হুপিং কাশি শিশুদের জন্য খুব কষ্টকর পীড়া, তবে মৃত্যুর হার প্রায়ই থাকে না— যদি চিকিৎসার দোষ না হয়। এটা প্রায়ই সংক্রামক আকারে দেখা দেয় এবং একসঙ্গে অনেক শিশু আক্রান্ত হয়ে পড়ে। ভিন্নমতাবলম্বীরা এটা ৩ মাসের কম পারে না বা ৩ মাস পরে এমনি সে ভাল হয়ে যায়, বলেন । পরন্তু আমরা হোমিওপ্যাথগণের মতে বিশ্বাসী নই। প্রকৃত ওষুধ প্রয়োগ হলে প্রয়োগকাল হতেই রোগী আরোগ্যের দিকে যেতে থাকে— তবুও ২/৩ সপ্তাহ লেগে যায় পূর্ণ আরোগ্য হতে। এটা প্রায়ই হঠাৎ আসে না। প্রথমত সাধারণ সর্দিকাশি হিসেবে আরম্ভ হয়। ক্রমে নিশ্বাস ফেলার সময় কাশির বেগে কাশতে কাশতে দম আটকান ভাব (আক্ষেপ) এবং কাশি শেষে দম নেয়ার সময় হুপ জাতীয় এক প্রকার শব্দ হয়। শেষোক্ত কারণে একে হুপিং কাশি বলে ।
রোগ লক্ষণ অপেক্ষা রোগীর লক্ষণ সাদৃশ্যে চিকিৎসা করলে তাড়াতাড়ি সুফল পাওয়া যায়। রোগ লক্ষণে চিকিৎসায় আরোগ্যে বিলম্ব ঘটে। বড়দের প্রায়ই এ রোগ হয় না- হলে সাংঘাতিক আকার ধারণ করে।
একোনাইট ন্যাপ- ৩, ৬, ১২, ৩০: পীড়ার সূচনাবস্থায় প্রয়োগে কাশি আর হুপিং কাশিতে পরিণত হতে পারে না। ওখানেই আরোগ্য হয়ে যায়। কাশির সময় শিশু গলায় হাত দেয়। শুষ্ক ঠাণ্ডা রোগের কারণ।
আর্নিকা- ৬, ১২, ৩০ : কাশির সময় বুকে খুব ব্যথা পায় বলে শিশু কাশির ঝোঁক বুঝলেই কাঁদতে থাকে ও যতক্ষণ পারে কাশি চেপে রাখে। যখন আর পারে না তখন কাশে ও কাঁদে। তখন তার বমিতে রক্তের ছিটা দেখা যায়। চোখে রক্ত জমে লাল টকটকে হয়।
আর্সেনিক এলব-৩০, ২০০ : এর চারিত্রিক লক্ষণাদি বিদ্যমান থেকে পানি পান মাত্র কাশি বৃদ্ধি হলে প্রযোজ্য।
বেলাডোনা-৩x, ৩, ৬, ৩০ : কাশতে কাশতে চোখ মুখ লাল হয়ে যায়। চোখে রক্ত জমে। থেমে থেমে কাশি বৃদ্ধি পায়। কাশি একেবারেই শুষ্ক। কিছুই পড়ে না কেবল গলা খুশখুশায় ও কাশি পায় ।
ক্যালকেরিয়া কার্ব-৩০, ২০০, ১০০০ : মোটা সোটা শিশু। শীতকাতর। মাথার ঘামে বালিশ ভিজে যায়। পেট বড় ও উঁচু। ডিম ভালবাসে কিন্তু দুধ ভালবাসে না কারণ, খেলে হজম হয় না। শিশুর ক্ষুধা কম ।
ক্যালকেরিয়া ফস- ৩০, ২০০, ১০০০ : জীর্ণ-শীর্ণ লম্বাটে শিশু। পেট ভেতর দিকে ঢোকানো। ক্ষুধা খুব বেশি এবং খায়ও বেশি কিন্তু শীর্ণতা সারে না। শিশু শীতকাতর, মাথার ঘামে বালিশ ভিজে যায়।
কার্বোভেজ- ৩০, ২০০ : শিশু অতিশয় দুর্বল। প্রায়ই পেট ফাঁপে ও দুর্গন্ধযুক্ত পায়খানা করে। পাখার বাতাসে ভাল থাকে। প্রান্তদেশ অর্থাৎ কনুই হতে হাতের পাতা ও হাঁটু হতে পায়ের পাতা পর্যন্ত ঠাণ্ডা এবং তথায় জ্বালা ।
ক্যামোমিলা- ৬, ১২, ৩০ : রাগ উঠলেই কাশি বৃদ্ধি (কলোসিন্থ)। মেজাজ খিটখিটে। কেবল কোলে চড়ে বেড়াতে চায়। নানা জিনিসের বায়না ধরে।
