নামায আদায় করার পদ্ধতি বিস্তারিতভাবে আলোচনা করুন।

নামায আদায়ের নিয়ম-পদ্ধতি
নামায আদায় করার উদ্দেশ্যে অযুকরে কিবলামুখী হয়ে দাঁড়িয়ে মহান আল্লাহকে উপস্থিত জেনে নিম্নের দোয়াটি পড়বে।
إ ِنِّى وَ جَّھْتُ وَ جْھِىَ لِل َّذِى فَطَرَ ٱلسَّمَاوَ اتِ وَ ٱلأ َرْ ضَ حَنِیفا ً وَ مَآ أ َنَا ْ مِنَ
ٱلْمُشْرِ كِینَ
“আমি একনিষ্ঠভাবে তাঁর দিকে মুখ ফিরিয়ে দিয়েছি, যিনি আকাশ ও পৃথিবী সৃষ্টি করেছেন এবং আমি
তাদের অন্তর্ভুক্ত নই যারা মুশরিক।” (সূরা আল-আনআম : ৭৯)
এ দোয়াটি পড়ার পর নামাযের নিয়্যাত করতে হবে। নিয়্যাত শব্দটি আরবি। এর অর্থ সংকল্প করা,
ইচ্ছা করা ইত্যাদি। কোন কিছু করার জন্য মনে মনে দৃঢ় সংকল্প করাকেই নিয়্যাত বলে। নিয়্যাত করার
সময় নির্দিষ্ট কোন বাক্য মৌখিকভাবে উচ্চারণ করা আবশ্যক নয়। তবে নির্দিষ্ট বাক্যাবলির মাধ্যমেও
নামাযের নিয়্যাত করা যায়, তা যে কোন ভাষায় হতে পারে। যেমন: চার রাকআত যুহরের ফরযের
নিয়্যাত এভাবে করা যায়Ñ
আমি কিবলামুখী হয়ে যুহরের চার রাকাআত ফরয নামায আদায়ের নিয়্যাত করছি। এরপর আল্লাহু
আকবার বলে নামায আরম্ভ করবে।
এমনিভাবে ফরয হলে ফরয, নফল হলে নফল এবং দু’রাকআত হলে দু’রাকআত, তিন রাকআত হলে
তিন রাকাআত এবং চার রাকাত হলে চার রাকআতের সংখ্যা উল্লেখ করবে। ইমাম হলে তিনি বলবেন,
“যারা জামাআতে উপস্থিত এবং যারা উপস্থিত হবেন আমি সবার ইমাম।” আর মুক্তাদী হলে বলবে,
আমি এ ইমামের একতিদা করছি। প্রত্যেক নামায আদায়কারীকে কিবলামুখী হয়ে শরীর স্বাভাবিক রেখে
দু’পায়ের মাঝখানে চার আঙ্গুল পরিমাণ ফাঁক রেখে দাঁড়াতে হবে। দাঁড়ানো অবস্থায় সিজদার স্থানের
উপরে দৃষ্টি রেখে দাঁড়াতে হবে। নিয়্যাতের সাথে সাথে ‘আল্লাহু আকবার’ বলে দু’হাত কানের লতি
পর্যন্তউঠাতে হবে। এ সময় আঙ্গুলগুলো স্বাভাবিক রেখে হাতের তালু কিবলার দিকে ফিরিয়ে রাখতে
হবে। তাকবীরে তাহরীমার পর দু’হাত নাভীর নিচে বাঁধতে হবে। মহিলাদের জন্য বুকের উপর হাত
বাঁধতে হবে। এ সময় ডান হাতের তালু বাম হাতের পিঠের উপর থাকবে। ডান হাতের বৃদ্ধাঙ্গুলী ও
কনিষ্ঠাঙ্গুলী দিয়ে বাম হাতের কব্জি ধরতে হবে। ডান হাতের অন্যান্য আঙ্গুলগুলো বাম হাতের উপর
এলিয়ে রাখতে হবে। তাকবীরের পর নিম্নের দোয়াটি পড়তে হবে।
سبحا نك اللھم وبحمدك وتبارك اسمك وتعالى جدك ولا الھ غیرك
أعوذ باللھ من الشیطان الرجیم এরপর
بسم اللھ الرحمن الرحیم অতঃপর
পড়তে হবে। এরপর সূরা ফাতিহা পড়বে। সূরা ফাতিহা শেষে নামাযী ব্যক্তি অর্থাৎ (ইমাম, মুক্তাদী
এবং একাকী নামাযী) সকলেই চুপে চুপে ‘আমীন’ বলতে হবে। অতঃপর কুরআনের একটি ছোট সূরা
অথবা বড় এক আয়াত অথবা ছোট তিন আয়াত তিলাওয়াত করতে হবে। মুক্তাদী হলে সে ইমামের
কিরাআত মনোযোগ সহকারে শুনবে। কিরাআত পড়ার পর ‘আল্লাহু আকবার’ বলে রুকুতে যাবে। হাত
