রোগী দেখার পদ্ধতি সম্পর্কে নবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কোনো নির্দেশনা আছে কি? নবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কীভাবে রোগীর সেবা করতেন?

হযরত আবূ উমামা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, “রোগীকে শুশ্রূষা করার উত্তম নিয়ম হলো তুমি যখন রোগীর কপাল বা তার হাতে হাত রাখবে, তখন তাকে জিজ্ঞেস করবে, আপনি কেমন আছেন?” (আত-তিরমিযী) ৭৮
অনুরূপ উপদেশ হযরত ইউনুস রহমাতুল্লাহি আলাইহি হতে বর্ণিত এক রিওয়ায়াতে উল্লেখ আছে। তিনি বলেন, রোগী দেখার নিয়ম হলো, তুমি রোগীর শরীরে তোমার হাত রাখবে এবং জিজ্ঞেস করবে, আপনার সকালটা কেমন কাটল? আপনার সন্ধ্যা কেমন কাটল?' অর্থাৎ তার কুশলাদি জিজ্ঞেস করা। ‘আপনি সকালে কেমন ছিলেন, এখন বা আজ কেমন আছেন' ইত্যাদি। (আস-সুয়ূতী) ৭৯
রসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কোনো রোগীকে দেখতে গেলে বা তাঁর কাছে কোনো রোগীকে আনা হলে তিনি তার মাথায় ও আক্রান্ত স্থানে হাত বুলানো ছাড়াও তার সুস্থতা কামনা করে দু'য়া করতেন। কোনো কোনো সময় চিকিৎসাস্বরূপ উযূ করে উযূর অবশিষ্ট পানি অসুস্থ ব্যক্তির শরীরে ছিটিয়ে দিতেন এবং তাকে পান করতে দিতেন। আর তিনি তাঁর উম্মতকে অসুস্থের সেবা করার জন্য এসব কাজের পাশাপাশি দু'য়া করতে উপদেশ দিয়েছেন। (সহীহ আল বুখারী) ৮০
এ হাদীস দুটো থেকে জানা যায় যে রসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আশা করতেন যে, চিকিৎসকগণ এ ধরনের কথাবার্তার মাধ্যমে রোগীর প্রতি মমতা দেখাবেন এবং সমব্যথী হয়ে রোগীকে উৎফুল্ল রাখার চেষ্টা করবেন ও রোগ-ব্যাধি হালকা করার ব্যাপারে মনোযোগী হবেন। এছাড়াও চিকিৎসক বা দর্শনার্থীগণ সহমর্মিতার জন্য হাত বাড়াবেন। মাথায় ও হাতে হাত রাখার মাধ্যমে রোগীর শরীরের তাপমাত্রার খবর নিয়ে ডাক্তারকে অবহিত করতে পারেন এবং ডাক্তারকে রোগীর নিকট ডেকে আনতে পারেন। বস্তুত আমাদের দেশেও চিকিৎসকগণ বা দর্শনার্থীবৃন্দ রোগীর সাথে সাক্ষাতের সময় উপরোক্ত পদ্ধতিই দীর্ঘদিন যাবত অনুসরণ করে আসছেন। আর তা জেনে হোক আর না জেনে হোক, তারা নবীজি সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সুন্নতই অনুসরণ করে আসছেন। তাই আমি সম্মানিত চিকিৎসকগণকে ধন্যবাদ জানাই চিকিৎসা সংক্রান্ত বিষয়েও নবী করীম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে অনুসরণ করার জন্য। তবে রোগী দেখতে গিয়ে যাতে পর্দার বিধান লঙ্ঘন না হয় সেদিকে অবশ্যই সতর্ক দৃষ্টি রাখতে হবে। তদ্রূপ শরীরে হাত দেয়ার ক্ষেত্রেও পুরুষ-মহিলার মাহরামের বিষয়টি বিবেচনায় রাখতে হবে । অন্যথায় সওয়াব অর্জনের পরিবর্তে গুনাহ অর্জনের সমূহ সম্ভাবনা রয়েছে। প্রশ্ন-৩০ : রোগীর সেবা করার বিষয়ে নবী করীম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ব্যক্তিগত জীবনের আরো কোনো ঘটনা আছে কী যা জেনে আমরা বুঝতে পারবো যে, তিনি কোন্ অবস্থায় আর কীভাবে সাহায্য সেবা প্রদান করতেন?
উত্তর : হযরত আনাস রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, নবী করীম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অসুস্থ ব্যক্তির সেবা-শুশ্রুষা করতেন। হযরত জাবির ইবনে আবদুল্লাহ্ রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, “একবার আমি ভীষণ অসুস্থ হয়ে পড়লাম। তখন নবী করীম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও হযরত আবূ বকর রাদিয়াল্লাহু আনহু পায়ে হেঁটে আমার সেবা-শুশ্রূষা করার জন্য আমার নিকট এলেন । তাঁরা আমাকে সংজ্ঞাহারা অবস্থায় পেলেন। তখন নবী করীম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উযূ করলেন। তারপর তিনি উযূর অবশিষ্ট পানি আমার গায়ে ছিটিয়ে দিলেন। ফলে আমি সংজ্ঞা ফিরে পেয়ে দেখলাম নবী করীম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজে উপস্থিত। আমি নবী করীম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বললাম, হে আল্লাহ্র রসূল! আমাদের সম্পদের ব্যাপারে কী করবো? তখন তিনি আমাকে কোনো উত্তর দেননি । অবশেষে মীরাসের আয়াত নাযিল হলো।” (সহীহ আল বুখারী) হযরত আয়েশা বিনতে সা'দ রাদিয়াল্লাহু আনহা থেকে বর্ণিত। তার পিতা সা'দ রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেছেন, আমি মক্কায় ভীষণ অসুস্থ হয়ে পড়ি, তখন নবী করীম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসা
তিনি দু'য়া করেন, “হে আল্লাহ! আপনি সা'দকে রোগমুক্ত করুন এবং তার হিজরত পূর্ণ করুন।” (সহীহ আল বুখারী ও আবূ দাউদ)
হযরত যায়িদ ইবনে আরকাম রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, “আমার চোখের পীড়ার জন্য (দু'চোখ উঠে বেদনা হলে) রসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে দেখতে এসেছিলেন।” (আবূ দাউদ) ৮৩ হযরত উসামা ইবনে যায়িদ রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত। নবী তনয়া হযরত যায়নাব রাদিয়াল্লাহু আনহা নবী করীম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের খিদমতে সংবাদ পাঠালেন, আমার শিশুকন্যার মৃত্যু আসন্ন। এ জন্য আপনি আমাদের এখানে একবার আসুন। উসামা রাদিয়াল্লাহু আনহু, সা'দ রাদিয়াল্লাহু আনহু ও উবাই ইবনে কা'ব রাদিয়াল্লাহু আনহু তখন রসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাথে ছিলেন । রসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার নিকট সালাম পাঠালেন এবং বলে দিলেন, আল্লাহ্ তা'য়ালার মর্জি, তিনি যা চান নিয়ে নেন এবং যা চান দিয়ে যান। তাঁর কাছে সব কিছুরই একটা সুনির্দিষ্ট সময়সূচি আছে। সুতরাং সওয়াবের প্রত্যাশা ও সবর করা উচিত। এরপর আবারও তিনি কসম দিয়ে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট একজন লোক পাঠালেন। তখন নবী করীম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উঠলেন, আমরাও উঠলাম এবং যয়নাব রাদিয়াল্লাহু আনহার বাড়িতে গেলাম। (সেই মরণাপন্ন ) শিশুটিকে রসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কোলে তুলে দেয়া হলো। তখন তার শ্বাস-প্রশ্বাস দ্রুত হচ্ছিল। নবী করীম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের দু'চোখ বেয়ে অশ্রু নেমে এলো। হযরত সা'দ রাদিয়াল্লাহু আনহু আরয করলেন, “ইয়া রসূলাল্লাহ্! এটা কী?" রসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উত্তর দিলেন, “এটা রহমত । আল্লাহ্ তাঁর বান্দাদের মধ্য থেকে যাকে ইচ্ছে করেন তার অন্তরে এই দয়া, রহমত স্থাপন করেন।” (সহীহ আল বুখারী ও মুসলিম)

