প্রশ্ন-০২ : রোগ ও রোগী সম্পর্কে ওষুধপত্র আর চিকিৎসকের ভূমিকা সম্পর্কে ইসলামী দৃষ্টিভঙ্গি কী?

উত্তর : চিকিৎসা সম্পর্কেও মানুষের মধ্যে বিভিন্ন প্রকার বিপরীতমুখী ধারণা দেখা যায়। কিছু সংখ্যক লোক রোগ নিরাময়কে শুধুমাত্র ওষুধপত্র ও চিকিৎসকের অভিজ্ঞতার মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখে। বস্তুবাদী জগতে তারা এর বাইরে অন্য কিছু চিন্তা করতে চায় না। আবার কিছু কিছু লোক আছে যারা কোনো কোনো সময় কতিপয় রোগের ক্ষেত্রে আধুনিক এ্যালোপ্যাথিক ওষুধপত্রকে অনর্থক মনে করে থাকে এবং সেসব ক্ষেত্রে তারা ঝাড়-ফুঁক ও অন্যান্য সনাতন (traditional) ও বিকল্প পদ্ধতি (alternative medicine) যথা কবিরাজি, হেকিমি, হোমিওপ্যাথি ইত্যাদি ব্যবস্থার মাধ্যমে রোগের নিরাময় পছন্দ করে। আবার কিছু লোক আছে যারা ওষুধপত্রকে তাওয়াক্কুলের পরিপন্থি বলে মনে করে। অবশ্য এ ধরনের লোকের সংখ্যা নগণ্য। ওষুধপত্র ও চিকিৎসা সম্পর্কে ইসলামী দৃষ্টিভঙ্গি হচ্ছে রোগ আল্লাহ্ থেকে আসে আর চিকিৎসাও আল্লাহ্ পক্ষ থেকেই। চিকিৎসা খোদায়ী বিধান। অসুস্থতায় চিকিৎসা গ্রহণ করা রসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সুন্নাত। আল্লাহ্ সুবহানাহু ওয়াতা'য়ালা ইরশাদ করেন,
وَإِذَا مَرِضْتُ فَهُوَ يَشْفِينِ
“ওয়াইযা মারিস্তু ফাহুয়া ইয়াশফিন।” (আশ্ শুয়ারা ২৬:৮০ )
________________________________________ (ইবরাহীম আলাইহিস সালাম বলেন), “আমি যখন অসুস্থ বা রোগাক্রান্ত হই তখন তিনিই (আল্লাহ্) আমাকে রোগমুক্ত করেন বা নিরাময় দান করেন।”
"And when I am ill, it is He (Allah) Who heals me." (Ash-Shu'ara 26:80)
এ আয়াত থেকে আমরা বুঝতে পারি যে আল্লাহ্ মানুষকে কেবল সৃষ্টি করেই ছেড়ে দেননি; বরং সৃষ্টি করার সাথে সাথে পথ-নির্দেশনা, প্রতিপালন, দেখাশুনা, রক্ষণাবেক্ষণ ও প্রয়োজন পূর্ণ করার দায়িত্বও নিয়েছেন। জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে, প্রতিটি মুহূর্তে যে ধরনের পথনির্দেশ প্রয়োজন হয় তা দেয়ার পূর্ণ ব্যবস্থাও তিনি করে রেখেছেন। তাছাড়া তিনি মানুষের মৌলিক প্রয়োজনে তাকে বিপদ-আপদ, রোগ- শোক, ধ্বংসকারী জীবাণু ইত্যাদি থেকে রক্ষা করার জন্য কার্যকরী ও ভারসাম্যপূর্ণ এক চিরন্তন ব্যবস্থা দান করেছেন, মানুষের জ্ঞান এখনো যার পুরোপুরি সন্ধান দিতে পারেনি। এই আয়াতের সমর্থনে নবী করীম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন যা হযরত যায়িদ ইবনে আসলাম রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন, “রসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের যমানায় জনৈক ব্যক্তি আঘাত পেলে ক্ষতস্থানে তাঁর রক্ত জমাটবদ্ধ হয়ে যায়। উপস্থিতদের একজন বনী আবার গোত্রের দুই ব্যক্তিকে ডেকে