মানসিক রোগ চিকিৎসায় হোমিওপ্যাথি মানসিক রোগের চিকিৎসায় হোমিওপ্যাথিক ঔষধের নির্দেশিকা

মানসিক রোগ চিকিৎসায় হোমিওপ্যাথি
ডা. আ ন ম বদরউদ্দিন
মানুষের আবির্ভাবের শুরু হতে মনোবিকারের শুরু বলা যায়। আল্লাহ পাক কুরআনে ইরশাদ করেছেন, হযরত আদম ও মা হাওয়া (আ) হলেন দুনিয়ার প্রথম মানুষ। আল্লাহ পাক তাদের সৃষ্টি করে নিষেধ করলেন গন্দম গাছের নিকট যেতে এবং ঐ গাছের ফল না খেতে। তাঁরা কিছুদিন পর শয়তানের ফাঁদে পা দিলেন। বন্ধুর বেশে শয়তান বলল সেই গাছের ফল খেতে। কৌতূহলী মন আর ধৈর্য ধরল না। তাঁরা খেয়ে নিলেন সেই নিষিদ্ধ গাছের ফল। তাই রাব্বুল আলামীন অসন্তুষ্ট হলেন। তারপর জান্নাত থেকে তাঁদের দুনিয়ায় পাঠানো হল। প্রথম মানুষের পা পড়ল দুনিয়ায়। বর্তমানে প্রায় ছয় শ কোটি মানুষ আমরা তাঁদেরই বংশধর।
সেই প্রভাব বংশগতভাবে ক্রমেই এগিয়ে চলেছে। বংশগত প্রভাবকে সারানো যায় না বলে বিজ্ঞানীদের ধারণা। তাই কম-বেশি আমরা সবাই মনের রোগী বললে ভুল কিছু হবে না। আমাদের আশেপাশে দেখা যায় একজন স্বাভাবিক অপরজন অস্বাভাবিক। মানুষের অস্বাভাবিক আচরণকে মানসিক প্রতিফলন হিসাবে বিবেচনা করা হয়। সচরাচর সমাজে মানুষের এই অস্বাভাবিক ব্যবহার ও আচরণকে মানসিক ব্যাধি হিসাবে চিহ্নিত করা হয়। কিন্তু এই সকল ব্যক্তির যে চিকিৎসা প্রয়োজন তা অধিকাংশ লোকই উপলব্ধি করতে পারে না, যার জন্য কোনও মানসিক রোগীর যথাযথ চিকিৎসা হচ্ছে না।
দেহকে আমরা দেখতে পাই, মনকে দেখতে পাই না। দেহের সুনির্দিষ্ট অবয়ব আছে। কিন্তু মনের কোন অবয়ব নেই। তবে মনোবিজ্ঞানীদের মতে, মনের অবয়ব হলো ক্রিয়াগত। আমরা মনের অস্তিত্ব সম্পর্কে জানতে পারি শুধু মনের ত্রিবিধ ক্রিয়ার অস্তিত্ব জানার মাধ্যমে। চিন্তার ক্রিয়া, ইচ্ছা ক্রিয়া ও অনুভূতি ক্রিয়া মনের তিনটি মৌলিক ক্রিয়া। মানসিক রোগে এই তিনটি ক্রিয়ার স্বাভাবিকতা নষ্ট করে অস্বাভাবিকতা আনয়ন করে।
দেহ অসুস্থ হয় ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস, ব্যাহ্যিক ইরিটেশন ও অভ্যন্তরীণ ডিফিসিয়েনসি দ্বারা, কিন্তু মন কিভাবে আক্রান্ত হয় তা অনেকের কাছে পরিষ্কার নয়।
হ্যানিম্যান বলেছেন, মন আর দেহ বিচ্ছিন্ন নয়। একে অপরের উপর নির্ভরশীল। তিনি বলেছেন যে, প্রত্যেক রোগ সৃষ্টির মূলে রয়েছে মনের বিশৃঙ্খলা। মন বিশৃঙ্খল না হলে দেহের কোনও রোগ হতে পারে না। যে কোন ব্যাধিতে প্রথমে মনকে আক্রমণ করে, পরে দেহকে আক্রমণ করে।
