দাঁড়িয়ে পানাহার সম্পর্কে হাদীসের বক্তব্য কি? এ বিষয়ে medical science কী বলে? কাঁটা-চামচের মাধ্যমে খাদ্যদ্রব্য গ্রহণ ও দাঁড়িয়ে না খাওয়া সম্পর্কে আলোচনা করুন, যা স্বাস্থ্যবিজ্ঞান অনুমোদিত ।

নবী করীম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দাঁড়িয়ে পানাহার নিষেধ করেছেন। শুধু তা-ই নয়, এটা চিকিৎসা বিজ্ঞানেরও পরিপন্থি। আমরা অনেকে এটাকে ফ্যাশন মনে করি।
দাঁড়িয়ে পানি বা অন্য কোনো পানীয় পান করতে অনেক হাদীসে নিষেধ করা হয়েছে। সবদিক বিচার- বিবেচনা করে হাদীস বিশারদগণ এভাবে সমাধান দিয়েছেন যে দাঁড়িয়ে পান করা জায়েয হলেও যেহেতু স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর, তাই অনেকের মধ্যে দাঁড়িয়ে পান করা মাকরূহ। এর মূল কারণ হচ্ছে পেট বা পাকস্থলী অতি স্পর্শকাতর (Sensitive) ও দুর্বল। দাঁড়িয়ে পান করলে সবেগে পানি পেটে প্রবেশ করে এবং পাকস্থলীতে আঘাত পড়ে। কারণ এভাবে পানির জার বা মশক থেকে পানি পান করার সময় পানির পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করা যায়না। তবে ফযীলত বা বরকতের পানি দাঁড়িয়ে পান করা উত্তম। যেমন, যমযমের পানি ও ঊযূর পর পাত্রের অবশিষ্ট পানি। এ পানি যেহেতু পরিমাণে সামান্ন তাই এতে ক্ষতির আশংকা নেই বললেই চলে ।
আজকাল অনেক হোটেল বা রেস্টুরেন্টে বুফেতে আমরা খানা খাই। অনেকে আবার খাবার টেবিল থেকে খানা নিয়ে চেয়ারে বসে খান। আবার অনেকে দাঁড়িয়েই খাওয়া শেষ করেন। আমি নিশ্চিত, আপনারা আমার সাথে একমত হবেন যে দাঁড়িয়ে এক হাতে প্লেট ধরে অন্য হাতে খাওয়া খুবই অসুবিধাজনক, যা মোটেও আরামদায়ক নয়। It is an uncomfortable and difficult task. Medical science এটা সমর্থন করেনা। অনেক ক্ষেত্রে কোনো খাবার নেবার জন্য বামহাতের প্রয়োজন হয়। আর যদি কাঁটা- চামচের মাধ্যমে খাওয়া হয়, তাহলে অসুবিধা তো আরো অনেক। কাঁটা-চামচের মাধ্যমে খেতে হলে তো দু'হাত দরকার । বামহাতে প্লেট ধরলে, ডানহাতে খেলে তৃতীয় হাত পাবেন কোথায়? এ অদ্ভুত এক সংস্কৃতি! এই সংস্কৃতির পরিবর্তন ঘটাতে হবে। Let us come and change this practice. সম্মানিত দর্শক-পাঠক! ছুরি ও কাঁটা-চামচের মাধ্যমে খেয়ে অনেকেই তৃপ্তি পাননা। মুরগির রান থেকে গোশত আলাদা করা, আর কাঁটাযুক্ত মাছ থেকে কাঁটা দূর করতে কাঁটা চামচ কি কার্যকরী? এ সংস্কৃতি কি বিজ্ঞানসম্মত? কাকে সন্তুষ্ট করার জন্য আমরা এই অবৈজ্ঞানিক প্রথা চালু করেছি? এর কোনো প্রয়োজনীয়তা আছে কি? আমি আগে এক পর্বে আলোচনা করেছি যে, যাদের হাত বিভিন্ন কারণে অপবিত্র ও দূষিত থাকে (যা খালি চোখে দেখা যায়না), তারাই এই কাঁটা-চামচ-এর মাধ্যমে খাওয়ার বিধান চালু করেছে। অপরদিকে হোটেলে চেয়ার-টেবিলের এতোই কি অভাব যে, অতিথিদের বসার ব্যবস্থা করতে পারে না? আর যদি সকল মেহমানের বসার বন্দোবস্ত করতে না পারে, তাহলে এই বড় বড় হোটেলগুলো পার্টি আয়োজনের দায়িত্ব নেয় কেনো?
বস্তুত ভালোভাবে বসে খানা খেয়ে যে তৃপ্তি পাওয়া যায়, তা দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে বা হাঁটতে হাঁটতে খেতে অসম্ভব। বসে সুন্দরভাবে প্রতিটি খাবারের লোকমা মুখে দিয়ে ভালোভাবে চিবিয়ে সহজেই গিলে ফেলা যায়। দাঁড়িয়ে খানা খেলে উপকারের চেয়ে অপকারই বেশি। তাই যারা এভাবে দাঁড়িয়ে খানা খায়, তারা একদিকে রসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের হাদীসের বিরোধিতা করছে, অপরদিকে খানাকে অসম্মান করছে এবং খাওয়ার মধ্যে অযথা কষ্ট করছে। তাই নবী করীম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের বিজ্ঞানভিত্তিক কালচার বাস্তবায়ন করতে হবে। আপনারা যারা বড় বড় হোটেলে খানা খান, তারা খাদ্য গ্রহণের আগে সাবান দিয়ে ভালোভাবে হাত ধুয়ে খাওয়া শুরু করুন। দেখবেন, এতে রসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের হাদীসও মানা হবে, আর স্বাস্থ্যও ভালো থাকবে এবং খেয়েও তৃপ্তি পাবেন ।
আরেকটি unProphetic culture আমরা লক্ষ্য করছি তা হচ্ছে দাঁড়িয়ে খাওয়ার সময় গল্প করা । অনেকে খাওয়ার চেয়ে কথাই বেশি বলেন এবং খাওয়া অর্ধেক শেষ করে বাকি অর্ধেক শয়তানের জন্য রেখে দেন। এ গল্প কি অন্য সময়ে করা যায়না? Two separate works cannot go together. Either you eat
or talk. মূলকথা, খানা আল্লাহর নিয়ামত; খাওয়া-দাওয়া এক প্রকার ইবাদত। আর বেশি কথা বলা, অপ্রয়োজনীয় কথা বলা এমনিতেই অনুচিত । তাই খাওয়ার সময় গল্প করার প্রশ্নই ওঠেনা।
বস্তুত Pharyngx এবং laryngx এর opening পাশাপাশি থাকে। খাওয়ার সময় laryngeal opening বন্ধ থাকে । আর শ্বাস-প্রশ্বাস ও কথা বলার সময় pharyngeal opening বন্ধ থাকে। তাই দু'টো কাজ এক সাথে হয়না বা হওয়া উচিত নয় ।

