আল-কুরআনের আলোকে মানব সৃষ্টির বিশদ রূহ বা আত্মা বলতে কি বুঝেন? আত্মা স¤পর্কে বিস্তারিত ভাবে লিখুন।

ভ‚মিকা
বস্তুবাদীদের দৃষ্টিতে মানুষ অন্যান্য সৃষ্টির মত একটি প্রাণি মাত্র। মানুষের পৃথক কোন বিশেষত্ব নেই। অনেকে
মনে করেন, মানুষ শুধু বাকশক্তি স¤পন্ন প্রাণি। ডারউইনীয় মতবাদ অনুসারে মানুষ বানরের বংশজাত।
বস্তুবাদীরা আত্মা আছে বলে বিশ্বাস করে না। এক কথায় মানুষ ক্রমবিবর্তন ধারার এক স্তরের জীবমাত্র।
ইসলামের দৃষ্টিতে এ ধারণা সম্পূর্ণ ভুল। ইসলামের দৃষ্টিতে আল্লাহ তা‘আলা মানুষকে তাঁর প্রতিনিধি হিসেবে
সৃষ্টির সেরা করে পৃথিবীতে পাঠিয়েছেন। তাই সে সৃষ্টির সেরা জীব হিসাবে সমাজবদ্ধভাবে জীবন যাপন করে।
সমাজের প্রাথমিক স্তর তথা পরিবারের গুরুত্ব মানব জীবনে সবচেয়ে বেশী। তাই সভ্য মানুষের সকলেই
পরিবারের কাঠামোতে মিলেমিশে একত্রে বসবাস করে। পরিবার প্রথা নতুন কিছু নয়। পৃথিবীর প্রথম মানব
হযরত আদম (আ.)-এর মাধ্যমে পরিবার প্রথার সৃষ্টি হয়। আর সেই প্রথা ইসলামী বিশ্বসহ সকল জাতির মধ্যেই
বিদ্যমান রয়েছে। পৃথিবীতে দুই ধরনের পরিবার রয়েছে। ইসলামী পরিবার ও অনৈসলামিক পরিবার। পরিবারের
মাধ্যমে নানা ধরনের কার্যাবলি সাধিত হয়, যা পরিবারের বাইরে সম্ভব নয়। আলোচ্য ইউনিটে ইসলামের দৃষ্টিতে
মানুষ সৃষ্টি, মানুষের মর্যাদা, পারিবারিক জীবনের প্রয়োজনীয়তা ও গুরুত্ব, পরিবারের উৎপত্তি ও ক্রমবিকাশ,
পরিবারের কার্যাবলি, ইসলামী পরিবারের বৈশিষ্ট্য, ইসলামে নারীর মর্যাদা ও অধিকার প্রভৃতি বিষয় আলোচিত হয়েছে। আল্লাহ মানুষের স্রষ্টা
মানুষ সৃষ্টির সেরা জীব। আল্লাহ তা‘আলা মানুষ সৃষ্টি করেছেন। হযরত আদম (আ.) পৃথিবীর প্রথম মানুষ।
আল্লাহ তা‘আলা হযরত আদম (আ.) কে মাটি দ্বারা সৃষ্টি করেছেন এবং তাঁর মধ্যে রূহ ফুঁকে দিয়েছেন। হযরত
আদম (আ.) কে সৃষ্টি করে তাঁর থেকে তাঁর সঙ্গিনী হযরত হাওয়া (আ.) কে সৃষ্টি করেছেন। আল্লাহ তা‘আলা
হযরত আদম (আ.) কে সৃষ্টি করে সকল বস্তুর নাম গুণাগুণসহ শিক্ষা দিয়েছেন। হযরত আদম (আ.)-এর
মাধ্যমে আল্লাহ তা‘আলা তাঁর প্রতিনিধি পৃথিবীতে প্রেরণ করতে চেয়েছেন। মানুষকে আল্লাহ তা‘আলা
ফেরেশতাদের থেকেও মর্যাদা দান করেছেন। হযরত আদম (আ.) নবী ও রাসূল ছিলেন। তিনি ছিলেন আল্লাহর
প্রতিনিধি। পৃথিবীতে আল্লাহর খিলাফাত প্রতিষ্ঠার জন্য তিনি আদিষ্ট ছিলেন। হযরত আদম (আ.)-এর পর তাঁর