হাঁটুর উপর রেখে আঙ্গুল ফাঁক করে হাঁটুকে ভালোভাবে ধরবে। রুকুর সময় কোমর ও পিঠ যেন মাথা
বরাবর থাকে যে দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। রুকুতে কমপক্ষে তিনবার العظیم ربى سبحان পড়তে
নিয়্যাত শব্দটি আরবি। এর অর্থ সংকল্প করা, ইচ্ছা করা ইত্যাদি। কোন কিছু করার জন্য
মনে মনে দৃঢ় সংকল্প করাকেই নিয়্যাত বলে।
নিয়্যাত করার সময় নির্দিষ্ট কোন বাক্য
মৌখিকভাবে উচ্চারণ করা আবশ্যক নয়।
ইমাম হলে তিনি বলবেন, ‘যারা জামাআতে উপস্থিত
এবং যারা উপস্থিত হবেন আমি সবার ইমাম।’ আর
মুক্তাদী হলে বলবে, আমি এ ইমামের একতিদা করছি। তাসবীহ বিজোড় পড়তে হবে। মহিলাদের রুকুতে এতটুকু ঝুঁকতে হবে যেন দু’হাত হাঁটু পর্যন্ত
পৌঁছে। আঙ্গুলগুলো হাঁটুর উপর রাখতে হবে এবং দু’হাতের কনুই দু’পাশের সাথে মিলিয়ে রাখতে
হবে। রুকুতে গিয়ে حمد لمن اللھ سمع বলে সোজা হয়ে দাঁড়াবে। তারপর الحمد لك ربنا বলবে।
এরপর তাকবীর বলে সিজদায় যাবে। প্রথমে দু’হাটু, তারপর দু’হাত, তারপর নাক, পরে কপাল জমীনে
রাখবে। মুখমÐল দু’হাতের মধ্যবর্তী স্থানে থাকবে। হাতের আঙ্গুলগুলো কিবলামুখী করে স্বাভাবিকভাবে
মিলিয়ে রাখবে। দু’হাত কনুই পর্যন্তযমীন থেকে উপরে রাখতে হয় এবং হাঁটু পেট ও রান থেকে পৃথক
রাখবে। সিজদা অবস্থায় উভয় পা খাড়া না রেখে বিছিয়ে রাখবে। সিজদায় কমপক্ষে তিনবার سبحان
الاعلى ربى পড়বে। প্রতি রাকআতেই দুই সিজদা করবে। এরপর তাকবীর বলে দ্বিতীয় সিজদায়
যাবে। উভয় সিজদা আদায়ের পর তাকবীর বলে দ্বিতীয় রাকআতের জন্য দাঁড়াবে। তারপর
বিসমিল্লাহসহ সূরা ফাতিহা পড়ে দ্বিতীয় রাকআত পূর্ণ করবে। তারপর বসে বসে ‘আত্তাহিয়্যাতু’ পড়বে।
মহিলাদের দু’পা ডান দিকে করে বাম পায়ের উপর এমনভাবে বসবে যেন ডানের উরু বাম উরুর সাথে
এবং ডান নিতম্বের মাংসপিÐ বাম পায়ের উপর থাকে।
এভাবে দ্বিতীয় সিজদা থেকে উঠে বসবে এবং তাশাহহুদ (আত্তহিয়্যাতু...) পড়বে।
সিজদায় প্রথমে দু’হাঁটু, তারপর দু’হাত, তারপর নাক, পরক্ষণে কপাল জমীনে রাখবে। মুখমÐল
দু’হাতের মধ্যবর্তী স্থানে থাকবে। হাতের আঙ্গুলগুলো কিবলামুখী করে স্বাভাবিকভাবে মিলিয়ে রাখবে।
সিজদা থেকে তাকবীর বলে প্রথমে কপাল এবং তারপর নাক ও হাত উঠিয়ে বসবে।
নামায চার রাকআত হলে ‘তাশাহহুদ’ পড়ার পর তাকবীর বলে তৃতীয় রাকআতের জন্য দাঁড়াবে।
এরপর পূর্বের ন্যায় বিস্মিল্লাহ্ পড়ে সূরা ফাতিহা পড়বে। সুন্নাত বা নফল নামায হলে সূরা ফাতিহার
সঙ্গে অন্য কোন সূরা বা কয়েকটি আয়াত পড়বে। ফরয নামায হলে তৃতীয় ও চতুর্থ রাকআতে সূরা
ফাতিহার পর অন্য সূরা বা আয়াত পড়তে হবে না।
চতুর্থ রাকআতের শেষে সিজদার পর বসে ‘আত্তাহিয়্যাতু’ পড়ার পর দরূদ শরীফ পড়বে যা দরুদে
ইবরাহীম নামে পরিচিত। দরূদ পড়ার পর নিম্নের এ দু’আটি পড়তে হবে (যাকে দোয়া মাসুরা বলে)।