আমরা অনেক সময় চায়ের স্টলে বসে গরম চা, দুধ বা অন্যান্য পানীয়দ্রব্য গ্রহণ করে থাকি। অনেক সময় ফুঁক দিয়ে গরম চা বা দুধ ঠাণ্ডা করে পান করি। এ বিষয়ে রসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের হাদীস কী? যা জেনে আমাদের সম্মানিত দর্শক-শ্রোতাবৃন্দ উপকৃত হবেন?


উত্তর : চা, দুধ বা অন্য কোনো পানীয়দ্রব্য ফুঁক দিয়ে পান করা নিষেধ। এ ব্যাপারে রসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের বেশ ক'টি সহীহ হাদীস আছে যা আমি আলোচনায় আনবো ।
প্রথম হাদীসটির বর্ণনাকারী হলেন হযরত ইবনে আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহু। তিনি বলেন, “নবী করীম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম খানা ও পানীয়ের মধ্যে ফুঁক দিতে এবং খাবার পাত্রের মধ্যে নিঃশ্বাস ফেলতে নিষেধ করেছেন।” ৩১৭
এটা আবূ দাউদ ও তিরমিযী শরীফের হাদীস। এ হাদীসটিতে দুটো নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। একটি খাদ্যদ্রব্য ও পানীয় দ্রব্যে ফুঁক দেয়া ও তাতে নিঃশ্বাস ফেলা। এ ব্যাপারে একটু পরে আলোচনা করবো। অপরদিকে নবী করীম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের আরেক প্রখ্যাত সাহাবী হযরত আবূ সাঈদ খুদরী রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, “নবী করীম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পানিতে ফুঁক দিতে নিষেধ করলে এক ব্যক্তি আরয করলো, ইয়া রসূলাল্লাহ! যদি গ্লাসে ক্ষতিকর কিছু দেখি, (অর্থাৎ যদি কোনো ময়লা গ্লাসে বা কাপে ভেসে থাকতে দেখা যায়, তবুও কি ফুঁক দেবনা), তখন নবী করীম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, সেটা ফেলে দাও।” (মুসনাদে আহমাদ, আত-তিরমিযী ও মুসতাদরাক) ৩১৮
আসুন, এবার আমরা হাদীস তিনটির শিক্ষাগুলো আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞানের আলোকে যাচাই করে দেখি। প্রথম নিষেধাজ্ঞা হলো, পানীয়তে নিঃশ্বাস ফেলা অর্থাৎ CO2 পানীয়তে প্রবেশ করানো। আমরা নিঃশ্বাসের সময় অক্সিজেন নিই আর CO2 বের করে দিই। আমরা সাধারণত CO2 দেহে নিই না। কারণ তার দরকার নেই। বস্তুত CO, CO2, are not inhalable gases. These are poisonous. এগুলো বিষাক্ত। আমাদের আশপাশে এসব গ্যাসের পরিমাণ মাত্রাতিরিক্ত থাকলে পরিবেশ দূষণ হয় । এটা জনস্বাস্থ্যের জন্য হুমকিস্বরূপ ।