সন্তানগণ নবুওত লাভের মাধ্যমে খিলাফাতের ধারা অব্যাহত রেখেছেন। আল্লাহ তা‘আলা আদমকে মাটি হতে
সৃষ্টি করেছেন আর সকল মানুষ আদম (আ.) থেকে সৃষ্টি হয়েছে। ইসলামের দৃষ্টিতে মানব সৃষ্টির তথ্য উদঘাটন
করতে হলে আমাদেরকে মানব সৃষ্টির প্রাথমিক অবস্থার দিকে দৃষ্টিপাত করতে হবে। আর তাতে দেখা যায় যে,
মানব সৃষ্টির সূচনা মাটি থেকে হয়েছে। মানব সৃষ্টির দ্বিতীয় পর্ব হল-মানুষ বীর্য থেকে সৃষ্টি। আল-কুরআনের
আলোকে মানব সৃষ্টির এ দুটো পর্ব স¤পর্কে নি¤েœআলোকপাত করা হলো-আল্লাহ তা‘আলা বলেন-
ٱلᡐ ذِ يۤ أ᠐ حْ سَ نَ ᛿᠑ لَّ شَ يْ ءٍ خَ ل᠐ قَ هُ وَ ᗖ َدَ أ᠐ خَ ل᠔ قَ ٱلإِ ᙏ ْسَ انِ مِ ن طِ ين᠏ . ثُ مَّ جَ عَ لَ ᙏ َسْ ل᠐ هُ
مِ ن سُ ᢿ َل᠐ ةٍ مِّ ن مَّ ቯءٍ مَّ هِ ين᠏ . ثُ مَّ سَ وَّ اەُ و نَ فَ خَ فِ ᘭهِ مِ ن رُّ وحِ هِ وَ جَ عَ لَ ل᠐ ᠑ᝣ مُ ٱلسَّ مْ عَ
وَ ٱلأَ ᗷ ْصَ ارَ وَ ٱلأَ فْ ئِ دَ ةَ قَ لِ ᢿᘭ ًمَّ ا ᘻ َشْ ك᠑ رُ ونَ .
‘যিনি তাঁর প্রত্যেকটি সৃষ্টিকে উত্তমরূপে সুন্দর করেছেন এবং কাদামাটি থেকে মানব সৃষ্টির সূচনা করেছেন।
অতঃপর তিনি তাঁর বংশধর সৃষ্টি করেন তুচ্ছ তরল পদার্থের নির্যাস থেকে। অতঃপর তিনি তাঁকে সুষম করেন
এবং তাতে রূহ সঞ্চার করেন এবং তোমাদেরকে দেন কান, চোখ ও অন্তঃকরণ। তোমরা সামান্যই কৃতজ্ঞতা
প্রকাশ কর।’ (সুরা আস-সাজ্দাহ: ৭-৯)
وَ ល ِذْ قَ الَ رَ ᗖُّ كَ لِ ل᠔ مَ لآئِ ك᠐ ةِ إِ نِّ ى خَ الِ قٌ ᚽ َشَ را᠍ مِّ ن صَ ل᠔ صَ الٍ مِّ نْ حَ مَ إٍ مَّ سْ نُ ونٍ . فَ إِ ذَ ا
سَ ᖔَّ ᗫ ْتُ هُ و نَ فَ خْ تُ فِ ᘭهِ مِ ن رُّ وحِ ى فَ قَ عُ وا᠔ ل᠐ هُ سَ اجِ دِ ينَ .
‘আর আপনার পালনকর্তা যখন ফেরেশতাদেরকে বললেন, আমি পঁচা গন্ধযুক্ত মাটির শুকনো ঠনঠনে মাটি মানুষ
সৃষ্টি করছি, অতঃপর যখন তাকে ঠিকঠাক করে নেব এবং তাতে আমার পক্ষ থেকে রূহ ফুঁক দেব। তখন তোমরা
তার সামনে সেজদাবনত হয়ে যেয়ো’। (সুরা আল-হিজর: ২৮-২৯)
সুরা আত-তারিক এ বর্ণিত হয়েছে-
فَ ل᠔ يَ نظ᠑ ر᠒ ٱلإِ ᙏسَ انُ مِ مَّ خُ لِ قَ . خُ لِ قَ مِ ن مَّ ቯءٍ دَ افِ قٍ .
‘অতঃপর মানুষের দেখা উচিত কোন বস্তু দ্বারা সে সৃষ্টি হয়েছে। সে সৃজিত হয়েছে সবেগে স্খলিত পানি থেকে।’
(সুরা আত-তারিক : ৫-৬)
সুরা ইয়াসীনে মানব সৃষ্টি স¤পর্কে বলা হয়েছে-
أ ᠐ وَ ل᠐ مْ يَ رَ وْ ا᠔ أ᠐ نَّ ا خَ ل᠐ قْ نَ ا ل᠐ هُ م مِ مَّ ا عَ مِ ل᠐ تْ أ᠐ ᘌ ْدِ ينَ ـቯ أ᠐ نْ عاما᠍ فَ هُ مْ ل᠐ هَ ا مَ الِ ᜻᠑ ونَ .
