স্বাস্থ্য, সুস্থতা ও পবিত্রতার মূলনীতিসমূহ নিয়ে নবী করীম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নির্দেশিত বিধি-বিধান সম্পর্কে আলোচনা করেছি।

: হ্যাঁ, নবী করীম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের প্রাত্যহিক জীবনে বেশ কতগুলো বিষয় মেনে চলার পরামর্শ দিয়েছেন। তিনি স্বাস্থ্য সুরক্ষায় ও নিরাপত্তার জন্য চারটি সুনির্দিষ্ট উপদেশ দিয়েছেন, যা মেনে চললে আমাদের সঠিক কল্যাণ ও নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে।
হযরত জাবির রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত। নবী করীম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, "তোমরা নিদ্রা যাবার কালে তৈজসপত্রসমূহ ঢেকে রাখবে। মশকগুলোর মুখ বন্ধ করবে, দরজা-জানালা বন্ধ করে দিবে এবং বাতিগুলো নির্বাপিত করবে। কেননা শয়তান মশকের মুখ ছুটাতে পারে না, বন্ধকৃত দরজা খুলতে পারে না এবং আবৃত পাত্র অনাবৃত করতে পারে না। যদি তোমাদের কেউ পাত্র ঢাকার জন্য কাঠি ছাড়া আর কিছু না পায়, তবে তাই পাত্রের মুখের ওপর রেখে যেনো আল্লাহর নাম নেয়। জেনে রাখবে, (চেরাগ বা বাতি জ্বালিয়ে ঘুমালে) ইঁদুর গৃহকর্তার ঘর জ্বালিয়ে দেয়।” (সহীহ মুসলিম) ১৭১ ইবনে মাজাহ শরীফের হাদীসের বর্ণনা নিম্নরূপ। জাবির ইবনে আব্দুল্লাহ রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন যে নবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “তোমরা খাদ্য ও পানীয়ের পাত্র ঢেকে রেখো, মশকের মুখ বন্ধ করো, প্রদীপ নিভিয়ে দাও এবং (শয়নকালে) ঘরের দরজা বন্ধ করো। কারণ শয়তান (মুখবন্ধ) মশক খুলতে পারেনা এবং (ঢেকে রাখা) পাত্রও খুলতে পারেনা। তোমাদের কেউ যদি পাত্র ঢাকার কিছু না পায় তবে সে যেনো তার উপর অন্তত কোনো লাকড়ি বা কঞ্চির টুকরাই আড়াআড়িভাবে রেখে দেয় এবং আল্লাহকে স্মরণ করে। কেননা ইঁদুর মানুষের ঘর জ্বালিয়ে দিতে পারে।” (ইবনে মাজাহ) ১৭২ হযরত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, “আমি রাসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের জন্য রাতের বেলা তিনটি পাত্র রাখতাম এবং তিনটিই ঢেকে রাখতাম। একটি তার পবিত্রতা অর্জনের জন্য, একটি তার মিসওয়াকের জন্য এবং একটি তাঁর পান করার জন্য।" (ইবনে মাজাহ) ১৭৩ এ তিনটি হাদীসে নবী করীম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম স্বাস্থ্য সুরক্ষা ও নিরাপত্তা বিষয়ক চারটি নীতি বর্ণনা করেছেন।
প্রথম নীতি হচ্ছে, খাদ্যদ্রব্যের বাসনপত্র ঢেকে না রাখা হলে মশা-মাছি, তেলাপোকা, টিকটিকি ইত্যাদি কীট-পতঙ্গ পড়ে খাদ্যদ্রব্যকে দূষিত করতে পারে। অন্যত্র এক হাদীসের বর্ণনায় এসেছে যে, পাত্রের মুখ ঢাকার জন্য কোনো কিছু পাওয়া না গেলে মুখে অন্তত কোনো কাঠি বা কঞ্চির টুকরাই রেখে দিও । কারণ খোলাপাত্রে যেকোনো পোকামাকড়, ক্ষতিকর জিনিস বা কীট পতিত হওয়ার আশঙ্কা থাকে। ফলে সে খাদ্য বা পানীয় দূষিত হয়ে যাবে। আর দূষিত খাদ্যদ্রব্য খেলে অসুস্থ হবার সম্ভাবনা থাকে। সত্যিই কী গুরুত্বপূর্ণ hygienic advice বা স্বাস্থ্যসম্মত উপদেশ, যা স্বাস্থ্যবিজ্ঞান পুরোপুরি সমর্থন করে। নবী করীম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের এ উপদেশটিই স্বাস্থ্যবিজ্ঞান ঊনবিংশ শতাব্দী থেকে বলে আসছে। দ্বিতীয় নীতি হচ্ছে, কলস বা পানীয় পাত্রের মুখ বন্ধ করে রাখা । এটিও এক স্বাস্থ্যসম্মত উপদেশ, যা মেনে চললে আমরা অসুস্থতার আক্রমণ থেকে বাঁচতে পারি। আমরা যদি পানির পাত্রের মুখ বন্ধ রাখার ব্যাপারে সতর্কতা অবলম্বন করি তাহলে শয়তান বন্ধ পাত্রের মুখ খোলার এবং পানি দূষিত করার সুযোগ পাবেনা । এখানেও পানি দূষিত করার জন্য ধুলাবালি কীটপতঙ্গের আশঙ্কার কথা অনুমান করা যায়। তাছাড়া বাসনপত্র ঢেকে রাখলে তা শয়তানের পক্ষে খোলা সম্ভব হবেনা। শয়তান তো আমাদের অকল্যাণ করতে সর্বদা নিয়োজিত থাকে। আবূ হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণিত হাদীসে খালি পাত্র উপুড় করে রাখার নির্দেশ পাওয়া যায়। তিনি বলেছেন, “নবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পাত্র ঢেকে রাখতে, মশকের মুখ বন্ধ করতে এবং খালি পাত্র উপুড় করে রাখতে আমাদের নির্দেশ দিয়েছেন।” (ইবনে মাজাহ) তৃতীয় নীতি হচ্ছে, ‘ঘরের দরজা বন্ধ করে রাখা। নবীজি সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন যে তোমরা ঘরের দরজা বন্ধ রেখে শয়তানের ঘরের ভেতর প্রবেশ করার সুযোগ নষ্ট করতে পারবে। নতুবা শয়তান তোমাদের গাফিলতির সুযোগ নিয়ে ঘরে প্রবেশ করে তোমাদের অনেক অনিষ্ট করে ফেলতে পারে ।
এ রিওয়ায়াতের মর্মার্থ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, বিশেষ করে রাতের বেলায় আমরা যদি ঘুমাতে যাবার আগে দরজা বন্ধ করে না রাখি, তাহলে চোর-ডাকাত সহজেই ঘরে ঢুকে মূল্যবান মালামাল চুরি করে নিয়ে যেতে পারে এবং দুষ্ট লোকেরা অনেক অনিষ্ট করতে পারে। তাই নিরাপত্তার জন্য এ উপদেশ মেনে চলা আমাদের নিজেদের স্বার্থেই বেশি প্রয়োজন। আমার মনে হয় ঘরে security lock লাগানোর বিধান নবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের এ উপদেশের উপর ভিত্তি করে নেয়া হয়েছে।
সর্বশেষ বা চতুর্থ নীতি হচ্ছে, 'ঘুমানোর পূর্বে বাতি নিভিয়ে দেয়া।' এ বিষয়ে নবী করীম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন যে তোমরা যদি বাতি জ্বালিয়ে রেখেই ঘুমিয়ে পড়ো তাহলে ঘুমন্ত অবস্থায় ইঁদুর বাতির আগুন থেকে ঘরে আগুন জ্বালিয়ে দিতে পারে, যা খুবই বিপজ্জনক। তাছাড়া ঘরে বাতাস প্রবেশ করেও আগুন লাগতে পারে বা ছড়িয়ে পড়তে পারে। এই হাদীসে naked light তথা কুপির আলো বা উন্মুক্ত আলোর কথা বলা হয়েছে। কারণ ঐ সময়ে কোনো electric light ছিলোনা। আমাদের দেশে গ্রামের শতকরা ৯০ ভাগ বাড়িতে যুগ যুগ ধরে উন্মুক্ত বাতিই ব্যবহৃত হয়ে আসছে। তবে বর্তমানে বিজ্ঞানের যুগে ইলেকট্রিক বাল্‌ব জ্বালিয়ে ঘুমানো উচিত নয়। তাতে একদিকে বিদ্যুতের অপচয় হয়, আর একদিকে শর্ট সার্কিটে মারাত্মক দূর্ঘটনা ঘটার ও সমূহ আশংকা থেকে যায় ।