সিনা- ২০০, ১০০০ : শিশু নাক-চুলকায়। নিদ্রার মধ্যে দাঁত কাটে। এটা ওটা নানা জিনিসের বায়না ধরে। খিটখিটে মেজাজ খুব বেশি। মিষ্টি খেতে ভালবাসে।
ফরাগ ফ্যাটাই- ৬, ৩০ : হুপিং কাশিতে সেখানে অনেকক্ষণ কাশির পর বমি হয়ে তবে কাশির উপশম হয় ও সেই বমির সাথে নির্গত শেষ্মা জাতীয় পদার্থ লম্বা হয়ে ঝোলে সেখানে ব্যবহার্য। এর কফ সাদা ।
কোরালিয়াম রুব্রাম ৬, ৩০: কাশতে কাশতে মুখমণ্ডল কাল হয়ে ওঠার পর কাশি কিছুটা কমে। কাশি দিনে কম, রাতে খুব বাড়ে। প্রাতঃকালেও বাড়ে।
কুগ্রামমেট- ৬, ৩০, ২০০ : ঝাঁকে ঝাঁকে কাশি আসে অর্থাৎ ২/৪/১০টা যাই হোক একবারে কিছু কাশি হয়ে কমে গিয়ে কিছুক্ষণ ভাল থাকার পর আবার ঐভাবে কয়েকটা কাশি একসঙ্গে হয়ে আবার নিবৃত্ত হয়। এইভাবে বার বার হতে থাকে। কাশির সময় ঠাণ্ডা পানি পানে কাশি কিছুটা কম পড়ে। কাশির সময় মুখমণ্ডল নীল বর্ণ হয়ে যায়। কাশির পর শিশু অবসন্ন হয়ে পড়ে।
ড্রসেরা- ৩০, ২০০ : রাত ১০/১১টায় কাশির বৃদ্ধি। শিশুতে আমযুক্ত উদরাময় থাকতে পারে। সঠিক প্রয়োগ হলে ১ মাত্রাতেই আরোগ্য হয়।
কেলি-বাই-৩০, ২০০ : শেষ রাত- ৩টা হতে ভোর ৭টা পর্যন্ত কাশির বৃদ্ধি । কফ খুব আঠাল । কোথাও লাগলে সেখানে দড়ির মত লম্বা হয়ে ঝুলতে থাকে। সহজে
ছাড়ে না। কপালে ও নাকের গোড়ায় বেদনা, কফ হলদে।
কেলিসাফ-৬, ৩০, ২০০ : পালসের লক্ষণের শিশু পাল্স দ্বারা উপকার না হলে বা আংশিক উপকার হলে কেলিসাফ প্রযোজ্য। পাসে পিপাসা নেই, কিন্তু কেলিসালফে পিপাসা আছে। অতএব পাল্স্ ব্যবহারের পর রোগী যদি পিপাসা হয় তাতেও এটা প্রয়োগে ক্ষান্ত হওয়া উচিত নয়।
মিফাইটিস- ৬, ৩০ শ্লেষ্মা কম কিন্তু আক্ষেপ বেশি। রাতে ও শয়নে বৃদ্ধি । মার্কসল- ৩০, ২০০, ১০০০ : শয়নের পর কাশির বৃদ্ধি। কিন্তু বাম পার্শ্বে বেশি শয়ন করে। মুখ হতে লালা ঝরে। ঠাণ্ডা-গরম কোনটাই বেশি হলে সহ্য হয় না। নাতিশীতোষ্ণ পছন্দ করে। শরীর খুব ঘামে। কাশতে কাশতে ঘেমে অস্থির হয়।
পালসেটিলা ঃ ৬, ৩০, ২০০ : শিশু গরমকাতর কিন্তু পিপাসাহীন। মেজাজ খুব ঠাণ্ডা, কান্নাকাটি খুব কম করে। খোলা বাতাস খুব পছন্দ করে এবং তাতে ভাল থাকে ।
পাকা হলুদ রংয়ের কফ।
ভিরেট্রাম এলব-৩x, ৩, ৬, ৩০, ২০০ : কাশির সময় কপালে শীতল ঘর্ম ।
রোগীতত্ত্ব : রোগী ৬ বছর বয়স্ক এক বালক। প্রায় ১ মাস যাবত হুপিং কাশিতে ভুগছে। কাশতে কাশতে দম ফুরিয়ে আটকে যায়। তখন নিঃশ্বাস নিতে গেলে সহজে নেয়া যায় না। দুপদুপ শব্দের মত শব্দ হতে হতে পরে নিঃশ্বাস নেয়া যায়। আগে কাশতে কাশতে মুখ-চোখ লাল হয়ে উঠতো। ১০/১২ দিন যাবত চোখে রক্ত উঠে গেছে এবং সব সময়ে তা চোখে থাকে। কোন সময় দূর হয় না। উজ্জ্বল লাল রঙের চোখ। কোন সময় না জানি চোখ ফেটে রক্ত ঝরতে থাকে বলে ছেলের পিতা একটু কাঁদলেন। আমি দেখলাম চোখ সাংঘাতিক লাল। তন্মধ্যে ডান