‘তারা কি দেখে না যে, তাদের জন্য আমি আমার নিজ হাতের তৈরি বস্তুর দ্বারা চতু®পদ জন্তু সৃষ্টি করেছি,
অতঃপর তারাই এগুলোর মালিক।’ (সুরা ইয়াসীন : ৭১)
এ আয়াতের দ্বারা প্রমাণিত হয় যে, মানব জাতিসহ পৃথিবীতে যত প্রাণি আছে সবকিছুই আল্লাহর সৃষ্টি, কোন
কিছুই এমনিতে সৃষ্টি হয়ে যায়নি। সবকিছু আল্লাহ তা‘আলা নিজ হাতে সৃষ্টি করেছেন। এটা সরাসরি আল্লাহর
কাজ। তা সত্তে¡ও আল্লাহ তা‘আলা দয়া করে মানুষকে সকল বস্তুর মালিকানা দিয়েছেন।
মানব সৃষ্টির বিষয়টি আল্লাহ তা‘আলা আরো বিস্তৃতভাবে উল্লেখ করেছেন। আল-কুর’আনে বর্ণিত হয়েছে-
وَ ل᠐ قَ دْ خَ ل᠐ قْ نَ ا ٱلإِ ᙏ ْسَ انَ مِ ن سُ ᢿ َل᠐ ةٍ مِّ ن طِ ين᠏ . ثُ مَّ جَ عَ ل᠔ نَ اەُ نُ طْ فَ ةً فِ ى قَ رَ ار᠏ مَّ ᜻ِ ين᠏ .
ث ُ مَّ خَ ل᠐ قْ نَ ا ٱلنُّ طْ فَ ةَ عَ ل᠐ قَ ةً فَ خَ ل᠐ قْ نَ ا ٱل᠔ عَ ل᠐ قَ ةَ مُ ضْ غَ ةً فَ خَ ل᠐ قْ نَ ا ٱل᠔ مُ ضْ غَ ةَ عِ ظ᠐ اما᠍
فَ ᜻᠐ سَ وْ نَ ا ٱل᠔ عِ ظ᠐ امَ ل᠐ حْ ما᠍ ثُ مَّ أ᠐ ᙏشَ أ᠔ نَ اەُ خَ ل᠔ قا᠍ آخَ رَ فَ تَ ᘘ َارَ كَ ٱللᡐ هُ أ᠐ حْ سَ نُ ٱل᠔ خَ الِ قِ ينَ .
‘আমি মানুষকে সৃষ্টি করেছি মাটির উপাদান থেকে। এরপর আমি তাকে শুক্রবিন্দুরূপে স্থাপন করি এক নিরাপদ
আধারে। অতঃপর আমি শুক্রবিন্দুকে পরিণত করি রক্তপিন্ডে এবং রক্তপিন্ডকে পরিণত করি মাংসপিন্ডে। এরপর
মাংসপিন্ডকে পরিণত করি অস্থি-পঞ্জরে; অতঃপর অস্থি-পঞ্জরকে ঢেকে দেই গোশত দ্বারা। অবশেষে তাকে গড়ে
তুলি অন্য এক সৃষ্টিরূপে। অতএব সর্বোত্তম স্রষ্টা আল্লাহ কত মহান!’ (সুরা আল-মুমিনুন : ১২-১৪)
উপরের আয়াত থেকে এ কথা ¯পষ্ট ভাবে প্রতীয়মান হয় যে, মাটির সারাংশ দ্বারা মানুষকে সৃষ্ট করা হয়েছে।
মানব সৃষ্টির সুচনা হয় হযরত আদম (আ.) থেকে এবং তাঁর সৃষ্টি মাটির সারাংশ থেকে হয়েছে। তাই প্রথম
সৃষ্টিকে মাটির সাথে সম্বন্ধযুক্ত করা হয়েছে। এরপর এক মানুষের শুক্র অন্য মানুষের সৃষ্টির কারণ হয়েছে। দ্বিতীয়
পরবর্তী আয়াতে ًةَ فْ طُ نُ اەَ ن ᠔لَ عَ ج مَُّ ث বলে একথাই বর্ণনা করা হয়েছে।
আলোচ্য আয়াতে মানব সৃষ্টির সাতটি স্তর উল্লেখ করা হয়েছে। সর্বপ্রথম স্তর মাটির সারাংশ, দ্বিতীয়তঃ বীর্য,
তৃতীয়তঃ জমাট রক্ত, চতুর্থতঃ মাংসপিন্ড, পঞ্চমতঃ অস্থিঞ্জির, ষষ্ঠতঃ অস্থিকে মাংশ দ্বারা আবৃত্তকরণ এবং
সপ্তমতঃ সৃষ্টির পূর্ণত্ব অর্থাৎ রূহ সঞ্চার।
আল্লাহ তা‘আলা আরো বলেন-
خَ ل᠐ قَ ᝣ ᠑ مْ مِّ ن نَّ فْ س᠏ وَ احِ دَ ةٍ ثُ مَّ جَ عَ لَ مِ نْ هَ ا زَ وْ جَ هَ ا وَ أ᠐ نزَ لَ ل᠐ ᠑ᝣ مْ مِّ نَ ٱلأَ نْ عَ امِ ثَ مَ انِ ᘭ ةَ
أ᠐ زْ وَ اج᠏ ᘌ َخْ ل᠑ قُ ᠑ᝣ مْ فِ ى ᗷ ُطُ ونِ أ᠑ مَّ هَ اتِك᠑ ـمْ خَ ل᠔ قا᠍ مِّ ن ᗷ َعْ دِ خَ ل᠔ قٍ فِ ى ظ᠑ ل᠑ مَ اتٍ ثَ ᢿ َثٍ
ذ ٰ لِ ᠑ᝣ مُ ٱللᡐ هُ رَ ᗖُّ ᠑ᝣ مْ ل᠐ هُ ٱل᠔ مُ ل᠔ كُ ᢻ ۤإِ ل᠐ ᅮ ٰهَ إِ ᢻَّ هُ وَ فَ أ᠐ نَّ ىٰ تُ صْ رَ فُ ونَ .
