কুরবানীর ইতিহাস লিখুন। কাদের ওপর কুরবানী ওয়াজিব? কয় প্রকার পশু দ্বারা কুরবানী দেওয়া যায় এবং এ পশুগুলো কেমন হতে হয়?

যবাই ও কুরবানী
কুরবানীকে আরবী ভাষায় ‘ঊযহিয়্যা’ বলা হয়। ‘ঊযহিয়্যা’ শব্দের আভিধানিক অর্থহল, ঐ পশু যা কুরবানীর দিন
যবাই করা হয়। শরীআতের পরিভাষায়, আল্লাহ তা’আলার সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্য নির্দিষ্ট পশু যবাই করাকে
কুরবানী বলা হয়।
কুরবানীর তাৎপর্য হল, ত্যাগ-তিতিক্ষা ও প্রিয়বস্তু আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য উৎসর্গ করা। মানব ইতিহাসে সর্বপ্রথম
কুরবানী হযরত আদম (আ)-এর দুই পুত্র হাবিল ও কাবিল করেছিলেন। এ সম্পর্কে কুরআন মাজীদে ইরশাদ
হয়েছে;
وَ ٱت ْلُ عَل َیْھِمْ نَبَ أ َ ٱبْنَىْ آدَمَ ب ِٱلْحَقّ ِ إ ِذْ قَرَّ بَا ق ُرْ بَانا ً فَتُق ُبِّلَ مِن أ َحَدِھِمَا وَ ل َمْ یُتَقَبَّلْ مِنَ ٱلآخَرِ
“আদমের দুই পুত্রের বৃত্তান্ততুমি তাদের শোনাও। যখন তারা উভয়ে কুরবানী করেছিল তখন একজনের কুরবানী
কবুল হল এবং অন্যজনের কবুল হল না।” (সূরা আল-মায়িদা : ২৭)
এ কুরবানীর বিধান যুগে যুগে আল্লাহ তা‘আলার পক্ষ হতে অবতীর্ণ সমস্তশরীআতেই বিদ্যমান ছিল। কুরআন
মজীদে ইরশাদ হয়েছে;
وَ لِكُلِّ أ ُمَّةٍ جَع َلْنَا مَنسَكا ً ل ِّیَذْكُرُ وا ْ ٱسْمَ ٱلل َّھِ عَل َىٰ مَا رَ زَقَھُمْ مِّن بَھِیمَةِ ٱلأ َنْع َامِ
“আমি প্রত্যেক স¤প্রদায়ের জন্য কুরবানীর নিয়ম করে দিয়েছি। তিনি জীবনোপকরণ স্বরূপ যে সকল চতুষ্পদ জন্তু
দিয়েছেন সেগুলোর উপর তারা যেন আল্লাহর নাম উচ্চারণ করে।” (সূরা আল-হাজ্জ : ৩৪)
মূলত প্রচলিত কুরবানী হযরত ইবরাহীম (আ)-এর অপূর্ব আত্মত্যাগের ঘটনারই স্মৃতিবহ। এ ঐতিহাসিক ঘটনার
দিকে ইঙ্গিত করেই কুরআন মজীদে ইরশাদ হয়েছে:
“তারপর সে যখন তার পিতার সাথে কাজ করার মত বয়সে উপনীত হল তখন ইবরাহীম বলল হে বৎস! আমি
স্বপ্নে দেখি যে, তোমাকে আমি যবাই করছি, এতে তোমার কী অভিমত? সে বলল, হে আমার পিতা! আপনি যা
আদিষ্ট হয়েছেন তাই করুন। আল্লাহর ইচ্ছায় আপনি আমাকে ধৈর্যশীল হিসেবে পাবেন। যখন তারা উভয়ে
আনুগত্য প্রকাশ করল এবং ইবরাহীম তার পুত্রকে কাত করে শায়িত করল তখন আমি তাকে আহবান করে
বললাম, হে ইবরাহীম! তুমি তো স্বপ্নাদেশ সত্যই পালন করলে। এভাবেই আমি সৎকর্মপরায়ণদেরকে পুরস্কৃত
করে থাকি। নিশ্চয় এ ছিল এক স্পষ্ট পরীক্ষা। আমি তাকে মুক্ত করলাম এক মহান কুরবানীর বিনিময়ে। আমি
এটা পরবর্তীদের স্মরণে রেখেছি। ইবরাহীমের উপর শান্তিবর্ষিত হোক। এভাবে আমি সৎকর্মপরায়ণদেকে পুরস্কৃত
করে থাকি।” (সূরা আস-সাফফাত :১০২)
