স্যানিটেশন, নিরাপদ পানি ও ইসলামের শিক্ষা সুপেয় পানি স্রষ্টার বিশেষ দান

স্যানিটেশন, নিরাপদ পানি ও ইসলামের শিক্ষা
আবু হেনা মোস্তফা কামাল
নিম্নমানের স্যানিটেশন, খারাপ স্বাস্থ্য, জীবন যাত্রার নিম্নমান, অধিকতর অপুষ্টির মাত্রা, অত্যধিক রোগের প্রকোপ, ক্ষয়িষ্ণু পরিবেশ, চরম দারিদ্র্য আন্তঃসম্পর্কিত বিষয়। এগুলোর সাথে স্যানিটেশনের আন্তঃসম্পর্ক বিদ্যমান। সহজ কথায় দারিদ্র্য, পরিবেশ দূষণ, রোগের প্রকোপ, জীবন যাত্রার নিম্নমান, নিরাপদ পানির অভাব, যেখানে সেখানে মলমূত্র ত্যাগের অভ্যাস এবং সচেতনতার অভাবের কারণে স্যানিটেশন ব্যবস্থা নিম্নমানের হয়ে থাকে। নিরাপদ পানির সংস্থান ও স্যানিটেশন মানব জীবনে অপরিহার্য। একে মানবাধিকার হিসেবেও উল্লেখ করা যায়। ২০০০ সালের শুরুতে পাঁচভাগের দু'ভাগ লোক অর্থাৎ ১.৪ বিলিয়ন (২শ' ৪০কোটি) উন্নততর স্যানিটেশন ব্যবস্থা থেকে বঞ্চিত ছিল। এক তথ্য থেকে জানা যায় যে, প্রতি বছরে ৪০ লাখ ডায়রিয়া সংক্রান্ত জটিল রোগীর মধ্যে ৫ বছরের কম বয়স্ক ২ লাখ ৪০ হাজার শিশু মৃত্যুবরণ করছে। (সূত্র : ডব্লিউ এইচ ও ইউনিসেফ)।
২০০২ সালে আফ্রিকার জোহানেসবার্গে অনুষ্ঠিত টেকসই উন্নয়নের উপর বিশ্ব সম্মেলনে উন্নয়নশীল দেশসমূহের জনসংখ্যার মধ্যে উন্নততর স্যানিটেশন থেকে বঞ্চিতদের ২০১৫ সালের মধ্যে অর্ধেক হ্রাস করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। এরপর থেকে বিষয়টি উন্নয়নশীল দেশগুলোতে গুরুত্ব পেতে শুরু করেছে।
আরো এক তথ্য থেকে জানা যায় যে, বিশ্বের ১৯৯০ সালে ৫৫% ভাগ (২'শ ৯০ কোটি) জনসংখ্যা উন্নততর পয়ঃনিষ্কাশন সুবিধা লাভ করেছে। দশ বছর পর ২০০০ সালে এক্ষেত্রে এ বিষয়ে সুবিধাপ্রাপ্ত জনসংখ্যার পরিমাণ হলো বিশ্বের মোট জনসংখ্যার ৬০ ভাগ (৩'শ ৬০ কোটি)। পয়ঃনিষ্কাশন সুবিধাদি থেকে বঞ্চিতদের অধিকাংশের বসবাস হলো এশিয়া ও আফ্রিকা অঞ্চলে। বঞ্চিতদের ৮০ ভাগ জনগোষ্ঠীর বাস আবার এশিয়া অঞ্চলে। স্যানিটেশন ও নিরাপদ পানির ক্ষেত্রে দক্ষিণ এশিয়ার অবস্থা আরো উদ্বেগজনক। দক্ষিণ এশিয়ায় ১৯৯০ সালে স্যানিটেশন সুবিধা প্রাপ্তির হার ছিল ২৫% যা ২০০০ সালে ৩৭% উন্নীত হয়। স্যানিটেশন ও নিরাপদ পানির ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অবস্থা আরো উদ্বেগজনক।