আনলে উভয়েই রুগ্ন ব্যক্তিকে দেখেন। তখন রসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, “তোমাদের মধ্যে চিকিৎসা বিজ্ঞান সম্পর্কে কে ভালো জানে?” এ কথা শুনে উভয়েই বলে উঠলেন, হে আল্লাহর রসূল! চিকিৎসাতেও কি কল্যাণ আছে?” বর্ণনাকারী যায়িদ ইবনে আসলাম রাদিয়াল্লাহু আনহু ধারণা করেন যে রসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরো বলেছেন, “যিনি রোগ দিয়েছেন চিকিৎসাও তিনি দিয়েছেন।” (যাদুল মা'আদ ও মুয়াত্তা ইমাম মালিক)
আল্লামা হাফিজ ইবনুল কাইয়িম রহমাতুল্লাহি আলাইহি নিম্নোক্ত রিওয়ায়াত পেশ করেন যা ইয়াহূদীদের বর্ণনা হিসেবে জানা যায়। “একদা হযরত ইবরাহীম আলাইহিস সালাম আল্লাহ্ তা'য়ালার নিকট প্রশ্ন করলেন, হে আমার প্রতিপালক! রোগ কার পক্ষ থেকে? মহান আল্লাহ্ রব্বুল 'আলামীন বললেন, আমার পক্ষ থেকে। তিনি পুনরায় প্রশ্ন করলেন, ওষুধ কার পক্ষ থেকে? মহান আল্লাহ্ রব্বুল আলামীন বললেন, ওষুধও আমার পক্ষ থেকে। ইবরাহীম আলাইহিস সালাম আবার জিজ্ঞেস করলেন, তাহলে চিকিৎসকের প্রয়োজন কী? আল্লাহ্ তা'য়ালা উত্তরে বললেন, চিকিৎসকের মাধ্যমে ওষুধ পাঠানো হয়।” (ইবনুল কাইয়িম)
উপরোক্ত তিনটি প্রশ্ন ও জবাবের মধ্যেও রোগ, নিরাময়, চিকিৎসা ও ওষুধপত্র ইত্যাদি সম্পর্কে ইসলামী দর্শনের আভাস পাওয়া যায়। বস্তুত রোগ যেমন আল্লাহ্র পক্ষ থেকে, তেমনি নিরাময়ের ওষুধও মহান আল্লাহ্ পক্ষ থেকেই। তিনিই সৃষ্টি করেছেন ওষুধ বা নিরাময়ের উপকরণাদি। তৃতীয় বিষয়টি হচ্ছে চিকিৎসক। আল্লাহ্ই চিকিৎসককে চিনিয়ে দেন। ফলে রোগ সঠিকভাবে নির্ণয় করা ও সঠিক ওষুধ নির্বাচনে তিনি কৃতকার্য হন। ডাক্তার আর ওষুধ রোগ নিরাময়ের অসীলা মাত্র। সত্যিকার অর্থে একজন চিকিৎসক কোনো রোগীকে আরোগ্য দান করাতে পারেন না যতোক্ষণ পর্যন্ত আল্লাহ্ ইচ্ছা না করেন। উদাহরণ স্বরূপ বলছি, ধরুন পাঁচটি শিশু ডায়রিয়ায় ভুগছে। তাদের সবার ডায়রিয়ার কারণ একই । তাদের রোগের উপসর্গও একই ধরনের। আর তাই রোগ নিরূপণ ও ব্যবস্থাপত্রও একই ধরনের হয়েছে । কয়েকদিন পর দেখা গেলো তিনটি শিশু আরোগ্য লাভ করেছে আর দু'জন মৃত্যুবরণ করেছে। কেনো
(ইবরাহীম আলাইহিস সালাম বলেন), “আমি যখন অসুস্থ বা রোগাক্রান্ত হই তখন তিনিই (আল্লাহ্) আমাকে রোগমুক্ত করেন বা নিরাময় দান করেন।”
"And when I am ill, it is He (Allah) Who heals me." (Ash-Shu'ara 26:80)
