নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামও সুরমা ব্যবহার করতেন এবং এর ব্যবহারের জন্য উপদেশ দিয়েছেন। এ ব্যাপারে কী কী হাদীস আছে

উত্তর : সুরমা সম্পর্কে বেশ ক'টি সহীহ হাদীস রয়েছে, যা আত-তিরমিযী, ইবনে মাজাহ, আবূ দাউদ, মুসতাদরাকে হাকিম ও আত-তাবারানী হাদীস গ্রন্থসমূহে উল্লেখ আছে। সালিম ইবনে আব্দুল্লাহ রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন যে, নবী করীম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, “তোমরা অবশ্যই ইছমিদ নামক সুরমা ব্যবহার করবে। কারণ এটা চোখকে পরিষ্কার করে, দৃষ্টিশক্তি বাড়ায় এবং চোখের পাতার চুল গজায়।” (ইবনে মাজাহ ও মুসতাদরাকে হাকিম) ৬৭৪
আবূ দাউদ ও আত-তিরমিযী শরীফে সালিম ইবনে আব্দুল্লাহ রাদিয়াল্লাহু আনহু কর্তৃক বর্ণিত একটি হাদীস রয়েছে। নবী করীম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “সকল প্রকার সুরমার মধ্যে ইছমিদ সুরমা উত্তম। এটা চোখের দৃষ্টিশক্তিকে বৃদ্ধি করে এবং চোখের পাতার পশম উৎপন্ন করে।” (আবূ দাউদ ও আত-তিরমিযী) ৬৭৫
এখানে ইছমিদ সুরমাকে চোখের ওষুধ হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে। ইমাম আস-সুয়ূতী রহমাতুল্লাহি আলাইহি এ হাদীসের অনুরূপ আরো একটি হাদীস বর্ণনা করেন, যার ভাষা একটু আলাদা। তবে এ হাদীসটির বর্ণনার শেষাংশ জামে আত-তিরমিযী শরীফে খুঁজে পাওয়া যায়নি। অর্থাৎ হাদীসের দ্বিতীয় অংশটি তিরমিযী শরীফে নেই। ইমাম তিরমিযীর বরাত দিয়ে ইমাম আস-সুয়ূতী তার তিব্বুন নববী কিতাবে তা উল্লেখ করেছেন। হাদীসটির ভাষা হচ্ছে, “সকল প্রকার চোখের ওষুধের মধ্যে এন্টিমনী উত্তম । এটা সুস্থ চোখকে রক্ষা করে, তবে অসুস্থ চোখকে নয়।” (আত-তিরমিয়ী ও আস-সুয়ূতী) ৬৭৬ "It protects the healthy eye, not the diseased eye." (At-Tirmizi and As-Suyuti) 676
Antimony metal

ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন যে আল্লাহর রসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “তোমরা ইছমিদ সুরমা ব্যবহার করো। এটা চোখের জ্যোতি বৃদ্ধি করে এবং চোখের পাতার লোম গজায়।” তিনি আরও বলেন, “নবী করীম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের একটি সুরমাদানি ছিলো। প্রতি রাতে তিনি তা থেকে ডান চোখে তিনবার এবং বাম চোখে তিনবার সুরমা লাগাতেন। (আত-তিরমিযী ও ইবনে মাজাহ) ৬৭৭

ইমাম আবূ নু'য়াইমও তার তিব্বুন নববী কিতাবে এ হাদীসটি উদ্ধৃত করেছেন। ইমাম আবূ দাউদ রহমাতুল্লাহি আলাইহি একটি হাদীস উদ্ধৃত করেছেন, যে হাদীসের প্রথমাংশে নবী করীম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সাদা কাপড় পরিধান করতে উপদেশ দিয়েছেন। তিনি আরো বলেছেন, “সাদা কাপড় তোমাদের জন্য উত্তম এবং সাদা কাপড় দিয়ে তোমরা মৃতদের দাফন করো।” (আবূ দাউদ) ৬৭৮ অপরদিকে আবূ হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণিত হাদীস থেকে জানা যায় যে, তিনি বলেন যে নবী করীম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,

সুরমাদানি (Surma vessel with stick)

“তোমাদের যারা সুরমা ব্যবহার করে, তারা যেনো চোখে বেজোড় বার সুরমা লাগায়।” (আবূ দাউদ ও ইবনে মাজাহ) ৬৭৯

হযরত জাবির ইবনে আব্দুল্লাহ রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, আমি নবী করীম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে অন্যান্য সাহাবীদের সাথে কথা বলতে শুনেছি, “তোমরা শোয়ার আগে অবশ্যই ইছমিদ সুরমা লাগাও ।

কারণ, নিশ্চয়ই সুরমা দৃষ্টিকে পরিষ্কার করে এবং চোখের পাতার পশম গজায়।” (ইবনে মাজাহ) ৬৮০ আনাস ইবনে মালিক রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত। “তিনি রোযা থাকাবস্থায় সুরমা ব্যবহার করতেন।” (আবূ দাউদ) ৬৮১

