আল্লাহর রসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কোন্ রোগের চিকিৎসা নেই বলে ইরশাদ করেছেন?

উত্তর : উসামা ইবনে শারীক রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে হযরত যিয়াদ ইবনে ইলাকা বর্ণনা করেন, “আমি একদা নবী করীম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের খিদমতে উপস্থিত ছিলাম। তখন কয়েকজন বেদুঈন লোক এসে প্রশ্ন করে, হে আল্লাহর রসূল! আমরা চিকিৎসা গ্রহণ না করলে কি আমাদের কোনো গুনাহ হবে? নবী করীম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উত্তরে বললেন, হে আল্লাহর বান্দাগণ! তোমরা চিকিৎসা গ্রহণ কারো। আল্লাহ তা'য়ালা একটি ব্যাধি ব্যতীত আর কোনো ব্যাধি সৃষ্টি করেননি, যার প্রতিষেধক

তিনি সৃষ্টি করেননি এবং যা দুরারোগ্য, অর্থাৎ incurable. তারা জিজ্ঞেস করলো, সেটা কোন রোগ? রসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, সেটা হলো বার্ধক্য, Old age.

এ হাদীসটি মুসনাদে আহ্মাদ ও আত-তিরমিযী শরীফে লিপিবদ্ধ আছে। That is to saw, “Allah has not sent down an ailment for which no remedy has been prescribed except one disease, that is incurable. They ask what that? He said, it is old age. M

ইবনে মাজাহ শরীফে উদ্ধৃত হাদীসের ভাষা আলাদা। সেখানে হাদীসের শেষাংশে অতিরিক্ত বেশ কিছু শব্দ আছে, “তারা বললো, ইয়া রসূলাল্লাহ! বান্দাকে যা কিছু দেয়া হয় তার মধ্যে উত্তম জিনিস কী? তিনি বলেন “ সচ্চরিত্র।” (ইবনে মাজাহ) ৮০৮

যাহোক, বর্তমানে বিজ্ঞানীরা anti-aging drug তৈরির চেষ্টায় রত। আমরা কেউই এই সুন্দর পৃথিবী থেকে বিদায় নিতে চাইনা। বৃদ্ধ বয়সেও সিঙ্গাপুর, মাদ্রাজ, ব্যাংকক যাই treatment এর জন্য। বার্ধক্য আমাদের কাম্য নয় বা তাকে আমরা জয় করতে চাই। তাই দেখা যায় plastic surgery-এর মাধ্যমে মানুষ নিজের চেহারাকে যুবক বা যুবতী দেখানোর জন্য প্রাণপণ চেষ্টা করে। সামান্য কয়েকদিনের জন্যে হলেও আমরা অন্যকে বোকা বানানোর চেষ্টা করি যে আমি এখনও যুবক ও কর্মক্ষম। কিন্তু হঠাৎ সেই সুস্থ সুন্দর মানুষকেও কোনো প্রকার নোটিশ ছাড়াই মৃত্যুর ডাকে সাড়া দিতে হয়। এটিই সৃষ্টির নিয়ম।

প্রশ্ন- ২৭৮ : মুহতারাম, আমরা প্রায়ই শুনে থাকি যে ভুল চিকিৎসার কারণে অথবা ডাক্তারের অবহেলার জন্য রোগী মারা গেছে। এই ভুল চিকিৎসা তখনই হয় যখন চিকিৎসক অনভিজ্ঞ হন অথবা তিনি একজন অজ্ঞ বা হাতুড়ে ডাক্তার হন। বাংলাদেশে এই ভুল চিকিৎসায় মৃত্যুবরণের ঘটনা অহরহই ঘটে থাকে এবং আদালতে মামলাও হয়। বস্তুত ডাক্তারি বিদ্যায় বা চিকিৎসাশাস্ত্রে প্রকৃত জ্ঞানলাভ শেষে সনদপ্রাপ্ত না হয়ে এবং বাংলাদেশ মেডিকেল ও ডেন্টাল কাউন্সিল (BMDC ) কর্তৃক registered না হয়ে বাংলাদেশে চিকিৎসা কাজে নিয়োজিত হওয়া আইনে দণ্ডনীয় অপরাধ। এ ধরনের বিধান পৃথিবীর প্রায় দেশেই বলবৎ আছে। এ সম্পর্কে নবী করীম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কী বক্তব্য আছে?