নিরাপদ পানি জীবনের জন্য পানি এবং স্বাস্থ্যের জন্য পানি খুব প্রয়োজন। পানির গুণগত মানের সাথে স্বাস্থ্যের এক নিবিড় সম্পর্ক রয়েছে। বিশ্বে ৩ মিলিয়নেরও বেশী লোক যাদের মধ্যে অধিকাংশ শিশু অপর্যাপ্ত পানি সরবরাহ, স্বাস্থ্যগত সমস্যা ও স্যানিটেশনের কারণে প্রতি বছর মারা যায়। নিরাপদ পানির প্রাপ্যতা, উন্নততর স্যানিটেশন ও ব্যক্তিগত স্বাস্থ্য-সচেতনতা পানিবাহিত রোগের বোঝা অনেকাংশে লাঘব করতে পারে। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার প্রায় ১.৩ বিলিয়ন মানুষ উন্নততর পানি সরবরাহ পেয়ে থাকে। স্যানিটেশন সুবিধা পাচ্ছে এর অর্ধেক লোক অর্থাৎ প্রায় ৬১৫ মিলিয়ন। বন্যা, খরা, সাইক্লোন ও ভূমিকম্প পানি সরবরাহ ব্যবস্থাকে বিপর্যস্ত করে তোলে। স্যানিটেশন ব্যবস্থার জন্যে এটা অনেক ক্ষেত্রে হুমকি হয়ে দাঁড়ায়। পানিবাহিত রোগের বৃদ্ধির ক্ষেত্রে এ অবস্থা ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে ওঠে। একারণে নিরাপদ পানি ও স্যানিটেশন ব্যবস্থার জন্য দুর্যোগ প্রশমনে পূর্ব প্রস্তুতিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ অত্যাবশ্যক ।
জনসংখ্যার অসম বিস্তার নিরাপদ পানি সরবরাহের ক্ষেত্রে বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ। জনসংখ্যা বৃদ্ধির কারণে পানি সরবরাহ ও স্যানিটেশন ব্যবস্থাকে কিভাবে সফল করা যায়, সে জন্য দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোকে উদ্বিগ্ন থাকতে হচ্ছে। ধারণা করা হচ্ছে, এসব দেশের নগরগুলোর জনসংখ্যা আগামী ৩ বছরে দ্বিগুণ হবে। এই অবস্থা স্বাভাবিক ও সঙ্গত কারণে পানির উৎস, পানি সরবরাহ ও স্যানিটেশনের ক্ষেত্রে উদ্বেগজনক। 'Perhaps the most serious threat to health crisis in some urbn areas of the region' পানি সরবরাহ, নিরাপদ পানির উৎস নির্ধারণ ও স্যানিটেশনের জন্য নতুন নতুন পলিসি ও গঠনমূলক দৃষ্টিভঙ্গি দরকার। এজন্য আরো দরকার গণসচেতনতা ।
পানি আল্লাহর বিশেষ নিয়ামত
মহাগ্রন্থ কুরআনুল করীমে বিভিন্ন স্থানে ভিন্ন ভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গির আলোকে পানি সম্পর্কে উল্লেখ রয়েছে। ইরশাদ হয়েছে : 'তিনিই আকাশ হতে বারি বর্ষণ করেন, অতঃপর উহা দ্বারা আমি সর্বপ্রকার উদ্ভিদের চারা উদগমন করি, অনন্তর তা হতে সবুজ পাতা উদগত করি, পরে তা হতে ঘন সন্নিবিষ্ট শস্যদানা উৎপাদন করি। (সূরা আনআম : ৯৯)।
