হালাল ও হারাম প্রাণী সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে লিখুন।

খাদ্যদ্রব্য ও পানীয়
 অপবিত্র, ক্ষতিকর এবং নেশা জাতীয় দ্রব্য ছাড়া অন্যান্য সকল খাদ্যই হালাল। এছাড়া
মস্তিস্ক বিকৃতি ঘটায় এমন বস্তু এবং অপরের মালিকানাধীন বস্তু অনুমতি ছাড়া ভক্ষণ করা হারাম।
 পানীয় দ্রব্যে অপবিত্র বস্তু মিশ্রিত হলে তা হারাম হয়ে যায়।
 বিষ এবং বিষ জাতীয় সকল বস্তুই হারাম। প্রাণী এবং বিষাক্ত উদ্ভিদ থেকে সংগৃহীত সকল বিষই হারাম।
 বিষ নয় অথচ ক্ষতিকর এমন বস্তু ভক্ষণ করা হারাম। যেমন: কাদা, মাটি, পাথর, কয়লা ইত্যাদি।
 ধূমপান একটি ক্ষতিকর বস্তু। এটি স্বাস্থ্যের মারাত্মক ক্ষতি সাধন করে। সম্পদের অপচয় ঘটায়। এ কারণেই এটিও হারাম বস্তুসমূহের অন্তর্ভুক্ত।
 যে বস্তুতে অন্যের অধিকার আছে তা বিনা অনুমতিতে ভক্ষণ করা হারাম। যেমনঃ চোরাই মাল,
লুটতরাজের মাল, ছিনতাইকৃত মাল ইত্যাদি।
হালাল ও হারাম প্রাণী
প্রাণী দুই প্রকার : জলচর প্রাণী ও স্থলচর প্রাণী। এ সকল প্রাণীর মধ্যে কোনটি হালাল এবং কোনটি
হারাম শরীআতে এর বিস্তারিত বর্ণনা আছে। আল্লাহ তা‘আলা বলেনঃ
وَ قَدْ فَصَّلَ ل َكُمْ مَّا حَرَّ مَ عَل َیْكُمْ إ ِلا َّ مَا ٱضْط ُرِ رْ تُمْ إ ِل َیْھِ
“যা তোমাদের জন্য তিনি হারাম করেছেন তা তিনি তোমাদের নিকট বিশদভাবেই বিবৃত করেছেন,
তবে তোমরা নিরূপায় হলে তা স্বতন্ত্র ব্যাপার।” (সূরা আল-আনআম : ১১৯)
জলচর প্রাণী
জলচর প্রাণীর মধ্যে একমাত্র মাছ হালাল। মাছ ছাড়া অন্য কোন প্রাণীই হালাল নয়। নবী (স) বলেন:
ھو الطھور ماءه والحل میتة
“সমুদ্রের পানি পবিত্র এবং তার মৃত (মাছ) হালাল।”
মৃত মাছ যদি হালাল হয় তাহলে জীবিত মাছ তো অবশ্যই হালাল হবে।
স্থলচর প্রাণী
وَ ٱلأ َنْع َامَ خَل َقَھَا ل َكُمْ فِیھَا دِفْ ءٌ وَ مَنَافِعُ وَ مِنْھَا تَأ ْكُل ُونَ লনঃবে তা‘আলা আল্লাহ। হালাল‘ জš অহিংস্য ান্যঅন ও হপালিতৃগ্য ধমে প্রাণীর লচরস্থ
“তিনি চতুস্পদ জন্তুসৃষ্টি করেছেন; এতে রয়েছে শীত নিবারক উপকরণ এবং অনেক উপকারিতা। এ
থেকে তোমরা আহার করে থাক।” (সূরা আন-নাহল : ৫)
আল্লাহ তা‘আলা আরও বলেন-
یَا أ َیُّھَا ٱل َّذِین َ آمَنُوا ْ أ َوْ فُوا ْ ب ِٱلْعُقُودِ أ ُحِ ل َّتْ ل َكُمْ بَھِیمَة ُ ٱلأ َنْع َامِ إ ِلا َّ مَا یُتْل َىٰ عَل َیْكُمْ
“হে মুমিনগণ! তোমরা অঙ্গীকার পূর্ণ করবে, যা তোমাদের নিকট বর্ণিত হচ্ছে তা ছাড়া চতুষ্পদ জন্তু
তেমাদের জন্য হালাল করা হলো।” (সূরা আল-মায়িদা : ১)
আয়াতাংশে উল্লিখিত আনআম (চতুষ্পদ জন্তু) দ্বারা উট, গরু, ছাগল ও অন্যান্য হিংস্রজন্তুকে বুঝায়।