মনের কাঠামোগত অস্তিত্ব খুঁজে না পেলেও একথা সত্য যে, মন বাহ্যিক ইরিটেশান দ্বারা আক্রান্ত হয়। শব্দগত ইরিটশান, রোগগত ইরিটেশন, গন্ধগত ইরিটেশান ও ভাবগত ইরিটেশান (ধর্মীয়, আত্মসম্মান, মানসম্মান, স্নেহ মায়ামমতা, ভালোবাসা ও আকাঙ্ক্ষাবোধ) দ্বারা মন প্রতিনিয়ত পীড়িত হয়। মনোরোগীর চিকিৎসার ক্ষেত্রে এই চতুর্বিধ কারণের মূল্যায়ন অতীব প্রয়োজন। তবে সচরাচর আমাদের সমাজ ব্যবস্থায় মানসিক রোগীর চিকিৎসার ক্ষেত্রে এগুলোর মূল্যায়ন হয় না।
দৈহিক রোগী সঠিক ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে দুই ধরনের পরিণতি আসে। ১. রোগী এককভাবে রোগ ভোগ করে মারা যায়। ২. রোগী রোগ ভোগ করে আশেপাশের সুস্থ ব্যক্তিতে রোগ ছড়ায়। মানসিক রোগীর ক্ষেত্রে সঠিক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে না পারলে উপরোক্ত দুই ধরনের পরিণতি ছাড়া আরো একটি পরিণতি আসে। রোগীর সব আচরণ বা কাজকর্ম সমাজে শান্তি ও শৃঙ্খলা ধ্বংস করে। দৈহিক রোগীর ক্ষতির চেয়ে মানসিক রোগীর দ্বারা সমাজে অধিক ক্ষতি হয়। মানসিক রোগীর সঠিক চিকিৎসা ছাড়া সমাজের নৈতিক অবক্ষয় রোধ করা সম্ভব নয়। ধর্ষণ, চুরি, ডাকাতি, সন্ত্রাস, আত্মসাৎ, বিকৃত রুচি, ঝগড়া-বিবাদ, প্রতিহিংসাপরায়ণতা ও সহনশীলতার অভাব মনোরোগজনিত বিকৃতি ।
আমাদের দেশে মানসিক রোগীর জন্য একটিমাত্র হাসপাতাল রয়েছে। পাবনার মানসিক হাসপাতাল ছাড়া মানসিক রোগীর চিকিৎসার কোনও সুব্যবস্থা নেই বললে চলে। আর এ হাসপাতালটির ব্যবস্থাপনা ও রোগী চিকিৎসার যে চিত্র পত্র-পত্রিকার মাধ্যমে জানা যায় তা খুব করুণ- ভয়াবহ। সেই হাসপাতালে রোগী চিকিৎসার নামে মধ্যযুগীয় বর্বরতার প্রতিফলন পরিলক্ষিত হয়, যা রোগীর আরোগ্য দূরের কথা, রোগীকে আজীবনের জন্য অকেজো করা হয়। অমানবিক ও পাশবিক নির্যাতনই মানসিক রোগী চিকিৎসায় হাতিয়ার বা পথ নয়। মানসিক রোগ কুমতলব বা স্নায়বিক উত্তেজনা নয়।
অষ্টাদশ শতাব্দীতে হ্যানিম্যান অমানবিক পাশবিক বর্বর চিকিৎসার পায়ে কুঠারাঘাত করেছেন। তিনি ক্ষতিকারক চিকিৎসার পাশাপাশি হিতকারক চিকিৎসা হোমিওপ্যাথিক প্রতিস্থাপন করেন। তিনি প্রথমেই সকল অজ্ঞতার ভাণ্ডারে আলো জ্বালিয়ে চিকিৎসকদের দেখিয়েছেন মানসিক রোগ কিভাবে সৃষ্টি হয় আর মানসিক রোগী কিভাবে আরোগ্য হয়। তিনি সুস্থ শরীরের ঔষধ পরীক্ষা করে প্রমাণ করেছেন ঔষুধ বস্তুর অসাধারণ ক্ষমতা রয়েছে মানসিক রোগ সৃষ্টি করার ও আরোগ্য করার। হোমিওপ্যাথিই পারে মানসিক রোগীকে সহজেই আরোগ্য করতে। মানসিক রোগীর চিকিৎসা দৈহিক রোগীর চিকিৎসা থেকে ভিন্নতর। দৈহিক রোগীর চিকিৎসার ক্ষেত্রে চিকিৎসার যান্ত্রিক ইন্দ্রিয়ের সাহায্য নিতে পারে কিন্তু মানসিক রোগীর চিকিৎসার ক্ষেত্রে তা পারা যায় না। প্যাথলজিক্যাল কোনও রিপোর্ট দ্বারা মানসিক রোগের চিকিৎসা করা যায় না। এলোপ্যাথিক চিকিৎসা ব্যবস্থা কারণভিত্তিক। আর হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা লক্ষণভিত্তিক। মানসিক রোগের প্যাথলজিক্যাল কোন কারণ নেই। তবে মানসিক রোগীতে বহু কারণ রয়েছে। তাই হোমিওপ্যাথিতে মানসিক রোগ চিকিৎসা সহজতর ।
এক ব্যক্তি সব সময় উদাসীন। কোন কিছুতে মায়ামমতা নেই। সে একা থাকতে চায়। নির্জন স্থানে একা একা বসে থাকে। শোকজনিত কারণে তার এ অবস্থা। এটা একটা মানসিক রোগ। এলোপ্যাথি বা অন্যান্য চিকিৎসা পদ্ধতিতে এর কি কোন চিকিৎসা ব্যবস্থা হবে ? আসলে এলোপ্যাথিতে শোকজনিত কারণে সৃষ্ট ব্যাধির কোনও পৃথক ঔষধ নেই। কারণ এলোপ্যাথির বা অন্যান্য প্যাথির ঔষধগুলো পরীক্ষা করা হয় ইতর প্রাণীর উপর, যাদের মানসিক অবস্থা বর্ণনা করার ক্ষমতা নেই। এক্ষেত্রে ব্যবহারের জন্য হোমিওপ্যাথির যথেষ্ট ঔষধ রয়েছে। যেমন- সিপিয়া, ইগ্নেশিয়া, নেট্রাম মিউর, এপিস, লাইকোপোডিয়াম, মেডোরিনাম ইত্যাদি।
স্নায়বিক চিকিৎসা ও মানসিক চিকিৎসা এক নয়। স্নায়ুর বস্তুজাত সত্তা আছে। মনের কোন বস্তুজাত সত্তা সম্পর্কে আজও আমরা অজ্ঞাত। মনের অস্তিত্ব ক্রিয়াজাত সত্তার উপর প্রতিষ্ঠিত । মানোবিজ্ঞানীরা মনকে প্রথমে তিনটি স্তরে ভাগ করেছেন। এদের যে কোনও স্তরে গণ্ডগোল হলেই মন ভারসাম্য হারিয়ে ফেলে। মনের তিনটি স্তর—চেতন; অবচেতন ও নিজ্ঞান। মনের সমস্ত কর্মকাণ্ড এ ত্রিবিধ ক্রিয়ার ও স্তরের উপর নির্ভরশীল। মনের সব ক্রিয়ার অন্তর্মূলে এগুলোর অস্তিত্ব রয়েছে। অনেকের ধারণা, মানুষের মন অবস্তুজাত। ফলে ওষুধ মনের উপর ক্রিয়া করতে পারে না। মনের সুস্থতা বা অসুস্থতা অলৌকিক ব্যাপার। এ কুসংস্কারের পায়ে কুঠারাঘাত করেছেন বিজ্ঞানী হ্যানিম্যান। তিনি প্রমাণ করেছেন- “বস্তুজাত শক্তিকৃত ওষুধ অনায়াসে মনের ওপর ক্রিয়া করে।” হোমিওপ্যাথিক মেটেরিয়া মেডিকার মনোলক্ষণ তার পরিচায়ক। মন ও ওষুধ একে অপরের অনুপূরক, পরিপূরক ও সম্পূরক সম্পর্কিত।
