ডায়াবেটিস হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ায় : স্বাস্থ্য-বিজ্ঞান তথ্য-কণিকা

স্বাস্থ্য-বিজ্ঞান তথ্য-কণিকা
আমিনুল ইসলাম জুয়েল
১. ডায়াবেটিস হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ায় :
কিছু কিছু ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থা রয়েছে যার জন্য বেড়ে যায় হার্ট এ্যাটাকের সম্ভাবনা। হৃদরোগ বিশেষজ্ঞরা আগে থেকে বলে আসছেন, রক্তের কোলস্টেরলের আধিক্য, ধূমপান এবং উচ্চ রক্তচাপ হার্ট এ্যাটাকের অন্যতম কারণ বা হার্টকে তার নিজস্ব নিয়মে চলতে না দেয়ার অন্তরায়। বিশেষজ্ঞরা আরও বলেছেন, শরীরের বেশি ওজন, ডায়াবেটিস এবং উচ্চ রক্তচাপের জন্য অনিয়মিত ওষুধ সেবনও বাড়িয়ে তোলে হার্ট এ্যাটাকের ঝুঁকি। সম্প্রতি বিজ্ঞানীরা ডায়াবেটিস নিয়ে আতংকিত হয়েছেন। তারা ডায়াবেটিস বা বহুমূত্র রোগকে আখ্যা দিয়েছেন হৃদযন্ত্রের অন্যতম ঘাতক হিসাবে। ডায়াবেটিসের কারণে হৃদযন্ত্র আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায় ছয় গুণ। এবং এই হার যাদের ডায়াবেটিস নেই কিন্তু ইতিমধ্যেই অন্তত একবার হৃদরোগে আক্রান্ত হয়েছে, তাদের হার্ট এ্যাটাকে আক্রান্ত হওয়া হারের প্রায় সমান। হৃদরোগের সম্ভাবনা জাগিয়ে তোলার পেছনে ডায়াবেটিস-এর ভূমিকা অনুসন্ধানের এই গবেষণাটি সম্পন্ন করেছেন পাঁচজন মার্কিন বিজ্ঞানী। গবেষণায় নেতৃত্ব দেন ইউনিভার্সিটি অফ টেক্সাসের ডাক্তার স্টিভেন হাফনার। স্টিভেন এবং তাঁর সতীর্থ বিজ্ঞানীদের গবেষণার রিপোর্টে টাইপ-টু ডায়াবেটিসের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। এ ধরনের ডায়াবেটিস সাধারণত বয়স হলে শরীরে দানা বাঁধে এবং এটা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব শুধু খাদ্যাভাস নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে। বিজ্ঞানী স্টিভেন এবং তাঁর সহকর্মীরা গবেষণার মাধ্যমে এই সিদ্ধান্তে পৌঁছেছেন যে, কোনও ব্যক্তি ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়ার সাত বছরের মধ্যে তার হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায় ২০ শতাংশ। যেখানে একবার হৃদরোগে আক্রান্ত কিন্তু ডায়াবেটিস থেকে মুক্ত ব্যক্তির ক্ষেত্রে এই হার সমান অর্থাৎ প্রায় ১৯ শতাংশ। সে তুলনায় ডায়াবেটিস থেকে মুক্ত সুস্থ বক্তির একই বয়সে হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার হার মাত্র ৩৫ শতাংশ। এটা গেল যাদের ডায়াবেটিস নেই, কিন্তু হার্ট এ্যাটাক হয়েছে কিংবা ডায়াবেটিস রয়েছে কিন্তু এখনও হৃদরোগ হানা দেয়নি শরীরে, এমনসব ক্ষেত্রের পরিসংখ্যান কিন্তু যাদের ডায়াবেটিস রয়েছে, আবার হার্ট এ্যাটাকও হয়ে গেছে একবার, তাদের ক্ষেত্রে কিন্তু এই হার রীতিমত আশংকাজনক অর্থাৎ ৪৫ শতাংশ ।