হালাল প্রাণীসমূহ
গরু, মহিষ, উট, ছাগল, হরিণ, ভেড়া ইত্যাদি হালাল প্রাণী। কিন্তু ঘোড়া ও গৃহপালিত গাধা এর
অন্তর্ভুক্ত নয়। বন্য গাধা এবং খরগোশও হালাল। নবী করিম (স)-কে একদা একটি ভুণা খরগোশ
হাদিয়া দেওয়া হয়। তিনি তা থেকে ভক্ষণ করেন এবং সাহাবীগণকে তা থেকে খাওয়ার জন্য বলেন।
এছাড়া খরগোশ হিংস্র জন্তুও নয় এবং সে কোন মৃত জিনিসও খায় না। কাজেই তা খাওয়া হালাল। হারাম প্রাণীসমূহ
পশু পাখি হারাম হওয়া সংক্রান্তমূলনীতি হল-
দাঁত দিয়ে শিকারকারী হিংস্র জন্তু এবং নখর দিয়ে শিকারকারী পাখি খাওয়া হারাম বা অবৈধ। নখর দন্ত
দিয়ে শিকারকারী সকল প্রকার পাখি এবং দাঁত দিয়ে শিকারকারী সকল প্রকার হিংস্র জন্তু খেতে নবী
করীম (স) নিষেধ করেছেন। ঈগল, বাজ, শকুন, চিল, কাক ইত্যাদি নখর দিয়ে শিকার করে বলে
এসব পাখি খাওয়া জায়েয নেই। বাঘ, সিংহ, চিতা, বানর, ভালুক, হাতি, কুকুর, শিয়াল, বিড়াল
ইত্যাদি জন্তু দাঁত দিয়ে শিকার করে থাকে। এ কারণে এসব জন্তু খাওয়া অবৈধ। সাপ, গুইসাপ, বেজি,
ইঁদুর, চিকা, বাদুর, কচ্ছপ, ভীমরুল এবং সকল প্রকার পোকা মাকড় খাওয়া নাজায়েয।
কুরআন বর্ণিত ১০ প্রকার হারাম খাদ্য
১. মৃত জন্তু: যেহেতু এটি ঘৃণার সৃষ্টি করে, শরীরের জন্য ক্ষতিকারক, তাই এটি হারাম।
২. প্রবাহিত রক্ত: প্রবাহিত রক্ত অপবিত্র। সুস্থ মানব প্রকৃতি স্বভাবতই তা ঘৃণা করে থাকে। এছাড়া মৃত
জন্তুর মতো এতে ক্ষতিকর জীবাণু থাকাও সম্ভব। জাহিলী যুগে তীব্র ক্ষুধার তাড়নায় ধারালো অস্ত্র
দিয়ে উট বা অন্য কোন জন্তুকে আঘাত করা হতো। রক্ত যখন ফিনকি দিয়ে বের হত তখন
আঘাতকারী ব্যক্তি তা পান করত। এতে জন্তুটি তীব্র যন্ত্রণা ভোগ করত এবং দুর্বল হয়ে পড়ত।
এসব কারণে আল্লাহ তা‘আলা প্রবহমান রক্ত হারাম করে দেন।
৩. শুকরের মাংস: শুকরের মাংস খাওয়া হারাম। শুকর মূলত অপবিত্র। শুকর সাধারণত মল মূত্র
ইত্যাদি নাপাক বস্তু খেয়ে থাকে। অধিকন্তু এর মধ্যে রয়েছে ঘৃণ্য পাশবিক আচরণ। তাছাড়া এটি
একটি হিংস্র প্রাণী। এসব কারণে শুকর খাওয়া হারাম। আধুনিক স্বাস্থ্য বিজ্ঞানের মতে শুকর খাওয়া
খুবই ক্ষতিকর।
৪. আল্লাহ ছাড়া অন্য কারও জন্য উৎসর্গিত জন্তু: আল্লাহ ছাড়া অন্য কারও নামে যবেহ করা শিরক।
৫. ‘মুনখানিকা’ তথা শ্বাসরোধে মৃত জন্তু।
৬. ‘মাওকুযা’ তথা প্রহারের কারণে মৃত জন্তু।
৭. ‘মুতারাদ্দিয়া’ তথা উঁচু স্থান থেকে পড়ে যাওয়ার কারণে মৃত জন্তু।
৮. ‘নাতীহা’ তথা শিং এর আঘাতে মৃত জন্তু।
৯. হিংস্র পশু কর্তৃক খাওয়ার কারণে মৃত জন্তু।
পাঁচ হতে নয় পর্যন্তজন্তুসমূহের কথা উল্লেখের পর ইরশাদ হয়েছে : ذكیتم ما الا
