শিশুদের সংক্রামক রোগ ও তার প্রতিকার শিশুদের সংক্রামক রোগের লক্ষণ বা উপসর্গ মুহাম্মদ এবাদুল্লাহ

একজন পূর্ণবয়স্ক লোকের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার চেয়ে শিশুর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অনেক কম। উন্নয়নশীল দেশে অজ্ঞতার কারণে এর আকার আরো প্রকট হয়ে দেখা দেয়। তাছাড়া তথাকথিত আধুনিকতার নামে শিশুদের মায়ের দুধ খাওয়া থেকে বঞ্চিত করার ফলে শিশুদের দেহে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়। ফলে শিশুরা যে কোনও সংক্রামক রোগে সহজে আক্রান্ত হয়। মায়ের দুধ এমন একটি খাদ্য যার কোনও বিকল্প পৃথিবীতে নেই। শিশু জন্মের পর থেকে তার চাহিদানুযায়ী বয়সের সাথে সাথে মায়ের দুধের গুণাগুণ পরিবর্তন হয়। ফলে মায়ের দুধ পানকারী শিশু সহজে জটিল রোগে আক্রান্ত হয় না। পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে, যে-সমস্ত শিশুরা মায়ের দুধ পান করে না তারাই ডায়রিয়া বা অন্যান্য সংক্রামক রোগে বেশি আক্রান্ত হয়।
নিম্নে শিশুদের সংক্রামক রোগ ও তাঁর প্রতিকার সম্পর্কে আলোচনা করা হলো : হাম ঃ হাম একটি মারাত্মক সংক্রামক রোগ। প্রথমে শিশুর জ্বর, কাশি ও সর্দি হয় আর চোখ লাল হয়ে যায়। শিশু ক্রমেই বেশি পীড়িত হতে থাকে। মুখে ঘা এবং ডায়রিয়াও হতে পারে। ২/৩ দিন পর কানের পেছনে এবং গলায় ঘামাচির মত ওঠে। এরপর মুখমণ্ডল ও শরীরে দেখা দেয়। সবার পরে ওঠে হাতে ও পায়ে। হামের আক্রমণে শিশুর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা যথেষ্ট কমে যায়। যার ফলে নিউমোনিয়া, পেটের অসুখ, কান পাকা ইত্যাদি রোগ হতে পারে। মারাত্মক অবস্থায় মস্তিষ্ক প্রদাহ দেখা দিতে পারে।
প্রতিরোধ : শিশুকে বিছানায় শুইয়ে রাখতে হবে, প্রচুর তরল পানীয় ও পুষ্টিকর খাবার দিতে হবে। যদি কানে ব্যথা থাকে তাহলে তাকে এন্টিবায়োটিক দিনহাম হলে শিশুকে আলাদা ঘরে রাখতে হবে, অন্যের সাথে মেলামেশা করা বন্ধ রাখতে হবে। ৮ থেকে ১৪ মাস বয়সের মধ্যে আপনার শিশুকে হামের টিকা দিন।
হুপিং কাশি : হুপিং কাশি সংক্রামিত হওয়ার এক বা দুই সপ্তাহ পরে আক্রান্ত হওয়ার লক্ষণ প্রকাশ পায়। সর্দি জ্বর, নাক দিয়ে পানি পড়া এবং কাশি নিয়ে শুরু হয়। পরবর্তী পর্যায়ে কাশি খুব বেড়ে যায় এমনকি কাশতে কাশতে শিশু বমি করে ফেলে।
কাশি বের হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ফুসফুসে বাতাস ঢোকে, তাই শব্দ করে । হুপিং কাশি ৩ মাস কিংবা তারও বেশী সময় স্থায়ী থাকে। এক বছরের কম বয়সের শিশুর হুপিং কাশি মারাত্মক।
শিশুর ওজন যাতে কমে না যায় সেজন্য তাকে পুষ্টিকর খাবার দিতে হবে। বমি হওয়ার পরপরই খাবার দিতে হবে। কাশির জন্য শিশু ঘুমাতে না পারলে ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ঘুমের ওষুধ প্রয়োগ করা যেতে পারে। পূর্ব থেকে ভ্যাকসিন গ্রহণ করাই এই রোগ প্রতিকারের অন্যতম ব্যবস্থা । ধনুষ্টংকার : পশু কিংবা মানুষের মলে যে ধনুষ্টংকারের জীবাণু থাকে তা ক্ষতের মাধ্যমে শরীরে প্রবেশ করে ধনুষ্টংকার হয় ।
নবজাত শিশুর ধনুষ্টংকারের কারণ : শিশুর নাভিরজ্জুর মাধ্যমে ধনুষ্টংকারের জীবাণু দেহে প্রবেশ করে। যে অস্ত্র দিয়ে নাভিরজ্জু কাটা হয় সেই অস্ত্র যদি সেদ্ধ করে পরিষ্কার করা না হয়, নাভিরজ্জু যদি শরীর বরাবর কাটা না হয়, নাভিরজ্জু যদি বড় রেখে কাটা হয় তখনই ধনুষ্টংকার রোগ হওয়ার বেশি সম্ভাবনা থাকে।
লক্ষণ : একটি সংক্রমণ ক্ষত দেখা যায় ।
খাবার গিলে খেতে কষ্ট হয়।
দাঁতের কপাটি শক্ত হয়ে যায়। মাংস-পেশী শক্ত হয়ে যায়, সমস্ত শরীরে খিঁচুনী প্রতিরোধ ঃ ধনুষ্টংকারের থেকে রক্ষা পেতে হলে শিশু ও প্রাপ্তবয়স্ক প্রত্যেকেরই টীকা নেয়া উচিত। নবজাত শিশুর ক্ষেত্রে পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা অন্যতম উপায় । নাভিরজ্জু কাটার জন্য যে সমস্ত যন্ত্র ব্যবহার করা হয় সেগুলোকে জীবাণুমুক্ত করে নিতে হবে।
ডিপথেরিয়া ঃ সর্দির মতই প্রথমে জ্বর, মাথা ব্যথা এবং গলায় ঘা নিয়ে ডিপথেরিয়া শুরু হয়। গলার পেছনের দিকে কখনও কখনও নাকে বা ঠোঁটে হলুদ মেটে পর্দার মত পড়ে। গলাও ফুলে যেতে পারে। প্রশ্বাস দিয়ে দুর্গন্ধ বের হয়।
প্রতিরোধ ঃ রোগীকে আলাদা করে রাখতে হবে। বড় শিশুদের এন্টিবায়োটিক ওষুধ ব্যবহার করতে হবে। গরম পানিতে অল্প লবণ দিয়ে গরগরা করলে উপকার পাওয়া যাবে। দীর্ঘক্ষণ গরম পানির ভাপ নাক দিয়ে টানতে দিন। সবচেয়ে সহজ পদ্ধতি হলো ডিপিটি ভ্যাকসিন দিয়ে এই রোগ সহজেই প্রতিরোধ করা যায়। পলিও : দু'বছরের কম বয়সের শিশুদের মধ্যে পলিও খুবই সাধারণ ব্যাপার। ভাইরাস সংক্রমণ ও সর্দি, জ্বর, বমি এবং ফোঁড়া দিয়ে এর শুরু হয়। কখনও সবগুলো ৯০ লক্ষণই একসঙ্গে থাকে। কোনও কোনও সময় শরীরের একটি অংশ অবশ হতে থাকে। অবশ অংগটি ক্রমশ সরু হতে থাকে এবং অন্যান্য অংগের মতো তা আর বেড়ে ওঠে না। প্রতিরোধ ঃ একবার শুরু হলে কোন ওষুধই অবশতা ছাড়াতে পারে না। এ ক্ষেত্রে এন্টিবায়োটিকও কোন কাজ দেয় না। পলিও প্রতিরোধের সর্বোত্তম পন্থা হলো পানি ও ভ্যাকসিন দেয়া, শিশুর ২, ৩ এবং ৪ মাস বয়সের সময় পলিও ড্রপ দিয়ে এই রোগ অতি সহজেই প্রতিরোধ করা যায়। এই রোগে ইতিমধ্যেই যেসব শিশু বিকলাঙ্গ হয়ে গেছে তাদের প্রচুর পুষ্টিকর খাবার দিন। প্রতিদিন ব্যায়াম করতে দিন। শিশুকে হাঁটানোর চেষ্টা করুন ।
আজকে যারা শিশু তারাই ভবিষ্যতে দেশ গড়ার কাজে নিয়োজিত হবে। কাজেই তাদের সুষ্ঠু সুন্দর স্বাস্থ্যগত পরিবেশে বেড়ে ওঠার সুযোগ দানে আমাদের সচেষ্ট হতে হবে। একটু সচেতন হলেই শিশুদের এই মারাত্মক বিপর্যয় থেকে তাদের রক্ষা করতে পারি। যারা এ সম্পর্কে অবগত নয় তাদের এ ব্যাপারে পরামর্শ দেয়া অন্য সকলের নৈতিক দায়িত্ব ।