ভিটামিন বি৬ হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়
যাদের খাদ্যতালিকায় বাদাম, সয়াবিনজাতীয় খাদ্য বেশি থাকে তারা হৃদরোগের ঝুঁকি থেকে বেশ দূরে থাকতে পারেন। মার্কিন গবেষক অ্যারোন ফরসেন এ তথ্য জানিয়েছেন। ভিটামিন বি'র পরিমাণ বেশি থাকলে হৃদরোগের ঝুঁকি এক ষষ্ঠাংশ কমে যায়। এর সঙ্গে নিয়মিত খাদ্য গ্রহণ ও পরিমিত ব্যায়ামও আবশ্যক। ফেব্রুয়ারী ২০০০-এ একটি মার্কিন গবেষণা সাময়িকীতে এসব তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে। গবেষণায় দেখা গেছে, যে সকল মহিলা বি৬ এবং ফলিক জাতীয় খাবার বেশি গ্রহণ করে, তাদের হৃদরোগের ঝুঁকি অন্তত ৪৫ শতাংশ কমে যায়। যদিও এ গবেষণা কাজটি এখন শতভাগ সম্পূর্ণ হয়নি, তবে বিজ্ঞানীরা হৃদরোগের সঙ্গে বি৬-এর সম্পর্ক সম্বন্ধে নিশ্চিত হতে পেরেছেন। বিজ্ঞানীরা দেহের হোমোসিস্টিন হ্রাস-বৃদ্ধির সঙ্গে ভিটামিন বি৬-এর হৃদরোগের সম্পর্ক খুঁজে পেয়েছেন। শরীরে বিঙ কমে গেলে হৃদরোগের ঝুঁকি যেমন বাড়ে, তেমন শরীরে হোমোসিস্টিন বেড়ে গেলে বি৬-এর পরিমাণ হ্রাস পায়। সুস্থ সবল শরীরের অধিকারী স্বেচ্ছাসেবকদের ওপর গবেষণা চালিয়ে বিজ্ঞানী অ্যারোন এসব তথ্য উদ্ঘাটন করেছেন।
(সূত্র : বিদেশী সংবাদ সংস্থার রিপোর্ট) একুশ শতকে বিশ্বের তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাবে ॥ বিজ্ঞানীদের আশংকা
বিশ্বের উষ্ণতা বৃদ্ধির প্রবণতার ওপর এক নতুন গবেষণায় দেখা গেছে যে, বিশ্বের গড় তাপমাত্রা এবং সমুদ্র-পৃষ্ঠের উচ্চতা আগে যা পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছিল চল শতাব্দীতে তার চেয়ে অনেক দ্রুতগতিতে বৃদ্ধি পাবে। বিজ্ঞানীদের একটি আন্তর্জাতিক গ্রুপ জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক আন্তঃসরকারি প্যানেল (আইপিসিসি) ১৯৯৬ সালে প্রকাশিত তাদের জলবায়ু বিষয়ক প্রতিবেদনে যে তথ্য দিয়েছিল এবারের এই প্রতিবেদনটিতে জলবায়ুর আরো উষ্ণ হবার প্রবণতার কথা বলা হয়েছে। বিশ্ব জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক পিউ সেন্টারের নির্বাহী পরিচালক এলিন ক্লসেনের মতে, “এই গবেষণা অত্যন্ত মূল্যবান তথ্য দিয়েছে যার ফলে জলবায়ু পরিবর্তনের বিতর্ককে বিজ্ঞান বিষয়ক তর্কের গণ্ডী ছাড়িয়ে বাস্তবসম্মত সমাধানের দিকে নিয়ে যাওয়া উচিত।”
প্রতিবেদনে বলা হয় বিশ্বের পৃষ্ঠদেশের গড় তাপমাত্রা ১৮০০ খৃস্টাব্দের শেষ দিন থেকে লক্ষণীয়ভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। এই সময়ে তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেয়েছে প্রায় ০.৬ সেন্টিগ্রেড। তবে এই উষ্ণতার জন্য কেবল সৌর-কার্যকলাপ বেড়ে যাওয়ার মতো প্রাকৃতিক বিষয়কে দায়ী করা যাবে না, গ্রীনহাউজ গ্যাস নিঃসরণও এর জন্য দায়ী।