অর্থাৎ এ সবের পরও জন্তুকে জীবিত পেয়ে তা যবেহ করা হলে সেটা খাওয়া হালাল।
১০. দেবতার উদ্দেশ্য বলি দেওয়া জন্তু, আল্লাহ ছাড়া কোন দেবতা, শক্তি বা ব্যক্তির সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে
জন্তু-জানোয়ার যবেহ বা বলি দেওয়া হলে তাও খাওয়া হারাম।
এ মহান আল্লাহ তা‘আলা ইরশাদ করেন।
حُرِّ مَتْ عَل َیْكُمُ ٱلْمَیْتَة ُ وَ ٱلْدَّمُ وَ ل َحْمُ ٱلْخِ نْزِ یرِ وَ مَآ أ ُھِلَّ لِغَیْرِ ٱلل َّھِ ب ِھِ
وَ ٱلْمُنْخ َنِقَة ُ وَ ٱلْمَوْ ق ُوذَةُ وَ ٱلْمُتَرَ دِّیَة ُ وَ ٱلنَّطِ یحَة ُ وَ مَآ أ َكَلَ ٱلسَّبُعُ إ ِلا َّ مَا ذَكَّیْتُمْ
وَ مَا ذ ُب ِحَ عَل َى ٱلنُّصُبِ وَ أ َنْ تَسْتَق ْ سِمُوا ْ ب ِٱلأ َزْ لاَمِ ذٰ لِكُمْ فِسْقٌ
“তোমাদের জন্য হারাম হয়েছে-১. মৃত জন্তু, ২. রক্ত, ৩. শুকরের মাংস, ৪. আল্লাহ ব্যতীত
অপরের নামে যবাইকৃত পশু, ৫. শ্বাসরোধের কারণে মৃতজন্তু, ৬. প্রহারের কারণে মৃত জন্তু, ৭.
পড়ে যাওয়ার কারণে মৃতজন্তু, ৮. শিংয়ের আঘাতের কারণে মৃত জন্তু ৯. হিংস্র পশুতে খাওয়া জন্তু,
তবে যা তোমরা যবাই করতে পেরেছ তা ব্যতীত. ১০. যা মূর্তি এবং দেবীর জন্য বলি দেওয়া হয়
সে সব জন্তু, ১১. জুয়ার তীর দ্বারা ভাগ্য নির্ণয় করাও হারাম। উপরে বর্ণিত সকল কাজ হল
পাপ।” (সূরা আল-মায়িদা : ৩)
মৃত জন্তু হারাম হওয়ার কারণ নিম্নরূপ
ক. সুস্থ মানব প্রকৃতি মৃত জন্তুকে ঘৃণা করে। বিবেকবান মানুষ মৃত জন্তু খাওয়াকে মানুষের জন্য
নিতান্তই অশোভন ও হীনকাজ বলে গণ্য করে। এ কারণে সকল আসমানী কিতাবে মৃত জন্তু
খাওয়াকে হারাম ঘোষণা করা হয়েছে।
খ. মৃত জন্তু সম্পর্কে আশঙ্কা থাকে যে, সেটি কোন রোগের কারণে অথবা বিষাক্ত বস্তু খেয়ে মারা গিয়েছে। এরূপ মৃত জন্তু আহার করলে মানুষের বিরাট ক্ষতি হতে পারে। দাঁত দিয়ে শিকারকারী
হিংস্র জন্তু এবং নখর দিয়ে শিকারকারী পাখি
খাওয়া হারাম। আল্লাহ ছাড়া কোন
দেবতা, শক্তি বা ব্যক্তির সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে জন্তু-
জানোয়ার যবেহ বা বলি দেওয়া হলে তাও খাওয়া
হারাম। মানুষের জন্য মৃত জন্তু
হারাম করে আল্লাহ তা‘আলা অন্যান্য পশুপাখির জন্য খাদ্যের ব্যবস্থা করে দিয়েছেন।
গ. মানুষের জন্য মৃত জন্তু হারাম করে আল্লাহ তা‘আলা অন্যান্য পশু-পাখির জন্য খাদ্যের ব্যবস্থা করে
দিয়েছেন।
তবে রাসূলুল্লাহ (স) দুই প্রকার মৃত প্রাণীকে মানুষের জন্য হালাল করে দিয়েছেন। একটি মাছ
আর অপরটি পঙ্গপাল। ইবনে উমর (রা) বলেন-