‘তিনি সৃষ্টি করেছেন তোমাদেরকে একই ব্যক্তি থেকে। অতঃপর তা থেকে তার যুগল সৃষ্টি করেছেন এবং তিনি
তোমাদের আট প্রকার চতু®পদ জন্তুদিয়েছেন। তিনি তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছেন তোমাদের মাতৃগর্ভে পর্যায়ক্রমে
একের পর এক ত্রিবিধ অন্ধকারে। তিনিই আল্লাহ, তোমাদের পালনকর্তা, সাম্রাজ্য তাঁরই। তিনি ব্যতীত কোন
ইলাহ নেই। তবে তোমরা মুখ ফিরিয়ে কোথায় চলছো?’ (সুরা আয-যুমার: ৬)
উল্লিখিত আয়াতে মানব সৃষ্টিতে আল্লাহর কুদরতের কিছু রহস্য উন্মোচন করা হয়েছে। প্রথমতঃ আল্লাহর কুদরতে
এটাও ছিল যে, তিনি মায়ের পেটে সন্তানকে একই সময়ে পুর্ণাঙ্গরূপে সৃষ্টি করতে পারতেন। কিন্তু উপযোগিতার
তাগিদে এরূপ করেননি বরং পর্যায়ক্রমে সৃষ্টি করার পদ্ধতি অবলম্বন করেছেন। ফলে যে নারীর গর্ভে এ ক্ষুদ্র
জগৎ সৃষ্টি হতে থাকে সে ধীরে ধীরে এই বোঝা বহনে অভ্যস্তহতে পারে।
দ্বিতীয়তঃ এই অনুপম সুন্দর সৃষ্টির মধ্যে শত শত সূ² যন্ত্রপাতি এবং রক্ত ও প্রাণ সঞ্চালনের জন্য চুলের মত সূ²
শিরা উপশিরার স্থান করা হয়। কিন্তু সাধারণ শিল্পীদের মত এ কাজ কোন খোলা জায়গায় আলোর সাহায্যে করা
হয় না। বরং তিনটি অন্ধকারের মধ্যে স¤পন্ন করা হয়। যেখানে কোন মানুষের পক্ষে কিছু করা তো দূরের কথা
চিন্তা-কল্পনাও সেখানে পৌঁছার পথ পায় না।
রূহ বা আত্মা
ইয়াহূদীদের প্ররোচনায় মক্কার কুরায়েশরা যখন রূহের হাকীকাত স¤পর্কে মহানবী (সা.) কে প্রশ্ন করল, তখন
আল্লাহর পক্ষ থেকে রূহ স¤পর্কে জবাব দেওয়া হল। আল্লাহ ওহীর মাধ্যমে মহানবী (সা.) কে জানিয়ে দিলেন-
وَ ᚱ َسْ أ᠐ ل᠑ ونَ كَ عَ ن᠒ ٱلرُّ وح᠒ قُ لِ ٱلرُّ وحُ مِ نْ أ᠐ مْ ر᠒ رَ بِّ ى وَ مَ ቯ أ᠑ وتِ ᚏتُ م مِّ نَ ٱل᠔ عِ ل᠔ مِ إِ ᢻَّ قَ لِ ᢿᘭ ً
‘আপনাকে তারা রূহ স¤পর্কে প্রশ্ন করে। আপনি তাদেরকে বলে দিন-রূহ হচ্ছে আমার প্রতিপালকের আদেশ। এ
বিষয়ে তোমাদের সামান্যই জ্ঞান দেওয়া হয়েছে।’ (সুরা আল-ইসরা : ৮৫)
উরোক্ত আয়াত থেকে বোঝা যায় যে, আত্মার স্বরূপ স¤পর্কে কেউ পুরোপুরি অবহিত নয়। কেননা আল-কুরআনে
রূহ স¤পর্কে যে জ্ঞান দান করা হয়েছে তার চাইতে অধিক জ্ঞান আল্লাহ তা‘আলা কাউকে দান করেননি। তা
সত্তে¡ও আলিমগণ রূহ স¤পর্কে বিভিন্ন ধারণা দিয়েছেন।
আত্মা স¤পর্কে দার্শনিক ও চিকিৎসাবিদগণের মতামত
আত্মা স¤পর্কে দার্শনিক ও চিকিৎসাবিদগণ যা কিছু বলেছেন, তার সারসংক্ষেপ নি¤œরূপপ্রাণিকুলের খাদ্য গ্রহণের পর বিভিন্ন পর্যায়ে পরিপাক ও হযম হওয়ার মাধ্যমে হৃদপিন্ডে এক প্রকার সূ² তাপের