এ আয়াত থেকে আমরা বুঝতে পারি যে আল্লাহ্ মানুষকে কেবল সৃষ্টি করেই ছেড়ে দেননি; বরং সৃষ্টি করার সাথে সাথে পথ-নির্দেশনা, প্রতিপালন, দেখাশুনা, রক্ষণাবেক্ষণ ও প্রয়োজন পূর্ণ করার দায়িত্বও নিয়েছেন। জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে, প্রতিটি মুহূর্তে যে ধরনের পথনির্দেশ প্রয়োজন হয় তা দেয়ার পূর্ণ ব্যবস্থাও তিনি করে রেখেছেন। তাছাড়া তিনি মানুষের মৌলিক প্রয়োজনে তাকে বিপদ-আপদ, রোগ- শোক, ধ্বংসকারী জীবাণু ইত্যাদি থেকে রক্ষা করার জন্য কার্যকরী ও ভারসাম্যপূর্ণ এক চিরন্তন ব্যবস্থা দান করেছেন, মানুষের জ্ঞান এখনো যার পুরোপুরি সন্ধান দিতে পারেনি। এই আয়াতের সমর্থনে নবী করীম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন যা হযরত যায়িদ ইবনে আসলাম রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন, “রসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের যমানায় জনৈক ব্যক্তি আঘাত পেলে ক্ষতস্থানে তাঁর রক্ত জমাটবদ্ধ হয়ে যায়। উপস্থিতদের একজন বনী আবার গোত্রের দুই ব্যক্তিকে ডেকে আনলে উভয়েই রুগ্ন ব্যক্তিকে দেখেন। তখন রসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, “তোমাদের মধ্যে চিকিৎসা বিজ্ঞান সম্পর্কে কে ভালো জানে?” এ কথা শুনে উভয়েই বলে উঠলেন, হে আল্লাহর রসূল! চিকিৎসাতেও কি কল্যাণ আছে?” বর্ণনাকারী যায়িদ ইবনে আসলাম রাদিয়াল্লাহু আনহু ধারণা করেন যে রসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরো বলেছেন, “যিনি রোগ দিয়েছেন চিকিৎসাও তিনি দিয়েছেন।” (যাদুল মা'আদ ও মুয়াত্তা ইমাম মালিক) ১
আল্লামা হাফিজ ইবনুল কাইয়িম রহমাতুল্লাহি আলাইহি নিম্নোক্ত রিওয়ায়াত পেশ করেন যা ইয়াহূদীদের বর্ণনা হিসেবে জানা যায়। “একদা হযরত ইবরাহীম আলাইহিস সালাম আল্লাহ্ তা'য়ালার নিকট প্রশ্ন করলেন, হে আমার প্রতিপালক! রোগ কার পক্ষ থেকে? মহান আল্লাহ্ রব্বুল 'আলামীন বললেন, আমার পক্ষ থেকে। তিনি পুনরায় প্রশ্ন করলেন, ওষুধ কার পক্ষ থেকে? মহান আল্লাহ্ রব্বুল আলামীন বললেন, ওষুধও আমার পক্ষ থেকে। ইবরাহীম আলাইহিস সালাম আবার জিজ্ঞেস করলেন, তাহলে চিকিৎসকের প্রয়োজন কী? আল্লাহ্ তা'য়ালা উত্তরে বললেন, চিকিৎসকের মাধ্যমে ওষুধ পাঠানো হয়।” (ইবনুল কাইয়িম) ২
উপরোক্ত তিনটি প্রশ্ন ও জবাবের মধ্যেও রোগ, নিরাময়, চিকিৎসা ও ওষুধপত্র ইত্যাদি সম্পর্কে ইসলামী দর্শনের আভাস পাওয়া যায়। বস্তুত রোগ যেমন আল্লাহ্র পক্ষ থেকে, তেমনি নিরাময়ের ওষুধও মহান আল্লাহ্ পক্ষ থেকেই। তিনিই সৃষ্টি করেছেন ওষুধ বা নিরাময়ের উপকরণাদি। তৃতীয় বিষয়টি হচ্ছে চিকিৎসক। আল্লাহ্ই চিকিৎসককে চিনিয়ে দেন। ফলে রোগ সঠিকভাবে নির্ণয় করা ও সঠিক ওষুধ নির্বাচনে তিনি কৃতকার্য হন। ডাক্তার আর ওষুধ রোগ নিরাময়ের অসীলা মাত্র। সত্যিকার অর্থে একজন চিকিৎসক কোনো রোগীকে আরোগ্য দান করাতে পারেন না যতোক্ষণ পর্যন্ত আল্লাহ্ ইচ্ছা না করেন। উদাহরণ স্বরূপ বলছি, ধরুন পাঁচটি শিশু ডায়রিয়ায় ভুগছে। তাদের সবার ডায়রিয়ার কারণ একই । তাদের রোগের উপসর্গও একই ধরনের। আর তাই রোগ নিরূপণ ও ব্যবস্থাপত্রও একই ধরনের হয়েছে । কয়েকদিন পর দেখা গেলো তিনটি শিশু আরোগ্য লাভ করেছে আর দু'জন মৃত্যুবরণ করেছে। কেনো
