শরীফ হাদিস আরবি বাংলা (৫২৭৪ টি হাদিস)

Copyright © Quality Can Do Soft.
Designed and developed by Sohel Rana, Assistant Professor, Kumudini Government College, Tangail. Email: [email protected]