‘সূরা ফাতিহার মাধ্যমে রোগমুক্তি' এ বিষয়ে আরো কোনো ঐতিহাসিক ঘটনা তথা উদাহরণ আছে কি?

বস্তুত ‘কুরআনের মা' হিসেবে সূরা ফাতিহার বরকতে আল্লাহ পাক দীন ও দুনিয়ার অনেক প্রয়োজন মিটিয়ে দেন। অর্থ বুঝে নিয়মিত সূরা ফাতিহা তিলাওয়াতে ব্যথা-বেদনা, দুঃখ-কষ্ট ও অন্যান্য অসুস্থতা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। আল্লাহর কালামের ফযীলতের জন্যই এটি সম্ভব।

“ইয়্যাকা না'বুদু ওয়া ইয়্যাকা নাসতাঈন।" অর্থাৎ 'আমরা আপনারই ইবাদত করি এবং আপনারই সাহায্য চাই,” এই শব্দ ক'টি খুবই কার্যকরী দু'য়া, যা মানুষের রোগমুক্তির জন্য উৎকৃষ্ট ওষুধ। এটি পাঠ করে রোগীর উপর দম করলে আল্লাহর ফযলে রোগী আরোগ্য হয়ে থাকে ।

বিশ্ববিখ্যাত হাদীসশাস্ত্রবিদ আল্লামা ইবনুল কাইয়িম রহমাতুল্লাহ আলাইহি বলেন, “আমি যখন মক্কায় ছিলাম, তখন একদা আমি অসুস্থ হয়ে পড়ি। সে সময় কোনো ওষুধ আমার নাগালে ছিলোনা। তখন আমি সূরা ফাতিহার মাধ্যমে চিকিৎসা গ্রহণ করি। যমযমের পানিতে সূরা ফাতিহা পড়ে ফুঁক দিয়ে সেই পানি পান করতাম এবং এর ফলে আমি সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে উঠি। এরপর থেকে যখনই আমি ব্যথা-বেদনা অনুভব করতাম তখনই আমি সূরা ফাতিহার আশ্রয় নিই। এভাবে রোগমুক্তিতে সূরা ফাতিহা আমাকে সর্বদা সাহায্য করে আসছে।" (ইবনুল কাইয়িম) ৫১৯

প্রশ্ন-১৭৩ : মুহতারাম, এছাড়া সূরা ফাতিহা দ্বারা আরো কোনো সুনির্দিষ্ট রোগের চিকিৎসা করা যায় কী?


এখানে ‘অনেকেই' বলতে অন্যান্য সাহাবীদের বোঝানো হয়েছে। আর সাহাবীগণ যেহেতু সর্বদা রসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাহচর্যে ছিলেন, তাই এ prescription-টি পরোক্ষভাবে নবী করীম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কর্তৃক অনুমোদিত

মধুর মাধ্যমে রোগ নিরাময়

প্রশ্ন-১৭৪ : আমরা সর্বদাই মধুর কথা শুনে থাকি যে মধু একটি মহৌষধ এবং এতে অনেক উপাদান রয়েছে, যা মানবদেহের জন্যে অতীব জরুরি। এ প্রসঙ্গে পবিত্র কুরআন ও হাদীস শরীফে কী কী বর্ণনা এসেছে? অনুগ্রহপূর্বক রেফারেন্স সহকারে বলুন।

উত্তর : মধুর আরবি নাম 'আসাল’, ইউনানি নাম ‘শাহদ’। কুরআনে আল্লাহ্ সুবহানাহু ওয়াতা'য়ালা সূরা আন-নাহলে ইরশাদ করেন,

يَخْرُجُ مِنْ بُطُونِهَا شَرَابٌ مُّخْتَلِفٌ اَلْوَانُهُ فِيْهِ شِفَاء لِلنَّاسِ

“মৌমাছির উদর থেকে একটি বিবিধ রংয়ের পানীয় বা শরবত বের হয়, যার মধ্যে মানুষের জন্য রয়েছে নিরাময় বা শিফা।” (আন-নাহল ১৬:৬৯)

ফুল থেকে মধু আহরণরত মৌমাছি (Honey-bees collecting nectar from flowers)

মৌমাছির বাসা (Honey-bee nests)

বস্তুত কুরআনের এ বাণীই প্রমাণ করে যে মধু কতো উপকারী ও কতো প্রয়োজনীয়, যার উপর ভিত্তি করে বিশ্বের সর্বত্র প্রচুর গবেষণা কার্যক্রম পরিচালিত হয়েছে এবং এখনো হচ্ছে। সূরা আন-নাহলের ৬৮ নম্বর আয়াতে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতা'য়ালা বলেন,

وَ أَوْحَى رَبُّكَ إِلَى النَّحْلِ أَنِ اتَّخِذِى مِنَ الْجِبَالِ بُيُوتًا وَ مِنَ الشَّجَرِ وَمِمَّا يَعْرِشُونَ

“আর দেখো, তোমার রব মৌমাছিদেরকে একথা অহীর মাধ্যমে বলে দিয়েছেন, তোমরা পাহাড়-পর্বত, গাছপালা ও মাচার ওপর ছড়ানো লতাগুল্মে নিজেদের চাক নির্মাণ করো।” (আন-নাহল ১৬:৬৮) সূরা মুহাম্মদে আল্লাহ্ সুবহানাহু ওয়াতা'য়ালা মধুর নহর সম্পর্কে বলেন,

وَأَنْهُرٌ مِّنْ عَسَلٍ مُّصَفًّى

“ওয়া ‘আনহারুম মিন আসালিম্ মুসাফা।”

“বেহেশতে মধুর স্বচ্ছ (পরিশোধিত) নহর প্রবাহিত হবে।” (মুহাম্মদ ৪৭:১৫)

মধু সম্পর্কে আলোচনা করতে গেলে প্রথমে যে হাদীসটি সামনে আনতে হয়, তা হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণিত, যা ইবনে মাজাহ শরীফে লিপিবদ্ধ আছে। আল্লাহর রসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “তোমাদের জন্যে অবশ্যই দুটো ওষুধ রয়েছে, একটি হচ্ছে কুরআন আর অপরটি মধু।” (ইবনে মাজাহ) ৫২১

অর্থাৎ মধু ও কুরআনের মাধ্যমে তোমাদের চিকিৎসা গ্রহণ করা উচিত। You have indeed two medicines, honey and the Qur'an.