সঞ্চার হয়। বস্তুত এটিই প্রাণের উৎস হয়ে প্রাণিদেহকে জীবন্তরাখে। আর এটিই হচেছ রূহ বা আত্মা। এ ছাড়া
অন্য কোন বস্তু নেই যাকে রূহ বা আত্মা নামে আখ্যায়িত করা যায়। প্রাণিদের এই সঞ্চালন প্রক্রিয়া যখন বন্ধ হয়ে
যায় তখন তার মৃত্যু হয়। আর তখনই বলা হয় ‘অমুক ব্যক্তি মৃত্যুবরণ করেছে, অমুকের দেহে আর রূহ অবশিষ্ট
নেই’। পিথাগোরাসের অনুসারীদের মতে, দেহের মৌলিক উপাদানসমূহের সংমিশ্রণের ফলে সৃষ্ট অবস্থাকে আত্মা
বলা হয়, যেমন গিটার বলা হয় কতগুলো তারের সংযোজিত বিশেষ অবস্থাকে। উল্লেখ্য যে, প্রাচীন দার্শনিক ও
বর্তমান যুগের আত্মা বিশেষজ্ঞরা আত্মা স¤পর্কে চিকিৎসকদের থেকে ভিন্নমত পোষণ করেন। তাঁদের মতে,
জীবাত্মা ছাড়াও নফস বা রূহ নামে আরেকটি পৃথক জিনিস আছে। তাদের ভাষায় ‘মানবদেহে বস্তুগত ও অনুভ‚ত
অংশ ছাড়া আরেকটি পৃথক উপাদান বা শক্তি রয়েছে যা বস্তুগত উপাদানের চাপে ম্রিয়মান হয়ে পড়ে বটে, তবে
রিয়াজাত, মুজাহাদা বা অন্য কোন পন্থায় কিংবা নিন্দ্রার অবস্থায় যখন নিদ্রায় শক্তি নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়ে তখন তা
সজীব হয়ে উঠে এবং মানুষ তখন ঊর্ধ্ব জগতের রহস্যাবলি স¤পর্কে অবগত হয় এবং অন্যের কাছে তা প্রকাশ
করে।
ইসলামী চিন্তাবিদগণের দৃষ্টিতে রূহ বা আত্মা
ইসলামী চিন্তাবিদ ও গবেষকগণ রূহ বা আত্মা স¤পর্কে যে মতামত ব্যক্ত করেছেন তা নি¤œরূপপ্রকৃত পক্ষে আত্মা হল একটি সূ² উপাদান যা প্রাণিদেহে ছড়িয়ে আছে, দেহ হল তার কাঠামো। এটা হাতিয়ার
হিসেবে ব্যবহার করে এবং দেহকে সম্বল করেই সকল কাজ সমাধা করে। বস্তুত এটাই হল আত্মার বৈশিষ্ট্য।
অন্যভাবে বললে কথাটি এভাবে বলা যায়- রূহ বা আত্মা হল একটি সূ² জিনিস যা দেহ-পিঞ্জরে অবস্থান করে।
কোন কোন বিশেষজ্ঞ এর উদাহরণ দিয়েছেন এভাবে যে, রূহ বা আত্মা হল আরোহী, আর দেহ হল তার বাহন।
সারকথা উপরোক্ত মণীষীদের মতে, আত্মা হল একটা পৃথক দেহ যার অবস্থানস্থল হল স্থ‚ল দেহে। তাঁদের মতে,
আমরা একটি মানুষকে কখনো শিশু, কখনো যুবক, আবার কখনো বৃদ্ধ হিসাবে দেখি। কিন্তু অবস্থার এই
পরিবর্তন সত্তে¡ও সে পূর্বে যে মানুষ ছিল পরেও সে একই মানুষই থেকে যায়।
অতএব রূহ বা আত্মা যদি কেবল সেই জীবন উৎসের নাম হত, যা হৃদপিন্ডে সূ² তাপ সঞ্চারের ফলে অস্তিত্বে
আসে কিংবা সেই অবস্থার নাম হত যা উপাদানসমূহের সংমিশ্রণের ফলে সৃষ্ট, তা হলে কর্ম ও অবস্থার পরিবর্তনের
সাথে সাথে প্রত্যেকটি মানুষ এক একটি নতুন মানুষে পরিণত হত। কিন্তু যেহেতু এরূপ হয় না বরং কর্ম, অবস্থা ও
