: প্রয়োজনের অতিরিক্ত পানাহার সম্পর্কে হাদীসে কোনো বর্ণনা এসেছে কি?

সঠিক পানাহার সম্পর্কে নবী করীম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের বেশ ক'টি হাদীস রয়েছে।
তিনি বলেন, ক. “যে ব্যক্তি দুনিয়াতে অধিক খাবে, কিয়ামত দিবসে সে ঐ পরিমাণ ক্ষুধার্ত থাকবে।” (আব্দুল্লাহ
ইবনে উমর ও আবূ হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহুম থেকে বর্ণিত, আত-তিরমিযী ও ইবনে মাজাহ) ২৩৬ খ. “মুমিন ব্যক্তি এক আঁতে খায় আর কাফির ব্যক্তি সাত আঁতে খায়।” (আব্দুল্লাহ ইবনে উমর ও আবৃ হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহুমা, সহীহ আল বুখারী, মুসলিম ও আত-তিরমিযী) ২৩৭, ২৩৮
অর্থাৎ মুসলমান এক নাড়ি বা পাকস্থলী দিয়ে খায়, আর কাফির সাত নাড়ি দিয়ে খায়। অন্যভাবে বলা যায় যে একজন অবিশ্বাসী একজন মুসলমানের চেয়ে সাতগুণ বেশি আহার করে। আবূ হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহুও অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করেছেন। (আত-তিরমিযী) ২৩৯

অতিথিদের খাওয়ানোর ব্যাপারে রসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কোনো উপদেশ আছে কী? প্রতিবেশীদের আপ্যায়নের ব্যাপারে তিনি কি বলেছেন?


উত্তর : ধন্যবাদ । আল্লাহ্র রসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, "তোমাদের মধ্যে সে উত্তম, যে মেহমানদেরকে বা অতিথিদেরকে খানা খাওয়ায়।” হাদীসটি মুসনাদে আহমাদ ও মুসতাদরাকে হাকিম গ্রন্থ থেকে নেয়া হয়েছে। শু'আবুল ঈমানেও উদ্ধৃত আছে। ২৪০
নবী করীম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রতিবেশীদের সম্পর্কে একটি গুরুত্বপূর্ণ হাদীস বর্ণনা করেছেন, যা আমাদের দর্শকদের অনেকেই জানেন। হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন যে নবী করীম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “সে সত্যিকার মুসলমান নয়, যে পেটভরে খায় আর তার প্রতিবেশী অভুক্ত বা না খেয়ে থাকে।” (মুসতাদরাক ও আল-মু'জামুল কাবীর) ২৪১ এখানে আমি আরো দুটো হাদীস আলোচনায় আনবো যে খাদেম বা দাসের খাবারের বিষয়ে নবী করীম সল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লাম কত সজাগ ও সহানূভুতিশীল ছিলেন ।
আবূ হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন যে রসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “তোমাদের কারো খাদেম তার জন্য খাবার এনে উপস্থিত হলে সে যেনো তাকে নিজের সাথে বসায় ও নিজের সাথে খাওয়ায়। সে যদি তাকে নিজের সাথে বসাতে না চায় তবে খাবার থেকে যেনো তাকে দেয়।” (ইবনে মাজাহ) 282
অপরদিকে আব্দুল্লাহ রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত। নবী করীম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াল্লাম বলেছেন, “তোমাদের কারো খাদেম যখন তার নিকট খাদ্য নিয়ে আসে তখন সে যেনো তাকে নিজের সাথে বসায় অথবা খাদ্য থেকে তাকেও খেতে দেয়। কারণ সে খাদ্যদ্রব্য রান্না করতে গিয়ে গরম ও ধোঁয়া সহ্য করেছে।" (ইবনে মাজাহ) ২৪৩
সত্যি কি এক মহানুভব ও বিস্ময়কর শিক্ষা! তথাকথিত কোনো সমাজতান্ত্রিক দেশেও এ ধরনের মহাবুভবতার দৃষ্টান্ত খুঁজে পাওয়া যায় না।