“তিনিই আকাশ থেকে বারি বর্ষণ করেন, তাতে তোমাদের জন্য রয়েছে পানীয় এবং তা হতে জন্মায় উদ্ভিদ যাতে তোমরা পশু চারণ করে থাক।” (সূরা নাহল : ১০)। “এবং তিনি আকাশ হতে বারি বর্ষণ করেন ও তদ্বারা ভূমিকে তার মৃত্যুর পর পুনর্জীবিত করেন,” (সূরা রুম : ২৪) 'তাতে আছে নির্মল পানির নহর, আছে দুধের নহর যার স্বাদ অপরিবর্তনীয়, আছে পানকারীদিগের জন্য সুস্বাদু সুরার নহর, আছে পরিশোধিত মধুর নহর, (সূরা মুহাম্মদ : ১৫)। আলা আকাশ হতে বারি বর্ষণ করেন এবং তদ্বারা তিনি ভূমিকে উহার মৃত্যুর পর পুনর্জীবিত করেন।” (সূরা নাহল : ৬৫)।
'এবং আমি আকাশ হতে বারি বর্ষণ করি পরিমিতভাবে, অতঃপর আমি তা মৃত্তিকায় সংরক্ষিত করি, আমি তাকে অপসারিত করিতেও সক্ষম।' (সূরা মুমিনুন : ১৮)।
কুরআনুল করীমে পানি সম্পর্কে অনেকগুলো বর্ণনা পরিলক্ষিত হয়। পানির দ্বারা জীবনের অস্তিত্ব রক্ষা হয়- কুরআনুল করীমে এরূপই বিধৃত হয়েছে। পানি দ্বারা আমি সমস্ত বস্তুর জীবন দান করেছি এবং আমি পানি থেকে প্রতিটি জিনিস জীবিত করেছি।'
মহান আল্লাহ কুরআনুল করীমে এরূপ ঘোষণা দিয়েছেন, 'যারা কুফরী করে তারা কি ভেবে দেখে না যে, আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবী মিশেছিল ওতপ্রোতভাবে, অতঃপর আমি উভয়কে পৃথক করে দিলাম এবং প্রাণবন্ত সমস্ত কিছু সৃষ্টি করলাম পানি হতে, তবুও কি তারা বিশ্বাস করবে না ? (সূরা আম্বিয়া : ৩০) হযরত আবূ যর (রা) থেকে বর্ণিত একটি হাদীসে রাসূল (সা) বলেন : 'অন্যকে পানি পান করানো সাদকাতুল্য।' (বুখারী)
অপর একটি হাদীসে হযরত আবূ যর (রা) থেকে বর্ণিত রাসূল (সা) বলেন : 'তোমরা বালতি থেকে তোমার ভাইয়ের বালতিতে পানি ঢেলে দেয়াও সাদকাহ (দান) (তিরমিযী)। আবূ মূসা আশআরী (রা) থেকে বর্ণিত, রাসূল (সা) বলেন : প্রত্যেক মুসলমানেরই সাদাকাহ করা কর্তব্য। (বুখারী ও মুসলিম)। মানব জাতির কল্যাণ করার কথা স্মরণ করিয়ে রাসূল (সা) ইরশাদ করেছেন : 'তোমরা মানুষের কল্যাণে নিবেদিত শ্রেষ্ঠ মানুষ।' (আল-হাদীস) এই আয়াতের টিকায় বলা হয়েছে : 'আধুনিক জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের মতে, আদিতে আকাশ, নক্ষত্র, সূর্য, পৃথিবী ইত্যাদির পৃথক পৃথক সত্তা ছিল না। তখন মহাবিশ্ব ছিল অসংখ্য। গ্যাসীয় কণার সমষ্টি, যাকে বলা হয় নীহারিকা। এই নীহারিকা পরবর্তীতে বহু খণ্ডে বিভক্ত হয়ে পড়ে এবং এসব খণ্ড ক্রমশ ঘনীভূত হয়ে নক্ষত্রপুঞ্জ, সূর্য, পৃথিবী এবং অন্য গ্রহাদির সৃষ্টি হয় । জীববিজ্ঞানীদের মতে, সাগরের অভ্যন্তরে অর্থাৎ পানিতেই প্রোটোপ্লাজম (জীবনের আদিম মূলীভূত উপাদান) হতেই জীবের সৃষ্টি। আবার যাবতীয় জীব দেহকোষ দ্বারা গঠিত এবং প্রত্যেকটি কোষের অন্যতম মূল উপাদান হচ্ছে পানি। ভিন্নমতে এর অর্থ আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবী বন্ধ ছিল, অতঃপর আমি উভয়কে খুলে দিলাম অর্থাৎ পূর্বে আশ হতে সৃষ্টি হতো না ও পৃথিবীতে তরু-লতা জন্মাত না। আল্লাহ্র ইচ্ছায় বৃষ্টি হলো এবং মাটি উৎপাদন ক্ষমতা লাভ করল।'
