এই হাঁচি দেয়ার ব্যাপারে নবী করীম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কোনো উপদেশ বা বক্তব্য আছে কি? হাঁচি এলে কী দু'য়া পাঠ করতে বা কী করতে হয়? হাঁচি দেয়াকে চিকিৎসা বিজ্ঞান সমর্থন করে কি?

সম্মানিত দর্শক, হাঁচি দেয়া কোনো অভিশাপ নয়; কোনো কুলক্ষণও নয়; যদিও হিন্দু সম্প্রদায় ও কল্পনাপূজারী সম্প্রদায় একে অশুভ লক্ষণ মনে করে থাকে ।
হযরত আবূ হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, নবী করীম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, “মহান আল্লাহ্ হাঁচি আসাকে পছন্দ করেন, কিন্তু হাই তোলা পছন্দ করেননা।” (সহীহ আল বুখারী ও আত-তিরমিযী)
হযরত আবূ আইউব রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন যে রসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, “কোনো ব্যক্তির হাঁচি আসলে সে উচ্চস্বরে 'আলহামদু লিল্লাহ 'আলা কুল্লি হাল' অর্থাৎ আল্লাহ্র প্রশংসা বলবে, যেনো তার নিকট যারা থাকে, তারা তা শুনতে পায়। আর হাঁচি শ্রবণকারী জবাবে ‘ইয়ারহামুকাল্লাহ' অর্থাৎ 'তোমার উপর আল্লাহ্ রহমত বর্ষণ করুন' বলবে। অতঃপর দু'য়ার জবাবে হাঁচিদাতা বলবে, 'ইয়াহদীকুমুল্লাহু ওয়া য়ুসলিহ্ বালাকুম' অর্থাৎ আল্লাহ্ তোমাদের সঠিক পথ দেখান এবং তোমাদের অবস্থা সংশোধন করে দিন (অর্থাৎ তোমাদের মন্দকে ভালো করে দিন)।” (সহীহ আল বুখারী ও আত-তিরমিযী)
হযরত আবূ হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহুও ঠিক অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, “রসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন হাঁচি দিতেন, তখন তিনি তাঁর হাত বা কাপড় তাঁর মুখে রাখতেন এবং যথাসম্ভব আস্তে শব্দ করে হাঁচি দিতেন।” (আবূ দাউদ) ১৮৪
তাই দেখা যাচ্ছে, হাঁচি আল্লাহ্র রহমত লাভের অসীলা। এই কারণেই হাঁচিদাতার ওপর আল্লাহ্র শুকরিয়া আদায় করা অবশ্য কর্তব্য। আর হাঁচিদাতার সঙ্গে একত্রে উপবেশনকারী ও শ্রবণকারীদের উপর হাঁচিদাতার জন্য দুয়া করা সুন্নত। যার শুকরিয়া হিসেবে হাঁচিদাতা পুনরায় তাদের সুস্থতা, নিরাপত্তা ও হিদায়াতের জন্য দু'য়া করে থাকেন। সত্যি, দুয়া করা ও দু'য়া গ্রহণের কী সুন্দর নিয়ম। অথচ এ অভ্যাসগুলো পালন করতে আমাদের কোনো সময়ও লাগেনা আর কোনো টাকা- পয়সাও খরচ হয়না। আর এভাবেই সমস্ত জায়গাটি বা আলোচনার স্থানটি রহমত, সওয়াব, মঙ্গল ও বরকতে পরিপূর্ণ হয়ে ওঠে।
একজন ইউরোপীয়ান গবেষক ডাক্তার হাঁচির ওপর গবেষণা করে দেখেছেন যে, একবার হাঁচি দিলে শরীর থেকে প্রায় তিন হাজার জীবাণু বের হয়ে যায়। আর সাধারণত হাঁচি এক সাথে দুটি হয়ে থাকে। সে হিসেবে প্রায় ছয় হাজার জীবাণু বের হয়ে যায় হাঁচি দেয়ার সময়। সুবহানাল্লাহ! অথচ এতে আমাদের কোনো খরচ বা চিকিৎসার প্রয়োজন হয় না। এ গবেষণার পর ঐ ডাক্তার সাহেব সপরিবারে ইসলাম গ্রহণ করেন, আলহামদুলিল্লাহ ।
হাফিয শায়খ আবূ হাইয়্যান ইস্ফাহানী রহমাতুল্লাহি আলাইহি 'আখলাকুন্নবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম' নামক একটি বিখ্যাত হাদীসগ্রন্থ সংকলন করেছেন, যে গ্রন্থটি ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ একদল বিদগ্ধ আলেম দ্বারা অনুবাদ করিয়ে প্রকাশ করেছে। আবূ দাউদ শরীফেও হাদীসগুলো উদ্ধৃত আছে। সেই বইটিতে তিনি ৬টি সহীহ হাদীস লিপিবদ্ধ করেছেন, যার প্রত্যেকটি হযরত আবূ হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি বর্ণনা করেন,
১. “নবী করীম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হাঁচি দেওয়ার সময় নিজ আওয়াজকে যথাসম্ভব ছোট করে নিতেন এবং নিজের মুখমণ্ডল সম্পূর্ণ ঢেকে ফেলতেন।” (আখলাকুন্নবী)
২. “নবী করীম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন হাঁচি দিতেন তখন এক টুকরা কাপড় কিংবা আপন বাম হাতের সাহায্যে নিজের মুখমণ্ডল ঢেকে নিতেন এবং হাঁচির আওয়াজ ছোট করতেন।” (আখলাকুন্নবী)
৩. “হাঁচি এলে নবী করীম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক টুকরা কাপড় (যাকে আমরা রুমাল বা handkerchief বলি) দ্বারা স্বীয় মুখমণ্ডল (চেহারা মুবারক) ঢেকে নিতেন এবং দুই হাত কপাল মুবারকের উপর রাখতেন। অর্থাৎ হাতের তালুদ্বয় নিজের দ্রুদ্বয়ের উপর স্থাপন করতেন।” (আখলাকুন্নবী)
এ তিনটি বর্ণনা হলো হাঁচি এলে নবী করীম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যা করতেন। বাকি তিনটি হাদীসের ভাষ্যগুলোও অনুরূপ। সামান্য ২/৩টি শব্দ কমবেশি করা হয়েছে। তাই সে হাদীসগুলো উপস্থাপন করা হলোনা ।
এই তিনটি হাদীসে যে বর্ণনা এসেছে তা আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞানসম্মত। কারণ অনেক ক্ষেত্রে হাঁচি দেয়ার সময় নাক থেকে পানি ঝরতে পারে যাতে জীবাণু থাকে। তাই কাপড় বা হাত দিয়ে মুখমণ্ডল ঢেকে নেয়া উত্তম। ফলে আশপাশের কারো দেহে সে জীবাণু ছড়িয়ে পড়তে পারবেনা। বিশেষ করে যাদের ঠাণ্ডা লাগে বা যারা ইনফ্লুয়েঞ্জা রোগে ভোগে, তাদের ঘন ঘন হাঁচি আসে। রসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “হাঁচিদাতার উত্তর দিতে হবে তিনবার। এর অধিকবার কেউ হাঁচি দিলে সে ঠাণ্ডায় আক্রান্ত।” (আত-তিরমিযী)
তাই নবী করীম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের মতে আমাদেরও হাঁচি দেবার সময় মুখমণ্ডল নিয়মিত ঢেকে নেয়া উচিত। এটি একটি good medical and hygienic practice. It prevents air- borne diseases from spreading, যা নবী করীম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের শিক্ষা দিয়েছেন। আর জেনে হোক বা না জেনে হোক, আমাদের অনেকেই এ হাদীসটি মেনে চলে আসছি। অনেকে হয়তোবা বলবেন, এ উপদেশগুলো আমরা ডাক্তারি বইতে পেয়েছি। কিন্তু ডাক্তারি বই তো লেখা হয়েছে তাঁর বক্তব্যের বহু শতাব্দী পরে।

