কেউ রাগান্বিত হলে নবী করীম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার জন্যে কী উপদেশ দিয়েছেন? সম্মানিত দর্শকদের উদ্দেশে বুঝিয়ে বলুন।

উত্তর : সুসংবাদ, দুঃসংবাদ উভয় অবস্থায়ই আমাদের আবেগ-অনুভূতির বহিঃপ্রকাশ ঘটে থাকে। কুরআন মজীদে যেসব আবেগ-অনুভূতির বিষয়ে ধৈর্য ধারণ করতে বলা হয়েছে বা সংযমের পরিচয় দিতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে, তার মধ্যে ক্রোধ অন্যতম। ক্রোধ নিয়ন্ত্রণে নবীজি সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বেশকিছু উপদেশ দিয়েছেন। এ ছাড়া আনন্দ-বিষাদ, হাসি-কান্না, দুঃখ-বেদনা, মানসিক অস্থিরতা, উদ্বেগ ইত্যাদি বিষয়েও তিনি আমাদের করণীয় নির্ধারণ করে দিয়েছেন।

ক্রোধ ষড়রিপুর অন্যতম। বস্তুত রাগান্বিত হওয়া মনের একটি রোগ বা 'মনোরোগ'। নবী করীম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রাগকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছেন। তিনি নিজে তাঁর কাজের লোককে ভুল করলেও দিনে ৭০ বার ক্ষমা করেছেন। কখনো রাগান্বিত হননি। হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন যে নবী করীম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ৮২২

“শক্তিশালী সে নয় যে তার প্রতিপক্ষকে মুষ্টিযুদ্ধে পরাজিত করে, বরং শক্তিশালী সেই ব্যক্তি যে রাগের সময় রাগকে নিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষম।” (সহীহ আল বুখারী, মুসলিম ও আবূ দাউদ) ৮২১ আবূ হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহুও একই ধরনের হাদীস বর্ণনা করেছেন। (সহীহ মুসলিম)

প্রশ্ন-২৮৯ : ক্রোধের উৎপত্তি কোথা থেকে? এ বিষয়ে নবী করীম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কোনো হাদীস আছে কি? থাকলে বিস্তারিত আলোচনা করুন।

উত্তর : ক্রোধ শয়তান থেকে উৎপত্তি হয়। কেউ রেগে গেলে শয়তান খুশি হয়। আবূ ওয়ায়েল রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন যে উরওয়া ইবনে মুহাম্মদ সা'দী তার পিতার সূত্রে পিতামহ আতীয়া রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণনা করেছেন যে নবী করীম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “ক্রোধ শয়তান থেকে উৎপত্তি। আর শয়তানকে অবশ্যই আগুন থেকে সৃষ্টি করা হয়েছে।

আগুনকে পানি দ্বারা নেভানো হয়। সুতরাং তোমাদের কেউ রাগান্বিত হলে তার উযূ করা উচিত।” (মুসনাদে আহমাদ ও আবূ দাউদ) ৮২৩

সম্মানিত দর্শক-শ্রোতা! রাগান্বিত হওয়া এক প্রকার শয়তানি কাজ, যা মানুষকে প্রভাবিত করে এবং তাকে এমন কাজ করতে বাধ্য করে, যে কাজ সে স্বাভাবিক অবস্থায় থাকলে কখনো করতোনা। রাগের বশবর্তী হয়ে মানুষ অনেক খারাপ কাজ করে বসে, যেমন স্ত্রীকে তালাক দেয়া, কাউকে খুন করা, জিনিসপত্র ভেঙে ফেলা, ছেলেমেয়েকে মারধর করা ইত্যাদি। আবূ হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, “একদা এক ব্যক্তি নবী করীম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বললো, আমাকে কিছু উপদেশ দিন। তখন তিনি উত্তরে বলেন, কখনো রাগন্বিত হয়োনা। (That is, never get angry.) লোকটি পুনঃ পুনঃ রসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট উপদেশ গ্রহণ করার জন্য অনুরোধ করতে লাগল। নবী করীম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রত্যেকবারই বললেন, ক্রোধান্বিত হয়োনা।” (সহীহ আল বুখারী) ৮২৪