উত্তর : জি হ্যাঁ, আছে। আমর ইবনে শুয়াইব তাঁর পিতা হতে এবং তিনি তার পিতামহের বরাত দিয়ে বর্ণনা করেন যে নবী করীম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “যদি কেউ চিকিৎসাশাস্ত্র অধ্যয়ন না করে কারো চিকিৎসা করে, তাহলে সেই রোগীর জন্য সে সম্পূর্ণরূপে দায়ী থাকবে।” ৮০৯ হাদীসটি আবূ দাউদ, ইবনে মাজাহ ও মুসতাদরাকে উদ্ধৃত করা হয়েছে।

আব্দুল আযীয ইবনে উমর ইবনে আব্দুল আযীয রহমাতুল্লাহি আলাইহি থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমার পিতার নিকট যারা আসতেন তাদের বর্ণনা, রাসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “যে ব্যক্তি ডাক্তার না হয়ে রোগীর চিকিৎসা করে এবং তার ডাক্তার হওয়া সম্পর্কে যদি কেউ না জানে, তার চিকিৎসা দ্বারা কারো ক্ষতি হয়, তবে সে যিম্মাদার হবে। যেমন- কেউ যদি রক্তমোক্ষণ করতে গিয়ে কোন শিরা কেটে ফেলে, অথবা বড় করে কাটে বা ফাঁড়ে, অথবা এমনভাবে দাগ দেয়, যাতে রোগী মারা যায়, তবে তার উপর দিয়াত ওয়াজিব হবে।” (আবূ দাউদ) ৮১০

আল-খাত্তাবী রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন, “আমি এ মত সমর্থন করি যে, কোনো ব্যক্তি যদি কোনো রোগীর চিকিৎসা প্রদান করতে গিয়ে তার সীমা লঙ্ঘন করে এবং এর ফলে যদি রোগী মারা যায়, তাহলে সে তার মৃত্যুর জন্য দায়ী থাকবে। আর কোনো ব্যক্তি যদি যথাযথ যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতা না থাকা সত্ত্বেও নিজেকে অভিজ্ঞতা ও যোগ্যতাসম্পন্ন বলে দাবি বা প্রচার করে, তাহলে সে সীমা লঙ্ঘন করেছে এবং এ ক্ষেত্রে এটি সাধারণভাবে স্বীকৃত যে ঐসব ডাক্তার বা হাতুড়ে ডাক্তারের চিকিৎসায় মৃত্যুবরণকারী ব্যক্তির উত্তরাধিকারীগণ সে মৃত্যুর ক্ষতিপূরণ আদায় করতে পারে।” ৮১১ এ রিওয়ায়াতটি বর্ণনা করেছেন আল্লামা আস-সুয়ূতী রহমাতুল্লাহি আলাইহি।

সম্মানিত দর্শক-শ্রোতা-পাঠক! মূলত এ দুটো হাদীসের মমার্থ ও আল-খাত্তাবীর রিওয়ায়াতটিই হচ্ছে Focal point of Islamic Medical Ethics. হাদীস দুটোর শিক্ষণীয় দিক হচ্ছে, কোনো ব্যক্তি যদি যথাযথ অভিজ্ঞতা ও জ্ঞান ছাড়াই কারো চিকিৎসা করে এবং রোগীর কোনো ক্ষতি সাধন করে, তাহলে উক্ত রোগীর অঙ্গ বা স্বাস্থ্যহানির জন্য সে দায়ী থাকবে। হাদীসটি এ ইঙ্গিতও দেয় যে, হাতুড়ে