বস্তুত হযরত ইবরাহীম (আ)-এর পুত্র কুরবানী দেওয়ার এ অবিস্মরণীয় ঘটনাকে প্রাণবন্তকরে রাখার জন্যই উম্মতে
মুহাম্মদীর উপরও তা ওয়াজিব করা হয়েছে। আল্লাহ তা‘আলা ইরশাদ করেন:
فَصَلِّ لِرَ بِّكَ وَ ٱنْحَرْ
“সুতরাং তুমি তোমার প্রতিপালকের উদ্দেশ্যে সালাত আদায় কর এবং কুরবানী কর।” (সূরা আল-কাউসার : ২)
কুরবানীকে আরবী ভাষায় ‘ঊযহিয়্যা’ বলা হয়।
‘ঊযহিয়্যা’ শব্দের আভিধানিক অর্থ হল, ঐ
পশু যা কুরবানীর দিন যবাই করা হয়।
শরীআতের পরিভাষায় আল্লাহ তা’আলার সন্তুষ্টি
লাভের উদ্দেশ্যে নির্দিষ্ট পশু যবাই করাকে
কুরবানী বলা হয়। মূলত প্রচলিত কুরবানী
হযরত ইবরাহীম (আ) ঘটনারই স্মৃতিবহ।
যাদের উপর কুরবানী ওয়াজিব
যদি মুসলিম, বুদ্ধিমান, বালেগ, মুকীম (মুসাফির নয় এমন) ব্যক্তি ১০ই যিলহজ্জ ফজর হতে ১২ই যিলহজ্জ সন্ধ্যা
পর্যন্তসময়ের মধ্যে নিসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক হয় তবে তার উপর কুরবানী করা ওয়াজিব।
কুরবানী ওয়াজিব হওয়ার জন্য যাকাতের নিসাবের মত সম্পদের এক বছর অতিবাহিত হওয়া শর্ত নয়। বরং যে
অবস্থায় সাদাকায়ে ফিতর ওয়াজিব হয় ঐ অবস্থায় কুরবানীও ওয়াজিব হবে। তবে মুসাফির, পাগল, অপ্রাপ্তবয়স্ক
ব্যক্তির উপর কুরবানী ওয়াজিব নয়।
কোন মহিলা নিসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক হলে তার উপর কুরবানী ওয়াজিব হবে।
কুরবানী ওয়াজিব নয় এমন ধরনের কোন দরিদ্র ব্যক্তি কুরবানী করলে তা আদায় হয়ে যাবে এবং বহু সাওয়াবের
অধিকারী হবে। এরূপ কোন গরীব ব্যক্তি কুরবানীর নিয়্যাতে পশু খরিদ করলে তার উপর কুরবানী করা ওয়াজিব
হয়ে যায়।
নিজের পক্ষ থেকে কুরবানী করা ওয়াজিব। সন্তানের পক্ষ থেকে পিতার উপর কুরবানী করা ওয়াজিব নয়। তবে
পিতা যদি নিজের সম্পদ হতে অপ্রাপ্তবয়স্ক ছেলের পক্ষ থেকে কুরবানী করে তাহলে তা নফল হিসাবে গণ্য হবে।
নিসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক ব্যক্তির উপর শুধু একটি কুরবানী ওয়াজিব। একাধিক কুরবানী করা ওয়াজিব নয়,
যদিও সে অধিক সম্পদের মালিক হোক না কেন। অবশ্য যদি কেউ একাধিক কুরবানী করে তবে এতে সে অনেক
সাওয়াব লাভ করবে।
ঋণ করে কুরবানী করা ভাল নয়। যখন কোন ব্যক্তির উপর কুরবানীই ওয়াজিব নয় তখন অন্যের কাছ থেকে ধার
নিয়ে কুরবানী করার কোন প্রয়োজন নেই।
ঋণগ্রস্তব্যক্তি ঋণ পরিশোধের ব্যবস্থা করবে। তার জন্য কুরবানী না করাই উত্তম। এরপরও যদি সে কুরবানী করে
তাহলে সাওয়াব পাবে।
মৃত ব্যক্তির পক্ষ থেকে কুরবানী করা জায়েয। আর এতে সে অধিক সাওয়াবের অধিকারী হবে। এমনিভাবে
রাসূলুল্লাহ (স)-এর পক্ষ থেকে কুরবানী করা বিশেষ সাওয়াবের কাজ।