চোখ আরও বেশি লাল। মোটা-সোটা সুন্দর ছেলে। তার স্বভাব ভাল থাকলে খুব আমুদে কিন্তু অসুখ হলেই একেবারে নেতিয়ে পড়ে। কাশি থেমে থেমে বৃদ্ধি পায়। অর্থাৎ কতক্ষণ ভাল থাকে, কতক্ষণ কাশে। আবার কতক্ষণ ভাল থাকে ও কতক্ষণ কাশে এই ভাব প্রথম হতেই চলছে। তার পিতা বলেন, তার জন্য চেষ্টার কম করি নাই। সরিষার তৈল ও পিয়াজ খাওয়াইছি, কফ গলে পড়ার জন্য। তুলসী পাতার রস খাওয়াইছি। ফাগুন গোটার মালা গাঁইথা গলায় দিছি। আর সব ছেলের বেলায় মালা যত শুকায় কাশিও তত কমে কিন্তু আমার ছেলের বেলায় কিন্তু কাশির কিছুই হয় নাই। সব বরাত। যাউক- তারপর এলোপ্যাথি বড়ি- তাও মুড়ীর মত খাওয়াইলাম এতদিন কিন্তু পোলা যা তাই। চেষ্টা আর করতেই চাইছিলাম না কিন্তু পোলার কষ্ট আর মায়ের অস্থিরতার জন্য হোমিওপ্যাথিতে আসলাম। দেহি কিছু অয় কি না ?
ওষুধ নির্বাচন : ডানদিক অধিক আক্রান্ত, সুস্থ থাকলে খুব আমুদে এবং অসুখ হলে ভেঙে পড়ে, চোখ ভয়ানক লাল থেমে থেমে রোগের বৃদ্ধি । লক্ষণ ৪টি বেলাডোনার। চোখে রক্ত জমা আর্নিকা ও মোটা সোটা সুন্দর দেহ ক্যালকেরিয়া কার্বের লক্ষণ। তবে তাদের ঐ একেকটি করে লক্ষণই রোগীতে বিদ্যমান সুতরাং বাদ। অতএব উক্ত তারিখে বেলাডোনা-৩ দুই ঘণ্টা অন্তর দৈনিক ৮ বার করে ২দিনে ১৬ মাত্রা। ৩য় শক্তি উক্ত নিয়মে ১৬ মাত্রা সেবনের পর খবর দেয় কাশি ও চোখে লাল কম। পরের ২ দিনে ৬ষ্ঠ শক্তি ১২ মাত্রা দৈনিক ৬ মাত্রা করে এবং
পরবর্তী ২ দিন দৈনিক ৪ মাত্রা করে ৩০ শক্তির মোট ১০ মাত্রা সেবনে রোগ অর্ধেক কমে গেলে দৈনিক ৪ মাত্রা করে প্লাসিবো সেবন করতে থাকে। কিন্তু ১ সপ্তাহ পর জানায় আর সে কাশছে না। চোখে অতি সামান্য স্থানে রক্ত আছে। তা কমছে না। বেলাডোনা-২০০ দুই মাত্রা ১ ঘণ্টা এবং ৬ দিনের জন্য। ৬২৪ চা মাত্রা করে দৈনিক সেব্য গ্লাসিবো ২৪ মাত্রা। আর ওষুধ দিতে হয়নি। এতেই সম্পূর্ণ ভাল হয়ে যায়।
FOR MORE CLICK HERE
NTRCA COLLEGE LEVEL HISTORY/ইতিহাস গাইড/ বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ইতিহাস
১০ তম বিসিএস -৪৪তম বিসিএস এর প্রশ্ন ও সমাধান 10th BCS to 44th Bcs MCQ Question Solution
বিসিএস ব্যাংক প্রাইমারি পরীক্ষার-এর প্রশ্ন ও সমাধান
সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন SEO বই লেখক : মোঃ মিজানুর রহমান
মাতৃস্বাস্থ্য/Motherhood
ওষুধ নির্দেশিকা
সহীহ বুখারী শরীফ হাদিস আরবি বাংলা (৭৫৬৩ টি হাদিস)
সহীহ মুসলিম শরীফ হাদিস আরবি বাংলা (৭৪৫৩ টি হাদিস)
সুনানে তিরমিজি শরীফ হাদিস আরবি বাংলা (৩৯৫৬ টি হাদিস)
সুনানে নাসায়ী শরীফ হাদিস আরবি বাংলা (৫৭৫৮ টি হাদিস)
সুনানে ইবনে মাজাহ শরীফ হাদিস আরবি বাংলা (৪৩৪১ টি হাদিস)
সুনানে আবু দাউদ শরীফ হাদিস আরবি বাংলা (৫২৭৪ টি হাদিস)