FOR MORE CLICK HERE
NTRCA COLLEGE LEVEL HISTORY/ইতিহাস গাইড/ বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ইতিহাস
১০ তম বিসিএস -৪৪তম বিসিএস এর প্রশ্ন ও সমাধান 10th BCS to 44th Bcs MCQ Question Solution
বিসিএস ব্যাংক প্রাইমারি পরীক্ষার-এর প্রশ্ন ও সমাধান
সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন SEO বই লেখক : মোঃ মিজানুর রহমান
মাতৃস্বাস্থ্য/Motherhood
ওষুধ নির্দেশিকা
সহীহ বুখারী শরীফ হাদিস আরবি বাংলা (৭৫৬৩ টি হাদিস)
সহীহ মুসলিম শরীফ হাদিস আরবি বাংলা (৭৪৫৩ টি হাদিস)
সুনানে তিরমিজি শরীফ হাদিস আরবি বাংলা (৩৯৫৬ টি হাদিস)
সুনানে নাসায়ী শরীফ হাদিস আরবি বাংলা (৫৭৫৮ টি হাদিস)
সুনানে ইবনে মাজাহ শরীফ হাদিস আরবি বাংলা (৪৩৪১ টি হাদিস)
সুনানে আবু দাউদ শরীফ হাদিস আরবি বাংলা (৫২৭৪ টি হাদিস)

Copyright © Quality Can Do Soft.
Designed and developed by Sohel Rana, Assistant Professor, Kumudini Government College, Tangail. Email: [email protected]