হযরত আনাস রাদিয়াল্লাহু আনহুর এ বক্তব্যের সমর্থনে আল আ'মাশ রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন, “আমি আমাদের সাথীদের মধ্যে কাউকেও রোযা থাকাবস্থায় সুরমা ব্যবহারে আপত্তি করতে দেখিনি। এবং রাবী ইবরাহীম রোযাদারের জন্য বিশেষভাবে ‘সিবর' জাতীয় সুরমা ব্যবহারের অনুমতি দিতেন।” (আবূ দাউদ) ৬৮২

ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহু আরো একটি হাদীস বর্ণনা করেন, যার ভাষা পূর্বে বর্ণিত হাদীসের ভাষা থেকে আলাদা, তবে বিষয়বস্তুতে বেশ মিল রয়েছে। তিনি বলেন যে নবী করীম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “তোমরা যেসব ওষুধ ব্যবহার কর তার মধ্যে উত্তম হচ্ছে লাদু (মুখ দিয়ে সেবন করার ওষুধ), নস্য (নাক দিয়ে সেবন করা ওষুধ), রক্তমোক্ষণ (শিঙ্গা লাগানো) এবং জোলাপ (বিরোচক ওষুধ)। তোমরা যে সুরমা ব্যবহার কর তার মধ্যে উত্তম হচ্ছে ‘ইছমিদ' নামক সুরমা। কেননা এটা চোখের জ্যোতি বৃদ্ধি করে এবং চোখের পাতার পশম গজায়। রাবী আরো বলেন, রসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের একটি সুরমাদানি ছিলো। তিনি ঘুমানোর পূর্বে তা থেকে উভয় চোখে তিনবার করে সুরমা লাগাতেন।” (মুসনাদে আহমাদ ও আত-তিরমিযী) ৬৮৩

নাকে ওষুধ প্রয়োগের বিষয়ে আরো একটি হাদীস রয়েছে, যা বর্ণনা করেছেন ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহু। তিনি বলেন

যে, “একদা নবী করীম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর নাকের মধ্যে ওষুধ প্রয়োগ করেছেন।” (আবূ দাউদ) ৬৮৪

এ হাদীস দুটোর ভেতর স্বাস্থ্য বিজ্ঞানের বেশ শিক্ষণীয় দিক রয়েছে যা সুপ্ত অবস্থায় আছে। এটি আলোচনা করলে আমরা জানতে পারি যে অসুস্থ ব্যক্তি কোন্ পদ্ধতিতে ওষুধ সেবন করতে পারবে সে সম্পর্কে নবী করীম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের যথেষ্ট জ্ঞান ছিলো। ওষুধ সেবনের এ পদ্ধতিসমূহকে আমরা আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় oral route, nasal route and rectal route বলে থাকি। Rectal route এ suppositories and purgatives দেয়া হয়ে থাকে। তাছাড়া ফোঁড়া বড় হয়ে পুঁজ হলে তিনি সেগাফ করার জন্য পরামর্শ দিয়েছিলেন, যাকে আধুনিক ভাষায় incision or minor surgical operation Blood letting technique and

ophthalmological medicines সম্পর্কেও তাঁর যথেষ্ট জ্ঞান ছিলো।

FOR MORE CLICK HERE
NTRCA COLLEGE LEVEL HISTORY/ইতিহাস গাইড/ বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ইতিহাস
১০ তম বিসিএস -৪৪তম বিসিএস এর প্রশ্ন ও সমাধান 10th BCS to 44th Bcs MCQ Question Solution
বিসিএস ব্যাংক প্রাইমারি পরীক্ষার-এর প্রশ্ন ও সমাধান
সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন SEO বই লেখক : মোঃ মিজানুর রহমান
মাতৃস্বাস্থ্য/Motherhood
ওষুধ নির্দেশিকা
সহীহ বুখারী শরীফ হাদিস আরবি বাংলা (৭৫৬৩ টি হাদিস)
সহীহ মুসলিম শরীফ হাদিস আরবি বাংলা (৭৪৫৩ টি হাদিস)
সুনানে তিরমিজি শরীফ হাদিস আরবি বাংলা (৩৯৫৬ টি হাদিস)
সুনানে নাসায়ী শরীফ হাদিস আরবি বাংলা (৫৭৫৮ টি হাদিস)
সুনানে ইবনে মাজাহ শরীফ হাদিস আরবি বাংলা (৪৩৪১ টি হাদিস)
সুনানে আবু দাউদ শরীফ হাদিস আরবি বাংলা (৫২৭৪ টি হাদিস)

Copyright © Quality Can Do Soft.
Designed and developed by Sohel Rana, Assistant Professor, Kumudini Government College, Tangail. Email: [email protected]