দূরারোগ্য ব্যাধি বলে কোনো ব্যাধি আছে কী? বিষয়টি সুন্নাহর আলোকে বিস্তারিত আলোচনা করুন। চিকিৎসা গ্রহণ করা কি তাওয়াক্কুলের পরিপন্থী?

দূরারোগ্য ব্যাধি বলতে কোনো ব্যাধি নেই। হযরত জাবির ইবনে আব্দুল্লাহ্ রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন যে নবী করীম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, "সকল রোগেরই ওষুধ রয়েছে। সুতরাং যখন রোগ অনুযায়ী সঠিক ওষুধ দেয়া হয় তখন রোগ আল্লাহ্র ইচ্ছায় ভালো হয়ে যায় (আল্লাহর রহমতে রোগ নিরাময় হয়)।” (সহীহ মুসলিম)
অপরদিকে আবূ হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন যে রসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “আল্লাহ্ সুবহানাহু ওয়াতা'য়ালা এমন কোনো রোগ বা ব্যাধি সৃষ্টি করেননি যার প্রতিষেধক তিনি পাঠাননি কিংবা ওষুধ সৃষ্টি করেননি।" (সহীহ আল-বুখারী)
চিকিৎসা গ্রহণ করা তাওয়াক্কুলের পরিপন্থি নয় বরং এটি নবী করীম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সুন্নাহ। আমি একটি হাদীস আলোচনা করে এ প্রশ্নের উত্তর দেবো। এ হাদীসটি এর আগের পর্বে ও আলোচনা করেছি। হযরত যায়েদ ইবনে আসলাম রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, “রসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের যামানায় জনৈক ব্যক্তি আঘাত পেলে ক্ষতস্থানে তাঁর রক্ত জমাটবদ্ধ হয়ে যায়। উপস্থিতদের একজন বনী আনবার গোত্রের দুই ব্যক্তিকে ডেকে আনলে উভয়েই রুগ্ন ব্যক্তিকে দেখেন। তখন রসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, “তোমাদের মধ্যে চিকিৎসা বিজ্ঞান সম্পর্কে কে ভালো জানে?” এ কথা শুনে উভয়েই বলে উঠলেন, হে আল্লাহর রসূল! চিকিৎসাতেও কি কল্যাণ আছে?” বর্ণনাকারী যায়িদ ইবনে আসলাম রাদিয়াল্লাহু আনহু ধারণা করেন যে রসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরো বলেছেন, “যিনি রোগ দিয়েছেন চিকিৎসাও তিনি দিয়েছেন।” (যাদুল মা'আদ ও মুয়াত্তা ইমাম মালিক)
স্বয়ং রসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজেও চিকিৎসা গ্রহণ করেছেন। সাহাবায়ে কিরাম রাদিয়াল্লাহু আনহুমকেও চিকিৎসা গ্রহণের পরামর্শ দিয়েছেন। হযরত আনাস ইবনে মালিক রাদিয়াল্লাহু আনহুকে শিঙ্গা প্রদানকারীর শিঙ্গার বিনিময় উপার্জন হালাল কি না জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বললেন, রসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম শিঙ্গা গ্রহণ করেছেন। “আবূ তায়বাহ রাদিয়াল্লাহু আনহু তাঁকে শিঙ্গা লাগিয়েছিলেন। রসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে দুই সা' (৬ কেজি ৩৬৮ গ্রাম সমপরিমাণ) খাদ্যদ্রব্য প্রদানের নির্দেশ দিয়েছিলেন এবং তার মালিক পক্ষের সাথে তার ট্যাক্স কমানোর জন্য কথা বলেছেন । ফলে তারা তার দৈনন্দিন প্রদেয় ট্যাক্সের পরিমাণ কমিয়ে দিয়েছিলো। তিনি আরও বলেছেন, যা কিছু দ্বারা তোমরা চিকিৎসা করো তার মধ্যে উত্তম হলো শিঙ্গা লাগানো।” (সহীহ মুসলিম) ৪৫ হযরত সা'দ ইবনে আবি রাফে রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন যে, “নবী করীম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একবার আমার শুশ্রূষার জন্য এসে আমার বুকের ওপর হাত রাখেন। আমি অন্তরে এর শীতলতা অনুভব করি। অতঃপর তিনি বলেন তিনি হৃদরোগে আক্রান্ত হয়েছো। কাজেই তুমি সাকীফ গোত্রের অধিবাসী হারিস ইবনে কালাদার কাছে যাও। সে একজন চিকিৎসক। সে যেন মদিনার পাঁচটি আজওয়া খেজুর আঁটি বের করে তৎদ্বারা সে ব্যথার স্থানকে ঘষে নেয়।” (আবূ দাউদ ও মাজমাউয় যাওয়াইদ) '
এ হাদীসসমূহ থেকে আমরা জানতে পারি :
১. রোগ আল্লাহ্র পক্ষ থেকে আসে; তাই এর নিন্দা করা উচিত নয়। রোগ আমাদের ঈমানের পরীক্ষা। ঈমানের যাচাই-বাছাই পরীক্ষার সম্মুখীন হওয়ার জন্যও অনেক সময় মু'মিন বান্দা রোগাক্রান্ত হয় ।
২. কোনো রোগই দুরারোগ্য নয়, একমাত্র মৃত্যুব্যাধি ব্যতীত। শিফাদানকারী মহান আল্লাহ্ প্রতিটি রোগের সঙ্গে তার প্রতিষেধকও সৃষ্টি করেছেন । তাই কোনো অবস্থাতেই চিকিৎসা ও ওষুধ বর্জন করা উচিত নয় ।
৩. প্রতিটি রোগের ওষুধ নির্দিষ্ট। তাই কোনো ওষুধে কাজ না হতে থাকলে মনে করতে হবে যে রোগের সঠিক ওষুধ ব্যবহার হচ্ছেনা । তখন একচ্ছত্র শিফাদানকারী আল্লাহ্র নিকট সঠিক ওষুধের জন্য সাহায্য চাইতে হবে এবং শিফার জন্য দুয়া করতে হবে ।
৪. ইসলামে চিকিৎসা শুধু বৈধই নয় বরং তা গ্রহণ করাও কাম্য। এমনকি মৃত্যুর আশংকা দেখা গেলে এবং চিকিৎসা দ্বারা আরোগ্য সুনিশ্চিত না হলেও চিকিৎসা ত্যাগ করা হারাম
৫. চিকিৎসা গ্রহণ তাওয়াক্কুলের পরিপন্থি নয়। বরং চিকিৎসার সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও চিকিৎসা না করানো তাওয়াক্কুলের পরিপন্থি। তবে যার চিকিৎসা সামর্থ্য নেই তার বিষয়টি আলাদা। সে চিকিৎসা ছাড়া আল্লাহর ওপর তাওয়াক্কুল করতে পারে। তবে চিকিৎসা না করে ধৈর্য ধারণ করা তওয়াক্কুলের সর্বোচ্চ স্তর ।