পানির বিশুদ্ধতা রক্ষা
ইসলামের পানির পবিত্রতা ও বিশুদ্ধতা রক্ষার উপর পর্যাপ্ত ও অভাবনীয় গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে। হাদীস শরীফে বর্ণিত হয়েছে : 'তিনটি লানতযোগ্য কাজ অর্থাৎ পানির ঘাটে, রাস্তায় এবং ছায়ার স্থানে পায়খানা করা থেকে বেঁচে থাকো।' 'এমন যেন না হয় যে, তোমাদের কেউ বদ্ধ পানিতে পেশাব করে ও তাতে গোসল করে।' এমন যেন না হয় যে, স্থির পানিতে পেশাব করে আবার তাতেই গোসল করে।' বায়ুতে পরিমিত পরিমাণ আর্দ্রতা না থাকলে তা বিষাক্ত হয়ে ধ্বংসের কারণ হতে পারে। পানির দ্বারা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা অর্জন করা সহজ ও সুবিধাজনক। পানি সহজলভ্য, প্রতিক্রিয়াহীন। পানি অপরিহার্য 'পানি এত অত্যাবশ্যক', এর কোনও বিকল্প নেই। কুরআনুল করীমে বহু জায়গায় পানির কথা বিধৃত হয়েছে। অধিক পবিত্রতা ও পরিচ্ছন্নতা পানির দ্বারা অর্জন করা হয়। এসব কারণে পানি আল্লাহর বড় এক নিয়ামত।
মহান আল্লাহর বিরাট দয়া
আল্লাহ্ মানুষ সৃষ্টি করে শুধু চুপচাপ থাকেননি। তাদের প্রতিপালন, বসবাস ও কল্যাণের জন্য বিস্ময়কর কার্যাদি সম্পাদন করেছেন। এটা চিন্তা করলে অভিভূত হতে হয় । আকাশ থেকে বারি বর্ষণ, শস্য ও ফসল উৎপাদন, ফলমূল ও উদ্ভিদ উৎপাদনের ব্যবস্থা করে মানুষের খাদ্যের ও পানীয়ের অপূর্ব ব্যবস্থা করেছেন। ভূ-গর্ভে ও ভূ-পৃষ্ঠে বিস্ময়কর পানি সংরক্ষণের ব্যবস্থা করেছেন। পাহাড়ে পর্বতে বরফে পরিণত করে পানির বিরাট অংশকে সংরক্ষণ করা হয়। যেখানে পানির গুণাগুণ বিনষ্ট হওয়ার কোনও আশংকা নেই। সেখানে কোনভাবে পানি দূষিত হওয়ার সম্ভবানা নেই।
সুস্বাস্থ্য আল্লাহর শ্রেষ্ঠ নিয়ামত
এ বিষয়ে কোন দ্বিমত নেই। রাসূলে করীম (সা) ইরশাদ করেছেন : 'আল্লাহর কাছে তোমরা সুস্বাস্থ্য প্রার্থনা কর, কারণ ঈমানের পরে সুস্বাস্থ্যের চাইতে অধিক মঙ্গলজনক কোন কিছু কাউকে দান করা হয়নি। (ইবনে মাজাহ)