এ হাদীসটি আমাদের এ শিক্ষাই দেয় যে রাগান্বিত হয়ে বা রাগের বশবর্তী হয়ে কোনো কাজ করা বা জটিল কোনো সিদ্ধান্ত নেয়া উচিত নয়। ইহা নবীজির শিক্ষা। নবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরো বলেছেন, “তোমরা তার মতো কিছু করো না যে ব্যক্তি রাগের বশবর্তী হয়ে কাজ করে থাকে।” তখন নবী করীম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে জিজ্ঞেস করা হলো, “এমন কোনো ব্যক্তি আছে কি, যে রাগান্বিত হয়না? তিনি উত্তরে বললেন, না, নেই। তবে এমন অনেক ব্যক্তি রয়েছে যারা রাগান্বিত হলে তাদের রাগকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে এবং যদি তারা বদমেজাজী হয়ে থাকে, তাহলে তারা তাদের ক্রোধকে নিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষম হয়, যাতে ক্রোধ তাদের পরাজিত করতে না পারে এবং ক্রোধের বশবর্তী হয়ে কোনো কাজ যেনো তারা না করতে পারে।" (আস-সুয়ূতী) ৮২৫

“নবী ইয়াহ্ইয়া আলাইহিস সালাম (John the Baptist) একদা হযরত ঈসা আলাইহিস সালামকে জিজ্ঞেস করলেন, কোন জিনিসটি কষ্টকর? তিনি উত্তর দেন, আল্লাহর রোষ। হযরত ইয়াহ্ইয়া আলাইহিস সালাম পুনরায় জিজ্ঞেস করলেন, কোন কাজ বা জিনিসটি একজনকে আল্লাহর রোষ সৃষ্টিতে সহায়তা করে? হযরত ঈসা আলাইহিস সালাম উত্তর দেন, ক্রোধ। হযরত ইয়াহইয়া আলাইহিস সালাম আবার জিজ্ঞেস করলেন, কোন জিনিস বা কাজটি ক্রোধ সৃষ্টি করতে বা তা বাড়াতে সাহায্য করে? ঈসা আলাইহিস সালাম উত্তর দেন, দাম্ভিকতা, মান-সম্মানের জন্য তীব্র আকাঙ্ক্ষা, ঔদ্ধত্য ও অহংকার।” এ রিওয়ায়াতটি পেশ করেছেন ইমাম গায্যালী রহমাতুল্লাহি আলাইহি তাঁর বিখ্যাত কিতাব 'এহইয়াউল উলুমুদ্দীে

রাগ আগুন হবার প্রমাণ এই যে, রাগে চোখ লাল হয়ে যায়, ঘাড়ের রগ ফুলে যায়, রং বিবর্ণ হয় ও সমস্ত শরীরে উদ্দাম আসে। বস্তুত রাগান্বিত ব্যক্তির মুখ থেকে রাগান্বিত অবস্থায় কুফরি বাক্য বের হয়ে যেতে পারে। তাই ঐরূপ ব্যক্তির মান-সম্মান মানুষের কাছে কমে যায়। তার শত্রু বাড়ে ও বন্ধু কমে যায় । রাগ হতে হিংস্রতা, পরশ্রীকাতরতা ও শত্রুতার মতো ব্যাধির সৃষ্টি হয়। রাগান্বিত ব্যক্তি শক্তিশালী হলে অন্যের ক্ষতি করতে দ্বিধা করেনা, আর শক্তি না থাকলে নিজেই নিজের জীবন বা ধন-সম্পদ ধ্বংস করে কিংবা নিজের কাপড় ছিঁড়ে ফেলে । অনেক ক্ষেত্রে মাত্রাতিরিক্ত রাগ মানুষকে আত্মহত্যার পথে ধাবিত করে ।

FOR MORE CLICK HERE
NTRCA COLLEGE LEVEL HISTORY/ইতিহাস গাইড/ বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ইতিহাস
১০ তম বিসিএস -৪৪তম বিসিএস এর প্রশ্ন ও সমাধান 10th BCS to 44th Bcs MCQ Question Solution
বিসিএস ব্যাংক প্রাইমারি পরীক্ষার-এর প্রশ্ন ও সমাধান
সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন SEO বই লেখক : মোঃ মিজানুর রহমান
মাতৃস্বাস্থ্য/Motherhood
ওষুধ নির্দেশিকা
সহীহ বুখারী শরীফ হাদিস আরবি বাংলা (৭৫৬৩ টি হাদিস)
সহীহ মুসলিম শরীফ হাদিস আরবি বাংলা (৭৪৫৩ টি হাদিস)
সুনানে তিরমিজি শরীফ হাদিস আরবি বাংলা (৩৯৫৬ টি হাদিস)
সুনানে নাসায়ী শরীফ হাদিস আরবি বাংলা (৫৭৫৮ টি হাদিস)
সুনানে ইবনে মাজাহ শরীফ হাদিস আরবি বাংলা (৪৩৪১ টি হাদিস)
সুনানে আবু দাউদ শরীফ হাদিস আরবি বাংলা (৫২৭৪ টি হাদিস)

Copyright © Quality Can Do Soft.
Designed and developed by Sohel Rana, Assistant Professor, Kumudini Government College, Tangail. Email: [email protected]