فاالحوت والجراد، وأما الدمان فالكبد واالطحال. قال رسول اللھ صلى اللھ علیھ وسلم أحلت لكم میتتان ودمان أما المیتتان
রাসূলুল্লাহ (সা) বলেছেন, “তোমাদের জন্য দুটি মৃত প্রাণী এবং দু’প্রকারের রক্ত হালাল করা
হয়েছে। মৃত প্রাণী দুটি হল: মাছ ও টিড্ডি (ফড়িং) আর দু’প্রকারের রক্ত হল-কলিজা এবং প্লীহা।
যে সব জন্তু হারামজীবন্তজন্তুর অংশ বিশেষ কেটে ফেলার বিধান : জীবন্তজন্তুর কোন অংশ কেটে নিয়ে তা ভক্ষণ করা
হারাম, আরবের লোকেরা জীবন্তদুম্বার পিছনের দিকের তেলের থলি কেটে নিয়ে তা আহার করতো।
মহানবী (স) এ কাজকে হারাম ঘোষণা করেন। আবু ওয়াকিদ আল-লায়সী (রা) বর্ণনা করেন :
ماقطع من البھیمة وھى حیة فھو میتة
“জীবন্তজন্তুর কোন অংশ কেটে দেয়া হলে তাও মৃত।” অর্থাৎ মৃত জন্তুর ন্যায় সেটাও হারাম।
মৃত মাছ ও পঙ্গপালের বিধান : শরীআতের বিধান অনুযায়ী মৃত মাছ আহার করা হলাল। নবী করীম
(স)-কে সমুদ্রের পানি সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন: والحل ماءه الطھور ھو
میتتھ “সমুদ্রের পানি পবিত্র এবং তার মৃত (মাছ) হালাল।”
পঙ্গপাল সম্পর্কে শরীআতের অনুরূপ বিধান রয়েছে। নবী করীম (স) মৃত পঙ্গপাল খাওয়ার অনুমতি
দিয়েছেন। হযরত ইবনে আবু লায়লা (রা) বলেন, “আমরা রাসূলুল্লাহ (স)-এর সাথে সাতটি
যুদ্ধাভিযানে অংশগ্রহণ করেছি। তখন আমরা তাঁর সঙ্গে পঙ্গপাল আহার করেছি।”
মৃত জন্তুর চামড়া. হাড়, পশম, শিং ও নখর ব্যবহার করার বিধান
শরীআতে মৃত জন্তু খাওয়া হারাম, কিন্তু মৃত জন্তুর চামড়া, হাড়. পশম, শিং ও নখর ব্যবহার করায়
কোন দোষ নেই। তবে শুকর ও কুকুর জীবিত হোক বা মৃত হোক এদের সবকিছুই হারাম।
শুধু মল ভক্ষণকারী প্রাণীর বিধান
কোন উট, গরু, ছাগল, মোরগ-মুরগী ইত্যাদি হালাল প্রাণী যদি মল খেতে অভ্যস্তহয় এবং এতে তার
শরীরে দুর্গন্ধ সৃষ্টি হয় তবে এরূপ প্রাণীকে ‘জাল্লালা’ বলা হয়। এ ধরনের প্রাণীর গোশত খাওয়া এবং দুধ
পান করা হারাম। এ প্রসঙ্গে হাদীসে এসেছেইবনে উমর (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, “রাসূলুল্লাহ (স) জাল্লালার মাংস খেতে এবং দুধ পান
করতে নিষেধ করেছেন।”
অপর এক হাদীসে এসেছে- “রাসূলুল্লাহ (স) খায়বার যুদ্ধের দিন গৃহপালিত গাধার গোশত খেতে নিষেধ
করেছেন এবং জাল্লালার উপর আরোহণ করতে এবং তার গোশত খেতে নিষেধ করেছেন।”
অপবিত্র বস্তুর বিধান
শরীআতের একটি মূলনীতি, হচ্ছে পবিত্র বস্তু হালাল এবং অপবিত্র বস্তু হারাম। এ প্রসঙ্গে আল্লাহ
وَ یُحِ لُّ ل َھُمُ ٱلطَّیِّبَاتِ وَ یُحَرِّ مُ عَل َیْھِمُ ٱلْخَبَآئِثَ : লনবে তা‘আলা