সুস্বাস্থ্যের জন্যে নিরাপদ পানি অপরিহার্য, ইসলামের বিধি বিধান, শিক্ষা ও মূল্যবোধ দ্বারা স্বাস্থ্য সংরক্ষণের ক্ষেত্রে পর্যাপ্ত গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে। মদীনায় রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পর মহানবী (সা) জনগণের যে সকল মৌলিক চাহিদা পূরণের উদ্যোগ গ্রহণ করেছিলেন তার মধ্যে অন্যতম ছিল পানি সমস্যার সমাধান। মদীনায় তখন 'রূমা কূপ' ব্যতীত সুপেয় পানির ব্যবস্থা ছিল না। রাসূল (সা) তখন ঘোষণা করেন : 'যে ব্যক্তি রূমা কূপ ক্রয় করে সকল মুসলমানের কল্যাণার্থে তা ওয়াক্ফ করে দেবে, সে এর বিনিময়ে জান্নাত লাভ করবে।' তখন হযরত উসমান (রা) এটা ক্রয় করে সাধারণের ব্যবহারের উদ্দেশ্যে ওয়াক্ফ করে দিয়েছিলেন। রাসূল (সা) পানি ও খাদ্যদ্রব্যের মধ্যে ফুঁ দিতে এবং পাত্রের মধ্যে নিঃশ্বাস ফেলতে নিষেধ করেছেন। তিনি পাত্র ঢেকে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন। পানাহারে মিতব্যয়িতা অবলম্বনের জন্য কুরআনুল করীমে ইরশাদ হয়েছে : ... 'তোমরা পানাহার করে কিন্তু অপচয় করে না'। (সূরা আরাফ : ৩১) সেটা পানি ব্যবহারে মিতব্যয়িতা অবলম্বনের জন্য হাদীস মারফত পরামর্শ দান করা হয়েছে। হযরত ইবনে আব্বাস (রা) থেকে বর্ণিত আছে যে, আল্লাহর নবী (সা) একদা হযরত সা'আদ-এর উযু করার সময় তাঁর নিকট দিয়ে গমন করেছিলেন। তিনি সাআদকে উদ্দেশ্য বললেন, 'হে সাদ! এ অপব্যয় কেন ? তখন তিনি বললেন : পানিতেও কি অপব্যয় আছে ? রাসূল (সা) উত্তর দিলেন, হ্যাঁ। তুমি একটি চলমান নদীতেও যদি থাক তবে সেখানেও অপচয় হতে পারে।
ইসলাম পবিত্র, মিষ্ট ও বিশুদ্ধ পানি ব্যবহার করতে এবং অপবিত্র ও দুর্গন্ধময় পানি ব্যবহার থেকে বিরত থাকার উপর গুরুত্ব আরোপ করে। পানি অপবিত্র বা নোংরা না করার জন্য ইসলাম নির্দেশ দান করেছে। রাসূল (সা) বলেছেন : 'খোলা ও আবদ্ধ পানি যা গোসল, ধৌতকরণ ও পান করার কাজে ব্যবহার করা হয় এরূপ পানিতে নোংরা দ্রব্যাদি ফেলবে না বা প্রস্রাব করবে না। নোংরা বা অপবিত্র পানির বিষয়ে সতর্ক করে বলা হয়েছে : যে পানির রং, গন্ধ ও স্বাদ তিনটিই বিকৃত হয়ে গেছে, সে পানি দ্বারা কোন কাজ করা বা করতে দেয়া উচিত নয়।' (আবূ দাউদ)
পানি পানের নিয়ম নীতি
প্রিয়নবী হযরত রাসূলে করীম (সা) পানি পানের ক্ষেত্রে কতিপয় নিয়ম-নীতি অনুসরণের উপর গুরুত্ব আরোপ করেছেন।
বৃষ্টির পানি উত্তম : এখন বিজ্ঞানীরাও বলছেন বৃষ্টির পানি বিশুদ্ধ ও উপকারী । একে সংরক্ষণ কার উপর বর্তমানে জোর দেয়া হচ্ছে। বৃষ্টির পানি উত্তম উপকারী বলে কুরআনুল করীমে উল্লেখ করা হয়েছে : গরম পানির ব্যবহার : দৈনন্দিন কাজে অধিক উত্তপ্ত পানি দ্বারা গোসল করা, ধৌত করা বা পান করা সমীচীন নয়। রাসূল (সা)-এরূপ করতে নিষেধ করেছেন।