কুরবানীর পশু ও এর হুকুম
 কুরবানীর পশু ছয় প্রকার : উট, গরু, ছাগল, দুম্বা, ভেড়া, মহিষ। এ সমস্তপশু ব্যতীত অন্য কোন
পশু কুরবানী করা জায়েয নয়।
 দুম্বা, ছাগল, ভেড়া পূর্ণ একবছর বয়সের হলে, কুরবানী দুরস্তহবে। অবশ্য ছয় মাসের ভেড়া,
দুম্বা, মোটাতাজা হলে এবং দেখতে এক বছর বয়সের দেখা গেলে এদের দ্বারা কুরবানী জায়েয।
গরু, মহিষ পূর্ণ দুই বছর বয়সী হতে হবে। দুই বছরের কম হলে কুরবানী জায়েয হবে না। উট
পাঁচ বছর বয়সের হতে হবে। এর কম হলে কুরবানী জায়েয হবে না।
 দুম্বা, ছাগল, ভেড়াতে মাত্র এক শরীক কুরবানী দেওয়া যায়। গরু, মহিষ ও উট এই তিন প্রকার
পশুর এক একটিতে সাত ব্যক্তি পর্যন্তশরীক হয়ে কুরবানী করতে পারবে। তবে কুরবানীর জন্য
শর্ত হল কারও অংশ যেন এক সপ্তমাংশ হতে কম না হয় এবং প্রত্যেক শরীককেই কুরবানীর
নিয়্যাত করতে হবে। যদি শরীকদের একজনও শুধু গোশত খাওয়ার নিয়্যাত করে তবে কারও
কুরবানী সঠিক হবে না। অনুরূপভাবে যদি কোন শরীকের অংশ সপ্তমাংশ হতে কম হয় তবে
সকলের কুরবানীই নষ্ট হয়ে যাবে।
 গরু, মহিষ ও উট এর মধ্যে সাতজনের কম অংশীদার হতে পারে। যেমন- দুই, চার বা এর কম
অংশ কেউ নিতে পারে। তবে এখানেও এই শর্ত জরুরি যে, কারও অংশ যেন এক সপ্তমাংশের কম
না হয়, নতুবা কারও কুরবানী সহীহ হবে না।
 যদি গরু খরিদ করার পূর্বেই সাতজন ভাগী হয়ে সকলে মিলে খরিদ করে তবে এটা জায়েয। আর
যদি কেউ এক কুরবানী করার জন্য একটা গরু খরিদ করে থাকে এবং মনে মনে ইচ্ছা রাখে যে,
পরে আরও লোক শরীক করে তাদের সাথে মিলে একত্রে কুরবানী করবে তবে তাও বৈধ হবে।
কিন্তু যদি গরু ক্রয় করার সময় অন্যকে শরীক করবার ইচ্ছ না থাকে, একা একাই কুরবানী করার
নিয়্যাত করে থাকে তারপর যদি অন্যকে শরীক করতে চায় এমতাবস্থায় যদি ঐ ক্রেতা এমন গরিব কুরবানী ওয়াজিব হওয়ার
জন্য যাকাতের নিসাবের মত সম্পদের এক বছর অতিবাহিত হওয়া শর্ত নয়। বরং যে অবস্থায়
সাদাকায়ে ফিতর ওয়াজিব হয় ঐ অবস্থায়
কুরবানীও ওয়াজিব হবে। কুরবানীর পশু ছয় প্রকার
: উট, গরু, ছাগল, দুম্বা, ভেড়া, মহিষ। এ সমস্ত
পশু ব্যতীত অন্য কোন পশু কুরবানী করা জায়েয নয়।
লোক হয় যে তার উপর কুরবানী ওয়াজিব নয় তাহলে অন্য কাউকে শরীক করতে পারবে না।
একক ভাবেই গরুটি কুরবানী করতে হবে। আর যদি ঐ ক্রেতা নিসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক
হয় তবে সে অন্য কাউকে শরীক করতে পারবে। কিন্তু নেক কাজে নিয়্যাত পরিবর্তন ঠিক নয়।
 কুরবানীর পশু যবাই করার পূর্বে যদি কোন শরীক ব্যক্তি মারা যায় এবং তার বালেগ ওয়ারিসগণ