তদ্রূপ পানীয় দ্রব্যে ফুঁক দেয়াও অস্বাস্থ্যকর কাজ। এতে দূষিত ও দুর্গন্ধযুক্ত বাতাস পানীয়ে ঢোকে। তদুপরি ফুঁকে CO2 থাকে। কারণ এটা expired air. ফুঁক দেবার সময় দূষিত বাতাস পানীয়ে প্রবেশ করে বলেই নবী করীম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিষেধ করেছেন, যা স্বাস্থ্যবিজ্ঞানের আলোকে যুক্তিযুক্ত। অপরদিকে অধিক গরম কোনো পানীয় পান করার প্রথা এদেশীয় নয়। এটা অন্য দেশ থেকে ধার করা। এটা বিজ্ঞানসম্মতও নয়। আমাদের দেশে অধিকাংশ লোক চা খাওয়ার সময় কাপে ঘন ঘন ফুঁক দিয়ে থাকেন ।
সম্মানিত দর্শক-শ্রোতাদের বলবো, খুব গরম চা বা দুধ পান করার প্রয়োজন আছে কি, যার তাপমাত্রা ৯০° বা তার কাছাকাছি? ঈষৎ গরম থাকলেই তো যথেষ্ট। অত্যধিক গরম চা পান করায় অনেকের ঠোঁট ও জিহ্বা পুড়ে যায়। এটা স্বাস্থ্যসম্মত নয়। অপরদিকে দীর্ঘক্ষণ দুধ বাইরে রাখলে সে দুধ গরম না করে খাওয়া উচিত নয়। কারণ সাধারণ তাপমাত্রায় দুধ সংরক্ষণ করলে bacteria সহসা আক্রমণ করে। অপরদিকে অত্যধিক তাপে দুধ গরম করলে দুধের ভিটামিন ও nutrients সব নষ্ট হয়ে যায় । তাই অল্প গরম দুধ খাওয়াই উত্তম । রসূলে করীম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের হাদীস অনুযায়ী তাই গরম চা, কফি বা দুধ ফুঁক দিয়ে ঠাণ্ডা করে খাওয়া একটি বদভ্যাস। It is an unscientific and unProphetic culture. আমরা জানি সৌদি আরব ও মালয়েশিয়া সহ অনেক দেশে ঠাণ্ডা চা খাওয়ার বিধান আছে। ইদানীং আমাদের দেশেও লেবু চা, spicy চা পরিবেশন করা হচ্ছে, যা ঈষৎ গরম ।

FOR MORE CLICK HERE
NTRCA COLLEGE LEVEL HISTORY/ইতিহাস গাইড/ বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ইতিহাস
১০ তম বিসিএস -৪৪তম বিসিএস এর প্রশ্ন ও সমাধান 10th BCS to 44th Bcs MCQ Question Solution
বিসিএস ব্যাংক প্রাইমারি পরীক্ষার-এর প্রশ্ন ও সমাধান
সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন SEO বই লেখক : মোঃ মিজানুর রহমান
মাতৃস্বাস্থ্য/Motherhood
ওষুধ নির্দেশিকা
সহীহ বুখারী শরীফ হাদিস আরবি বাংলা (৭৫৬৩ টি হাদিস)
সহীহ মুসলিম শরীফ হাদিস আরবি বাংলা (৭৪৫৩ টি হাদিস)
সুনানে তিরমিজি শরীফ হাদিস আরবি বাংলা (৩৯৫৬ টি হাদিস)
সুনানে নাসায়ী শরীফ হাদিস আরবি বাংলা (৫৭৫৮ টি হাদিস)
সুনানে ইবনে মাজাহ শরীফ হাদিস আরবি বাংলা (৪৩৪১ টি হাদিস)
সুনানে আবু দাউদ শরীফ হাদিস আরবি বাংলা (৫২৭৪ টি হাদিস)

Copyright © Quality Can Do Soft.
Designed and developed by Sohel Rana, Assistant Professor, Kumudini Government College, Tangail. Email: [email protected]