গ্রীনহাউজ গ্যাস নিঃসরণ বৃদ্ধি পাবার পাশাপাশি বায়ুমন্ডলে সালফেট এরোসল বেড়ে যাওয়ায় শীতল প্রভাবও গত শতক জুড়ে তাপমাত্রা পবির্তনের কারণ । জীবাশ্ম জ্বালানী থেকে উদ্ভূত সালফার ডাই-অক্সাইডের নিঃসরণ থেকেই সালফেট এরো সলের উৎপত্তি। গ্রীনহাউজ গ্যাস, সালফেট এরোসল এবং সৌর রশ্মির প্রভাবকে একত্রে বিবেচনা করলে তখন জলবায়ুর পরিবর্তন বিজ্ঞানীদের অনুমানের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ দেখা যায়।
'আইপিসিসি' ১৯৯৬ সালে এর দ্বিতীয় মূল্যায়ন প্রতিবেদনে বিশ্বের ভবিষ্যত গড় তাপমাত্রা এবং সমুদ্রপৃষ্ঠের পরিবর্তনের যে পূর্বাভাস দিয়েছিল তাতে তারা ১৯৯২ সালে গ্যাস নিঃসরণের হার ব্যবহার করেছিল। 'আইপিসিসি'-র স্পেশাল রিপোর্ট অন এমিশন সেনারিওজ (এসআই এস)-এর লেখক দলের তৈরি করা নতুন নিঃসরণ চিত্রের প্রাথমিক সংস্করণ এখন পাওয়া যাচ্ছে। পুরাতন (১৯৯২) এবং নতুন (এসআরই এস) চিত্রের মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য পার্থক্য হচ্ছে, নতুন চিত্রে সালফার-ডাই- অক্সাইডের নিঃসরণ অনেক কম দেখা যাচ্ছে। সালফার ডাই-অক্সাইডের নিঃসরণ হ্রাসের ফলে ‘আইপিসিসি' প্রকাশিত আগেকার চিত্র অনুযায়ী তাপমাত্রা সামান্য বেড়েছে এবং সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতাও বৃদ্ধি পেয়েছে। বিজ্ঞানীরা জলবায়ু পরিবর্তনের যে নমুনা তৈরি করেছেন, তার হিসাব অনুযায়ী বিশ্বের গড় উষ্ণতা ১৯৯০ থেকে ২১০০ সালের মধ্যে ১.৯ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড থেকে ২.৯ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড তাপমাত্রায় পৌঁছাবে। এই একই সময়ে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতাও ৪৬ থেকে বেড়ে ৬৮ সেন্টিমিটার হবে। আগামী কয়েক দশকের তাপমাত্রা এবং সমুদ্রপৃষ্ঠের পরিবর্তন গ্রীনহাউজ গ্যাস নিঃসরণের উপর নির্ভর করবে না ।
বেশ কয়েকটি জলবায়ুর নকশার ফলাফলের ওপর ভিত্তি করে দেখা গেছে যে, যুক্তরাষ্ট্রের ভবিষ্যৎ উষ্ণতার হার বিশ্বের গড় হার থেকে উল্লেখযোগ্যভাবে দ্রুততর হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ভবিষ্যতে আঞ্চল-ভিত্তিতে বৃষ্টিপাত, তুষারপাত প্রভৃতির পতন ও পরিমাণ খুবই অনিশ্চিত। জলবায়ু পরিবর্তন সম্পর্কিত সকল নমুনাতেই যে অভিন্ন ফলাফল পরিলক্ষিত হচ্ছে তা হল, উত্তরাঞ্চলীয় সমভূমি এলাকা থেকে শুরু করে উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলো পর্যন্ত উত্তর অক্ষাংশ জুড়ে তীব্র