বিশুদ্ধ মধু (Pure honey)

অর্থাৎ খাদ্যদ্রব্যের ভেতর মধু, আর আসমানী কিতাবসমূহের মধ্যে কুরআন, The Last Testament. কারণ প্রথমটি অর্থাৎ মধু মানুষের স্বাস্থ্যের ও দৈহিক রোগ-ব্যাধির নিরাময়ে এক অব্যর্থ মহৌষধ। আর দ্বিতীয়টি দুনিয়া ও আখিরাতের সফলতার গ্যারান্টি। এ হাদীসটি ইবনে মাজাহ ছাড়াও জামে সগীর ও মিশকাত শরীফে উদ্ধৃত আছে।

মধু দ্বারা চিকিৎসা সম্পর্কে আরো দুটি গুরুত্বপূর্ণ হাদীস রয়েছে। প্রথমটি বর্ণনা করেন হযরত জাবির ইবনে আব্দুল্লাহ রাদিয়াল্লাহু আনহু। তিনি বলেন যে আল্লাহর রসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম

বলেছেন, “তোমাদের চিকিৎসাগুলোর মধ্যে উত্তম (কল্যাণকর) চিকিৎসা হচ্ছে শিঙ্গা লাগানো, মধুপান কিংবা আগুন দ্বারা দাগ দেয়ার মধ্যে। তবে আগুন দ্বারা দাগ দেয়া আমি পছন্দ করিনা।” (সহীহ আল বুখারী ও মুসলিম) ৫২২

দ্বিতীয় হাদীসটি বর্ণনা করেন হযরত ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহু। আল্লাহ্র রসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, “তিনটি জিনিসে রোগ নিরাময় রয়েছে। মধু সেবন, শিঙ্গা লাগানো বা রক্তমোক্ষণ এবং গরম লোহা দ্বারা দাগ দিয়ে চিকিৎসা। তবে আমি আমার উম্মাহর জন্য এই দাগ দিয়ে চিকিৎসা করার পদ্ধতি প্রয়োগ করতে নিষেধ করছি ।" (সহীহ আল বুখারী) ৫২৩

তৃতীয় হাদীসটি উদ্ধৃত আছে ইবনে মাজাহ শরীফে যা হযরত আবূ হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন। সেখানে আল্লাহর রসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, “যে ব্যক্তি প্রতি মাসে তিনদিন সকাল বেলা মধু চেটে চেটে সেবন করবে, তার কোনো কঠিন রোগ হবেনা (সে মারাত্মক কোনো রোগে আক্রান্ত হবেনা)।” (ইবনে মাজাহ ও মু'জামুল আওসাত) ৫২৪

চতুর্থ হাদীসটি হযরত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, “নবী করীম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মিষ্টি ও মধু খেতে পছন্দ করতেন।” (সহীহ আল বুখারী) ৫২৫

“তিনি নিয়মিতভাবে খাবার হিসেবে শুকনো আঙুর ( কিসমিস) পানিতে ভিজিয়ে রেখে তার নির্যাস ও শুকনো খেজুর খেতেন।” (আস-সুয়ূতী) ৫২৬

এ সুন্দর অভ্যাসটি স্বাস্থ্য সুরক্ষায় অতীব গুরুত্বপূর্ণ। স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য নবী করীম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের আরো একটি নিয়মিত অভ্যাস ছিলো এই যে, “তিনি প্রত্যহ সকালবেলা খালি পেটে এক কাপ মধু ও পানি পান করতেন।” (আস-সুয়ূতী) ৫২৭

FOR MORE CLICK HERE
NTRCA COLLEGE LEVEL HISTORY/ইতিহাস গাইড/ বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ইতিহাস
১০ তম বিসিএস -৪৪তম বিসিএস এর প্রশ্ন ও সমাধান 10th BCS to 44th Bcs MCQ Question Solution
বিসিএস ব্যাংক প্রাইমারি পরীক্ষার-এর প্রশ্ন ও সমাধান
সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন SEO বই লেখক : মোঃ মিজানুর রহমান
মাতৃস্বাস্থ্য/Motherhood
ওষুধ নির্দেশিকা
সহীহ বুখারী শরীফ হাদিস আরবি বাংলা (৭৫৬৩ টি হাদিস)
সহীহ মুসলিম শরীফ হাদিস আরবি বাংলা (৭৪৫৩ টি হাদিস)
সুনানে তিরমিজি শরীফ হাদিস আরবি বাংলা (৩৯৫৬ টি হাদিস)
সুনানে নাসায়ী শরীফ হাদিস আরবি বাংলা (৫৭৫৮ টি হাদিস)
সুনানে ইবনে মাজাহ শরীফ হাদিস আরবি বাংলা (৪৩৪১ টি হাদিস)
সুনানে আবু দাউদ শরীফ হাদিস আরবি বাংলা (৫২৭৪ টি হাদিস)

Copyright © Quality Can Do Soft.
Designed and developed by Sohel Rana, Assistant Professor, Kumudini Government College, Tangail. Email: [email protected]