নদীতে মুখ লাগিয়ে পানি পান : যে ব্যক্তি নদীতে মুখ লাগিয়ে পানি পান করে তার দৈহিক শক্তি কমে যায়। এতে শারীরিক দুর্বলতা দেখা দিতে পারে। মশকে মুখ লাগিয়ে পানি পান করতে নিষেধ করা হয়েছে। দাঁড়িয়ে পানি পান নিষিদ্ধ : ইসলামে দাঁড়িয়ে পানি পান নিরুৎসাহিত করা হয়েছে। বর্ণিত আছে ঃ যদি তোমরা জানতে দাঁড়িয়ে পানি পান করা কত ক্ষতিকর, তাহলে পান করা বস্তু বমি করে ফেলে দিতে।' একনিশ্বাসে পানি পান না করা উত্তম : পানি বা পানীয় দ্রব্যের মধ্যে ফুঁক দেয়া সমীচীন নয়। এক নিঃশ্বাসে সমুদয় পানি পান করা উচিত নয়। 'পানি বা পানীয় দ্রব্য পান করার সময় পাত্রে নিঃশ্বাস ফেলা অনুচিত।'
ঠাণ্ডা ও গরম পানীয় একত্রে পান : রাসূল (সা) বলেছেন : 'গরম এবং ঠাণ্ডা দ্রব্য একত্রে খাওয়া উচিত নয়।'
ইসলামে যেখানে সেখানে মল-মূত্র ত্যাগ করতে নিষেধ করা হয়েছে। পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা অবলম্বনের জন্য যথেষ্ট গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে। পানি পবিত্র রাখার উপর জোর দেয়া হয়েছে। কোনও অবস্থাতেই পানি নোংরা বা অপবিত্র করা যাবে না। ইসলামের শিক্ষা ও মূল্যবোধ থেকে উন্নততর স্যানিটেশন ব্যবস্থা ও নিরাপদ পানি সংরক্ষণের তাগিদ পাওয়া যায়। স্যানিটেশন ব্যবস্থা ও নিরাপদ পানির ক্ষেত্রে ইসলামের শিক্ষা ও মূল্যবোধ শাশ্বত ও উৎসাহব্যঞ্জক।

FOR MORE CLICK HERE
NTRCA COLLEGE LEVEL HISTORY/ইতিহাস গাইড/ বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ইতিহাস
১০ তম বিসিএস -৪৪তম বিসিএস এর প্রশ্ন ও সমাধান 10th BCS to 44th Bcs MCQ Question Solution
বিসিএস ব্যাংক প্রাইমারি পরীক্ষার-এর প্রশ্ন ও সমাধান
সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন SEO বই লেখক : মোঃ মিজানুর রহমান
মাতৃস্বাস্থ্য/Motherhood
ওষুধ নির্দেশিকা
সহীহ বুখারী শরীফ হাদিস আরবি বাংলা (৭৫৬৩ টি হাদিস)
সহীহ মুসলিম শরীফ হাদিস আরবি বাংলা (৭৪৫৩ টি হাদিস)
সুনানে তিরমিজি শরীফ হাদিস আরবি বাংলা (৩৯৫৬ টি হাদিস)
সুনানে নাসায়ী শরীফ হাদিস আরবি বাংলা (৫৭৫৮ টি হাদিস)
সুনানে ইবনে মাজাহ শরীফ হাদিস আরবি বাংলা (৪৩৪১ টি হাদিস)
সুনানে আবু দাউদ শরীফ হাদিস আরবি বাংলা (৫২৭৪ টি হাদিস)

Copyright © Quality Can Do Soft.
Designed and developed by Sohel Rana, Assistant Professor, Kumudini Government College, Tangail. Email: [email protected]