গুণাবলির পরিবর্তন সত্তে¡ও মানুষ মানুষই থাকে, তাই একথা অবশ্যই বলা যায় যে, প্রকৃতপক্ষে মানুষ এ সকল
ক্ষণস্থায়ী পরিবর্তনের নাম নয়, বরং সে হল এমন একটি পৃথক সূ²দেহ যা বাল্য, যৌবন ও বার্ধক্য তথা সকল
অবস্থায়ই অপরিবর্তনীয় থাকে এবং দেহের যাবতীয় পরিবর্তনের প্রভাবকে গ্রহণ করার পূর্ণ যোগ্যতা রাখে। এই
সূ² বস্তুটিই আত্মা বা রূহ। দেহের মৃত্যু ঘটলেও এর মৃত্যু হয় না। বরং নিজের কর্ম ও বৈশিষ্ট্যের পরিপ্রেক্ষিতে
হয় ঊর্ধ্বজগতের সাথে নতুবা পংকিলময় নি¤œজগতের সাথে স¤পর্কিত হয়ে পড়ে।
আল্লামা রুমী আত্মা স¤পর্কেবলেছেন, প্রাণ বা আত্মা তারই নাম যা ভাল মন্দ স¤পর্কে অবহিত থাকে। কল্যাণে
প্রফুল্লহয় আর অকল্যাণে বিমর্ষ হয়। আত্মায় অনুভ‚তির প্রভাব রয়েছে। যার আত্মা অধিক উন্নত হবে সেই হবে
আল্লাহ ওয়ালাদের অন্তর্ভুক্ত।
আল্লামা আবুল বাকার-এর মতে-ইসলামী চিন্তাবিদ দার্শনিক ও সূফীগণের মধ্যে বিরাজমান মতপার্থক্যের ব্যাখ্যা
এই যে, যখন রূহ বা আত্মা বলে কোন জিনিসকে আমরা খোঁজ করি তখন তিনটি জিনিস আমাদের কাছে ধরা
পড়ে। যথা-জীবাত্মা, স্বভাবাত্মা ও মানবাত্মা। চিকিৎসা বিজ্ঞানীরা আত্মার যে সংজ্ঞা দিয়েছেন, তা হল সেই
সূ²তাপ মৌলিক উপাদানসমূহের উত্তপ্ততা ও নমনীয়তার ফলে অস্তিত্ব লাভ করে। এটা আসলে জীবাত্মারই অপর
নাম। পিথাগোরাস এবং তার অনুসারীরা যে আত্মার কথা বলেছেন সেটা হল স্বভাবাত্মা। আর মানবাত্মা হল সকল
কর্ম ও গুণের অধিকারী বা জিম্মাদার। বিচার দিনের পাপ-পূণ্য এর সাথেই স¤পর্কিত। আল-কুরআনে এই
আত্মাকেই সম্বোধন করা হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে এটাই মানুষ যার প্রচলিত নাম রূহ বা মানবাত্মা।
মানব জীবনের চরম লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য
মানুষ অন্যান্য প্রাণির মতো শুধু খেয়ে বেঁচে থাকার জন্য সৃষ্টি হয়নি। মানব সৃষ্টির উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য রয়েছে।
ইসলাম ঘোষণা করেছে, মানুষ এই পৃথিবীতে অনর্থক, উদ্দেশ্যহীন, দায়িত্ব-কর্তব্যহীন সৃষ্টি হয়নি। মানব সৃষ্টির
বিভিন্ন লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য নি¤œরূপ১. মানব সৃষ্টির মূল লক্ষ্য উদ্দেশ্য হচেছ পৃথিবীতে আল্লাহর প্রতিনিধিত্ব করা। আল্লাহ তা‘আলার লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য
পৃথিবীতে বাস্তবায়ন করা। পবিত্র কুরআনে আল্লাহ তা‘আলা ঘোষণা করেন-
وَ ល ِذْ قَ الَ رَ ᗖُّ كَ لِ ل᠔ مَ ᢿ َئِ ك᠐ ةِ إِ نِّ ى جَ اعِ لٌ فِ ى ٱلأَ رْ ض᠒ خَ لِ ᘭفَ ةً .