ধরুন, সুস্থ সমান B. মন সমান M. ঔষধ সমান D আর সৃষ্টি লক্ষণ সমান S। তাহলে B (MXD) S অতএব B(MXD) = NS [এখানে N একটা ধ্রুব সংখ্যা] অর্থাৎ B-এর মান ১, M এর মান ১, ও D এর মান ১ হলে, অবশ্য N এর মান ১ হয়। সুতরাং N এর মান সর্বদাই ১।
দেহ পরিবর্তন হলে মন পরিবর্তন হয়, আবার মন পরিবর্তন হলে দেহও পরিবর্তন হয়। মনোরোগ বা লক্ষণ দেহ, মন ও ভেসজের সমন্বয়ে সৃষ্ট। তাই মনোলক্ষণ বিতাড়ন এই তিনের সংখ্যাগত, পরিমাণগত ও গঠনতান্ত্রিক বৈচিত্র্য অবস্থার উপর নির্ভরশীল।
হ্যানিম্যান অর্গাননের ১১ নং অনুচ্ছেদে রোগের কারণ সম্পর্কে বর্ণনা করেছেন। তিনি জীবনবিরোধী উপাদানসমূহকে রোগের কারণ হিসাবে অভিহিত করেছেন। অর্থাৎ জীবনবিরোধী সকল উপাদানই রোগ সৃষ্টি করতে পারে। মনরোগের ক্ষেত্রেও তা সত্য। প্রত্যেকটা মনরোগ জীবনবিরোধী উপাদানের প্রভাবে সৃষ্ট। এগুলো ছাড়া এমন কতিপয় উপাদান আছে যেগুলোর সাথে আমরা সবাই পরিচিত। তবে জানি না যে, ওগুলো মনোলক্ষণও সৃষ্টি করতে পারে। যেমন : ১. শব্দজাত সঙ্গীত, ভর্ৎসনা, কর্কশ, ২. গন্ধজাত-সুগন্ধী, দুর্গন্ধ; ৩. রূপজাত-আলি চেহারা, সুন্দর চেহারা, সুন্দর গোলাপ, এলোমেলো আসবাবপত্র; ৪. ভাবজাত ভালমন্দ, স্নেহ-ভালোবাসা, মায়া- মমতা, অপবাদ, তিরস্কার-পুরস্কার, মানসম্মান; ৫. ইচ্ছাজাত-প্রেম, প্রীতি, বন্ধুত্ব, ধনলিপ্সা, প্রতিহিংসা; (৬) অনুভূতিজাত : রাগ-বিরাগ; ৭. চিন্তাজাত -অপূরণীয় চিন্তা,এলোমেলো চিন্তা ইত্যাদি। বাহ্যিক উপদ্রব যেমন দেহকে ছিন্ন-ভিন্ন করে রুগ্ন করে তদ্রূপ উপরোক্ত উপাদানগুলো মনকে লণ্ডভণ্ড করে রুগ্ন করে তোলে। হোমিওপ্যাথিতে রয়েছে সে রুগ্নতার একটা পূর্ণাঙ্গ চিত্র। অবগতির জন্য তার কিয়দংশ নিম্নে তুলে ধরলাম।
১. অন্য মনস্ক (Absent Minded)
২. ক্রোধ ( Anger)
৩. মনস্তাপ (Anguish)
৪. উৎকণ্ঠা (Anxiety)
৫. ধনলিপ্সা (Avarice)
৬. দংশন প্রবৃত্তি (Biting)
৭. কোলে উঠে (Carried) বেড়াবার ইচ্ছা
৮. লোক-সঙ্গ (Company) (বিতৃষ্ণা)
৯. ঘৃণাপরায়ণ ১০. মৃত্যুর ইচ্ছা করে (Death desires )
১১. প্রলাপ (Delirium)
১২. ভ্রান্ত বিশ্বাস (Delusion)
১৩. অসন্তুষ্ট (Descontented)
১৪. উত্তেজনা (Excitement )
১৫. কল্পনায় ডুবে থাকা (Fancies absorbed in
১৬. ভয় (Fear )
১৭. বিশ্বতিপরায়ণ (Fprgetful)
১৮. তাড়াতাড়ি (Hurry)
১৯. উদাস (Indifference )