শীতের পতন। এমনকী বৃষ্টিপাত, তুষারপাত প্রভৃতি ক্ষেত্রে যদি কোনো পরিবর্তন না-ও ঘটে তবু উষ্ণতার সঙ্গে সঙ্গে বর্ধিত বাষ্পীয়ভবনের কারণে কৃষিকার্যে ব্যবহার্য পানির প্রপ্যতা, মানুষের ভোগ্যপণ্য এবং শিল্প কারখানায় গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন দেখা দিতে পারে। কেবল এই একটি উপাদানের ফলেই গ্রীষ্মকালে মাটির পরিস্থিতি আরো শুষ্কতর হয়ে উঠতে পারে। কার্বন-ডাই-অক্সাইড উদ্ভিদের পানি ব্যবহারের দক্ষতার ওপর সরাসরি প্রভাব রাখে বলে উদ্ভিদের পানি ব্যবহারে দক্ষতার ওপর প্রস্বেদনের হার কমিয়ে দিয়ে বর্ধিত বাষ্পীভবনের প্রতিক্রিয়া হ্রাস করতে পারে। বিশ্বে জলবায়ু পরিবর্তন ঘটার ফলে সমগ্র যুক্তরাষ্ট্রের আবহাওয়া ও জলবায়ুতে চরম পরিবর্তন দেখা দেবে। চরম উষ্ণ দিনের সংখ্যা নিশ্চিতভাবেই বৃদ্ধি পাবে এবং তাপমাত্রা হিমাঙ্কের নিচে খুব কম বিরাজ করবে। প্রতিদিনের বৃষ্টিপাত, তুষারপাত ইত্যাদির হার কি হবে তা এখনো অত্যন্ত অনিশ্চিত, যদিও লক্ষণ দেখে মনে হচ্ছে বৃষ্টিপাতের হার বাড়তে পারে। ঘূর্ণিঝড় এবং গ্রীষ্মমণ্ডলীয় ঝড়ের বেলায় বাতাসের গতিবেগ সামান্য বাড়তে পারে। এরকমও হতে পারে যে, ভবিষ্যতে এ ধরনের ঝড়ের সঙ্গে ব্যাপক পরিমাণে বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। যদিও বিশ্বব্যাপী সংঘটিত ঘূর্ণিঝড় ও গ্রীষ্মমণ্ডলীয় ঝড়ের সংখ্যার পরিবর্তনের ওপর কোনো বিশ্বাসযোগ্য তথ্য নেই তবু পর্যবেক্ষণ থেকে প্রাপ্ত প্রমাণাদি থেকে জানা গেছে যে, উত্তর আটলান্টিক অঞ্চলে এগুলোর হার বৃদ্ধি পাবার সম্ভাবনা বেশি।
(তথ্যসূত্র, ইউসিস) জানুয়ারি ২০০১

FOR MORE CLICK HERE
NTRCA COLLEGE LEVEL HISTORY/ইতিহাস গাইড/ বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ইতিহাস
১০ তম বিসিএস -৪৪তম বিসিএস এর প্রশ্ন ও সমাধান 10th BCS to 44th Bcs MCQ Question Solution
বিসিএস ব্যাংক প্রাইমারি পরীক্ষার-এর প্রশ্ন ও সমাধান
সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন SEO বই লেখক : মোঃ মিজানুর রহমান
মাতৃস্বাস্থ্য/Motherhood
ওষুধ নির্দেশিকা
সহীহ বুখারী শরীফ হাদিস আরবি বাংলা (৭৫৬৩ টি হাদিস)
সহীহ মুসলিম শরীফ হাদিস আরবি বাংলা (৭৪৫৩ টি হাদিস)
সুনানে তিরমিজি শরীফ হাদিস আরবি বাংলা (৩৯৫৬ টি হাদিস)
সুনানে নাসায়ী শরীফ হাদিস আরবি বাংলা (৫৭৫৮ টি হাদিস)
সুনানে ইবনে মাজাহ শরীফ হাদিস আরবি বাংলা (৪৩৪১ টি হাদিস)
সুনানে আবু দাউদ শরীফ হাদিস আরবি বাংলা (৫২৭৪ টি হাদিস)

Copyright © Quality Can Do Soft.
Designed and developed by Sohel Rana, Assistant Professor, Kumudini Government College, Tangail. Email: [email protected]