FOR MORE CLICK HERE
NTRCA COLLEGE LEVEL HISTORY/ইতিহাস গাইড/ বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ইতিহাস
১০ তম বিসিএস -৪৪তম বিসিএস এর প্রশ্ন ও সমাধান 10th BCS to 44th Bcs MCQ Question Solution
বিসিএস ব্যাংক প্রাইমারি পরীক্ষার-এর প্রশ্ন ও সমাধান
সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন SEO বই লেখক : মোঃ মিজানুর রহমান
মাতৃস্বাস্থ্য/Motherhood
ওষুধ নির্দেশিকা
সহীহ বুখারী শরীফ হাদিস আরবি বাংলা (৭৫৬৩ টি হাদিস)
সহীহ মুসলিম শরীফ হাদিস আরবি বাংলা (৭৪৫৩ টি হাদিস)
সুনানে তিরমিজি শরীফ হাদিস আরবি বাংলা (৩৯৫৬ টি হাদিস)
সুনানে নাসায়ী শরীফ হাদিস আরবি বাংলা (৫৭৫৮ টি হাদিস)
সুনানে ইবনে মাজাহ শরীফ হাদিস আরবি বাংলা (৪৩৪১ টি হাদিস)
সুনানে আবু দাউদ শরীফ হাদিস আরবি বাংলা (৫২৭৪ টি হাদিস)

Copyright © Quality Can Do Soft.
Designed and developed by Sohel Rana, Assistant Professor, Kumudini Government College, Tangail. Email: [email protected]