FOR MORE CLICK HERE
NTRCA COLLEGE LEVEL HISTORY/ইতিহাস গাইড/ বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ইতিহাস
১০ তম বিসিএস -৪৪তম বিসিএস এর প্রশ্ন ও সমাধান 10th BCS to 44th Bcs MCQ Question Solution
বিসিএস ব্যাংক প্রাইমারি পরীক্ষার-এর প্রশ্ন ও সমাধান
সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন SEO বই লেখক : মোঃ মিজানুর রহমান
মাতৃস্বাস্থ্য/Motherhood
ওষুধ নির্দেশিকা
সহীহ বুখারী শরীফ হাদিস আরবি বাংলা (৭৫৬৩ টি হাদিস)
সহীহ মুসলিম শরীফ হাদিস আরবি বাংলা (৭৪৫৩ টি হাদিস)
সুনানে তিরমিজি শরীফ হাদিস আরবি বাংলা (৩৯৫৬ টি হাদিস)
সুনানে নাসায়ী শরীফ হাদিস আরবি বাংলা (৫৭৫৮ টি হাদিস)
সুনানে ইবনে মাজাহ শরীফ হাদিস আরবি বাংলা (৪৩৪১ টি হাদিস)
সুনানে আবু দাউদ শরীফ হাদিস আরবি বাংলা (৫২৭৪ টি হাদিস)

Copyright © Quality Can Do Soft.
Designed and developed by Sohel Rana, Assistant Professor, Kumudini Government College, Tangail. Email: [email protected]