FOR MORE CLICK HERE
NTRCA COLLEGE LEVEL HISTORY/ইতিহাস গাইড/ বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ইতিহাস
১০ তম বিসিএস -৪৪তম বিসিএস এর প্রশ্ন ও সমাধান 10th BCS to 44th Bcs MCQ Question Solution
বিসিএস ব্যাংক প্রাইমারি পরীক্ষার-এর প্রশ্ন ও সমাধান
সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন SEO বই লেখক : মোঃ মিজানুর রহমান
মাতৃস্বাস্থ্য/Motherhood
ওষুধ নির্দেশিকা
সহীহ বুখারী শরীফ হাদিস আরবি বাংলা (৭৫৬৩ টি হাদিস)
সহীহ মুসলিম শরীফ হাদিস আরবি বাংলা (৭৪৫৩ টি হাদিস)
সুনানে তিরমিজি শরীফ হাদিস আরবি বাংলা (৩৯৫৬ টি হাদিস)
সুনানে নাসায়ী শরীফ হাদিস আরবি বাংলা (৫৭৫৮ টি হাদিস)
সুনানে ইবনে মাজাহ শরীফ হাদিস আরবি বাংলা (৪৩৪১ টি হাদিস)
সুনানে আবু দাউদ শরীফ হাদিস আরবি বাংলা (৫২৭৪ টি হাদিস)

Copyright © Quality Can Do Soft.
Designed and developed by Sohel Rana, Assistant Professor, Kumudini Government College, Tangail. Email: [email protected]