যদি মৃত ব্যক্তির পক্ষ হতে কুরবানী করার অনুমতি প্রদান করে তাহলে সকলের কুরবানী দুরস্ত
হবে। আর যদি ওয়ারিসগণ নাবালেগ হয় অথবা বালেগ ওয়ারিসগণ যদি অনুমতি প্রদান না করে
তবে মৃত ব্যক্তির প্রদত্ত অংশ কুরবানীর আগে পৃথক না করা পর্যন্তকারও কুরবানী সহীহ হবে না।
 যদি কুরবানীর পশু হারিয়ে যায় ও তৎপরিবর্তে অন্য একটি পশু খরিদ করা হয় তারপর প্রথম
খরিদকৃত পশুটিও পাওয়া যায় এমতাবস্থায় ক্রেতা যদি নিসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক হয়, তবে
যে কোন একটি পশু কুরবানী করলে তার ওয়াজিব কুরবানী আদায় হয়ে যাবে। আর যদি লোকটি
গরিব হয় তবে উভয় পশু কুরবানী করা তার উপর ওয়াজিব হবে।
 পশু যবাই করার পর যদি পেটে জীবিত বাচ্চা পাওয়া যায় তবে ঐ বাচ্চাও যবাই করে দিবে এবং
এর মাসং খাওয়াও দুরস্তআছে। অবশ্য তা যবাই না করে সাদাকা করে দেওয়াও জায়েয।
 যে পশুর দু’টি চোখ অন্ধ বা একটি চোখ পূর্ণ অন্ধ বা এক তৃতীয়াংশের বেশি নষ্ট হয়ে গিয়েছে, এ
ধরনের পশু কুরবানী করা বৈধ নয়। অনুরূপভাবে যে পশুর একটি কান বা লেজের এক
তৃতীয়াংশের বেশি কেটে গিয়েছে এরূপ পশুও কুরবানী করা বৈধ নয়।
কুরবানীর দিন ও সময়
কুরবানীর সময়কাল হল যিলহজ্জের ১০ তারিখ হতে ১২ তারিখ সূর্যাস্তের পূর্ব পর্যন্ত। এই তিন দিনের যে কোন
এক দিন কুরবানী করা জায়েয। তবে প্রথম দিন কুরবানী করা সর্বাপেক্ষা উত্তম। তারপর দ্বিতীয় দিন, তারপর তৃতীয় দিন।
যিলহজ্ঝের ১২ তারিখ সূর্যাস্তের পর কুরবানী করা বৈধ নয়। ঈদুল আযহার নামাযের পূর্বে কুরবানী করা বৈধ নয়।
অবশ্য যে স্থানে ঈদের নামায বা জুমুাআর নামায দুরস্তনয় সে স্থানে ১০ যিলহজ্জ ফজরের নামাযের পরে কুরবানী
করা বৈধ আছে।
যবাই করার পদ্ধতি
নিজের কুরবানীর পশু নিজ হাতে যবাই করা মুস্তাহাব। যদি নিজে যবাই করতে না পারে তবে অন্যের দ্বারা যবাই
করাবে। এমতাবস্থায় নিজে পশুর কাছে দাঁড়িয়ে থাকা উত্তম।
যবাই করার সময় কুরবানীর পশু কিবলামুখী করে শোয়াবে, অতঃপর أكبر اللھ اللھ بسم বলে যবাই করবে।
ইচ্ছাকৃত বিসমিল্লাহ পরিত্যাগ করলে যবাইকৃত পশু হারাম বলে গণ্য হবে। আর যদি ভুলক্রমে বিসমিল্লাহ বাদ
পড়ে যায়, তাহলে তা খাওয়া জায়েয আছে।
কুরবানীর সময মুখে নিয়্যাত করা জরুরি নয়। অবশ্য মনে মনে নিয়্যাত করবে যে, আমি আল্লাহর উদ্দেশ্যে
কুরবানী করছি। তবে মুখে দু’আ পড়া উত্তম।
কুরবানীর পশু কিবলামুখী করে শোয়ানোর পর নিম্নোক্ত দোয়া পাঠ করবে।
انى وجھت وجھى للذى فطر السموات والارض حنیفا وما أنا من المشر كین ان
صلاتى ونسكى ومحیاى ومماتى للھ رب العالمین لا شریك لھ، وبذلك أمرت وأنا
أول المسلمین اللھم منك ولك.