ডাক্তারগণ তাদের ভুল বা অবৈধ চিকিৎসা প্রদানের দরুন রোগীর ক্ষতি হলে দায়ী থাকবে। তাই যেসব ডাক্তার অনভিজ্ঞ অথবা যারা চিকিৎসাশাস্ত্র ভালভাবে অধ্যয়ন না করে অন্য কোনো উপায়ে সার্টিফিকেট অর্জন করেছেন, তাদের মানুষের স্বাস্থ্য ও জীবন নিয়ে ছিনিমিনি খেলা উচিত নয়। কারণ এর ফলে তারা যে শুধু আইনের দৃষ্টিতেই দায়ী হবেন তা নয়, বরং নবী করীম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের বক্তব্য অনুযায়ী তাদেরকে আল্লাহর কাছেও জবাবদিহি করতে হবে। আমি তাই আহ্বান জানাবো হাতুড়ে ডাক্তারগণ আল্লাহর নিকট ক্ষমা চান এবং মানুষের জীবন নিয়ে খেলা করার পেশা পরিত্যাগ করুন । এই সাথে ইসলামিক টিভির দেশ ও বিদেশের অগণিত দর্শক তথা সম্মানিত ডাক্তারদের উদ্দেশ্যে বলছি, “বিশেষ কারণে যদি কোনো ডাক্তার রোগ নির্ণয়ে অক্ষম হন, অথবা সঠিক ওষুধ নির্বাচন করতে না পারেন, তখন শুধুমাত্র অনুমান বা কিয়াসের উপর ভিত্তি করে ব্যবস্থাপত্র দেয়া উচিত নয়। বরং তিনি যেনো সংকোচ পরিহার করে তার চেয়ে অভিজ্ঞ ও অধিকতর জ্ঞানী ডাক্তারের নিকট রোগীকে refer করেন, এজন্য বিশেষভাবে অনুরোধ জানাচ্ছি।”

সম্মানিত চিকিৎসকদের অনেকে হয়তো অবগত আছেন যে ৯২০ খ্রিস্টাব্দে আব্বাসীয় খলীফা আল- মুকতাদির একদা জানতে পারেন যে জনৈক ডাক্তারের ভুল চিকিৎসার কারণে বাগদাদে একজন রোগী মারা গেছে। তৎক্ষণাৎ তিনি একটি আইন জারি করেন, যে সকল ডাক্তার চিকিৎসাশাস্ত্র অধ্যয়ন শেষে চিকিৎসা সেবায় কাজে নিয়োজিত থাকবেন, তাদেরকে নির্ধারিত পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে অবশ্যই উত্তীর্ণ হতে হবে। উত্তীর্ণ ডাক্তারগণ পরে শপথ গ্রহণ করবেন এ মহান পেশায় যোগদান ও মানুষের সেবায় নিয়োজিত থাকার জন্যে। সেই শপথকেই Hippocratic oath নামে অভিহিত করা হয়ে থাকে । পরবর্তীতে ইসলামী একত্ববাদের ধারণার আলোকে শপথ বাক্যাবলিতে যথেষ্ট পরিবর্তন আনা হয় । প্রখ্যাত হাদীসশাস্ত্র বিশারদ ও হাফিয আল্লামা ইবনুল কাইয়িম তার তিব্বুন নববী বইয়ে হাদীস দুটোর ব্যাখ্যায় ডাক্তার কর্তৃক ভুল চিকিৎসার পাঁচটি ক্ষেত্র বর্ণনা করেন। পরবর্তীতে সুযোগ হলে এ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করবো ইনশা আল্লাহ্ ।

FOR MORE CLICK HERE
NTRCA COLLEGE LEVEL HISTORY/ইতিহাস গাইড/ বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ইতিহাস
১০ তম বিসিএস -৪৪তম বিসিএস এর প্রশ্ন ও সমাধান 10th BCS to 44th Bcs MCQ Question Solution
বিসিএস ব্যাংক প্রাইমারি পরীক্ষার-এর প্রশ্ন ও সমাধান
সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন SEO বই লেখক : মোঃ মিজানুর রহমান
মাতৃস্বাস্থ্য/Motherhood
ওষুধ নির্দেশিকা
সহীহ বুখারী শরীফ হাদিস আরবি বাংলা (৭৫৬৩ টি হাদিস)
সহীহ মুসলিম শরীফ হাদিস আরবি বাংলা (৭৪৫৩ টি হাদিস)
সুনানে তিরমিজি শরীফ হাদিস আরবি বাংলা (৩৯৫৬ টি হাদিস)
সুনানে নাসায়ী শরীফ হাদিস আরবি বাংলা (৫৭৫৮ টি হাদিস)
সুনানে ইবনে মাজাহ শরীফ হাদিস আরবি বাংলা (৪৩৪১ টি হাদিস)
সুনানে আবু দাউদ শরীফ হাদিস আরবি বাংলা (৫২৭৪ টি হাদিস)

Copyright © Quality Can Do Soft.
Designed and developed by Sohel Rana, Assistant Professor, Kumudini Government College, Tangail. Email: [email protected]