পেঁয়াজ-রসুন খাওয়ার ব্যাপারে নবী করীম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের উপদেশ কী? পেঁয়াজ-রসুন খাওয়া কী নিষেধ না হারাম?

আল্লাহ্র রসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দুর্গন্ধযুক্ত খাদ্য অপছন্দ করতেন। যেমন পেঁয়াজ, রসুন বা এই ধরনের কোনো কোনো খাদ্যদ্রব্য। হযরত জাবির ইবনে সামুরা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, “একদা হযরত আবূ আইয়ূব আনসারী রাদিয়াল্লাহু আনহু রসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের জন্য তৈরি করা কিছু খাদ্য পাঠালেন। রসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সে খাদ্য খেলেননা। তখন আবূ আইয়ূব আনসারী রাদিয়াল্লাহু আনহু রসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের খিদমতে হাজির হয়ে বিনীতভাবে খানা না খাওয়ার কারণ জিজ্ঞেস করলেন। আল্লাহ্র রসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জবাবে বললেন, এর মধ্যে (কাঁচা) পেঁয়াজ কিংবা রসুন মিশ্রিত ছিলো। তখন তিনি পুনরায় জিজ্ঞেস করলেন, ‘পেঁয়াজ বা রসুন কি হারাম?' তখন রসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, হারাম নয় বটে, তবে দুর্গন্ধের কারণে আমি এটা পছন্দ করি না।" (আত-তিরমিযী) ২৬৯
এ হাদীসটি সহীহ মুসলিমে একটু অন্যভাবে এসেছে। আবূ আইয়ূব রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, "একদা রসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট একটি রসুনমিশ্রিত খাবার পাঠালে তিনি তা খেলেননা। আমি তখন জিজ্ঞেস করলাম, এটি কি হারাম? তিনি জবাব দিলেন, এটি হারাম নয়। তবে আমি এটির গন্ধ পছন্দ করিনা। তখন আমি বললাম আপনার অপছন্দনীয় দ্রব্য আমিও পছন্দ করবোনা।” (সহীহ মুসলিম) ২৭০
আবূ আইয়ূব আনসারী রাদিয়াল্লাহু আনহুর স্ত্রী উম্মে আইয়ূব রাদিয়াল্লাহু আনহা থেকে বর্ণিত । তিনি বলেন, “নবী করীম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের জন্য খাদ্য তৈরি করলাম, যার মধ্যে শাকসবজি এবং সম্ভবত পেঁয়াজ ছিলো । নবী করীম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উক্ত খাদ্য খেতে পছন্দ করলেন না। তিনি সাহাবীদের বললেন, তোমরা খেয়ে নাও। আমি তোমাদের মতো নই। আমার ভয় হয়, এ খানার কারণে আমার সাথীদের তথা ফেরেশতাদের কষ্ট হবে। কারণ যাদের সাথে আমি কথা বলি, তোমরা তাদের সাথে কথা বলোনা।" (আত-তিরমিযী) ২৭১
মুসনাদে আমাদে আরেকটি হাদীস উদ্ধৃত করা আছে, যেখানে উমর রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেছেন, "যে ব্যক্তি পেঁয়াজ-রসুন খেতে চাবে, সে যেনো তা উত্তমরূপে রান্না করে খায়, যাতে ওটার গন্ধ তিরোহিত হয়।” (সহীহ মুসলিম ও মুসনাদে আহমাদ) ২৭৭

> : ধন্যবাদ মুহতারাম, পেঁয়াজ-রসুনের উপর যেসব হাদীস বর্ণনা করলেন তা থেকে আমরা পেঁয়াজ-রসুন খাওয়ার ব্যাপারে কী সিদ্ধান্তে পৌঁছতে পারি? আধুনিক বিজ্ঞান পেঁয়াজ-রসুন খাওয়া সম্পর্কে কী বলে?


