স্ট্রোক থেকে বাঁচুন স্ট্রোক ও হৃদরোগের হাত থেকে বাঁচুন

স্ট্রোক থেকে বাঁচুন
নূর-উন-নবী
স্ট্রোক। মস্তিষ্কে রক্ত সঞ্চালন বন্ধ হয়ে আকস্মিক মৃত্যু। স্ট্রোক আঁৎকে ওঠার মত একটা শব্দ। অত্যন্ত ভীতিকর শব্দ। আসলে এটা এমনই ভীতিকর নাম যে, আমেরিকার ডাক্তাররা বহু বছর এর উচ্চারণ এড়িয়ে চলতেন। ভয়াবহ হবার কারণ স্ট্রোকে স্নায়ু এত ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পড়ে যে একে পূর্বাবস্থায় ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়া অধিকাংশ ক্ষেত্রেই সম্ভব হয় না। কারো কারো মতে স্ট্রোককে মস্তিষ্কে হার্ট এ্যাটাকও বলা যেতে পারে ।
একবার স্ট্রোক হলে ধরে নিতে হবে ভবিষ্যতে আরো স্ট্রোক হবার সম্ভাবনা রয়েছে। ছোট ছোট স্ট্রোক বা ট্রান্সিয়েন্ট ইসেমিক এ্যাটাকও (টিআইএ) ভবিষ্যতে প্রাণসংহারী রূপ নিতে পারে। ছোট ছোট স্ট্রোক থেকে কেউ সাময়িকভাবে অন্ধ হয়ে যেতে পারে অথবা শরীরের কোনও অংশ অবশও হয়ে যেতে পারে। একদিক থেকে এটা পরিষ্কার যে, নিয়মিত রক্তচাপ বৃদ্ধি পেলে তা কমানোর পদক্ষেপ গ্রহণ করলে স্ট্রোকের হার দ্রুত হ্রাস পেতে পারে। ডঃ ওয়েস্টন বলেন, রক্তচাপে ভোগেনি এ ধরনের স্ট্রোক-আক্রান্ত ব্যক্তি আমরা কদাচিৎ দেখেছি। এ দু'য়ের মধ্যে অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে। উক্ত রক্তচাপ সম্পর্কে ইভানস ও রোজির সংক্ষিপ্ত সংজ্ঞা হলো :
শরীর ও মনের স্বাভাবিক অবস্থায় রক্তচাপ বয়সের জন্য নির্ধারিত মাত্রার উপরে সব সময় অবস্থান করতে থাকলে এবং নিয়মিত চেকআপ ও চিকিৎসার প্রয়োজন পড়লে তবেই তাকে উচ্চ রক্তচাপ বলা হয়ে থাকে। মানুষের স্বাভাবিক রক্তচাপ কত ? একজন মাঝবয়সী লোকের শারীরিক ও মানসিক বিশ্রামের পর রক্তচাপ থাকে সিস্টলিক (Systolic) ১০০-১২০ মি. মি. এবং ডায়াস্টলিক (Diastolic ) ৬০-৮০ মি.মি.। এ রক্তচাপের আবার বয়স অনুপাতে তারতম্য ঘটে থাকে। রক্তচাপ কত হলে তাকে উচ্চ রক্তচাপ বলা যায় ? সাধারণত সম্পূর্ণ বিশ্রামের পর কোন মানুষের রক্তচাপ যদি ১৪০/৯০ মি.মি.-এর বেশি থাকে তবে বলা হয় অমুক রক্তচাপে ভুগছেন। এটা কিন্তু সব বয়সের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয় ।
যেমন—৭৫ বছরের একজন লোকের রক্তচাপ ১৭০/১০৫ না হলে উচ্চ রক্তচাপ বলা হয় না। বাচ্চাদের বেলায়ও তেমনি তা ভিন্ন। তাই বলে সব উচ্চ রক্তচাপের রোগীরই যে চিকিৎসার প্রয়োজন তাও ঠিক নয়। দেখা গেছে যাদের ডায়াস্টলিক রক্তচাপ ১০০ মি.মি.-এর বেশি থাকে তাদের চিকিৎসা করলে বিভিন্ন জটিলতা এড়ানো সম্ভব। যাদের ডায়াস্টলিক রক্তচাপ ৯০-১০০ মি.মি. তাদের চিকিৎসার প্রয়োজনীয়তা এখন বিতর্কিত বিষয়।
খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তনের মাধ্যমে উচ্চ রক্তচাপ ও স্ট্রোকের ঝুঁকি দুই-ই কমান যায় । উদাহরণস্বরূপ ক্যালসিয়ামের কথাই ধরা যায়। ক্যালসিয়াম উচ্চ রক্তচাপ ও স্ট্রোকের ঝুঁকি হ্রাস করতে সহায়তা করে বলে ধারণা করা হয়। কয়েকটি পরীক্ষা-নিরীক্ষায় দেখা গেছে, লবণ ও লবণজাত খাদ্য গ্রহণ থেকে বিরত থাকলে রক্তচাপ হ্রাস পেতে পারে। পরীক্ষায় এটাও দেখা গেছে, কম সোডিয়াম ও কম চর্বিযুক্ত খাদ্যও রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখা ও ওজন কমানো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।
ধূমপায়ীদের মধ্যে যারা স্ট্রোকের ব্যাপারে উদ্বিগ্ন তাদের শীঘ্রই এ আত্মঘাতী অভ্যাস বাদ দিতে হবে। ধূমপানে স্ট্রোকের ঝুঁকি বেড়ে যায় অনেক বিশেষজ্ঞ এ কথা মানতে রাজী নন। তবে অন্যরা স্ট্রোক প্রশ্নে ধূমপানের বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে থাকেন। অনেক বিশেষজ্ঞের মতে “ধূমপান ও স্ট্রোকের ঝুঁকির মধ্যে ইতিবাচক সংযোগ রয়েছে।” হিউস্টন ভেটারনস এডমিনিস্ট্রেশন মেডিক্যাল সেন্টারের ড. জন মেয়ার মনে করেন যে, ধূমপান রক্তনালীর স্থিতিস্থাপকতার হ্রাস ঘটায় এবং ধীরে ধীরে মস্তিষ্কে রক্ত প্রবাহকে সংকুচিত করে তোলে। তার মতে, ধূমপান স্ট্রোকের ঝুঁকি কয়েকগুণ বাড়িয়ে দেয়।
ড. মেয়ার ও তাঁর সহযোগী রবার্ট এল. রজার্স বলেন, যারা ২০ থেকে ৩০ বছর ধরে দৈনিক ২ থেকে ৩ প্যাকেট সিগারেট ধ্বংস করে তাদের স্ট্রোকের ঝুঁকি অধিকমাত্রায় বেড়ে যায়। বেশ কয়েক বছর আগে ড. মেয়ার ধূমপায়ী ও অধূমপায়ীদের মস্তিষ্কে রক্ত চলাচলের তুলনামূলক পরীক্ষা চালানোর কাজ শুরু করেন। তিনি বিপুলসংখ্যক ধূমপায়ী ও অধূমপায়ীর উপর পরীক্ষা চালান। পরীক্ষায় দেখা যায়, ধূমপায়ীদের রক্ত প্রবাহ কমে গিয়েছিল।
ড. মেয়ার বলেন, মস্তিষ্কে রক্তপ্রবাহ পরীক্ষা করে ডাক্তার ও রোগী সম্ভাব্য স্ট্রোক সম্পর্কে আগাম অবহিত হতে পারেন এবং তা থেকে আত্মরক্ষার ব্যবস্থাও করতে পারেন। তিনি বলেন, আমরা দেখেছি যে, স্ট্রোকের প্রায় দু'বছর আগে থেকেই মস্তিষ্কে রক্তপ্রবাহ হ্রাস পাওয়া শুরু হয়। তিনি আরো বলেন, আমরা মনে করি স্ট্রোক হবার অনেক আশঙ্কা রয়েছে এ ধরনের ব্যক্তি ধূমপান ছেড়ে দিলে তাদের মস্তিষ্কে রক্তপ্রবাহ বৃদ্ধি পাবে। তবে এতে করে রক্তপ্রবাহ স্বাভাবিক স্তরে ফিরে না গেলেও সন্তোষজনক স্তরে গিয়ে পৌঁছবে।
