অন্তরের ব্যাধি বা মনের রোগ সম্পর্কে। মুহতারাম, মনের রোগ সম্পর্কে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতা'য়ালা কুরআন মজীদে কী ইরশাদ করেছেন?

উত্তর: আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতা'য়ালা সূরা বাকারায় ইরশাদ করেন,

فِي قُلُوبِهِمْ مَّرَضٌ فَزَادَهُمُ اللَّهُ مَرَضًا

“তাদের অন্তরে আছে রোগ । আল্লাহ্ সে রোগকে আরো বাড়িয়ে দিয়েছেন।” (আল বাকারাহ ২:১০ ) "In their hearts is a disease (of doubt and hypocrisy) and Allah has increased their disease." (Al-Baqarah 2:10)

এখানে মুনাফিকীকেই রোগ হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে। আর “আল্লাহ্ এ রোগ আরো বাড়িয়ে দিয়েছেন” এ কথাটির অর্থ এই যে তিনি কালবিলম্ব না করে ঘটনাস্থলেই মুনাফিকদের কৃত কার্যকলাপের শাস্তি দেননা; বরং তাদেরকে ঢিল (সুযোগ) দিতে থাকেন। এর ফলে মুনাফিকরা নিজেদের কলা- কৌশলগুলোকে আপাতদৃষ্টিতে সফল হতে দেখে আরো বেশি ও পূর্ণ মুনাফিকী কার্যকলাপে লিপ্ত হতে থাকে । সূরা মুদ্দাস্সিরে আল্লাহ্ সুবহানাহু ওয়াতা'য়ালা ইরশাদ করেন,

وَلِيَقُوْلَ الَّذِينَ فِي قُلُوبِهِمْ مَرَضٌ وَ الْكَفِرُونَ مَا ذَا أَرَادَ اللهُ بِهَذَا مَثَلًا

“আর যাদের মনে রোগ (অন্তরে ব্যাধি) আছে, তারা এবং কাফিররা বলবে, এ অভিনব কথা (উক্তি) দ্বারা আল্লাহ্ কী বুঝাতে চেয়েছেন?” (আল-মুদ্দাসসির ৭৪:৩১ )

"...... and those whose hearts are sick ( due to hypocrisy) and the disbelievers say, What does Allah intend to mean with this parable." (Al-Muddaththir 74:31) কুরআন মজীদে সাধারণত 'মনের রোগ' কথাটি ‘মুনাফিকী' অর্থে ব্যবহার করা হয়। তবে নাযিল হওয়া আয়াতগুলোর ধারাবাহিকতা লক্ষ্য করলে এর অর্থ দাঁড়ায়, সন্দেহের রোগ অকাট্যভাবে এবং নিঃসংশয়ে আল্লাহ, আখিরাত, অহী, রিসালাত, জান্নাত ও দোযখ অস্বীকার করে এমন লোক শুধু মক্কায় নয়, গোটা পৃথিবীতে আগেও যেমন ছিলো, এখনও তেমনিই আছে। এরাই সন্দেহের রোগে আক্রান্ত । আল্লাহ্ আছেন কিনা, আখিরাত হবে কি হবে না, ফেরেশতা, বেহেশত-দোযখ বাস্তবিকই আছে না কল্পকাহিনী মাত্র। প্রত্যেক যুগে এ ধরনের সন্দেহ পোষণকারী লোকের সংখ্যা একেবারে কম ছিলোনা।

তাই তাদের মুনাফিকীও ছিলো বেশ প্রবল। এরা মুখে বিশ্বাস করতো, কিন্তু অন্তরে নয়। অপরদিকে সূরা আন-নূরে আল্লাহ রব্বুল 'আলামীন বলেন,

وَإِذَا دُعُوا إِلَى اللهِ وَرَسُوْلِهِ لِيَحْكُمَ بَيْنَهُمْ إِذَا فَرِيقٌ مِنْهُمْ مُعْرِضُونَ وَإِنْ يَكُن لَّهُمُ الْحَقُّ

يَأْتُوا إِلَيْهِ مُذْعِنِيْنَ لَفِي قُلُوبِهِمْ مَّرَضٌ أَمِ ارْتَابُوا أَمْ يَخَافُونَ أَنْ يَحِيْفَ اللَّهُ عَلَيْهِمْ وَرَسُولُهُ بَلْ أُولَيكَ هُمُ الظَّلِمُونَ ﴾

“যখন তাদের ডাকা হয় আল্লাহ ও তাঁর রসূলের দিকে, যাতে রসূল তাদের পরস্পরের মোকদ্দমার ফয়সালা করে দেন, তখন তাদের মধ্যকার একটি দল পাশ কাটিয়ে যায় (মুখ ফিরিয়ে নেয়)। তবে যদি সত্য তাদের অনুকূলে থাকে, তাহলে তারা বড়ই বিনীত হয়ে রসূলের কাছে ছুটে আসে। তাদের অন্তরে কি ব্যাধি আছে (মুনাফিকীর রোগ) ? নাকি তারা সংশয় পোষণ করে, না তারা ভয় করে যে আল্লাহ্ ও তাঁর রসূল তাদের প্রতি জুম করবেন? বরং তারা নিজেরাই তো জালিম।” (আন-নূর ২৪:৪৮-৫০) উপরের তিনটি আয়াতে আল্লাহ্ সন্দেহ ও মুনাফিকীর কথা বর্ণনা করেছেন। সূরা আহযাবে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতা'য়ালা আরো বলেন,