তারপর أكبر اللھ اللھ بسم বলে যবাই করবে।
এরপর যবাই করে নিম্নোক্ত দুআ পাঠ করবে;
اللھم تقبلھ منى كما تقبلت من حبیبك محمد و خلیلك ابرا ھیم علیھما
الصلوة و السلام.
কুরবানীর সময়কাল হল যিলহজ্জের ১০ তারিখ হতে ১২ তারিখ সূর্যাস্তের পূর্ব পর্যন্ত। এই তিন দিনের যে কোন এক দিন কুরবানী করা জায়েয।
যদি নিজের কুরবানী হয় তবে منى বলবে, আর যদি অন্যের বা অন্যদের কুরবানী হয় তবে من শব্দের পরে
দাতার বা দাতাগণের নাম উল্লেখ করবে।
যবাই করার সময় চারটি রগ কাটা জরুরী: ১. কণ্ঠনালী, ২. খাদ্যনালী, ৩. ওয়াদজান অর্থাৎ দুই পাশের দুটি মোটা
রগ। এগুলোর যে কোন তিনটি যদি কাটা হয় তবুও কুরবানী শুদ্ধ হবে। কিন্তু যদি দু’টি মোটা রগ কাটা না হয়,
তবে কুরবানী শুদ্ধ হবে না।
কুরবানীর গোশতের বিধান
কুরবানীর গোশত নিজে খাবে, নিজের পরিবারবর্গকে খাওয়াবে, আত্মীয়-স্বজনকে হাদিয়া দিবে এবং গরিব ও
মিসকীনদের সাদকা করবে। গোশত বিতরণের মুস্তাহাব পদ্ধতি হল, তিনভাগ করে একভাগ পরিবার পরিজনের
জন্য রাখবে এবং বাকী দুইভাগে একভাগ বন্ধু বান্ধবকে আর একভাগ গরিব মিসকীনকে বণ্টন করে দিবে।
 কয়েক ব্যক্তি একসাথে শরীক হয়ে যদি একটি গরু কুরবানী করে তবে পাল্লা দ্বারা মেপে
সমানভাবে গোশত বণ্টন করে নিবে। অনুমান করে বণ্টন করা জায়েয নয়। অবশ্য যদি গোশতের
সঙ্গে মাথা, পায়া এবং চামড়াও ভাগ করে দেওয়া হয় তবে যেভাগে মাথা, পায়া এবং চামড়া
থাকবে সে ভাগে যদি গোশত কম হয় তবে এ বণ্টন দুরস্তহবে। আর যে ভাগে গোশত বেশি ঐ
ভাগে মাথা, পায়া বা চামড়া দিলে বণ্টন দুরস্তহবে না।
 কুরবানীর গোশত অমুসলিমকে দেওয়াও জায়েয। কিন্তু মজুরী বাবদ দেওয়া জায়েয নয়। অবশ্য
মুসলিমকে দেওয়াই উত্তম।
 কুরবানীর গোশত কুরবানী দাতার জন্য বিক্রি করার মাকরূহ তাহরীমী। যদি কেউ বিক্রি করে
তাহলে ইহার মূল্য সাদকা করা ওয়াজিব।
 কসাইকে গোশত বানানোর মজুরী স্বরূপ গোশত, চামড়া, রশি প্রভৃতি দেওয়া জায়েয নয়।
পারিশ্রমিক দিতে হলে ভিন্ন ভাবে আদায় করবে।
 গরু, মহিষ বা উটের মধ্যে কয়েক ব্যক্তি শরীক থাকলে তারা নিজেদের মধ্যে গোশত ভাগ করে
দেওয়ার পরিবর্তে যদি সমস্তগোশত একত্রে গরিবদের মধ্যে বিতরণ করে অথবা রান্না করে তাদের
খাওয়ায় তবে ইহাও জায়েয। কিন্তু শরীকদের কোন একজন ভিন্নমত প্রকাশ করলে জায়েয হবে
না। কুরবানীর গোশত তিনদিনের বেশি সময় জমা করে রাখাও জায়েয আছে।
গোশত বিতরণের মুস্তাহাব পদ্ধতি হল,
তিনভাগ করে একভাগ পরিবার-পরিজনের জন্য