“সে তাদের জন্য পবিত্র বস্তু হালাল করে এবং অপবিত্র বস্তু হারাম করে।” (সূরা আল-আরাফ : ১৫৭)
যে সব বস্তু সাধারণভাবে মানব সমষ্টির সুস্থ রুচিতে নিকৃষ্ট মনে হয় যেমন: পোকা-মাকড়, উকুন
ইত্যাদি- এগুলো সবই অপবিত্র বস্তুর অন্তর্ভুক্ত। হাদীসে এসেছে الخبائث علیكم حرمت
“তোমাদের জন্য অপবিত্র ও নিকৃষ্ট বস্তু হারাম করে দেওয়া হয়েছে।”
অমুসলিম দেশ থেকে প্রাপ্ত গোশতের বিধান
অমুসলিম দেশ থেকে আমদানীকৃত গোশত দুই শর্তে হালাল
ক. হালাল জন্তুর গোশত হতে হবে।
খ. শরীআত অনুমোদিত পদ্ধতিতে যবাইকৃত হতে হবে। উল্লেখিত শর্ত দু’টি না পাওয়া গেলে সেই
গোশত খাওয়া হালাল হবে না।
অনন্যোপায় হলে শরীআতের বিধান
অনন্যোপায় হলে কেবল জীবন রক্ষা পায় এ পরিমাণ হারাম গোশত বা বস্তু খাওয়া বৈধ। এ ব্যাপারে মাহান আল্লাহ বলেনজীবন্তজন্তুর কোন অংশ
কেটে নিয়ে তা ভক্ষণ করা হারাম এবং
সমুদ্রের পানি পবিত্র এবং তার মৃত (মাছ) হালাল।
মৃত জন্তু খাওয়া হারাম, কিন্তু মৃত জন্তুর চামড়া,
হাড়, পশম, শিং ও নখর ব্যবহার করায় কোন দোষ
নেই। তবে শুকর ও কুকুর জীবিত হোক বা
মৃত হোক এদের সবকিছুই হারাম।
কোন উট, গরু, ছাগল, মোরগ-মুরগী ইত্যাদি
হালাল প্রাণী যদি মল খেতে অভ্যস্তহয় এবং
এতে শরীরে দুর্গন্ধ সৃষ্টি হয় তবে এরূপ প্রাণীকে
‘জাল্লালা’ বলা হয়। এ ধরনের প্রাণীর গোশত
খাওয়া এবং দুধ পান করা হারাম।
إ ِنَّمَا حَرَّ مَ عَل َیْكُمُ ٱلْمَیْتَة َ وَ ٱلدَّمَ وَ ل َحْمَ ٱلْخِ نزِ یرِ وَ مَآ أ ُھِلَّ ب ِھِ لِغَیْرِ ٱلل َّھِ فَمَنِ
ٱضْطُرَّ غَیْرَ بَاغ ٍ وَ لاَ عَادٍ فَلاۤ إ ِث ْمَ عَل َیْھِ إ ِنَّ ٱلل َّھَ غَفُورٌ رَّ حِ یمٌ
“নিশ্চয় আল্লাহ মৃত জন্তু, রক্ত, শুকরের মাংস এবং যে জন্তুকে আল্লাহর নাম ব্যতীত অন্যের নামে যবাই
করা হয়েছে, তা তোমাদের জন্য হারাম করেছেন। কিন্তু যে ব্যক্তি অনন্যোপায় অথচ সে নাফরমান
কিংবা সীমা লংঘনকারী নয়, সে তা থেকে খেলে তার কোন পাপ হবে না। নিশ্চয় আল্লাহ অতীব
ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।” (সূরা আল-বাকারা : ১৭৩)
ইমাম আযম আবু হানীফা, ইমাম আবু ইউসুফ, ইমাম মুহাম্মদ ও ইমাম যুফার (র)-এর মতে-
(لا یاكل المضطر من المیتة الا مقدار ما یمسك بھ رمقھ)
অর্থাৎ “অনন্যোপায় ব্যক্তি কেবল প্রাণ রক্ষা পায়, মৃত জন্তুর এ পরিমাণ গোশত আহার করতে পারবে।”
অন্যের মালিকানাধীন খাদ্যসামগ্রী পাওয়া গেলে অনন্যোপায় ব্যক্তি তা খেতে পারবে, যদিও মালিকের
অনুমতি না থাকে। অধিকাংশ বিশেষজ্ঞদের মতে, পরে মালিককে খাদ্যের বিনিময় পরিশোধ করে দিতে
হবে। মালিক উপস্থিত থাকা অবস্থায় যদি অনন্যোপায় ব্যক্তিকে খাদ্য দিতে অস্বীকার করে, তবে ক্ষমতা