> মুহতারামের নিকট প্রশ্ন, কোন্ হাতে খাদ্যদ্রব্য গ্রহণ করা জায়েয, আর কোন হাতে খাবার খাওয়া নিষেধ বা নাজায়েয? আমরা যুগ যুগ ধরে ডানহাতে খাবার খেয়ে আসছি। ইদানিং কিছু লোক আবার বামহাতে খানা খায়। এ বিষয়ে হাদীস বর্ণনাপূর্বক বিস্তারিত আলোচনা করুন। আমাদের ইসলামিক টিভির অগণিত দর্শকদের বিষয়টি উদাহরণ স্বরূপ বুঝিয়ে বলুন।


উত্তর : ধন্যবাদ আপনাকে অত্যন্ত সুন্দর ও গুরুত্বপূর্ণ একটি প্রশ্ন করার জন্যে। কোন্ হাতে খাদ্যদ্রব্য খাওয়া যাবে এ বিষয়ে আমি ৫টি হাদীস বর্ণনা করবো ইনশা'আল্লাহ। প্রথম হাদীসটি বর্ণনা করেন, হযরত ইবনে উমর রাদিয়াল্লাহু আনহু । আল্লাহ্র রসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
“তোমাদের মধ্যে কেউ যেনো বামহাতে আহার না করে আর পানও না করে। কেননা শয়তান বামহাত দিয়ে পানাহার করে।” (আত-তিরমিযী) ২৪৪
আবূ দাউদ শরীফে উদ্ধৃত হাদীসের ভাষা হচ্ছে, “তোমাদের কেউ যখন খাবার খায় সে যেনো ডানহাত দিয়ে খায় এবং যখন কেউ পানি পান করে সে যেনো তখন ডানহাতে পান করে। কেননা শয়তান বামহাতে খায় ও পানি পান করে।” (আবূ দাউদ) ২৪৫
ইবনে মাজাহ শরীফে উদ্ধৃত হাদীসের বর্ণনাকারী আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহ আনহু । ২৪৬
মুসলিম শরীফে উদ্ধৃত হাদীসের ভাষা নিম্নরূপ-
জাবির রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন যে নবী করীম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, “তোমরা বামহাত দিয়ে খানা খাবে না। কারণ শয়তান বামহাত দিয়ে খানা খায়।” (সহীহ মুসলিম) ২৪৭ তৃতীয় হাদীসটি বর্ণনা করেন ইবনে আবূ উমর রাদিয়াল্লাহু আনহু। তিনি বলেন যে রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সালাম বলেছেন, “যখন কেউ খানা খেতে চায়, তার উচিত সে যেনো ডানহাত দিয়ে খায়, যখন কেউ পানি পান করতে চায়, তার উচিত সে যেনো ডানহাত দিয়ে পানি পান করে। কারণ শয়তান বামহাত দিয়ে খানা খায় ও বামহাত দিয়ে পান করে।” (সহীহ মুসলিম ও আত-তিরমিযী) ২৪৮ চতুর্থ হাদীসটি হযরত উমর ইবনে আবূ সালামাহ রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, “একদা আমি নবী করীম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের খেদমতে হাজির ছিলাম। খাওয়ার সময় আমার হাত প্লেটের ভেতর বিভিন্ন জায়গায় যেতো। নবী করীম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তখন বলেন, হে
বৎস! আল্লাহ্র নামে খাওয়া শুরু করো, ডানহাতে খাও, আর তোমার সামনে
(নিকটবর্তী স্থান) থেকে খাও।” (সহীহ আল বুখারী, মুসলিম ও আত-তিরমিযী) ২৪৯
নিচের হাদীসটি বর্ণনা করেন হযরত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা। তিনি বলেন, “নবী করীম সল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লামের ডানহাত ছিলো তাঁর উযূ ও খাবার গ্রহণের জন্যে, আর বামহাত ছিলো পায়খানা- প্রস্রাবের পর পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন হবার জন্যে এবং এমন কাজের জন্যে যা ছিলো অপছন্দনীয়।” হাদীসটি আবু দাউদ শরীফ থেকে নেয়া । ২৫০
বসে ডানহাতে খাদ্যদ্রব্য গ্রহণ করা আরামদায়ক ও উত্তম হাদীসটির ইংরেজি অনুবাদ হচ্ছে, "The Messenger's (SAWS) right hand was for ablution and food, and his left hand was for evacuation, that is, washing after defecation and urination, and anything repugnant." (Abu Dawood) 250
নাক পরিষ্কারের ক্ষেত্রে নবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বামহাত ব্যবহারের নির্দেশ দিয়েছেন। হাদীসটি মূসা ইবনে আবদূর রহমান রহমাতুল্লাহি আলাইহি সূত্রে হযরত আলী রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত । “তিনি পানি আনতে বলেন, পরে তিনি কুলি করেন এবং নাকে পানি দেন। বামহাতে তিনবার নাক ঝাড়েন এবং বলেন, এই হলো নবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের উযু।” (আন-নাসাঈ) ২৫১ অপরদিকে কুলি করার ব্যাপারে তিনি ডানহাত ব্যবহার করতে নির্দেশ দিয়েছেন। এ বিষয়ে একটি হাদীস ইমাম নাসাঈ উদ্ধৃত করেছেন যা বর্ণনা করেছেন হুমরান রাদিয়াল্লাহু আনহু। (আন-নাসাঈ) ২৫২ এ হাদীস দুটোর শিক্ষা আধুনিক স্বাস্থ্য বিজ্ঞান সম্পূর্ণ সমর্থন করে । কারণ নাক থেকে যে শ্লেষা বের হয় তা দূষিত পদার্থ এবং অনেক সময় তাতে জীবাণু তাকে। তাই এ কাজে ডানহাত ব্যবহার করা উচিত নয়। অপরদিকে মুখের অভ্যন্তর পরিষ্কার করতে হলে ডানহাতই ব্যবহার করতে হয় কারণ সাধারণত ডানহাত দিয়ে খাদ্যদ্রব্য মুখের প্রবেশ করানো হয় এবং খাদ্য গ্রহণের সময় বিভিন্ন অবস্থায় ডানহাতই সর্বদা ব্যবহৃত হয়ে থাকে
সুপ্রিয় দর্শক-পাঠক! এই পাঁচটি হাদীসের শিক্ষা বাস্তব জীবনের উদাহরণের আলোকে আলোচনা করবো ইনশাআল্লাহ। কারণ আমরা অনেক গুরুত্বপূর্ণ হাদীস শুনি কিন্তু ভুলে যাই তাড়াতাড়ি। তাই এই গুরুত্বপূর্ণ হাদীসগুলো যাতে আমরা ভুলে না যাই সে চেষ্টা করবো। আর এই ভুলে যাবার কারণেই ইসলামিক টিভি প্রত্যহ অনেক গুরুত্বপূর্ণ হাদীস রেফারেন্স বা সনদসহ আপনাদের সামনে টিভির পর্দায় এনে হাজির করে, যাতে তা বারবার দেখতে দেখতে মুখস্থ হয়ে যায়।