উত্তর : যে সমস্ত হাদীস আলোচনা করলাম, তা থেকে এটি প্রমাণিত যে, আল্লাহ্র রসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কাঁচা পেঁয়াজ-রসুন খাওয়া পছন্দ করতেননা। কারণ এর গন্ধ ভালো নয়। এমনকি আল্লাহ্র ফেরেশতাগণও এ গন্ধ পছন্দ করেননা। অপরদিকে পেঁয়াজ-রসুন খেয়ে মসজিদে যাওয়া নিষেধ। কারণ আল্লাহ্র রসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পেঁয়াজ-রসুন খেয়ে মসজিদে যেতে নিষেধ করেছেন।
এখন আমি সুপ্রিয় দর্শক-পাঠকমণ্ডলীকে জিজ্ঞেস করি, পেঁয়াজ খাওয়া জরুরী কি না? না খেলে চলবে কি না? কারণ এটি নেশার সৃষ্টি করেনা। সালাদে পেঁয়াজ না দিয়ে শসা, গাজর, টমেটো, লেটুস দিলে কি সালাদের গুণগত মান কমে যাবে? পেঁয়াজ-রসুন কি তরকারির কার্যকরী উপাদান? নাইজেরিয়াসহ অনেক দেশ আছে যেখানে তারা তরকারিতে মসলা খায়না বললেই চলে। এসব প্রশ্নের উত্তর সামনে রেখে আপনি সিদ্ধান্ত নিন আপনি পেঁয়াজ খাবেন কি না?
আমি সরাসরি পেঁয়াজ-রসুন খেতে নিষেধ করছিনা, কারণ আল্লাহ্র রসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তা নিষেধ করেননি। আর যদি খেতেই হয় তাহলে পেঁয়াজ না খেয়ে রসুন খান। এবার দেখি বিজ্ঞান এ দুইটি সম্পর্কে কী বলে ?
পেঁয়াজ সম্পর্কে আস্-সুয়ূতী বলেন, পেঁয়াজ মাথাব্যথা সৃষ্টি করে এবং দৃষ্টিশক্তি বাধাগ্রস্ত করে। অধিক পরিমাণে কাঁচা পেঁয়াজ খেলে স্মরণশক্তি কমে যায়। ইবনুল কাইয়্যিম বলেন, পেঁয়াজে মিগ্রেইন আর পেটফাঁপা বাড়ায় এবং চোখে ঝাপসা দেখা যায়। অন্যদিকে রসুনের গুণাগুণ অনেক। রসুনের অপকারিতা নেই বললেই চলে। আধুনিক বিজ্ঞান বলে যে রসুন একটি আদর্শ antiseptic (পচনবিরোধী)। রসুনের রস কফ দূর করে এবং expectorant হিসেবে কাজ করে। যদি কোনো antibiotic হাতের কাছে না পাওয়া যায় তখন আহত স্থানে রসুনের রস লাগিয়ে দিলে এটি জীবাণু আক্রমণ প্রতিরোধ করে । প্রতিদিন নিয়মিত রসুনের রস সেবন করলে বা ১টি করে রসুনের কোয়া বা ছোট অংশ খেলে heart attack-এর ঝুঁকি হ্রাস পায় এবং রক্তে cholesterol-এর আধিক্য কমায়। আধুনিক বিজ্ঞান আরো বলে যে, রসুন blood pressure কমিয়ে আনে এবং এটি stimulant, carminative, antirheumatic and anthelmintic. It is useful in treating bronchial and asthmatic complaints. এ আলোচনা থেকে আমরা জানতে পারি যে রসুন খুবই উপকারী। বিজ্ঞান রসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কথার প্রতিধ্বনি করছে মাত্র। কারণ এক রিওয়ায়াতে জানা যায় যে রসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন যে রসুন ৭০টি রোগের উপশমে কাজ করে। তিনি রসুনের সাহায্যে

চিকিৎসা নেয়ার উপদেশও দিয়েছেন। আর যে ভাইয়েরা নিয়মিত মসজিদে গিয়ে জামায়াতে নামায পড়ে থাকেন, তাদের জন্য সহজ নিয়ম শিখিয়ে দিই। প্রতিদিন ফজর ও ইশার জামায়াতে নামাযের পর অর্থাৎ পরবর্তী জামায়াতে নামাযের ৫-৬ ঘণ্টা আগে রসুন খান আর তা চিবিয়ে খাবেননা। কারণ চিবিয়ে খেলে রসুনের গন্ধে মুখ ভরে যাবে। রসুনের গন্ধ এতোই তীব্র যে একমাত্র মৃগনাভি কস্তুরি ছাড়া অন্য কিছু এ গন্ধ suppress করতে পারেনা ।
রসুনের একটি ক্ষুদ্র অংশ বের করে নিয়ে এ দুই সময়ে পানির সাহায্যে গিলে খান। তাহলে আপনি ওষুধ হিসেবে রসুন নিয়মিত খেতে পারবেন, আবার জামায়াতে নামাযও ঠিকমতো আদায় করতে পারবেন। ফলে ফেরেশতাগণ আপনাকে ভালোবাসবে। My humble request is that you must respect the Prophetic tradition and at the same time you must offer your obligatory prayers in congregation regularly.
সর্বশেষে সম্মানিত দর্শকদের বলবো, রসূলের হাদীস অনুযায়ী আমরা যদি পেঁয়াজ খাওয়া বন্ধ করি বা কমিয়ে দিই, তবে নিশ্চয়ই পেঁয়াজের দামও কমে যাবে। এতে গরীব মানুষের উপকার হবে। আশা করি রসুন-পেঁয়াজ সম্পর্কে আপনার প্রশ্নের উত্তর বিশদভাবে দিতে পেরেছি।

FOR MORE CLICK HERE
NTRCA COLLEGE LEVEL HISTORY/ইতিহাস গাইড/ বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ইতিহাস
১০ তম বিসিএস -৪৪তম বিসিএস এর প্রশ্ন ও সমাধান 10th BCS to 44th Bcs MCQ Question Solution
বিসিএস ব্যাংক প্রাইমারি পরীক্ষার-এর প্রশ্ন ও সমাধান
সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন SEO বই লেখক : মোঃ মিজানুর রহমান
মাতৃস্বাস্থ্য/Motherhood
ওষুধ নির্দেশিকা
সহীহ বুখারী শরীফ হাদিস আরবি বাংলা (৭৫৬৩ টি হাদিস)
সহীহ মুসলিম শরীফ হাদিস আরবি বাংলা (৭৪৫৩ টি হাদিস)
সুনানে তিরমিজি শরীফ হাদিস আরবি বাংলা (৩৯৫৬ টি হাদিস)
সুনানে নাসায়ী শরীফ হাদিস আরবি বাংলা (৫৭৫৮ টি হাদিস)
সুনানে ইবনে মাজাহ শরীফ হাদিস আরবি বাংলা (৪৩৪১ টি হাদিস)
সুনানে আবু দাউদ শরীফ হাদিস আরবি বাংলা (৫২৭৪ টি হাদিস)

Copyright © Quality Can Do Soft.
Designed and developed by Sohel Rana, Assistant Professor, Kumudini Government College, Tangail. Email: [email protected]