থাকলে সে জবরদস্তিকরে খাদ্য গ্রহণ করতে পারবে।
পাঠোত্তর মূল্যায়ন
 নৈর্ব্যক্তিক উত্তর-প্রশ্ন
 সঠিক উত্তরের পাশে টিক ( চিহ্ন দিন১. ধূমপান করা হারামক. কারণ এতে শরীর সতেজ থাকে; খ. এতে সম্পদের অপচয় হয়;
গ. এতে স্বাস্থ্যের মারাত্মক ক্ষতি হয়; ঘ. এতে সম্পদের অপচয় ও স্বাস্থ্যের মারাত্মক
ক্ষতি হয়।
২. জলচর প্রাণীর মধ্যে-
ক. কিছুই হালাল নয়; খ. সবই হালাল;
গ. সবই হারাম; ঘ. একমাত্র মাছ হালাল।
৩. স্থলচর প্রাণীর মধ্যে-
ক. গৃহপালিত ও কতিপয় হিংস্র প্রাণী হালাল; খ. শুধু গৃহপালিত প্রাণী হালাল;
গ. শুধু গৃহপালিত পশু হালাল; ঘ. গৃহ পালিত ও অন্যান্য অহিংস্র জন্তু হালাল।
৪. উপর থেকে পড়ে যাওয়া জন্তু, শিং দ্বারা আঘাত প্রাপ্ত জন্তু-
ক. মরে গেলে হারাম হয়ে যায়;
খ. জীবন্তপাওয়ার পর বিসমল্লিাহ না পড়ে যবাই করলে হালাল হয়ে যায়;
গ. রক্ত প্রবাহিত হলে হালাল হয়ে যায়;
ঘ. জীবন্তপাওয়ার পর বিসমিল্লাহ পড়ে যবাই করলে হালাল হয়ে যায়।
৫. মৃত জন্তুর চামড়া, হাড়, পশম, শিং ও নখর ব্যবহার করাক. বৈধ; খ. অবৈধ;
গ. কখনও হালাল; ঘ. কখনও হারাম।
সংক্ষিপ্ত উত্তর-প্রশ্ন
১. হালাল ও হারাম প্রাণী সম্পর্কে লিখুন।
২. হালাল-হারামের মূলনীতিসমূহ আলোচনা করুন।
৩. কতিপয় হালাল প্রাণীর নাম লিখুন।
৪. সূরা মায়েদায় যে ১০টি বস্তুকে হারাম করা হয়েছে তা উল্লেখ করুন।
৫. মৃত জন্তু হারাম হওয়ার কারণসমূহ বর্ণনা করুন।
৬. শুধু মল ভক্ষণকারী প্রাণীর বিধান আলোচনা করুন।
বিশদ উত্তর-প্রশ্ন
১. হালাল ও হারাম প্রাণী সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে লিখুন।

FOR MORE CLICK HERE
স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস মাদার্স পাবলিকেশন্স
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস ১ম পর্ব
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস
আমেরিকার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস
বাংলাদেশের ইতিহাস মধ্যযুগ
ভারতে মুসলমানদের ইতিহাস
মুঘল রাজবংশের ইতিহাস
সমাজবিজ্ঞান পরিচিতি
ভূগোল ও পরিবেশ পরিচিতি
অনার্স রাষ্ট্রবিজ্ঞান প্রথম বর্ষ
পৌরনীতি ও সুশাসন
অর্থনীতি
অনার্স ইসলামিক স্টাডিজ প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত
অনার্স দর্শন পরিচিতি প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত

Copyright © Quality Can Do Soft.
Designed and developed by Sohel Rana, Assistant Professor, Kumudini Government College, Tangail. Email: [email protected]