২০. আলস্য (AIndolence)
২১. উন্মাদ (Insanity)
২২. উত্তেজনা (Irritability)
২৩. চুম্বনকার (Kisses )
২৪. মিথ্যাচার (Lie)
২৫. হাস্যকর (Laughing)
২৬. সব বিষয়ে বিতৃষ্ণা
২৭. স্মৃতিশক্তির দুর্বলতা (Memory weakness )
২৮. গোলমাল (Nois) বিরক্তি জন্মে
২৯. ভুল করে (Mistakes) হিসাব করতে।
৩০. কামোন্মাদনা (Nymphomania)
৩১. কলহপ্রিয় (Quarrelsome )
৩২. ধর্মানুরাগ (Religious )
৩৩. বিষণ্ণতা (Sadness )
৩৪. অস্থিরতা (Bestlessness )
৩৫. অতানুভূতিযুক্ত (Sensitive)
৩৬. লজ্জাহীন (Shameless)
৩৭. দীর্ঘশ্বাস ফেলে (Sighing)
৩৮. চমকে উঠে (Starting)
৩৯. আঘাত করে (Striking )
30. চিন্তা করা (Thinking)
৪১. আত্মহত্যা প্রবৃত্তি (Suicidal desposiction)
৪২. সন্দেহযুক্ত (Suspicious)

৪৩. অজ্ঞানতা (Unconsciousness )
48. জীবনে বিতৃষ্ণা (Weary of life)
৪৫. ক্রন্দন করে (Weeping)
৪৬. স্ত্রীলোকের প্রতি বিতৃষ্ণা
৪৭. কার্য (Work)
৪৮. ইচ্ছাশক্তি (Well) প্রতিবাদ করে
৪৯. লিখন কার্যে (Writing) অনিচ্ছা
এইগুলো ছাড়া আরোও অনেক মানসিক লক্ষণ আছে। 'জে, টি, কেন্ট এম. ডি. রচিত ‘রেপার্টরী অব দি হোমিওপ্যাথিক মেটেরিয়া মেডিকা' বইতে প্রায় সাড়ে পাঁচশয়ের মত মানসিক বিশৃঙ্খলতার চিত্র আছে। দেখুন—একজন ব্যক্তি বলে তার কিছুই ভাল লাগে না। সংসার বিষের মত লাগে, কাজকর্ম করতে ইচ্ছা হয় না। কেউ কথা বললে খারাপ লাগে। কারও কথা শুনতে চায় না। রাতে ঘুম হয় না। সামান্য ব্যাপারে উত্তেজিত হয়ে যায়। নির্জনে বসে দীর্ঘশ্বাস ফেলে। খাবার, পোশাক- পরিচ্ছদের দিকে তার কোনরূপ নজর নেই। তার মনে সদা চিন্তার স্রোত চলে। সে বলতে পারে না কেন সে চিন্তা করে। সে কোনমতেই মন থেকে চিন্তা দূর করতে পারে না। দিন দিন সে যেন কেমন হয়ে যাচ্ছে। পরিবারের অন্য কেউ জানে না কেন সে এমন হচ্ছে। তার দেহে কোন অসুখ নেই। পরীক্ষা-নিরীক্ষায়ও কিছু পাওয়া যায় না। এগুলোকে রোগ বলে না- আসলে এগুলো মানসিক রোগ। দেখতে পাবেন সে এরকম হবার পেছনে তার মানসিক আঘাত হয়েছে। হয়তো বা সে ভালবাসাবঞ্চিত, নয়তো বা সে অন্য কোনরূপ মানসিক আঘাতে জর্জরিত। এ ধরনের অবস্থায় সহজেই হোমিওপ্যাথিক ঔষধ নির্বাচন করে তাকে আরোগ্য করা যায়। অর্থাৎ হোমিওপ্যাথি ঔষধ দ্বারা মানসিক রোগ চিকিৎসা করতে হলে তার রোগের কারণ বা বাধা প্রথমে উৎঘাটন করতে হয়। মনোরোগের প্রতিকার