FOR MORE CLICK HERE
NTRCA COLLEGE LEVEL HISTORY/ইতিহাস গাইড/ বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ইতিহাস
১০ তম বিসিএস -৪৪তম বিসিএস এর প্রশ্ন ও সমাধান 10th BCS to 44th Bcs MCQ Question Solution
বিসিএস ব্যাংক প্রাইমারি পরীক্ষার-এর প্রশ্ন ও সমাধান
সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন SEO বই লেখক : মোঃ মিজানুর রহমান
মাতৃস্বাস্থ্য/Motherhood
ওষুধ নির্দেশিকা
সহীহ বুখারী শরীফ হাদিস আরবি বাংলা (৭৫৬৩ টি হাদিস)
সহীহ মুসলিম শরীফ হাদিস আরবি বাংলা (৭৪৫৩ টি হাদিস)
সুনানে তিরমিজি শরীফ হাদিস আরবি বাংলা (৩৯৫৬ টি হাদিস)
সুনানে নাসায়ী শরীফ হাদিস আরবি বাংলা (৫৭৫৮ টি হাদিস)
সুনানে ইবনে মাজাহ শরীফ হাদিস আরবি বাংলা (৪৩৪১ টি হাদিস)
সুনানে আবু দাউদ শরীফ হাদিস আরবি বাংলা (৫২৭৪ টি হাদিস)

Copyright © Quality Can Do Soft.
Designed and developed by Sohel Rana, Assistant Professor, Kumudini Government College, Tangail. Email: [email protected]