রোগ দর্শন, চিকিৎসার গুরুত্ব, রোগীর মর্যাদা ও দু'য়া এবং রোগীর জন্য সুস্থদের করণীয় পাঁচজনের সবাই মৃত্যুবরণ করলো না অথবা কেনো পাঁচজনই সুস্থ হলো না। এর পেছনে কী রহস্য থাকতে পারে? কারণ আল্লাহ্ যাকে চেয়েছেন সে আরোগ্য লাভ করেছে; আর যাকে তিনি চাননি সে মৃত্যুবরণ করেছে। বস্তুত এটিই প্রকৃত সত্য। এটিই অহরহ ঘটছে।
আরো একটি উদাহরণ দিচ্ছি, মনে করুন, ছয় জন ব্যক্তি ব্লাড ক্যান্সারে ভুগছেন। তাদের সবারই রোগের কারণ ও উপসর্গ প্রায় একই ধরনের। আর তাই ব্যবস্থাপত্রও একই ধরনের। সবার জন্যই রেডিওথিরাপি এবং কেমোথিরাপি নিয়মিতভাবে দেয়ার পরামর্শ Oncologist-গণ দিয়েছেন। সঠিকভাবে ও নিয়মিতভাবে তাদের চিকিৎসা চলছে। বছর দুই পর দেখা গেলো, তাদের মধ্যে চার জন মৃত্যুবরণ করেছেন আর এ দু'জন সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে স্বাভাবিক কাজকর্ম শুরু করছেন। আমার প্রশ্ন, কেনো ছয়জনই মৃত্যুবরণ করলেন না অথবা কেনো তারা সবাই সুস্থ হয়ে উঠলেননা। উত্তর একই। আল্লাহ্ তা'য়ালা যাকে চেয়েছেন নিরাময় দান করেছেন, যাকে চাননি তার মৃত্যু হয়েছে। কারণ মৃত্যুর সময় তো জন্মের আগে থেকেই নির্ধারিত, অথচ মানুষ তা জানে না ।
চিকিৎসকের নিকট গমন, তার ব্যবস্থাপত্র গ্রহণ এবং ওষুধ সেবন সবই রোগীর বা তার আত্মীয়- স্বজনদের ইখতিয়ারাধীন। কিন্তু আরোগ্যদান আল্লাহ্র ইখতিয়ারধীন, মানুষের নয়। তাই মানুষ আরোগ্যলাভের জন্য প্রাণপণ চেষ্টা করতে পারে। বিশ্ববিখ্যাত হাসপাতালে বড় বড় ডাক্তারের কাছে যেতে পারে কিন্তু আরোগ্যলাভের জন্য বলপ্রয়োগ করতে পারেনা। সে যে আরোগ্যলাভ করবেই, এ গ্যারান্টি তাকে কেউ দিতে পারবেনা।

FOR MORE CLICK HERE
NTRCA COLLEGE LEVEL HISTORY/ইতিহাস গাইড/ বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ইতিহাস
১০ তম বিসিএস -৪৪তম বিসিএস এর প্রশ্ন ও সমাধান 10th BCS to 44th Bcs MCQ Question Solution
বিসিএস ব্যাংক প্রাইমারি পরীক্ষার-এর প্রশ্ন ও সমাধান
সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন SEO বই লেখক : মোঃ মিজানুর রহমান
মাতৃস্বাস্থ্য/Motherhood
ওষুধ নির্দেশিকা
সহীহ বুখারী শরীফ হাদিস আরবি বাংলা (৭৫৬৩ টি হাদিস)
সহীহ মুসলিম শরীফ হাদিস আরবি বাংলা (৭৪৫৩ টি হাদিস)
সুনানে তিরমিজি শরীফ হাদিস আরবি বাংলা (৩৯৫৬ টি হাদিস)
সুনানে নাসায়ী শরীফ হাদিস আরবি বাংলা (৫৭৫৮ টি হাদিস)
সুনানে ইবনে মাজাহ শরীফ হাদিস আরবি বাংলা (৪৩৪১ টি হাদিস)
সুনানে আবু দাউদ শরীফ হাদিস আরবি বাংলা (৫২৭৪ টি হাদিস)

Copyright © Quality Can Do Soft.
Designed and developed by Sohel Rana, Assistant Professor, Kumudini Government College, Tangail. Email: [email protected]