اللھم انى ظلمت نفسى ظلما كثیرا ولا یغفر الذنوب الا انت فاغفرلى
مغفرة من عندك وارحمنى انك انت الغفور الرحیم
এ দু’আ পড়ার পর প্রথমে ডান দিকে মুখ ফিরিয়ে اللھ ورحمة علیكم السلام বলবে এবং পরে > বাম দিকে মুখ ফিরিয়ে অনুরূপ বলে নামায শেষ করবে।
সিজদায় প্রথমে দু’হাঁটু, তারপর দু’হাত, তারপর নাক, পরক্ষণে কপাল
জমীনে রাখবে। মুখমÐল দু’হাতের মধ্যবর্তী স্থানে থাকবে। হাতের
আঙ্গুলগুলো কিবলামুখী করে স্বাভাবিকভাবে মিলিয়ে রাখবে। সিজদা থেকে তাকবীর বলে
প্রথমে কপাল এবং তারপর নাক ও হাত উঠিয়ে বসবে।
 সঠিক উত্তরের পাশে টিক ( চিহ্ন দিন১. নিয়্যাত মানেÑ
ক. মুখে কতিপয় বাক্য উচ্চারণ করা;
খ. কোন কাজ করার জন্য অন্তরে সংকল্প করা;
গ. দৃঢ়তা প্রদর্শন করা;
ঘ. সাওয়াবের আশা করা।
২. তাকবীর তাহরীমার পর হাত বেঁধে প্রথমে কি পড়তে হবে?
ক. সুবাহানাকা.... পড়তে হবে;
খ. আউযুবিল্লাহ ও বিস্মিল্লাহ্ পড়তে হবে;
গ. সূরা ফাতিহা পড়তে হবে;
ঘ. কিছুই পড়তে হবে না।
৩. সূরা ফাতিহা পড়ার পর কমপক্ষে কী পড়তে হবে?
ক. ছোট একটি সূরা;
খ. পাঁচটি আয়াত;
গ. দশটি আয়াত;
ঘ. ছোট একটি সূরা বা ছোট তিনটি আয়াত বা বড় এক আয়াত।
৪. দরূদ পড়ার পরপরক. সালাম ফিরাবে;
খ. দোয়ায়ে মাসূরা পড়বে;
গ. তাসবীহ পাঠ করবে;
ঘ. কিছুই করতে হবে না।
৫. পুরুষ ও মহিলা হাত কোথায় বাঁধবে?
ক. উভয়ই নাভীর নিচে বাঁধবে;
খ. উভয়ই বক্ষের উপরে বাঁধবে;
গ. পুরুষরা নাভীর নিচে বাঁধবে এবং মহিলারা বক্ষের উপরে বাঁধবে;
ঘ. কমরের ওপর রাখবে।
সংক্ষিপ্ত উত্তর-প্রশ্ন
১. নিয়্যাত মানে কী? লিখুন।
২. ইমাম সাহেব ও মুক্তাদির নিয়্যাত করার সময় অতিরিক্ত কী বলতে হবে?
৩. সূরা ফাতিহার পর কী পড়তে হবে? লিখুন।
৪. সিজদায় ও বসা অবস্থায় নারী-পুরুষের হাত ও পা কীভাবে থাকবে?
বিশদ উত্তর-প্রশ্ন
১. নামায আদায় করার পদ্ধতি বিস্তারিতভাবে আলোচনা করুন।

FOR MORE CLICK HERE
স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস মাদার্স পাবলিকেশন্স
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস ১ম পর্ব
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস
আমেরিকার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস
বাংলাদেশের ইতিহাস মধ্যযুগ
ভারতে মুসলমানদের ইতিহাস
মুঘল রাজবংশের ইতিহাস
সমাজবিজ্ঞান পরিচিতি
ভূগোল ও পরিবেশ পরিচিতি
অনার্স রাষ্ট্রবিজ্ঞান প্রথম বর্ষ
পৌরনীতি ও সুশাসন
অর্থনীতি
অনার্স ইসলামিক স্টাডিজ প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত
অনার্স দর্শন পরিচিতি প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত

Copyright © Quality Can Do Soft.
Designed and developed by Sohel Rana, Assistant Professor, Kumudini Government College, Tangail. Email: [email protected]