রাখবে এবং বাকী দুইভাগের একভাগ বন্ধু বান্ধবকে আর একভাগ
গরিব-মিসকীনকে বণ্টন করে দিবে।
 সঠিক উত্তরের পাশে টিক ( চিহ্ন দিন১. ইতিহাসের সর্বপ্রথম কুরবানীক. হযরত আদমের দুইপুত্রের দেওয়া কুরবানী;
খ. হযরত ইবরাহীম (আ) কর্তৃক প্রদত্ত কুরবানী;
গ. হযরত মুহাম্মদ (স) কর্তৃক প্রদত্ত কুরবানী;
ঘ. হযরত ইসমাঈল (আ) কর্তৃক প্রদত্ত কুরবানী।
২. কুরবানী ওয়াজিব হওয়ার জন্য-
ক. নিসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক হতে হয়;
খ. সে সম্পদের উপর এক বছর অতিবাহিত হওয়া শর্ত নয়;
গ. নিসাব পরিমাণ সম্পদ হওয়া শর্ত নয়;
ঘ. ক ও খ উভয় উত্তরই সঠিক।
৩. কোন পশু দ্বারা কুরবানী বৈধ নয়ক. গাভী;
খ. খরগোশ;
গ. হরিণ;
ঘ. খ ও গ উভয় উত্তর সঠিক।
৪. কুরবানীর সময়কালক. ১০ যিলহজ্জ;
খ. ১১ যিলহজ্জ;
গ. ১০ থেকে ১২ যিলহজ্জ পর্যন্ত;
ঘ. ১০ থেকে ১২ যিলহজ্জ সূর্যাস্তের পূর্ব পর্যন্ত।
৫. যবাই করার সময়ক. কালিমায় শাহাদাত পড়তে হয়;
খ. বিসমিল্লাহ পড়তে হয়;
গ. পীর সাহেবের নাম উল্লেখ করতে হয়;
ঘ. কিছুই পড়তে হয় না।
সংক্ষিপ্ত উত্তর-প্রশ্ন
১. কুরবানীর ইতিহাস লিখুন।
২. কাদের ওপর কুরবানী ওয়াজিব? উল্লেখ করুন।
৩. কয় প্রকার পশু দ্বারা কুরবানী দেওয়া যায় এবং এ পশুগুলো কেমন হতে হয়? বর্ণনা করুন।
৪. কুরবানীর দিন ও সময় উল্লেখ করুন।
৫. যবাই করার পদ্ধতি আলোচনা করুন।
৬. কুরবানীর গোশতের বিধান বর্ণনা করুন।
বিশদ উত্তর-প্রশ্ন
১. কুরবানী সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করুন।

FOR MORE CLICK HERE
স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস মাদার্স পাবলিকেশন্স
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস ১ম পর্ব
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস
আমেরিকার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস
বাংলাদেশের ইতিহাস মধ্যযুগ
ভারতে মুসলমানদের ইতিহাস
মুঘল রাজবংশের ইতিহাস
সমাজবিজ্ঞান পরিচিতি
ভূগোল ও পরিবেশ পরিচিতি
অনার্স রাষ্ট্রবিজ্ঞান প্রথম বর্ষ
পৌরনীতি ও সুশাসন
অর্থনীতি
অনার্স ইসলামিক স্টাডিজ প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত
অনার্স দর্শন পরিচিতি প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত

Copyright © Quality Can Do Soft.
Designed and developed by Sohel Rana, Assistant Professor, Kumudini Government College, Tangail. Email: [email protected]