‘স্মরণ করুন যখন তোমার প্রতিপালক ফেরেশতাদের বললেন, আমি পৃথিবীতে প্রতিনিধি প্রেরণ করব।’ (সুরা
আল-বাকারা : ৩০)
এ আয়াত থেকে মানব সৃষ্টির উদ্দেশ্য পরিস্কার হয়ে যায় যে, মানুষ আল্লাহর প্রতিনিধিত্ব করার জন্য সৃষ্টি হয়েছে।
২. মানুষকে সৃষ্টি করা হয়েছে আল্লাহর ইবাদত করার জন্য।মানুষকে কেবল তার জৈবিক চাহিদা পূরণের জন্য
সৃষ্টি করা হয়নি কিংবা নিজের কামনা বাসনা চরিতার্থ করার জন্যও সৃষ্টি করা হয়নি। বস্তুজগতের মৌল
উপাদানসমূহের কোন একটা বিশেষ উপাদানের দাসত্ব করাও তার কাজ নয়। জীবজন্তু যেমন প্রবৃত্তি দ্বারা তাড়িত
হয়েই জীবন কাটায়, মানুষ সেভাবে জীবন কাটাতে পারে না। নিরর্থক কাজে জীবন কাটিয়ে দিয়ে সে মরে যাবে,
তাকে মাটির নিচে দাফন করা হবে, তারপর দেহটিকে পোকা-মাকড় খেয়ে শেষ করে দেবে, মাটির সাথে
একাকার হয়ে মিশে যাবে এই পরিণতিও মানুষের জন্য নয়।
মানুষকে সৃষ্টি করা হয়েছে এই উদ্দেশ্যে যে সে আল্লাহ তা‘আলাকে বিশ্বলোকের স্রষ্টারূপে চিনবে, জানবে এবং
সমগ্র জীবনব্যাপী কেবল তাঁরই দাসত্ব করবে। সে এখানে আল্লাহর খিলাফাতের দায়িত্ব পালন করবে। তার সৃষ্টির
উদ্দেশ্য হচেছ- সে তার এ সংক্ষিপ্ত নির্দিষ্ট জীবনকালে বিরাট আমানত বহন করবে। আর সে আমানতের মর্যাদা
রক্ষা করে চলবে। সে আমানত হচেছ শারী‘আত পালনের দায়িত্ব- আল্লাহর নিকট জবাবদিহির বাধ্য বাধকতা।
এক্ষেত্রে অবশ্য তাকে বহু প্রকারের বাধা বিপত্তি ও দুঃখকষ্টের সম্মুখীন হতে হবে। এসব তাকে নীরবে সহ্য করে
নিতে হবে, একটুও ঘাবড়ানো যাবে না, ভয় পাওয়া চলবে না। আল্রাহ তা‘আলা বলেন-
وَ مَ ا خَ ل᠐ قْ تُ ٱل᠔ جِ نَّ وَ ٱلإِ ᙏسَ إِ ᢻَّ لِ ᘭ َعْ ᘘ ُدُ ونِ .
‘আমি জিন্নএবং মানব জাতিকে এ জন্য সৃষ্টি করেছি যে, তারা আমারই ইবাদত করবে।’ (সুরা আয-যারিয়াত ঃ
৫৬)
অপর এক আয়াতে আল্লাহ তা‘আলা বলেন-
أ᠐ فَ حَ سِ ᙫ ْتُ مْ أ᠐ نَّ مَ ا خَ ل᠐ قْ نَ ا᠑ᝏ مْ عَ بَ ثا᠍ وَ أ᠐ نَّ ᠑ᝣ مْ إِ ل᠐ يْ نَ ا ᢻ َتُ رْ جَ عُ ونَ .
‘তোমরা কি এ ধারণা করে বসে আছ যে, আমি তোমাদেরকে নিতান্তই অর্থহীন সৃষ্টি করেছি এবং তোমরা আমার
নিকট প্রত্যাবর্তিত হবে না?’ (সুরা আল-মুমিনুন ঃ ১১৫)
এ আয়াত থেকে আমরা দু’টি বিষয় জানতে পারি। যথা১. মানুষকে এ পৃথিবীতে নিরর্থক, উদ্দেশ্যহীন এবং নিতান্তই খেলার ছলে সৃষ্টি করা হয়নি। বরং মানব সৃষ্টির মূলে
বিশেষ উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য নিহিত রয়েছে।
২. মানুষ এখানে জীবন যাপন শেষ করে মৃত্যু মুখে পতিত হয়ে সম্পূর্ণরূপে নিঃশেষ হয়ে যাবে, অতঃপর তাকে
কোন জবাবদিহির সম্মুখীন হতে হবে না, এই জীবনের কাজ কর্মের কোন হিসাব দিতে হবে না, ভাল কাজের
ভাল ফল ও মন্দ কাজের মন্দ ফল ভোগ করতে হবে না এবং এ জন্য তাকে আল্লাহর নিকট ফিরে যেতে হবে নাএরূপ মনে করা নিতান্তই বোকামি, মূর্খতা বরং মৃত্যুর পর সে নতুন এক জীবন লাভ করবে। দুনিয়ার কৃতকর্মের
হিসাব দিতে হবে। সর্বশেষে কর্মফল অনুযায়ী চিরশান্তির জান্নাত কিংবা চরম শাস্তির জাহান্নাম লাভ করবে।
মানব সৃষ্টি স¤পর্কে নাস্তিক ও বস্তুবাদীদের ধারণা