FOR MORE CLICK HERE
NTRCA COLLEGE LEVEL HISTORY/ইতিহাস গাইড/ বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ইতিহাস
১০ তম বিসিএস -৪৪তম বিসিএস এর প্রশ্ন ও সমাধান 10th BCS to 44th Bcs MCQ Question Solution
বিসিএস ব্যাংক প্রাইমারি পরীক্ষার-এর প্রশ্ন ও সমাধান
সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন SEO বই লেখক : মোঃ মিজানুর রহমান
মাতৃস্বাস্থ্য/Motherhood
ওষুধ নির্দেশিকা
সহীহ বুখারী শরীফ হাদিস আরবি বাংলা (৭৫৬৩ টি হাদিস)
সহীহ মুসলিম শরীফ হাদিস আরবি বাংলা (৭৪৫৩ টি হাদিস)
সুনানে তিরমিজি শরীফ হাদিস আরবি বাংলা (৩৯৫৬ টি হাদিস)
সুনানে নাসায়ী শরীফ হাদিস আরবি বাংলা (৫৭৫৮ টি হাদিস)
সুনানে ইবনে মাজাহ শরীফ হাদিস আরবি বাংলা (৪৩৪১ টি হাদিস)
সুনানে আবু দাউদ শরীফ হাদিস আরবি বাংলা (৫২৭৪ টি হাদিস)

Copyright © Quality Can Do Soft.
Designed and developed by Sohel Rana, Assistant Professor, Kumudini Government College, Tangail. Email: [email protected]