ভিটামিন সি স্ট্রোক প্রতিরোধে সহায়তা করে। বৃটিশ গবেষকরা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখেছেন, যে সকল ব্যক্তি প্রচুর পরিমাণে তাজা ফল ও সব্জি খায় তাদের স্ট্রোকে প্রাণহানির আশংকা কমে যায়। শরীর চর্চার মাধ্যমেও স্ট্রোককে প্রতিরোধ করা যায়। নেদারল্যান্ডে একটি জনগোষ্ঠীর উপর গবেষণা চালিয়ে দেখা গেছে যে, শারীরিক পরিশ্রমের মাধ্যমে স্ট্রোকের ঝুঁকি হ্রাস করা যায়।
কিছুসংখ্যক অভিমত হলো যে ব্যাপকভাবে এন্টিহাইপারটেশন ঔষধ প্রয়োগের পর থেকে স্ট্রোক আক্রান্তের হার হ্রাস পেতে শুরু করে। আবার অন্যান্যের মতে ব্যাপকহারে ভিটামিন সি গ্রহণ এবং লবণের ব্যবহার কমিয়ে দেয়ার মাধ্যমেও স্ট্রোক প্রতিহত করা হচ্ছে।
ড. হোয়েল্টনের মতে উচ্চ রক্তচাপ অথবা স্ট্রোক স্বাভাবিকভাবে মানুষকে আক্রমণ করে না। তিনি বলেন, বয়সের ভারে স্ট্রোক অনিবার্য হয়ে পড়েছে এ ধরনের প্রমাণ নেই। তিনি আরো বলেন, অনেক আদিম সমাজে দেখা গেছে বৃদ্ধ বয়সে মানুষ রক্তচাপ বৃদ্ধি অথবা স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়নি। এ কারণে আমরা স্ট্রোককে ‘পরিবেশগত অনিয়ম' বলে অভিহিত করতে পারি। শরীরে রাসায়নিক কারণে এটা ঘটে না। অতএব স্ট্রোক প্রতিরোধযোগ্য রোগ।

FOR MORE CLICK HERE
NTRCA COLLEGE LEVEL HISTORY/ইতিহাস গাইড/ বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ইতিহাস
১০ তম বিসিএস -৪৪তম বিসিএস এর প্রশ্ন ও সমাধান 10th BCS to 44th Bcs MCQ Question Solution
বিসিএস ব্যাংক প্রাইমারি পরীক্ষার-এর প্রশ্ন ও সমাধান
সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন SEO বই লেখক : মোঃ মিজানুর রহমান
মাতৃস্বাস্থ্য/Motherhood
ওষুধ নির্দেশিকা
সহীহ বুখারী শরীফ হাদিস আরবি বাংলা (৭৫৬৩ টি হাদিস)
সহীহ মুসলিম শরীফ হাদিস আরবি বাংলা (৭৪৫৩ টি হাদিস)
সুনানে তিরমিজি শরীফ হাদিস আরবি বাংলা (৩৯৫৬ টি হাদিস)
সুনানে নাসায়ী শরীফ হাদিস আরবি বাংলা (৫৭৫৮ টি হাদিস)
সুনানে ইবনে মাজাহ শরীফ হাদিস আরবি বাংলা (৪৩৪১ টি হাদিস)
সুনানে আবু দাউদ শরীফ হাদিস আরবি বাংলা (৫২৭৪ টি হাদিস)

Copyright © Quality Can Do Soft.
Designed and developed by Sohel Rana, Assistant Professor, Kumudini Government College, Tangail. Email: [email protected]