নাস্তিক ও বস্তুবাদীদের দৃষ্টিতে মানুষের জীবনের কোন লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য নেই। কেননা, যদি কোন লক্ষ্য উদ্দেশ্য
আছে বলে স্বীকার করা হয় তা হলে সঙ্গে সঙ্গে স্বীকার করে নিতে হয় স্রষ্টাকে। কিন্তু যেহেতু তারা স্রষ্টাকে স্বীকার
করতে রাজি নয়, সেহেতু তারা মানুষকে বিশেষ উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য নিয়ে সৃষ্টি করা হয়েছে একথা স্বীকার করতে
রাজি নয়। তারা মনে করে অন্যান্য ইতর প্রাণির মত তারাও এই জীবনে দুঃখ কষ্ট ভোগ করবে, আরামআয়েশের ভান্ডার লুট করে আকণ্ঠভোগ করবে। মানুষের এই সংক্ষিপ্ত নির্দিষ্ট আয়ুষ্কাল শেষ হয়ে গেলে তার যথা
সর্বস্বই নিঃশেষ হয়ে গেল। কিন্তু তাদের এ চিন্তা-ধারণাকে অসার প্রতিপন্ন করে আল-কুরআন ঘোষণা করেছে-
قُ لْ مَ تَ اعُ ٱلدُّ نْ ᘭ َا قَ لِ ᘭلٌ وَ ٱلآخِ رَ ةُ خَ يْ رٌ لᡒ مَ ن᠒ ٱتَّ قَ ىٰ
‘আপনি বলুন, পার্থিব ভোগ সামান্য এবং যে মুত্তাকী তার জন্য পরকালই উত্তম।’ (সুরা আন-নিসা ঃ ৭৭)
১. মানুষ আদম থেকে সৃষ্ট এ মতবাদটি কার?
ক. ইসলামের খ. ডারউইনের
গ. ওয়েলেসের ঘ. বিজ্ঞানী আইনস্টাইনের
২. ইসলামের দৃষ্টিতে মানব সৃষ্টির কয়টি পর্যায় রয়েছে?
ক. ৪ টি খ. ৩ টি
এসএসএইচএল বাংলাদেশ উš§ুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়
পৃষ্ঠা- ৭
গ. ৭ টি ঘ. ৫ টি
৩. রূহ বা আত্মা বলতে বুঝায়ক. আল্লাহকে খ. জীবাত্মাকে
গ. মানবাত্মাকে ঘ. হৃদপিন্ডের সূ²তাপের সঞ্চারকে
৪. মানবাত্মা কোনটি?
ক. স্বভাবাত্মা খ. জীবাত্মা
গ. সকল কর্ম ও গুণের অধিকারী আত্মা ঘ. সব কয় টি উত্তরই ভুল
সংক্ষিপ্ত উত্তর-প্রশ্ন
১. মানব সৃষ্টির ইসলামী মতবাদ লিখুন।
২. মানব সৃষ্টির দু’টি পর্যায়ের বর্ণনা দিন।
৩. রূহ বা আত্মা বলতে কি বুঝায় লিখুন।
৪. আত্মা স¤পর্কে দার্শনিক ও চিকিৎসকদের মতবাদ লিখুন।
৫. আত্মা স¤পর্কিত ইসলামী মতবাদের ধারণা দিন।
৬. আল্লামা আবুল বাকার-এর আত্মা স¤পর্কিত মতবাদটি লিখুন।
৭. মানব জীবনের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য সংক্ষেপে বর্ণনা করুন।
রচনামূলক উত্তর-প্রশ্ন
১. আল-কুরআনের আলোকে মানব সৃষ্টির বিশদ বর্ণনা লিপিবদ্ধ করুন।
২. রূহ বা আত্মা বলতে কি বুঝেন? আত্মা স¤পর্কে বিস্তারিত ভাবে লিখুন।

FOR MORE CLICK HERE
স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস মাদার্স পাবলিকেশন্স
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস ১ম পর্ব
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস
আমেরিকার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস
বাংলাদেশের ইতিহাস মধ্যযুগ
ভারতে মুসলমানদের ইতিহাস
মুঘল রাজবংশের ইতিহাস
সমাজবিজ্ঞান পরিচিতি
ভূগোল ও পরিবেশ পরিচিতি
অনার্স রাষ্ট্রবিজ্ঞান প্রথম বর্ষ
পৌরনীতি ও সুশাসন
অর্থনীতি
অনার্স ইসলামিক স্টাডিজ প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত
অনার্স দর্শন পরিচিতি প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত

Copyright © Quality Can Do Soft.
Designed and developed by Sohel Rana, Assistant Professor, Kumudini Government College, Tangail. Email: [email protected]