وَإِذْ يَقُولُ الْمُنْفِقُونَ وَالَّذِينَ فِي قُلُوبِهِمْ مَرَضٌ مَا وَعَدَنَا اللهُ وَرَسُولُةَ إِلَّا غُرُورًا

“স্মরণ করো যখন মুনাফিকরা এবং যাদের অন্তরে ছিলো ব্যাধি তারা পরিষ্কার বলেছিল, আল্লাহ্ ও তাঁর রসূল আমাদের যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন তা ধোঁকা ছাড়া আর কিছুই ছিলোনা।" (আল আহযাব ৩৩:১২ ) "And when the hypocrites and those in whose hearts is a disease (of doubt) said, Allah and His Messenger (SAWS) promised us nothing but delusion." (Al-Ahzab 33:12) এ আয়াতে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতা'য়ালা মুনাফিকীকে 'অন্তরের রোগ' হিসেবে উল্লেখ করেছেন। সূরা আহযাবের অপর আয়াতে আল্লাহ বলেন,

يُنِسَاءَ النَّبِيِّ لَسْتُنَّ كَأَحَدٍ مِنَ النِّسَاءِ إِنِ اتَّقَيْتُنَّ فَلَا تَخْضَعْنَ بِالْقَوْلِ فَيَطْمَعَ الَّذِي فِي قَلْبِهِ مَرَضٌ وَقُلْنَ قَوْلًا مَعْرُوفًا

“হে নবীর স্ত্রীগণ! তোমরা অন্য নারীদের মতো নও। যদি তোমরা আল্লাহকে ভয় করে থাকো তবে পর- পুরুষের সঙ্গে মিহিস্বরে বা কোমল কণ্ঠে এমনভাবে কথা বলো না যাতে অন্তরে যার ব্যাধি আছে, সে প্রলুব্ধ হয়ে পড়ে। এবং সোজা ও স্বাভাবিকভাবে অর্থাৎ ন্যায়সংগতভাবে কথা বলো।” (আল আহ্যাব ৩৩:৩২) এ আয়াতটিতে বলা হয়েছে যে কোনো পর-পুরুষের সাথে কথা বলার সময় নারীর কথা বলার ভঙ্গি ও ধরন এমন হতে হবে, যাতে আলাপকারী পুরুষের মনে কোনো কুচিন্তার উদ্রেক না হয়। অর্থাৎ তার বলার ভঙ্গিতে কোনো নমনীয়তা বা মন মাতানো ভাব থাকবেনা। সে স্বজ্ঞানে তার স্বরে মাধুর্য সৃষ্টি করবেনা। কারণ তা হলে যাদের অন্তরে ব্যাধি আছে তারা আবেগে উদ্বেলিত হয়ে কুপথে পা বাড়ানোর প্ররোচনা বা সাহস পাবে। তাই এ আয়াতে কুচিন্তা, খারাপ কামনা, ব্যভিচারের ইচ্ছা ও পাপের অভিলাষকেই অন্তরের ব্যাধি বা মনের রোগ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। ইংরেজিতে তাকে আমরা বলি illness of the heart. আর এই হৃদয়ের ব্যাধিকে spiritual or emotional ailmentsও বলা যায়

FOR MORE CLICK HERE
NTRCA COLLEGE LEVEL HISTORY/ইতিহাস গাইড/ বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ইতিহাস
১০ তম বিসিএস -৪৪তম বিসিএস এর প্রশ্ন ও সমাধান 10th BCS to 44th Bcs MCQ Question Solution
বিসিএস ব্যাংক প্রাইমারি পরীক্ষার-এর প্রশ্ন ও সমাধান
সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন SEO বই লেখক : মোঃ মিজানুর রহমান
মাতৃস্বাস্থ্য/Motherhood
ওষুধ নির্দেশিকা
সহীহ বুখারী শরীফ হাদিস আরবি বাংলা (৭৫৬৩ টি হাদিস)
সহীহ মুসলিম শরীফ হাদিস আরবি বাংলা (৭৪৫৩ টি হাদিস)
সুনানে তিরমিজি শরীফ হাদিস আরবি বাংলা (৩৯৫৬ টি হাদিস)
সুনানে নাসায়ী শরীফ হাদিস আরবি বাংলা (৫৭৫৮ টি হাদিস)
সুনানে ইবনে মাজাহ শরীফ হাদিস আরবি বাংলা (৪৩৪১ টি হাদিস)
সুনানে আবু দাউদ শরীফ হাদিস আরবি বাংলা (৫২৭৪ টি হাদিস)

Copyright © Quality Can Do Soft.
Designed and developed by Sohel Rana, Assistant Professor, Kumudini Government College, Tangail. Email: [email protected]