সম্পর্কে আমরা সচেতন নই। দেহ রোগ থেকে বাঁচার জন্য পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা সম্পর্কে সকলে সজাগ। স্বাস্থ্যনীতিতে পরিবেশ দূষণ উল্লেখ আছে। পরিবেশ দূষণ বলতে বোঝানো হয় পচাগলা আবর্জনা ও দুর্গন্ধ । শব্দ দূষণ, রূপ দূষণ, ভাব দূষণ সম্বন্ধে কোনরূপ ধারণা নেই। এখনো আমরা বুঝি না যে, অযথা দেহ রূপ দর্শন পরিবেশ দূষণে পড়ে, তা অনেক মনোরোগের কারণ। সচেতন ব্যক্তিরা কাউকে ডাস্টবিন থেকে পরিত্যজ্য পচা খাদ্য খেতে দেখলে শিহরে ওঠেন। কারণ তাতে রোগ জীবাণু আছে। সে যে কোন সময় অসুস্থ হয়ে যেতে পারে। আসলে অপরিচ্ছন্নতায় রোগ ছাড়ায়। কিন্তু এটা আমরা জানি না যে শব্দজাত, ভাবজাত ও রূপজাত পচা পরিবেশ পচা ডাস্টবিন থেকেও ক্ষতিকর দেখুন, কোন ব্যক্তি একটা শলার জ্বলন্ত কাঠি দিয়ে অপর ব্যক্তির মুখ পুড়িয়ে দিলে তার বিচার হয়। আহত ব্যক্তির চিকিৎসা হয়। কিন্তু একজন রূপসী তার রূপানল দিয়ে কারও হৃদয় পুড়িয়ে দিলে তা কেউ দেখে না, কাউকে বলা যায় না, আর তার বিচার হয় না, চিকিৎসাও হয় না। এটা একটা মানসিক যাতনা। এটার প্রতিকার ছাড়া সমাজে অক্ষত মন রাখা সম্ভব নয়। সুন্দর মন ছাড়া সুন্দর দেহ হয় না। সুস্থ মস্তিষ্ক ছাড়া কল্যাণমূলক কাজ করা যায় না। তাই কল্যাণমূলক সমাজের জন্য চাই সুস্থ মন ।

FOR MORE CLICK HERE
NTRCA COLLEGE LEVEL HISTORY/ইতিহাস গাইড/ বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ইতিহাস
১০ তম বিসিএস -৪৪তম বিসিএস এর প্রশ্ন ও সমাধান 10th BCS to 44th Bcs MCQ Question Solution
বিসিএস ব্যাংক প্রাইমারি পরীক্ষার-এর প্রশ্ন ও সমাধান
সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন SEO বই লেখক : মোঃ মিজানুর রহমান
মাতৃস্বাস্থ্য/Motherhood
ওষুধ নির্দেশিকা
সহীহ বুখারী শরীফ হাদিস আরবি বাংলা (৭৫৬৩ টি হাদিস)
সহীহ মুসলিম শরীফ হাদিস আরবি বাংলা (৭৪৫৩ টি হাদিস)
সুনানে তিরমিজি শরীফ হাদিস আরবি বাংলা (৩৯৫৬ টি হাদিস)
সুনানে নাসায়ী শরীফ হাদিস আরবি বাংলা (৫৭৫৮ টি হাদিস)
সুনানে ইবনে মাজাহ শরীফ হাদিস আরবি বাংলা (৪৩৪১ টি হাদিস)
সুনানে আবু দাউদ শরীফ হাদিস আরবি বাংলা (৫২৭৪ টি হাদিস)

Copyright © Quality Can Do Soft.
Designed and developed by Sohel Rana, Assistant Professor, Kumudini Government College, Tangail. Email: [email protected]